পাঠকের মন্তব্য: অনলাইন থেকে- জবাবদিহির জায়গাটি ধ্বংস করলে গণতন্ত্র থাকে না
প্রথম আলোর অনলাইনে (prothom-alo.com) প্রতিদিন রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ, খেলা, প্রযুক্তি ও ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে পাঠকের মতামত প্রকাশিত হয়। তাঁদের এসব মতামত চিন্তার খোরাক জোগায় অন্যদের। গত কয়েক দিনে বিভিন্ন বিষয়ে পাঠকদের কিছু মন্তব্য ঈষৎ সংক্ষেপিত আকারে ছাপা হলো।
দেশপ্রেমিকে পদোন্নতি
সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে দেশপ্রেমিক বলে অভিহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই প্রতিক্রিয়ায় গত শনিবার এই নিবন্ধ লিখেছেন প্রাবন্ধিক সৈয়দ আবুল মকসুদ। এ প্রসঙ্গে শামিম উর রায়হান লিখেছেন: আমি দেশপ্রেমিকের সংজ্ঞা খুঁজছিলাম। আর একটু যদি লিখতেন! কেউ দুর্নীতির অভিযোগে পদত্যাগ করলে প্রকৃত দেশপ্রেমিক হবেন—এ বিল সংসদে কবে পাস হচ্ছে?
মো. নাসিম ওয়াহিদ: এই মুহূর্তে খেলার ফলাফল—বিরোধী পক্ষ ১—সরকার পক্ষ ০; তবে যেকোনো সময় স্কোর ২-০ হয়ে যেতে পারে। কারণ, বিরোধী পক্ষের দুই বিদেশি ফরোয়ার্ড বিশ্বব্যাংক ও মজীনা দুই প্রান্ত থেকে বেশ আক্রমণ করে যাচ্ছেন।
পঙ্কজনাথ: যাঁদের বিরুদ্ধে টাকার বস্তাসহ ধরা পড়া, পদ্মা সেতু নিয়ে কেলেঙ্কারির অভিযোগ, তাঁদের যদি তথাকথিত দেশপ্রেমিক বলা হয়, তবে তো এ দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। প্রধানমন্ত্রী নিজে পদত্যাগ করে আগাম নির্বাচনের ব্যবস্থা করে এবার নিজেকে দেশপ্রেমিক প্রমাণ করুন। আবুল হোসেন কেন বিশ্বব্যাংকের অভিযোগের পরপরই পদত্যাগ করে দেশপ্রেমিক হলেন না? কেন পানি এত ঘোলা করা হলো?
মহিউদ্দিন মাসউদ: কোনো গণতান্ত্রিক সরকারের প্রধান এমন বক্তব্য দেন না; কারণ, জবাবদিহি ও স্বচ্ছতার জায়গাটি ধ্বংস করলে গণতন্ত্র থাকে না। আমাদের দেশে এটি সমস্যা নয়; কারণ, এখানে গণতান্ত্রিক বোধ প্রায় শূন্য। রাষ্ট্রপরিচালকেরা তো গণতন্ত্রের অর্থ বোঝেন তাঁদের অসীম ক্ষমতার ইচ্ছেমতো ব্যবহার। অসীম ক্ষমতায় দুর্নীতি অনিবার্য; আর সে কারণেই আবুল হোসেন কিংবা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তরা দেশপ্রেমিক হয়ে যান।
আবুল হোসেন দেশপ্রেমিক
লন্ডনে সাংবাদিকদের কাছে এভাবেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এ ব্যাপারে পাঠকের প্রতিক্রিয়া ততটা ইতিবাচক ছিল না।
মাহতাফ হোসেন লিখেছেন: আওয়ামী লীগ ও তার সরকারের উদ্ভাবিত সংজ্ঞা অনুযায়ী বাংলা অভিধানে ‘দেশদ্রোহ’ ও ‘দেশপ্রেম’ কথা দুটি নতুন করে সংজ্ঞায়িত করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই দেখছি। একজন ব্যক্তিকে ব্যঙ্গোক্তি করায় তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা না হয়ে ‘দেশদ্রোহ’ মামলা হয়, আর সৈয়দ আবুল হোসেনের মতো একজন চরম বিতর্কিত ব্যক্তিকে ঘোষণা করা হয় ‘দেশপ্রেমিক’। কী আশ্চর্য এ দেশ! সেলুকাস!
দেশের ষোলো কোটি মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতু আঁতুড়ঘরে মারা যাওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় যেখানে সব মানুষ মর্মাহত, সংক্ষুব্ধ, সেখানে দুর্ঘটনার পর আবুল হোসেনকে পদত্যাগ করিয়ে ‘দেশপ্রেমিক’ সাজালে তা আমজনতা মেনে নেবে—আপনারা বুঝলেন কেমন করে?
মো. আবদুল হাকিম: আমরা ভোট দিলাম আওয়ামী লীগকে, যারা ঘোষণা দিয়েছিল দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করার। জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ হয়ে গেল আবুল হোসেনদের। হায় রে বাঙালির কপাল! যে যায় লঙ্কায় সে-ই হয় রাবণ।
মো. শওকত আলী: ‘আমি কী গাই আর আমার সারিন্দা কী বাজায়!’ প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর অর্থমন্ত্রীর কথাবার্তায় মানুষ বেশ ভালোভাবেই বুঝেছে সৈয়দ সাহেবের খুঁটির জোর কোথায়। আর এ-ও বোঝা যাচ্ছে, বিশ্বব্যাংকের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার ব্যাপারে ‘আশাবাদী’ অর্থমন্ত্রী কী অদ্ভুত কসরতই না করে যাচ্ছেন! আরে বাবা, নিজের অর্থেই যদি পদ্মা সেতু করা সম্ভব তবে সেই ট্রেন ছেড়ে দিয়ে আবার ‘দুর্নীতিবাজ’ বিশ্বব্যাংকের পেছনে ছোটাটা কি হাস্যকর নয়? দেশের মানুষকে তাঁরা কী পেয়েছেন?
মো. শরিফুল ইসলাম: আমাদের দেশে এত দেশপ্রেমিক! তার পরও দেশের কোনো উন্নতি হচ্ছে না! আওয়ামী লীগের উচিত আলাদা একটা ইউনিফর্ম তৈরি করে নিজেদের মন্ত্রী, সাংসদ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের তা পরতে বাধ্য করা, যেখানে লেখা থাকবে—‘আমরা দেশপ্রেমিক’। তাহলেই কষ্ট করে আর নিজেদের ঢোল নিজেদের পেটাতে হবে না। আমরা সাধারণ জনগণ বুঝে যাব আপনারা দেশপ্রেমিক!
মশিউল হোসেন: আবুল হোসেনের মতো দেশপ্রেমিক নেতার অভাব নেই আমাদের দেশে, কিন্তু নীতিবান নেতার অভাব আছে। আমাদের প্রয়োজন নীতিবান নেতা।
পাঠকের নিজস্ব হুমায়ূন
গত শুক্রবার প্রথম আলোর সাহিত্য-সাময়িকীতে এটি লিখেছেন আনিসুল হক। এ প্রসঙ্গে মো. জাকির হোসেন লিখেছেন: একসময় হিমু হতে ইচ্ছে করত, একসময় নিজেকে মিসির আলি মনে হতো। ‘মেঘ বলেছে যাব যাব’-এর শুভ্র আমার প্রিয় চরিত্রের একটি। লেখক হুমায়ূন পাঠককে মিশিয়ে ফেলতে পারতেন চরিত্রগুলোর সঙ্গে। বাকের ভাইয়ের যেন ফাঁসি না হয়, সে জন্য বড় ভাইদের সঙ্গে রাতে মিছিলে যোগ দিয়েছিলাম। শুধু হুমায়ূন স্যারের নাটকের একটি চরিত্রের জন্য মিছিলে যেতে বাবা-মা বাধা দেননি। আমার হুমায়ূন আহমেদকে হারালাম। কী হতো বিধাতা ওনাকে আরও দীর্ঘজীবী করলে?
মশিউর রহমান খান: ‘শঙ্খনীল কারাগার’ বইটি একজনের কাছ থেকে ধার করে পড়তে এনে আর ফেরত দিইনি। বইটি এখনো আছে আমার কাছে। কালো বলে রাবেয়াকে মা কালি বলায় তার বাবার কী উদ্বেগ! আসলে হুমায়ূন আহমেদের বইগুলোর কাগজের মান ভালো থাকত আর দামও তুলনামূলক একটু বেশি হতো বলে নিজে না কিনে অন্যদের দিয়ে কিনিয়ে তার কাছ থেকে ধার করে পড়তাম। ইচ্ছা করে কোনোদিন তাঁর নাটক দেখা মিস করিনি। খবরের কাগজে তিনি কিছু লিখলেও তা পড়া বাদ যেত না। আর এখন? হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে প্রতিদিন কে কী বলছেন বা লিখছেন খবরের কাগজে, খুঁজে খুঁজে সেগুলো পড়ি। আসলে মারা যাওয়ার পর থেকে কী রকম একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম, তা হয়তো আমার মতো কেউ একজনই টের পাচ্ছেন।
বিদ্যুতের দাম বাড়াতে ডাকা সম্মেলন স্থগিত
বিদ্যুতের দাম বাড়ানো না-বাড়ানো নিয়ে গত বুধবার সারা দিন নানা ঘটনা ঘটতে থাকে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে। তবে পাঠকের কাছে এই নাটকের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ছিল আবার বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি।
এ সম্পর্কে মো. জিয়াবুদ্দিন লিখেছেন: এই হলো সেই দেশ, যেখানে সার্টিফিকেটে সরকারি লোক বানান ভুল করবেন আর সাধারণ মানুষ অতিরিক্ত টাকা খরচ করে ভুলটা ঠিক করাতে গিয়ে জুতার শুকতলা খোয়াবেন। যিনি ভুল করেছেন তাঁর কোনো অপরাধ নেই, শাস্তিও নেই। কুইক রেন্টাল বিদ্যুতের সিদ্ধান্তে হাজার কোটি টাকা লোপাট হলো। যাঁদের সিদ্ধান্তে এটা হলো, তাঁদের কিছু আসবে-যাবে না; তাঁরা ঠিক পাজেরো গাড়িতে করে ঘুরে বেড়াবেন, ২৪ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাবেন। আর তার মাশুল দিতে হবে আমাদের। রান্নার জন্য বেতন দিয়ে পাচক আনলাম, এখন কিনা পাচক আমাদের রাঁধতে বলেন, তিনি শুধু খাবেন ।
সফিকুল ইসলাম: দুই মাস ধরে বিদ্যুৎ ব্যবহারের সঙ্গে বিলের সমন্বয়হীনতার কারণে এমনিতেই মানুষ অসহায় অবস্থার মধ্যে আছে। তার ওপর আবার বিদ্যুতের দাম বাড়ার সিদ্ধান্ত ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’র মতোই হবে।
(পাঠকের মতামত বিস্তারিত পড়তে ও আপনার মতামত জানাতে ভিজিট করুন prothom-alo.com)
সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে দেশপ্রেমিক বলে অভিহিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই প্রতিক্রিয়ায় গত শনিবার এই নিবন্ধ লিখেছেন প্রাবন্ধিক সৈয়দ আবুল মকসুদ। এ প্রসঙ্গে শামিম উর রায়হান লিখেছেন: আমি দেশপ্রেমিকের সংজ্ঞা খুঁজছিলাম। আর একটু যদি লিখতেন! কেউ দুর্নীতির অভিযোগে পদত্যাগ করলে প্রকৃত দেশপ্রেমিক হবেন—এ বিল সংসদে কবে পাস হচ্ছে?
মো. নাসিম ওয়াহিদ: এই মুহূর্তে খেলার ফলাফল—বিরোধী পক্ষ ১—সরকার পক্ষ ০; তবে যেকোনো সময় স্কোর ২-০ হয়ে যেতে পারে। কারণ, বিরোধী পক্ষের দুই বিদেশি ফরোয়ার্ড বিশ্বব্যাংক ও মজীনা দুই প্রান্ত থেকে বেশ আক্রমণ করে যাচ্ছেন।
পঙ্কজনাথ: যাঁদের বিরুদ্ধে টাকার বস্তাসহ ধরা পড়া, পদ্মা সেতু নিয়ে কেলেঙ্কারির অভিযোগ, তাঁদের যদি তথাকথিত দেশপ্রেমিক বলা হয়, তবে তো এ দেশের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। প্রধানমন্ত্রী নিজে পদত্যাগ করে আগাম নির্বাচনের ব্যবস্থা করে এবার নিজেকে দেশপ্রেমিক প্রমাণ করুন। আবুল হোসেন কেন বিশ্বব্যাংকের অভিযোগের পরপরই পদত্যাগ করে দেশপ্রেমিক হলেন না? কেন পানি এত ঘোলা করা হলো?
মহিউদ্দিন মাসউদ: কোনো গণতান্ত্রিক সরকারের প্রধান এমন বক্তব্য দেন না; কারণ, জবাবদিহি ও স্বচ্ছতার জায়গাটি ধ্বংস করলে গণতন্ত্র থাকে না। আমাদের দেশে এটি সমস্যা নয়; কারণ, এখানে গণতান্ত্রিক বোধ প্রায় শূন্য। রাষ্ট্রপরিচালকেরা তো গণতন্ত্রের অর্থ বোঝেন তাঁদের অসীম ক্ষমতার ইচ্ছেমতো ব্যবহার। অসীম ক্ষমতায় দুর্নীতি অনিবার্য; আর সে কারণেই আবুল হোসেন কিংবা সুরঞ্জিত সেনগুপ্তরা দেশপ্রেমিক হয়ে যান।
আবুল হোসেন দেশপ্রেমিক
লন্ডনে সাংবাদিকদের কাছে এভাবেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এ ব্যাপারে পাঠকের প্রতিক্রিয়া ততটা ইতিবাচক ছিল না।
মাহতাফ হোসেন লিখেছেন: আওয়ামী লীগ ও তার সরকারের উদ্ভাবিত সংজ্ঞা অনুযায়ী বাংলা অভিধানে ‘দেশদ্রোহ’ ও ‘দেশপ্রেম’ কথা দুটি নতুন করে সংজ্ঞায়িত করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই দেখছি। একজন ব্যক্তিকে ব্যঙ্গোক্তি করায় তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা না হয়ে ‘দেশদ্রোহ’ মামলা হয়, আর সৈয়দ আবুল হোসেনের মতো একজন চরম বিতর্কিত ব্যক্তিকে ঘোষণা করা হয় ‘দেশপ্রেমিক’। কী আশ্চর্য এ দেশ! সেলুকাস!
দেশের ষোলো কোটি মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতু আঁতুড়ঘরে মারা যাওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় যেখানে সব মানুষ মর্মাহত, সংক্ষুব্ধ, সেখানে দুর্ঘটনার পর আবুল হোসেনকে পদত্যাগ করিয়ে ‘দেশপ্রেমিক’ সাজালে তা আমজনতা মেনে নেবে—আপনারা বুঝলেন কেমন করে?
মো. আবদুল হাকিম: আমরা ভোট দিলাম আওয়ামী লীগকে, যারা ঘোষণা দিয়েছিল দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করার। জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ হয়ে গেল আবুল হোসেনদের। হায় রে বাঙালির কপাল! যে যায় লঙ্কায় সে-ই হয় রাবণ।
মো. শওকত আলী: ‘আমি কী গাই আর আমার সারিন্দা কী বাজায়!’ প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর অর্থমন্ত্রীর কথাবার্তায় মানুষ বেশ ভালোভাবেই বুঝেছে সৈয়দ সাহেবের খুঁটির জোর কোথায়। আর এ-ও বোঝা যাচ্ছে, বিশ্বব্যাংকের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার ব্যাপারে ‘আশাবাদী’ অর্থমন্ত্রী কী অদ্ভুত কসরতই না করে যাচ্ছেন! আরে বাবা, নিজের অর্থেই যদি পদ্মা সেতু করা সম্ভব তবে সেই ট্রেন ছেড়ে দিয়ে আবার ‘দুর্নীতিবাজ’ বিশ্বব্যাংকের পেছনে ছোটাটা কি হাস্যকর নয়? দেশের মানুষকে তাঁরা কী পেয়েছেন?
মো. শরিফুল ইসলাম: আমাদের দেশে এত দেশপ্রেমিক! তার পরও দেশের কোনো উন্নতি হচ্ছে না! আওয়ামী লীগের উচিত আলাদা একটা ইউনিফর্ম তৈরি করে নিজেদের মন্ত্রী, সাংসদ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের তা পরতে বাধ্য করা, যেখানে লেখা থাকবে—‘আমরা দেশপ্রেমিক’। তাহলেই কষ্ট করে আর নিজেদের ঢোল নিজেদের পেটাতে হবে না। আমরা সাধারণ জনগণ বুঝে যাব আপনারা দেশপ্রেমিক!
মশিউল হোসেন: আবুল হোসেনের মতো দেশপ্রেমিক নেতার অভাব নেই আমাদের দেশে, কিন্তু নীতিবান নেতার অভাব আছে। আমাদের প্রয়োজন নীতিবান নেতা।
পাঠকের নিজস্ব হুমায়ূন
গত শুক্রবার প্রথম আলোর সাহিত্য-সাময়িকীতে এটি লিখেছেন আনিসুল হক। এ প্রসঙ্গে মো. জাকির হোসেন লিখেছেন: একসময় হিমু হতে ইচ্ছে করত, একসময় নিজেকে মিসির আলি মনে হতো। ‘মেঘ বলেছে যাব যাব’-এর শুভ্র আমার প্রিয় চরিত্রের একটি। লেখক হুমায়ূন পাঠককে মিশিয়ে ফেলতে পারতেন চরিত্রগুলোর সঙ্গে। বাকের ভাইয়ের যেন ফাঁসি না হয়, সে জন্য বড় ভাইদের সঙ্গে রাতে মিছিলে যোগ দিয়েছিলাম। শুধু হুমায়ূন স্যারের নাটকের একটি চরিত্রের জন্য মিছিলে যেতে বাবা-মা বাধা দেননি। আমার হুমায়ূন আহমেদকে হারালাম। কী হতো বিধাতা ওনাকে আরও দীর্ঘজীবী করলে?
মশিউর রহমান খান: ‘শঙ্খনীল কারাগার’ বইটি একজনের কাছ থেকে ধার করে পড়তে এনে আর ফেরত দিইনি। বইটি এখনো আছে আমার কাছে। কালো বলে রাবেয়াকে মা কালি বলায় তার বাবার কী উদ্বেগ! আসলে হুমায়ূন আহমেদের বইগুলোর কাগজের মান ভালো থাকত আর দামও তুলনামূলক একটু বেশি হতো বলে নিজে না কিনে অন্যদের দিয়ে কিনিয়ে তার কাছ থেকে ধার করে পড়তাম। ইচ্ছা করে কোনোদিন তাঁর নাটক দেখা মিস করিনি। খবরের কাগজে তিনি কিছু লিখলেও তা পড়া বাদ যেত না। আর এখন? হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে প্রতিদিন কে কী বলছেন বা লিখছেন খবরের কাগজে, খুঁজে খুঁজে সেগুলো পড়ি। আসলে মারা যাওয়ার পর থেকে কী রকম একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম, তা হয়তো আমার মতো কেউ একজনই টের পাচ্ছেন।
বিদ্যুতের দাম বাড়াতে ডাকা সম্মেলন স্থগিত
বিদ্যুতের দাম বাড়ানো না-বাড়ানো নিয়ে গত বুধবার সারা দিন নানা ঘটনা ঘটতে থাকে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে। তবে পাঠকের কাছে এই নাটকের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ ছিল আবার বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি।
এ সম্পর্কে মো. জিয়াবুদ্দিন লিখেছেন: এই হলো সেই দেশ, যেখানে সার্টিফিকেটে সরকারি লোক বানান ভুল করবেন আর সাধারণ মানুষ অতিরিক্ত টাকা খরচ করে ভুলটা ঠিক করাতে গিয়ে জুতার শুকতলা খোয়াবেন। যিনি ভুল করেছেন তাঁর কোনো অপরাধ নেই, শাস্তিও নেই। কুইক রেন্টাল বিদ্যুতের সিদ্ধান্তে হাজার কোটি টাকা লোপাট হলো। যাঁদের সিদ্ধান্তে এটা হলো, তাঁদের কিছু আসবে-যাবে না; তাঁরা ঠিক পাজেরো গাড়িতে করে ঘুরে বেড়াবেন, ২৪ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পাবেন। আর তার মাশুল দিতে হবে আমাদের। রান্নার জন্য বেতন দিয়ে পাচক আনলাম, এখন কিনা পাচক আমাদের রাঁধতে বলেন, তিনি শুধু খাবেন ।
সফিকুল ইসলাম: দুই মাস ধরে বিদ্যুৎ ব্যবহারের সঙ্গে বিলের সমন্বয়হীনতার কারণে এমনিতেই মানুষ অসহায় অবস্থার মধ্যে আছে। তার ওপর আবার বিদ্যুতের দাম বাড়ার সিদ্ধান্ত ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’র মতোই হবে।
(পাঠকের মতামত বিস্তারিত পড়তে ও আপনার মতামত জানাতে ভিজিট করুন prothom-alo.com)
No comments