আগামী জাতীয় নির্বাচনে দলীয়, তত্ত্বাবধায়ক না অন্তর্বর্তী সরকার ব্যবস্থা? by মোহাম্মদ শাহনওয়াজ
‘রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছুই নেই’
অথবা ‘ ইতিহাসের শিক্ষা হচ্ছে ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা গ্রহণ করে না’ এসব
বহুল ব্যবহৃত নীতিবাক্য বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রায়ই উল্টো অর্থে, একটু
কঠিনভাবে বললে শঠতা, প্রতারণা বা কৃত অঙ্গীকার থেকে সরে আসার অজুহাত হিসেবে
বেশি করে প্রয়োগ হয়ে থাকে। পুর আর পালাবদল, নির্বাচনপূর্ব নমিনেশন পেতে
হর্সট্রেডিং কিংবা নিতান্ত সঙ্কীর্ণ ব্যক্তি বা গোষ্ঠীস্বার্থে রাজনৈতিক,
আদর্শিকভাবে চরম শত্রু পক্ষের সঙ্গে মৈত্রী গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এসব
নীতিবাক্যের আশ্রয় গ্রহণের কোনো বিকল্প দেখা যায় না।
আগামী
জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক না দলীয় সরকারের অধীনে হবে এ
ইস্যুতে শিক্ষা গ্রহণ করে ইতিহাসকে কালিমাময় না করার কাজটি ক্ষমতাসীন
আওয়ামী লীগ করবে কি করবে না তা তাদের একান্ত দলীয় সিদ্ধান্তের বিষয়। তবে
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৃটেন সফরকালে বিবিসিকে দেয়া
সাক্ষাৎকারে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানকালে দলীয় একটি অন্তর্বর্তী
সরকারে বিরোধী দল বিএনপিকে পার্টনার করার যে প্রস্তাব দিয়েছেন তা
‘রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই’ এর একটা ইতিবাচক প্রয়োগের প্রবণতা
সুস্পষ্ট করে দিয়েছেন। কারণ আদালতের রায়ের সুত্র ধরে পঞ্চদশ সংশোধনীতে
কিম্ভুতকিমাকার রূপ নেয়া সংবিধানের দোহাই পেড়ে প্রধানমন্ত্রীসহ মহাজোটের
শরিকেরা এতদিন ইতিমধ্যে কবরস্থ তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পুনরুজ্জীবনের
বিন্দুমাত্র সুযোগ নেই এবং দলীয় সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন হবে বলে
ধনুকভাঙা পণ করে বিনাযুদ্ধে নাহি দেব সুচাগ্র মেদীনিসম অবস্থান ঘোষণা করে
আসছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর অন্তর্বর্তী দলীয় সরকারের প্রস্তাব যে উপরোক্ত
অবস্থান থেকে দৃশ্যমানভাবে সরে আসা তাতে বোদ্ধামহল ইতিমধ্যে নিঃশংসয় রায়
দিয়েছেন। রাজনীতি সংশ্লিষ্ট মহলে ইতিমধ্যেই বলাবলি শুরু হয়েছে-
তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে কি তাহলে জটিলভাবে জমাটবাঁধা বরফ গলতে শুরু করেছে?
প্রধানমন্ত্রীর এ প্রস্তাব বিরোধীদলের তরফ থেকে তাৎক্ষণিক প্রত্যাখানের পরও এমন আলোচনা চলছে যে, কারো কাছে গ্রহণযোগ্য হোক আর না হোক, এ প্রস্তাব অন্তত আলোচনার একটা ছোট্ট রাস্তা খুলে দিয়েছে। অন্যদিকে এমনও মতামত দেয়া হচ্ছে যে, জয়ী হলে বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার করার এবং কয়েকটি সংসদীয় কমিটির সভাপতির পদ বিরোধীদলীয় সদস্যদের দেয়ার নির্বাচনী ইশতেহারে করা অঙ্গীকার যেখানে আওয়ামী লীগ নানা মারপ্যাচে রক্ষা করেনি সেখানে কি কারণে দলটি ছোট্ট মন্ত্রিসভার অন্তর্বর্তী সরকারে শত্রু বিএনপিকে জায়গা করে দেবে? এটা কি তাহলে দৃশ্যপটের অন্তরালে আরেক ফাঁদের আয়োজন? যুব, ক্রীড়া, ধর্মের মতো ধার-ভারবিহীন মন্ত্রণালয়ে বিরোধীদের বসানোর আয়োজন কিভাবে রুখা যাবে, একজনের মর্জিতে এগুলো পাল্টানো নির্ভর করবে। এসব প্রক্রিয়ায় পলিটিক্যাল ওমবুড়সমেন কে হবেন?
গত বছর আমেরিকা সফরকালে বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপের প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘চোর-ডাকাতের সঙ্গে আবার কিসের আলাপ-আলোচনা’ বলে উক্তি করেন। কঠোর, কঠিন আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে বেকায়দায় ফেলে দাবি আদায়ের মোক্ষম কাজটি বিরোধী দল এখনো করতে সক্ষম না হওয়া সত্ত্বেও হঠাৎ এমন কি ঘটলো যে, সাত সমুদ্র তের নদীর ওপারে গিয়ে শেখ হাসিনাকে এক প্রকার ইউ-টার্ন নিতে হলো? আনন্দ, উদ্বেগ আর দুশ্চিন্তর আসন্ন ঈদের সার্বিক আমেজের মধ্যেও পদ্মা সেতু আর ড. ইউনূস বধ কাব্য উপখ্যানের প্রবল মঞ্চায়নের এমনিতর সময়েও পাশাপাশি আগামী সংসদ নির্বাচন দলীয়, তত্ত্বাবধায়ক না অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে হবে এ প্রশ্ন এখন সর্বত্র।
বাংলাদেশের রাজনীতির প্রথম পাঠের ছাত্রটিও জানেন, কি রকেট গতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারসংক্রান্ত মামলার পরিত্যক্ত ফাইলের ধুলাবালি সাফ-সুতরো করে মামলাটি দেশের সর্বোচ্চ আদালতের সর্বোচ্চ ব্যক্তিটির মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয়েছিল। সর্বোচ্চ আদালতে সরকারের প্রতিনিধি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমসহ আদালতের নিযুক্ত আট জন এমিকাস কিউরি’র মধ্যে সাত জন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বহাল রাখার পক্ষে মতামত দেয়া সত্ত্বেও তা আমলে না নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল পক্ষগুলোর মধ্যে সম্পাদিত রাজনৈতিক চুক্তির ফসল তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা আওয়ামী লীগ একতরফাভাবে উদ্যোগ নিয়ে বাতিল করেছিল।
ধর্ম পালনের ধারে কাছে নেই অথচ কিছু খাওয়ার পর মিষ্টি খাওয়ার সুন্নতের অনুসারীদের মতো সরকার তত্ত্বাবধায়কব্যবস্থা সংক্রান্ত আদালতের রায়ের সুবিধাজনক অংশটি লুফে নিয়ে তা কার্যকরে উঠে পড়ে লাগে, নিজেদের মতো করে সংশোধিত হয় সংবিধান। সে থেকে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার- কোনো অনির্বাচিত ব্যক্তিবর্গের একদিনের জন্যও ক্ষমতায় বসার সুযোগ নেই এবং আগামী নির্বাচন হবে দলীয় সরকারের অধীনে। অন্যদিকে, বিএনপিসহ বিরোধী দলের অবস্থানও স্পষ্ট। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ সরকারই বাতিল করেছে। সুতরাং এটা তাদেরকেই বহাল করতে হবে এবং নির্দলীয় সরকার ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সংশোধিত সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১২৩ (৩) এর ‘ক’ উপ-ধারা অনুযায়ী দলীয় সরকারের অধীনে সংসদ বিলুপ্ত হবার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। এর মমার্থ পরিষ্কার-প্রধানমন্ত্রী, তার মন্ত্রিসভা আর সংসদ বহাল রেখেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন হবে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনও সংবিধানের এ অনুচ্ছেদের আওতায় নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিয়ে এগুচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞ ও আশাবাদীরা আশার আলো দেখছেন অনুচ্ছেদে ১২৩ (৩) এর ‘খ’-এ। মেয়াদের দুই সপ্তাহ অথবা তারও আগে সংসদ বিলুপ্ত হলে সেক্ষেত্রে ৯০ দিনের পর নির্বাচন হবে। তখন তো আর প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভা আর সংসদ থাকেবে না। এমতানস্থায় যে নামেই ডাকি না কেন তত্ত্বাবধায়ক অথবা অন্তর্বর্তী সরকার টাইপের কিছু একটা প্রয়োজন হবেই। বিবিসিতে শেখ হাসিনা বিএনপিসহ অন্তর্বর্তী দলীয় সরকারের কথা বললেও সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১২৩ (৩) এর কোন উপ-ধারা অনুযায়ী নির্বাচন হবে সে কথা স্পষ্ট করেননি। আর এ কারণেই প্রধানমন্ত্রীর এ প্রস্তাব গ্রহণ-বর্জনের ঘোষণা দেয়ার পরিবর্তে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর এ প্রস্তাব ধোয়াটে ও বিভ্রান্তিকর। বিএনপি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ছাড়া নির্বাচনে যাবে না। এতদসত্ত্বেও সুচিন্তিতেরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর এ প্রস্তাবের মাজেজা আপাতত যাই হোক না কেন, এটি অন্ততঃ আলোচনার পথটা তো খুলে দিল।
এ ব্যাপারে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অব. এম সাখাওয়াত হোসেনের একটি মতামত বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলছেন, “সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১২৩ (৩) (ক) বহাল রেখে নির্বাচন করতে গেলে সেই নির্বাচন কেমন হবে, তা যাদের অতীত নির্বাচন করার অভিজ্ঞতা রয়েছে, তারা ভালোভাবেই উপলব্ধি করছেন। আমি একাধিকবার বলেছি যে, ওই পরিস্থিতিতে নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে দুরূহ ব্যাপার। বিগত সব তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে বাংলাদেশের নির্বাচনগুলো স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হলেও পরাজিত দল ওই ফলাফল গ্রহণ করতে কুণ্ঠিত হয়েছে আর দলীয় সরকার এবং সংসদ বহাল রেখে নির্বাচনের ফলাফল কিভাবে পরাজিত দল মানবে তা বুঝতে বেগ পেতে হয় না।”
প্রধানমন্ত্রী মাস কয়েক আগেও চট্টগ্রামে পলোগ্রাউন্ডে এক জনসভায় বলেছিলেন, তিনি ক্ষমতায় থাকবেন অথবা থাকবেন না, কিন্তু সংসদে একবার বাতিলকৃত তত্ত্বাবধায়কব্যবস্থা কখনো পুনর্জন্ম দেবেন না। অন্যদিকে, যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক আলোচনাসভা শেষে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সমঝোতা হবে বলে তিনি আশাবাদী। বাংলাদেশ এ ধরনের সংকট অতীতেও মোকাবেলা করে সামনের দিকে এগিয়ে গেছে। তবে রাজনীতিতে দীর্ঘমেয়াদী ও সুস্থির সমঝোতার পরিবেশ না আসার পেছনে বাধা হিসেবে দেখছেন ইতিহাসের দুটি রক্তাক্ত অধ্যায়- ১৫ আর ২১ আগস্টের বেদনাদায়ক ঘটনা। এছাড়াও আওয়ামী লীগ নেতারা সংসদের ভেতরে বাইরে যেভাবে বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও তার পরিবার নিয়ে অরুচিকর কটূক্তি করেন তাতে যে কারো মনে হবে, ৭৬ বছর পর পর নয়, প্রতি বছর হ্যালির ধুমকেতু দৃশ্যমান হবার সম্ভাবনা সৃষ্টি হলেও হতে পারে কিন্তু আওয়ামী লীগ-বিএনপি’র সমঝোতার সম্ভাবনা একেবারে ক্ষীণ।
এর বিপরীত মতামতও আছে। ক্ষমতায় যাওয়া কিংবা ঠিকে থাকার জন্য আওয়ামী লীগ যেকোনো লেন্থে নিজের অবনমন ঘটাতে পারে। আদর্শ আর রাজনৈতিক অবস্থান সেখানে গৌণ। এ পক্ষ উদাহরণ হিসেবে হাজির করেন- শেখ মুজিবকে তীব্র সমালোচনাকারী সেই বাম কমিউনিস্টদের সঙ্গে মিলেমিশে সরকার গঠন, দলত্যাগী বিএনপি-জামায়াত নেতাদের পদ-পদবী দিয়ে বরণ করে নেয়া, ৯৬ সালে জামায়াতের সঙ্গে যৌথভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার দাবিতে বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন পরিচালনা এবং আজ যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের বিচার চলছে তাদের ইমামতিতে সংসদে একসঙ্গে জামাতে নামাজ আদায়, সেলিম-দেলওয়ার-বসুনিয়া-ময়েজউদ্দিনের হত্যাকারীদের সঙ্গে ভাই-বোনের সম্পর্ক পেতে সরকার গঠন, আর ২০০৭ সালে খেলাফত মজলিসের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করে নির্বাচনী আঁতাত গড়ে তোলা।
এসব প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আওয়ামী লীগ যখন দলীয় থেকে বিরোধীদলীয় পার্টনারদের নিয়ে স্বল্প সময়ের সরকারের প্রস্তাবে রাজি হয়েছে, পরিস্থিতি ও জনমত সে পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হলে তত্ত্বাবধায়কেও শেষ পর্যন্ত রাজি হবে।
প্রধানমন্ত্রী এমন সময় নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রস্তাব দিলেন যখন বিএনপি বার বার বলছে রোজা, ঈদের বিরতি শেষে এবার কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। যখন সরকার পদ্মা সেতু, অর্থনৈতিক হতাশাজনক চিত্র, দুর্নীতি আর আন্তর্জাতিক মহলে আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক নিয়ে চরম দুরাবস্থায় খাবি খাচ্ছে। ওয়াকেবহাল মহল মনে করছেন, এ মুহূর্তে এ ধরনের প্রস্তাবের পেছনে সরকারের নানা কৌশল থাকতে পারে।
এক. বিবিসি’র মতো মিডিয়ায় এ ধরনের সমঝোতামূলক প্রস্তাব দিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে এ ধারণা দেয়া যে, শেখ হাসিনা গনতন্ত্রের মূল সুর সমঝোতা ও আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো সংকট সমাধানে বিশ্বাসী। আর বিএনপি গোয়ার্তুমি করছে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্য যা প্রকারান্তরে জঙ্গিবাদ বিস্তারে সহায়ক হবে।
দুই. পদ্মা সেতু দুর্নীতি, বিনিয়োগ, জনমত আর ড. ইউনূস নিয়ে সাংঘাতিক বেকায়দায় পড়া সরকার সমঝোতা-সমঝোতা খেলার বাতাবরণ তৈরি করে বিএনপি’র আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এর ধার ভোঁতা করে দেয়া। এর সঙ্গে এ অযৌক্তিক আন্দোলন দমন-পীড়ন জায়েজ করা।
তিন. বিএনপি রাজি না হলে দলছুট বিএনপি নেতাদের মন্ত্রিত্বের মুলা ঝুলিয়ে কথিত বহুদলীয় অন্তর্বর্তী সরকারে ভেড়ানো। যাতে বলা যায় একটি সর্বদলীয় সরকারের অধীনে ভীষণ স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের যাবতীয় আয়োজন আওয়ামী লীগ সম্পন্ন করেছে।
এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পরিবর্তে দলীয় একটি অন্তর্বর্তী সরকারে যে সরকারের প্রধানমন্ত্রী থাকবেন স্বয়ং শেখ হাসিনা সে সরকারের পার্ট হতে কেন বিএনপি রাজি হবে?
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ জামায়াত মিলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে সংযোজনের দাবিতে সৃষ্ট আন্দোলনে দেশ যখন এক অরাজকময় পরিস্থিতিতে, তখনো কমনওয়েলথ মহাসচিবের বিশেষ দূত স্যার স্টিফেন নিনিয়ান দু’পক্ষের সমঝোতার লক্ষে বিএনপি-৫, আওয়ামী লীগ-৫ আর বিএনপি থেকে প্রধানমন্ত্রী অর্থাৎ ৫+৫+১ ফর্মুলা দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল এ যুক্তিতে যে, খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকলে আর তার লাল টেলিফোনটি সক্রিয় থাকলে নির্বাচন অস্বচ্ছ ও পক্ষপাতদুষ্ট হতে বাধ্য। তাহলে আজ এ পরিস্থিতিতে কেন বিএনপি এ প্রস্তাবে সায় দেবে?
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন দলীয়, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক নাকি আওয়ামী প্রভাবাধীন দলীয় অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে হবে তা আন্দোলন, কৌশল আর শক্তির সমন্বিত খেলায় আগামী দেড় বছর সরকার ও বিরোধী দলের পারদর্শিতার ওপর নির্ভর করবে বলে অনেকেই মনে করছেন।
মোহাম্মদ শাহনওয়াজ: সাংবাদিক
ইমেইল: shahnowaz2002@yahoo.com
প্রধানমন্ত্রীর এ প্রস্তাব বিরোধীদলের তরফ থেকে তাৎক্ষণিক প্রত্যাখানের পরও এমন আলোচনা চলছে যে, কারো কাছে গ্রহণযোগ্য হোক আর না হোক, এ প্রস্তাব অন্তত আলোচনার একটা ছোট্ট রাস্তা খুলে দিয়েছে। অন্যদিকে এমনও মতামত দেয়া হচ্ছে যে, জয়ী হলে বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার করার এবং কয়েকটি সংসদীয় কমিটির সভাপতির পদ বিরোধীদলীয় সদস্যদের দেয়ার নির্বাচনী ইশতেহারে করা অঙ্গীকার যেখানে আওয়ামী লীগ নানা মারপ্যাচে রক্ষা করেনি সেখানে কি কারণে দলটি ছোট্ট মন্ত্রিসভার অন্তর্বর্তী সরকারে শত্রু বিএনপিকে জায়গা করে দেবে? এটা কি তাহলে দৃশ্যপটের অন্তরালে আরেক ফাঁদের আয়োজন? যুব, ক্রীড়া, ধর্মের মতো ধার-ভারবিহীন মন্ত্রণালয়ে বিরোধীদের বসানোর আয়োজন কিভাবে রুখা যাবে, একজনের মর্জিতে এগুলো পাল্টানো নির্ভর করবে। এসব প্রক্রিয়ায় পলিটিক্যাল ওমবুড়সমেন কে হবেন?
গত বছর আমেরিকা সফরকালে বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপের প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘চোর-ডাকাতের সঙ্গে আবার কিসের আলাপ-আলোচনা’ বলে উক্তি করেন। কঠোর, কঠিন আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারকে বেকায়দায় ফেলে দাবি আদায়ের মোক্ষম কাজটি বিরোধী দল এখনো করতে সক্ষম না হওয়া সত্ত্বেও হঠাৎ এমন কি ঘটলো যে, সাত সমুদ্র তের নদীর ওপারে গিয়ে শেখ হাসিনাকে এক প্রকার ইউ-টার্ন নিতে হলো? আনন্দ, উদ্বেগ আর দুশ্চিন্তর আসন্ন ঈদের সার্বিক আমেজের মধ্যেও পদ্মা সেতু আর ড. ইউনূস বধ কাব্য উপখ্যানের প্রবল মঞ্চায়নের এমনিতর সময়েও পাশাপাশি আগামী সংসদ নির্বাচন দলীয়, তত্ত্বাবধায়ক না অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে হবে এ প্রশ্ন এখন সর্বত্র।
বাংলাদেশের রাজনীতির প্রথম পাঠের ছাত্রটিও জানেন, কি রকেট গতিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারসংক্রান্ত মামলার পরিত্যক্ত ফাইলের ধুলাবালি সাফ-সুতরো করে মামলাটি দেশের সর্বোচ্চ আদালতের সর্বোচ্চ ব্যক্তিটির মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয়েছিল। সর্বোচ্চ আদালতে সরকারের প্রতিনিধি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমসহ আদালতের নিযুক্ত আট জন এমিকাস কিউরি’র মধ্যে সাত জন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বহাল রাখার পক্ষে মতামত দেয়া সত্ত্বেও তা আমলে না নিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল পক্ষগুলোর মধ্যে সম্পাদিত রাজনৈতিক চুক্তির ফসল তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা আওয়ামী লীগ একতরফাভাবে উদ্যোগ নিয়ে বাতিল করেছিল।
ধর্ম পালনের ধারে কাছে নেই অথচ কিছু খাওয়ার পর মিষ্টি খাওয়ার সুন্নতের অনুসারীদের মতো সরকার তত্ত্বাবধায়কব্যবস্থা সংক্রান্ত আদালতের রায়ের সুবিধাজনক অংশটি লুফে নিয়ে তা কার্যকরে উঠে পড়ে লাগে, নিজেদের মতো করে সংশোধিত হয় সংবিধান। সে থেকে সরকারের অবস্থান পরিষ্কার- কোনো অনির্বাচিত ব্যক্তিবর্গের একদিনের জন্যও ক্ষমতায় বসার সুযোগ নেই এবং আগামী নির্বাচন হবে দলীয় সরকারের অধীনে। অন্যদিকে, বিএনপিসহ বিরোধী দলের অবস্থানও স্পষ্ট। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এ সরকারই বাতিল করেছে। সুতরাং এটা তাদেরকেই বহাল করতে হবে এবং নির্দলীয় সরকার ছাড়া বিএনপি নির্বাচনে যাবে না।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সংশোধিত সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১২৩ (৩) এর ‘ক’ উপ-ধারা অনুযায়ী দলীয় সরকারের অধীনে সংসদ বিলুপ্ত হবার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। এর মমার্থ পরিষ্কার-প্রধানমন্ত্রী, তার মন্ত্রিসভা আর সংসদ বহাল রেখেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন হবে। বর্তমান নির্বাচন কমিশনও সংবিধানের এ অনুচ্ছেদের আওতায় নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিয়ে এগুচ্ছে। তবে বিশেষজ্ঞ ও আশাবাদীরা আশার আলো দেখছেন অনুচ্ছেদে ১২৩ (৩) এর ‘খ’-এ। মেয়াদের দুই সপ্তাহ অথবা তারও আগে সংসদ বিলুপ্ত হলে সেক্ষেত্রে ৯০ দিনের পর নির্বাচন হবে। তখন তো আর প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভা আর সংসদ থাকেবে না। এমতানস্থায় যে নামেই ডাকি না কেন তত্ত্বাবধায়ক অথবা অন্তর্বর্তী সরকার টাইপের কিছু একটা প্রয়োজন হবেই। বিবিসিতে শেখ হাসিনা বিএনপিসহ অন্তর্বর্তী দলীয় সরকারের কথা বললেও সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১২৩ (৩) এর কোন উপ-ধারা অনুযায়ী নির্বাচন হবে সে কথা স্পষ্ট করেননি। আর এ কারণেই প্রধানমন্ত্রীর এ প্রস্তাব গ্রহণ-বর্জনের ঘোষণা দেয়ার পরিবর্তে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর এ প্রস্তাব ধোয়াটে ও বিভ্রান্তিকর। বিএনপি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ছাড়া নির্বাচনে যাবে না। এতদসত্ত্বেও সুচিন্তিতেরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর এ প্রস্তাবের মাজেজা আপাতত যাই হোক না কেন, এটি অন্ততঃ আলোচনার পথটা তো খুলে দিল।
এ ব্যাপারে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল অব. এম সাখাওয়াত হোসেনের একটি মতামত বেশ গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলছেন, “সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১২৩ (৩) (ক) বহাল রেখে নির্বাচন করতে গেলে সেই নির্বাচন কেমন হবে, তা যাদের অতীত নির্বাচন করার অভিজ্ঞতা রয়েছে, তারা ভালোভাবেই উপলব্ধি করছেন। আমি একাধিকবার বলেছি যে, ওই পরিস্থিতিতে নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে দুরূহ ব্যাপার। বিগত সব তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে বাংলাদেশের নির্বাচনগুলো স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হলেও পরাজিত দল ওই ফলাফল গ্রহণ করতে কুণ্ঠিত হয়েছে আর দলীয় সরকার এবং সংসদ বহাল রেখে নির্বাচনের ফলাফল কিভাবে পরাজিত দল মানবে তা বুঝতে বেগ পেতে হয় না।”
প্রধানমন্ত্রী মাস কয়েক আগেও চট্টগ্রামে পলোগ্রাউন্ডে এক জনসভায় বলেছিলেন, তিনি ক্ষমতায় থাকবেন অথবা থাকবেন না, কিন্তু সংসদে একবার বাতিলকৃত তত্ত্বাবধায়কব্যবস্থা কখনো পুনর্জন্ম দেবেন না। অন্যদিকে, যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এক আলোচনাসভা শেষে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, সমঝোতা হবে বলে তিনি আশাবাদী। বাংলাদেশ এ ধরনের সংকট অতীতেও মোকাবেলা করে সামনের দিকে এগিয়ে গেছে। তবে রাজনীতিতে দীর্ঘমেয়াদী ও সুস্থির সমঝোতার পরিবেশ না আসার পেছনে বাধা হিসেবে দেখছেন ইতিহাসের দুটি রক্তাক্ত অধ্যায়- ১৫ আর ২১ আগস্টের বেদনাদায়ক ঘটনা। এছাড়াও আওয়ামী লীগ নেতারা সংসদের ভেতরে বাইরে যেভাবে বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও তার পরিবার নিয়ে অরুচিকর কটূক্তি করেন তাতে যে কারো মনে হবে, ৭৬ বছর পর পর নয়, প্রতি বছর হ্যালির ধুমকেতু দৃশ্যমান হবার সম্ভাবনা সৃষ্টি হলেও হতে পারে কিন্তু আওয়ামী লীগ-বিএনপি’র সমঝোতার সম্ভাবনা একেবারে ক্ষীণ।
এর বিপরীত মতামতও আছে। ক্ষমতায় যাওয়া কিংবা ঠিকে থাকার জন্য আওয়ামী লীগ যেকোনো লেন্থে নিজের অবনমন ঘটাতে পারে। আদর্শ আর রাজনৈতিক অবস্থান সেখানে গৌণ। এ পক্ষ উদাহরণ হিসেবে হাজির করেন- শেখ মুজিবকে তীব্র সমালোচনাকারী সেই বাম কমিউনিস্টদের সঙ্গে মিলেমিশে সরকার গঠন, দলত্যাগী বিএনপি-জামায়াত নেতাদের পদ-পদবী দিয়ে বরণ করে নেয়া, ৯৬ সালে জামায়াতের সঙ্গে যৌথভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার দাবিতে বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন পরিচালনা এবং আজ যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের বিচার চলছে তাদের ইমামতিতে সংসদে একসঙ্গে জামাতে নামাজ আদায়, সেলিম-দেলওয়ার-বসুনিয়া-ময়েজউদ্দিনের হত্যাকারীদের সঙ্গে ভাই-বোনের সম্পর্ক পেতে সরকার গঠন, আর ২০০৭ সালে খেলাফত মজলিসের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করে নির্বাচনী আঁতাত গড়ে তোলা।
এসব প্রেক্ষাপট বিবেচনায় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আওয়ামী লীগ যখন দলীয় থেকে বিরোধীদলীয় পার্টনারদের নিয়ে স্বল্প সময়ের সরকারের প্রস্তাবে রাজি হয়েছে, পরিস্থিতি ও জনমত সে পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হলে তত্ত্বাবধায়কেও শেষ পর্যন্ত রাজি হবে।
প্রধানমন্ত্রী এমন সময় নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রস্তাব দিলেন যখন বিএনপি বার বার বলছে রোজা, ঈদের বিরতি শেষে এবার কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। যখন সরকার পদ্মা সেতু, অর্থনৈতিক হতাশাজনক চিত্র, দুর্নীতি আর আন্তর্জাতিক মহলে আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক নিয়ে চরম দুরাবস্থায় খাবি খাচ্ছে। ওয়াকেবহাল মহল মনে করছেন, এ মুহূর্তে এ ধরনের প্রস্তাবের পেছনে সরকারের নানা কৌশল থাকতে পারে।
এক. বিবিসি’র মতো মিডিয়ায় এ ধরনের সমঝোতামূলক প্রস্তাব দিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে এ ধারণা দেয়া যে, শেখ হাসিনা গনতন্ত্রের মূল সুর সমঝোতা ও আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো সংকট সমাধানে বিশ্বাসী। আর বিএনপি গোয়ার্তুমি করছে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্য যা প্রকারান্তরে জঙ্গিবাদ বিস্তারে সহায়ক হবে।
দুই. পদ্মা সেতু দুর্নীতি, বিনিয়োগ, জনমত আর ড. ইউনূস নিয়ে সাংঘাতিক বেকায়দায় পড়া সরকার সমঝোতা-সমঝোতা খেলার বাতাবরণ তৈরি করে বিএনপি’র আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এর ধার ভোঁতা করে দেয়া। এর সঙ্গে এ অযৌক্তিক আন্দোলন দমন-পীড়ন জায়েজ করা।
তিন. বিএনপি রাজি না হলে দলছুট বিএনপি নেতাদের মন্ত্রিত্বের মুলা ঝুলিয়ে কথিত বহুদলীয় অন্তর্বর্তী সরকারে ভেড়ানো। যাতে বলা যায় একটি সর্বদলীয় সরকারের অধীনে ভীষণ স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের যাবতীয় আয়োজন আওয়ামী লীগ সম্পন্ন করেছে।
এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পরিবর্তে দলীয় একটি অন্তর্বর্তী সরকারে যে সরকারের প্রধানমন্ত্রী থাকবেন স্বয়ং শেখ হাসিনা সে সরকারের পার্ট হতে কেন বিএনপি রাজি হবে?
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ জামায়াত মিলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে সংযোজনের দাবিতে সৃষ্ট আন্দোলনে দেশ যখন এক অরাজকময় পরিস্থিতিতে, তখনো কমনওয়েলথ মহাসচিবের বিশেষ দূত স্যার স্টিফেন নিনিয়ান দু’পক্ষের সমঝোতার লক্ষে বিএনপি-৫, আওয়ামী লীগ-৫ আর বিএনপি থেকে প্রধানমন্ত্রী অর্থাৎ ৫+৫+১ ফর্মুলা দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছিল এ যুক্তিতে যে, খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকলে আর তার লাল টেলিফোনটি সক্রিয় থাকলে নির্বাচন অস্বচ্ছ ও পক্ষপাতদুষ্ট হতে বাধ্য। তাহলে আজ এ পরিস্থিতিতে কেন বিএনপি এ প্রস্তাবে সায় দেবে?
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন দলীয়, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক নাকি আওয়ামী প্রভাবাধীন দলীয় অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে হবে তা আন্দোলন, কৌশল আর শক্তির সমন্বিত খেলায় আগামী দেড় বছর সরকার ও বিরোধী দলের পারদর্শিতার ওপর নির্ভর করবে বলে অনেকেই মনে করছেন।
মোহাম্মদ শাহনওয়াজ: সাংবাদিক
ইমেইল: shahnowaz2002@yahoo.com
No comments