মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা বাতিল যে কারণে সঠিক নয় by শাহ মোহাম্মদ ফাহিম
ইদানীংকালে ডাক্তার ও সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা দূরত্ম লক্ষ্য করা গেলেও এখনো পর্যন্ত ডাক্তারি সমাজে অভিজাত পেশা হিসেবে বিবেচিত। মানুষ এখনো সন্তানকে ডাক্তার বানিয়ে সমাজে নিজের একটা অবস্থান গড়তে চায়। সন্তানের ডাক্তার পরিচয় জাহির করে অনেক অভিভাবকই মানসিক পরিতৃপ্তি লাভ করতে চায়। সেই কারনে সাহিত্যিক পরিভাষায় আরোগ্যশিল্পী হতে চেয়ে অনেক মেধাবী প্রতিবছর ভর্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়।
তারই প্রেক্ষিতে এ বছরও সারা দেশের অসংখ্য শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু রোববার স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এ বছর থেকে মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজগুলোতে ভর্তি পরীক্ষা হবে না। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের জিপিএর ভিত্তিতেই এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করানো হবে। এই ঘোষণার পর পরই সারা দেশের মেডিকেল ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা হতাশ হয়ে পড়ে। তারা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ও মিডিয়ার মাধ্যমে এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। রোববার ও সোমবার দেশের বিভিন্ন স্থানে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভও অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বিষয়েই কিছু কথা বলব।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, জিপিএ-এর ভিত্তিতে ভর্তি করানো হবে। যদি জিপিএ সমান হয়ে যায় তবে বোর্ড থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের নাম্বার সংগ্রহ করা হবে এবং এর ভিত্তিতেই চান্স নিশ্চিত করা হবে। বাংলাদেশে মাদ্রাসা বোর্ডসহ ৯টি শিক্ষা বোর্ড আছে। এই প্রত্যেকটি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষক, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, কেন্দ্রের স্বচ্ছতা, খাতা দেখার গুণগত পদ্ধতি কখনোই এক নয়। এমনকি প্রশ্নপত্রও এক নয়। শিক্ষার্থীদেরও মানের ফারাক বিদ্যমান। ঢাকা শহরের নামকরা স্কুল বা কলেজগুলোর সাথে অনেক বিভাগীয় শহরের সেরা স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থদের মাণগত ফারাক অনেক বেশি। আর গ্রামের কথা তো নাই বা বললাম। গ্রামাঞ্চলের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই শিক্ষক নাই। থাকলেও তাদের জ্ঞানগত যোগ্যতা শহরের মতো নয়। এই অবস্থায় গ্রামের বা মফস্বলের কোন শিক্ষার্থীর পক্ষে ভালো ফলাফল করা সম্ভব হয়ে উঠে না। শহরের সুযোগ-সুবিধাবঞ্চিত থেকে যত মেধাবীই হোক না কেন তাদের জন্য জিপিএ ৫ পাওয়া খুব একটা সহজ না। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষার আগে তিন-চার মাসে তারা শহরে এসে নিজেদের মেধা চর্চা করার সুযোগ পায়।
এছাড়া বোর্ডে খাতা দেখা ও নাম্বার দেয়ার পদ্ধতিতেও অনেক সমস্যা আছে। ঢাকা বোর্ডে এমনিতেই বেশি নাম্বার উঠে। কিন্তু অনেক বোর্ডেই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে তারা খুব একটা নাম্বার দিতে চান না। প্রশ্ন এক না হওয়ার কারণেও নাম্বারে গরমিল হয়। কোন বোর্ডে প্রশ্ন সহজ হয়, কোন বোর্ডে কঠিন হয়। প্রশ্ন সহজ হলে নাম্বার বেশি উঠে। আবার কঠিন হলে নাম্বার কম উঠে। ব্যবহারিক এর নাম্বার নিয়েও শিক্ষার্থীদের অনেক অভিযোগ আছে। অনেক শিক্ষক ব্যববহারিকের নাম্বার প্রদানের সুযোগে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অনেক টাকা হাতিয়ে নেয়। তাছাড়া বোর্ড থেকে নাম্বার নেয়া হলে বোর্ডের দুর্নীতির সুযোগ বাড়বে। এখন কোন বোর্ডেই নাম্বার দেয়া হয় না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে নাম্বার চাওয়া হলে সেখানে যে ব্যাপক দুর্নীতি হবে তা আমাদের দেশের বিদ্যমান ব্যবস্থা থেকে সহজেই অনুমান করা যায়।
আমাদের দেশের পাবলিক পরীক্ষাগুলোর সিস্টেমেই অনেক গলদ আছে। সারা বছর না পড়ে পরীক্ষার আগে বেশ কিছু সাজেশান পড়েই এই সব পরীক্ষায় ভালো করা সম্ভব। অনেক শিক্ষকই তাদের পসার বাড়ানোর জন্য সংক্ষিপ্ত সাজেশান তৈরি করেন। জেলা শহরগুলোতে এটা বেশি দেখা যায়। এই সব সাজেশান তৈরিতে তারা অনেক দুর্নীতির আশ্রয় নেয় বলে শোনা যায়। যে পাবলিক পরীক্ষায় হাজার হাজার স্টুডেন্ট দেশের সেরা রেজাল্ট করে, সেই পরীক্ষার রেজাল্ট উচ্চশিক্ষায় সুযোগ লাভের মাণদণ্ড হতে পারে কিনা তা নিয়ে চিন্তা করা দরকার।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক দুই পরীক্ষা মিলিয়ে অন্তত ৮ জিপিএ থাকলেই যে কেউ আবেদন করতে পারবে। এই বছর জিপিএ ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীই আছে প্রায় ৬২ হাজার। দেশের সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজগুলোতে সব মিলিয়ে আসন সংখ্য ৩৩৮৯টি। বেসরকারিতে ৫১২৫টি। অর্থাৎ জিপিএ ৫ প্রাপ্তদেরই চান্স পাওয়াই নিশ্চিত না। সেখানে এই বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থীদের দিয়ে ফর্ম কেনানোটা এক ধরনের প্রতারণার শামিল।
প্রথম আলো নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেডিকেল কলেজের এক অধ্যক্ষের বরাতে জানিয়েছে কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষা বাদ দিলেই কোচিং বাণিজ্য বন্ধ হবে না। দেশে সব প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্যই বিভিন্ন ধরনের কোচিং সেন্টারের দৌরাত্ম্য চোখে পড়ে। যারা মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না তারা ঠিকই অন্য কোনো কোচিংয়ের দ্বারস্ত হবে।
তাছাড়া আমাদের দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখনো শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষার জন্য উপযোগী করে গড়ে তোলে না। বিদ্যমান ব্যবস্থায় পাঠ্য বই না পড়ে শুধু গাইড বই পড়িয়ে অনেক শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফলের জন্য উপযোগী করে গড়ে তোলেন। কিন্তু কোচিং সেন্টারগুলো ব্যবসা করা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের অনেক কিছুই নতুন করে শিখায়। এটাই বাস্তবতা। আমার নিজের এবং পরিচিতজনদের অভিজ্ঞতা থেকেই এই কথা বলছি। বুয়েটের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ প্রথম আলো পত্রিকা মারফত এটা স্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন তার অনেক ছাত্রই বুয়েট ভর্তি পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়ার পিছনে কোচিং সেন্টারের অবদানের কথা স্বীকার করে। অথচ তারা নিজ কলেজের কোনো অবদান উল্লেখ করে না। তার মতে আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাব্যবস্থা অকার্যকর হলেও কোচিং সেন্টারগুলো অন্তত কিছুটা কার্যকর ভূমিকা রাখছে। উনার কথাটা অনেকাংশেই সত্য। ঢাকা শহরের গুটিকয়েক নামকরা কলেজ ছাড়া সারা দেশের আর কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার উপযোগী করে গড়ে তুলতে পারছে না।
তবে কোচিং ব্যবসা বন্ধ করার উদ্দেশ্যে ভর্তি পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে বলা হচ্ছে। কিন্তু কোচিং মালিকদের অন্তত এই বছর কোন ক্ষতি হচ্ছে না। কারণ শিক্ষার্থীরা কোচিংয়ে ভর্তির সময়ই পুরো টাকা দিয়ে ভর্তি হয়ে যায়। ফলে ক্ষতি যা হওয়ার তা শিক্ষার্থীদেরই হচ্ছে। একদিকে তাদের টাকাও খরচও হয়েছে। অন্যদিকে সময় স্বল্পতার কারনে এই মুহুর্তে বুয়েট বা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি নেয়াও তাদের জন্য সম্ভব না।
পরীক্ষা বাতিলের পিছনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্তাব্যক্তিদের আরেকটি যুক্তি হচ্ছে ভর্তি পরীক্ষা না থাকলে প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার ঝুঁকি থাকবে না। গত বছর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ছাপাখানা থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের চেষ্টা, পরীক্ষার আগে ভুয়া প্রশ্নপত্র বেচাকেনাসহ নানা ধরনের সমস্যা হওয়ায় তারা এই সিদ্ধান্তের পক্ষে মত দেন। তাদের মতে সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির প্রতিশ্রুতি দিয়ে যেসব কোচিং সেন্টার নানাভাবে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের প্রতারণা করছে ভর্তি পরীক্ষা না হলে তাও বন্ধ হবে। কিন্তু প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার দায়ভার তো শিক্ষার্থীদের নেয়ার কথা না। এটা তো সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের ব্যর্থতা। আর যারা আগে প্রশ্ন ফাঁসের দুর্নীতি করত তারা যে এখন আরো বড় দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়বে না তার নিশ্চয়তা কি? আগে যখন লিখিত ভর্তি পরীক্ষা ছিল না তখন শুধুমাত্র মৌখিক পরীক্ষা হতো। সে প্রক্রিয়ায় ডাক্তারদের সন্তানরা অতিরিক্ত সুযোগ পেয়ে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতো বলে অভিযোগ ছিল। এখনো বোর্ডের মাধ্যমে নাম্বার সংগ্রহের নামে যে এই ধরনের দুর্নীতি হবে না তার নিশ্চয়তা কে দিবে?
এখানে আরেকটা বিষয় উল্লেখ করতে চাই। ২০০৬ সালের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি সবার কাছেই পরিষ্কার। কিন্তু সে সময় অনেক অন্দোলন, প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও মামলা করার পরও এর বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয় নাই। এখনো পর্যন্ত এর কোন গ্রহণযোগ্য সুরাহাও হয় নাই। এত বড় অপরাধ করার পরও বিচার না হওয়ায় অপরাধীদের সাহস বেড়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক। তাই শিক্ষার্থীদের ভুক্তভোগী না করে আগে দুর্নীতি বন্ধ করার ব্যবস্থা করা উচিত।
আরেকটি গুরুতর সমস্যা যেটি দেখা দিবে তা হচ্ছে বুয়েট ভর্তি পরীক্ষার জন্য যে কয়জন যোগ্য বলে বিবেচিত হবে তারাও ডাক্তারি পড়ার জন্য মনোনীত হবে। বুয়েটের চলমান অস্থিরতার কারণে সেখানে ভর্তি পরীক্ষা কবে হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নাই। বুয়েট ভর্তি পরীক্ষা হওয়ার পর মেডিকেলে চান্সপ্রাপ্ত বুয়েট ভর্তিচ্ছুরা বুয়েটে গিয়ে ভর্তি হবে। তখন এক সাথে মেডিকেলের কয়েকশ আসন খালি হয়ে যেতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও একই সমস্যা দেখা দিবে। এমনিতেই আমরা আমাদের সব মেধাবীদের উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে পারি না। তখন এই বিশাল সংখ্যক ফাঁকা আসনের দায়ভার কে নিবে।
আরেকটা বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রতি বছর শিক্ষার্থীদের বড় একটা অংশ দ্বিতীয়বারের মতো মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়। ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের আগেই দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ দানের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়াটা জরুরি ছিল। প্রতিবছর বড় একটা অংশ দ্বিতীয়বারের মত মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়। চান্সপ্রাপ্তদের মধ্যে এদের সংখ্যাই বেশি থাকে। এতে দেখা যায় প্রথমবারের অনেক শিক্ষার্থী হয় পিছনের দিকের মেডিকেল বা কোনো মেডিকেলেই হয়তো চান্স পায় না। প্রতিবছরই এই নিয়ম বদলানোর কথা শোনা যায়। কিন্তু তা আর হয়ে উঠে না। এবারও তারা ফর্ম তুলতে পারবে পারবে কিনা সে ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত করে কিছু বলা হয় নাই। বিজ্ঞপ্তি দিলে বোঝা যাবে। যদি অন্যান্য বছরের মতো তারা ফর্ম তুলতে পারে তাহলে ফলাফলের ভিত্তিতে তাদেরই বিশাল একটা অংশ চান্স পেয়ে যাবে। আরেকটা বড় সমস্যা দেখা দিবে। গত বছর জিপিও ৫ প্রাপ্ত যারা ভালো কোন প্রতিষ্ঠানে চান্স পায় নাই বা পেলেও তা তাদের আশানুরূপ হয় নাই তারাও ফর্ম তুলবে। এর পাশাপাশি ডাক্তার হতে ইচ্ছুক অন্য প্রতিষ্ঠানে ভর্তি অনেকেই ফর্ম তুলবে। ফলস্বরূপ অনেক উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেরই আসন খালি হয়ে যাবে যা আর পূরণ করা সম্ভব হবে না। এতে একদিকে এ বছর পাশ করা মেধাবীদের সুযোগ কমবে। অন্যদিকে উচ্চশিক্ষা তেকে বঞ্চিত হবে অনেক শিক্ষার্থী।
যে সমস্যাটা সব চাইতে জটিল হিসেবে আমার কাছে বোধগম্য হচ্ছে তা হলো, মফস্বল ও গ্রামের শিক্ষার্থীরা ডাক্তারি পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। এতে উত্তর উপনিবেশকালের ডাক্তারদের মধ্যে যে সমস্যাগুলো পরিলক্ষিত হয় তা আরো বাড়বে। শহরের ডাক্তাররা গ্রামে যেতে চায় না। এমনকি শহরের সাধারণ মানুষদের সাথেও তাদের খুব একটা সামাজিক নৈকট্য নাই। সমাজের উচ্চমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর সন্তানেরা কেউ তাদের ফলাফলের জোরে সরকারি মেডিকেল কলেজে পড়বে। আর কেউ কেউ তাদের আর্থিক সঙ্গতির কারনে বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হবে। আর স্বাভাবিক স্বাস্থ্যসেবা হতে বঞ্চিত হবে সাধারণ মানুষ।
সরকারের উচিত আরো পর্যালোচনা ও চিন্তা-গবেষণার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। এমন কিছু করা ছিক না যা বিরাজমান সমস্যাকে আরো বাড়িয়ে দিবে। ভর্তি পরীক্ষা ছাড়া উচ্চশিক্ষার সুযোগ প্রদান কখনোই গ্রহণযোগ্য হওয়ার কথা না। আর কোচিং বন্ধ করতে হলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পড়া-লেখার মান বাড়াতে হবে। গ্রামের প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রয়োজনীয় ও কাঙ্ক্ষিত মানের শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। সর্বোপরি দুর্নীত বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এই সব বিষয়ে সুরাহা না করে ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়াটা সুফল বয়ে আনবে না।
শাহ মোহাম্মদ ফাহিম: স্বাস্থ্য ও মানবিক বিষয়াদির লেখক।
ইমেইল: fahim.ccc@gmail.com
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, জিপিএ-এর ভিত্তিতে ভর্তি করানো হবে। যদি জিপিএ সমান হয়ে যায় তবে বোর্ড থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের নাম্বার সংগ্রহ করা হবে এবং এর ভিত্তিতেই চান্স নিশ্চিত করা হবে। বাংলাদেশে মাদ্রাসা বোর্ডসহ ৯টি শিক্ষা বোর্ড আছে। এই প্রত্যেকটি শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষক, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, কেন্দ্রের স্বচ্ছতা, খাতা দেখার গুণগত পদ্ধতি কখনোই এক নয়। এমনকি প্রশ্নপত্রও এক নয়। শিক্ষার্থীদেরও মানের ফারাক বিদ্যমান। ঢাকা শহরের নামকরা স্কুল বা কলেজগুলোর সাথে অনেক বিভাগীয় শহরের সেরা স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থদের মাণগত ফারাক অনেক বেশি। আর গ্রামের কথা তো নাই বা বললাম। গ্রামাঞ্চলের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই শিক্ষক নাই। থাকলেও তাদের জ্ঞানগত যোগ্যতা শহরের মতো নয়। এই অবস্থায় গ্রামের বা মফস্বলের কোন শিক্ষার্থীর পক্ষে ভালো ফলাফল করা সম্ভব হয়ে উঠে না। শহরের সুযোগ-সুবিধাবঞ্চিত থেকে যত মেধাবীই হোক না কেন তাদের জন্য জিপিএ ৫ পাওয়া খুব একটা সহজ না। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষার আগে তিন-চার মাসে তারা শহরে এসে নিজেদের মেধা চর্চা করার সুযোগ পায়।
এছাড়া বোর্ডে খাতা দেখা ও নাম্বার দেয়ার পদ্ধতিতেও অনেক সমস্যা আছে। ঢাকা বোর্ডে এমনিতেই বেশি নাম্বার উঠে। কিন্তু অনেক বোর্ডেই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে তারা খুব একটা নাম্বার দিতে চান না। প্রশ্ন এক না হওয়ার কারণেও নাম্বারে গরমিল হয়। কোন বোর্ডে প্রশ্ন সহজ হয়, কোন বোর্ডে কঠিন হয়। প্রশ্ন সহজ হলে নাম্বার বেশি উঠে। আবার কঠিন হলে নাম্বার কম উঠে। ব্যবহারিক এর নাম্বার নিয়েও শিক্ষার্থীদের অনেক অভিযোগ আছে। অনেক শিক্ষক ব্যববহারিকের নাম্বার প্রদানের সুযোগে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অনেক টাকা হাতিয়ে নেয়। তাছাড়া বোর্ড থেকে নাম্বার নেয়া হলে বোর্ডের দুর্নীতির সুযোগ বাড়বে। এখন কোন বোর্ডেই নাম্বার দেয়া হয় না। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে নাম্বার চাওয়া হলে সেখানে যে ব্যাপক দুর্নীতি হবে তা আমাদের দেশের বিদ্যমান ব্যবস্থা থেকে সহজেই অনুমান করা যায়।
আমাদের দেশের পাবলিক পরীক্ষাগুলোর সিস্টেমেই অনেক গলদ আছে। সারা বছর না পড়ে পরীক্ষার আগে বেশ কিছু সাজেশান পড়েই এই সব পরীক্ষায় ভালো করা সম্ভব। অনেক শিক্ষকই তাদের পসার বাড়ানোর জন্য সংক্ষিপ্ত সাজেশান তৈরি করেন। জেলা শহরগুলোতে এটা বেশি দেখা যায়। এই সব সাজেশান তৈরিতে তারা অনেক দুর্নীতির আশ্রয় নেয় বলে শোনা যায়। যে পাবলিক পরীক্ষায় হাজার হাজার স্টুডেন্ট দেশের সেরা রেজাল্ট করে, সেই পরীক্ষার রেজাল্ট উচ্চশিক্ষায় সুযোগ লাভের মাণদণ্ড হতে পারে কিনা তা নিয়ে চিন্তা করা দরকার।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক দুই পরীক্ষা মিলিয়ে অন্তত ৮ জিপিএ থাকলেই যে কেউ আবেদন করতে পারবে। এই বছর জিপিএ ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীই আছে প্রায় ৬২ হাজার। দেশের সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজগুলোতে সব মিলিয়ে আসন সংখ্য ৩৩৮৯টি। বেসরকারিতে ৫১২৫টি। অর্থাৎ জিপিএ ৫ প্রাপ্তদেরই চান্স পাওয়াই নিশ্চিত না। সেখানে এই বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থীদের দিয়ে ফর্ম কেনানোটা এক ধরনের প্রতারণার শামিল।
প্রথম আলো নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেডিকেল কলেজের এক অধ্যক্ষের বরাতে জানিয়েছে কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষা বাদ দিলেই কোচিং বাণিজ্য বন্ধ হবে না। দেশে সব প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্যই বিভিন্ন ধরনের কোচিং সেন্টারের দৌরাত্ম্য চোখে পড়ে। যারা মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না তারা ঠিকই অন্য কোনো কোচিংয়ের দ্বারস্ত হবে।
তাছাড়া আমাদের দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখনো শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষার জন্য উপযোগী করে গড়ে তোলে না। বিদ্যমান ব্যবস্থায় পাঠ্য বই না পড়ে শুধু গাইড বই পড়িয়ে অনেক শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফলের জন্য উপযোগী করে গড়ে তোলেন। কিন্তু কোচিং সেন্টারগুলো ব্যবসা করা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের অনেক কিছুই নতুন করে শিখায়। এটাই বাস্তবতা। আমার নিজের এবং পরিচিতজনদের অভিজ্ঞতা থেকেই এই কথা বলছি। বুয়েটের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ প্রথম আলো পত্রিকা মারফত এটা স্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন তার অনেক ছাত্রই বুয়েট ভর্তি পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়ার পিছনে কোচিং সেন্টারের অবদানের কথা স্বীকার করে। অথচ তারা নিজ কলেজের কোনো অবদান উল্লেখ করে না। তার মতে আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাব্যবস্থা অকার্যকর হলেও কোচিং সেন্টারগুলো অন্তত কিছুটা কার্যকর ভূমিকা রাখছে। উনার কথাটা অনেকাংশেই সত্য। ঢাকা শহরের গুটিকয়েক নামকরা কলেজ ছাড়া সারা দেশের আর কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার উপযোগী করে গড়ে তুলতে পারছে না।
তবে কোচিং ব্যবসা বন্ধ করার উদ্দেশ্যে ভর্তি পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে বলা হচ্ছে। কিন্তু কোচিং মালিকদের অন্তত এই বছর কোন ক্ষতি হচ্ছে না। কারণ শিক্ষার্থীরা কোচিংয়ে ভর্তির সময়ই পুরো টাকা দিয়ে ভর্তি হয়ে যায়। ফলে ক্ষতি যা হওয়ার তা শিক্ষার্থীদেরই হচ্ছে। একদিকে তাদের টাকাও খরচও হয়েছে। অন্যদিকে সময় স্বল্পতার কারনে এই মুহুর্তে বুয়েট বা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য প্রস্তুতি নেয়াও তাদের জন্য সম্ভব না।
পরীক্ষা বাতিলের পিছনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্তাব্যক্তিদের আরেকটি যুক্তি হচ্ছে ভর্তি পরীক্ষা না থাকলে প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার ঝুঁকি থাকবে না। গত বছর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ছাপাখানা থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের চেষ্টা, পরীক্ষার আগে ভুয়া প্রশ্নপত্র বেচাকেনাসহ নানা ধরনের সমস্যা হওয়ায় তারা এই সিদ্ধান্তের পক্ষে মত দেন। তাদের মতে সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির প্রতিশ্রুতি দিয়ে যেসব কোচিং সেন্টার নানাভাবে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের প্রতারণা করছে ভর্তি পরীক্ষা না হলে তাও বন্ধ হবে। কিন্তু প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার দায়ভার তো শিক্ষার্থীদের নেয়ার কথা না। এটা তো সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের ব্যর্থতা। আর যারা আগে প্রশ্ন ফাঁসের দুর্নীতি করত তারা যে এখন আরো বড় দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়বে না তার নিশ্চয়তা কি? আগে যখন লিখিত ভর্তি পরীক্ষা ছিল না তখন শুধুমাত্র মৌখিক পরীক্ষা হতো। সে প্রক্রিয়ায় ডাক্তারদের সন্তানরা অতিরিক্ত সুযোগ পেয়ে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতো বলে অভিযোগ ছিল। এখনো বোর্ডের মাধ্যমে নাম্বার সংগ্রহের নামে যে এই ধরনের দুর্নীতি হবে না তার নিশ্চয়তা কে দিবে?
এখানে আরেকটা বিষয় উল্লেখ করতে চাই। ২০০৬ সালের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি সবার কাছেই পরিষ্কার। কিন্তু সে সময় অনেক অন্দোলন, প্রতিবাদ, প্রতিরোধ ও মামলা করার পরও এর বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয় নাই। এখনো পর্যন্ত এর কোন গ্রহণযোগ্য সুরাহাও হয় নাই। এত বড় অপরাধ করার পরও বিচার না হওয়ায় অপরাধীদের সাহস বেড়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক। তাই শিক্ষার্থীদের ভুক্তভোগী না করে আগে দুর্নীতি বন্ধ করার ব্যবস্থা করা উচিত।
আরেকটি গুরুতর সমস্যা যেটি দেখা দিবে তা হচ্ছে বুয়েট ভর্তি পরীক্ষার জন্য যে কয়জন যোগ্য বলে বিবেচিত হবে তারাও ডাক্তারি পড়ার জন্য মনোনীত হবে। বুয়েটের চলমান অস্থিরতার কারণে সেখানে ভর্তি পরীক্ষা কবে হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নাই। বুয়েট ভর্তি পরীক্ষা হওয়ার পর মেডিকেলে চান্সপ্রাপ্ত বুয়েট ভর্তিচ্ছুরা বুয়েটে গিয়ে ভর্তি হবে। তখন এক সাথে মেডিকেলের কয়েকশ আসন খালি হয়ে যেতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও একই সমস্যা দেখা দিবে। এমনিতেই আমরা আমাদের সব মেধাবীদের উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত করতে পারি না। তখন এই বিশাল সংখ্যক ফাঁকা আসনের দায়ভার কে নিবে।
আরেকটা বিষয় খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রতি বছর শিক্ষার্থীদের বড় একটা অংশ দ্বিতীয়বারের মতো মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়। ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের আগেই দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ দানের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়াটা জরুরি ছিল। প্রতিবছর বড় একটা অংশ দ্বিতীয়বারের মত মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়। চান্সপ্রাপ্তদের মধ্যে এদের সংখ্যাই বেশি থাকে। এতে দেখা যায় প্রথমবারের অনেক শিক্ষার্থী হয় পিছনের দিকের মেডিকেল বা কোনো মেডিকেলেই হয়তো চান্স পায় না। প্রতিবছরই এই নিয়ম বদলানোর কথা শোনা যায়। কিন্তু তা আর হয়ে উঠে না। এবারও তারা ফর্ম তুলতে পারবে পারবে কিনা সে ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত করে কিছু বলা হয় নাই। বিজ্ঞপ্তি দিলে বোঝা যাবে। যদি অন্যান্য বছরের মতো তারা ফর্ম তুলতে পারে তাহলে ফলাফলের ভিত্তিতে তাদেরই বিশাল একটা অংশ চান্স পেয়ে যাবে। আরেকটা বড় সমস্যা দেখা দিবে। গত বছর জিপিও ৫ প্রাপ্ত যারা ভালো কোন প্রতিষ্ঠানে চান্স পায় নাই বা পেলেও তা তাদের আশানুরূপ হয় নাই তারাও ফর্ম তুলবে। এর পাশাপাশি ডাক্তার হতে ইচ্ছুক অন্য প্রতিষ্ঠানে ভর্তি অনেকেই ফর্ম তুলবে। ফলস্বরূপ অনেক উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেরই আসন খালি হয়ে যাবে যা আর পূরণ করা সম্ভব হবে না। এতে একদিকে এ বছর পাশ করা মেধাবীদের সুযোগ কমবে। অন্যদিকে উচ্চশিক্ষা তেকে বঞ্চিত হবে অনেক শিক্ষার্থী।
যে সমস্যাটা সব চাইতে জটিল হিসেবে আমার কাছে বোধগম্য হচ্ছে তা হলো, মফস্বল ও গ্রামের শিক্ষার্থীরা ডাক্তারি পড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। এতে উত্তর উপনিবেশকালের ডাক্তারদের মধ্যে যে সমস্যাগুলো পরিলক্ষিত হয় তা আরো বাড়বে। শহরের ডাক্তাররা গ্রামে যেতে চায় না। এমনকি শহরের সাধারণ মানুষদের সাথেও তাদের খুব একটা সামাজিক নৈকট্য নাই। সমাজের উচ্চমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর সন্তানেরা কেউ তাদের ফলাফলের জোরে সরকারি মেডিকেল কলেজে পড়বে। আর কেউ কেউ তাদের আর্থিক সঙ্গতির কারনে বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি হবে। আর স্বাভাবিক স্বাস্থ্যসেবা হতে বঞ্চিত হবে সাধারণ মানুষ।
সরকারের উচিত আরো পর্যালোচনা ও চিন্তা-গবেষণার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। এমন কিছু করা ছিক না যা বিরাজমান সমস্যাকে আরো বাড়িয়ে দিবে। ভর্তি পরীক্ষা ছাড়া উচ্চশিক্ষার সুযোগ প্রদান কখনোই গ্রহণযোগ্য হওয়ার কথা না। আর কোচিং বন্ধ করতে হলে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পড়া-লেখার মান বাড়াতে হবে। গ্রামের প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রয়োজনীয় ও কাঙ্ক্ষিত মানের শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। সর্বোপরি দুর্নীত বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এই সব বিষয়ে সুরাহা না করে ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়াটা সুফল বয়ে আনবে না।
শাহ মোহাম্মদ ফাহিম: স্বাস্থ্য ও মানবিক বিষয়াদির লেখক।
ইমেইল: fahim.ccc@gmail.com
No comments