ঈদের খাওয়ার কুশলাদি by এ এস এম এ রায়হান
অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান, গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ত
মাহে রমজানের এক মাস পবিত্র রোজা পালনের পর ঈদের দিনের আনন্দঘন পরিবেশে ঈদ উদ্যাপনের বড় একটা অংশ থাকে বাহারি আকর্ষণীয় খাবার-দাবারের আয়োজন নিয়ে এবং আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে তা উপভোগ
মাহে রমজানের এক মাস পবিত্র রোজা পালনের পর ঈদের দিনের আনন্দঘন পরিবেশে ঈদ উদ্যাপনের বড় একটা অংশ থাকে বাহারি আকর্ষণীয় খাবার-দাবারের আয়োজন নিয়ে এবং আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধব নিয়ে তা উপভোগ
করা। এমনি আনন্দ উৎসবে অতিরিক্ত চর্বি-জাতীয় খাদ্য গ্রহণের ফলে অনেক ক্ষেত্রেই হতে হয় অসুস্থ।
করণীয় কী?
মনে রাখতে হবে, রমজান মাসে সম্পূর্ণ ভিন্ন রুটিনমাফিক এক মাস খাদ্য গ্রহণের পর হঠাৎ করেই ঈদের দিন সকাল থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত বাড়িতে বাড়িতে বেড়ানো ও সুস্বাদু খাবার গ্রহণ করতে গিয়ে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটে এবং এর ফলে নানা ধরনের পেটের পীড়া হয়ে যায়।
অসুস্থতা কারও কাম্য নয়। তারপরও অসুস্থ হয়ে পড়লে ঈদের আনন্দও মাটি হয়ে যায় পুরো পরিবারের। একটু সাবধান হলেই এসব ভোগান্তি থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে।
সুস্থ থাকার প্রথম শর্ত হলো পরিমিত ও নিয়ন্ত্রিত খাদ্য গ্রহণ। অতি ভোজন অবশ্যই পরিহার করতে হবে।
অতীত অভিজ্ঞতায় যেসব খাবার গ্রহণে পেটের অস্বস্তি বা সমস্যা হয়েছে তা বর্জন করতে হবে। যেমন: দুধ বা দুধের তৈরি খাদ্য গ্রহণে যাদের পেটের সমস্যা হয়, তাদের অবশ্যই দুধের তৈরি ফিরনি, সেমাই, পুডিং ইত্যাদি অতি অল্প মাত্রায় খেতে হবে বা পরিহার করতে হবে।
যাদের গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স বা বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা আছে, তাদের অতি মাত্রায় তৈলাক্ত খাবার যেমন: পোলাও, বিরিয়ানি ও খিচুড়ি কম খেতে হবে। যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাদের অবশ্যই চিনির তৈরি খাদ্য বর্জন করতে হবে বা ডায়াবেটিস মিষ্টি দিয়ে তৈরি সেমাই ও পায়েস খেতে হবে। এ ছাড়া কিছু বিশেষ বিশেষ রোগে আত্রান্ত রোগীর খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অত্যাবশ্যক, যেমন: ক্রনিক লিভার ডিজিস, বিশেষ করে লিভার সিরোসিস ও ক্রনিক কিডনি ডিজিজের রোগীর খাদ্যে আমিষের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে অর্থাৎ মাংস নিয়মমাফিক পরিমিত ও নিয়ন্ত্রিত পরিমাণ থাকতে হবে। লিভার সিরোসিসের রোগী, যাদের লিভারের কার্যক্ষমতা কমে গেছে তারা বেশি পরিমাণ আমিষ খেলে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে। তেমনি ক্রনিক কিডনি রোগের রোগী বেশি পরিমাণ আমিষ খেলে রক্তের ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেড়ে যাবে। যাদের পিত্তনালিতে পাথর আছে এবং এর কারণে দু-একবার পেটের ব্যথা হয়েছে, তারা বেশি পরিমাণ তৈলাক্ত খাবার খেলে তীব্র পেটে ব্যথা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যাদের অতীতে একিউট প্যানক্রিয়াটাইটিস হয়েছে এবং যাদের ক্রনিক প্যানক্রিয়াটাইটিস আছে, তাদের অবশ্যই খাদ্য গ্রহণে সতর্ক থাকতে হবে এবং গুরুপাক ও তৈলাক্ত খাবার পরিহার করতে হবে।
অন্যথায় পেটে তীব্র ব্যথা হতে পারে। ক্রনিক ডায়রিয়ার রোগী যেমন: আইবিএস, আলসারেটিভ কোলাইটিস, সিলিয়াক ডিজিজ, কোলাইটিস ও ট্রপিক্যাল সপ্রুর রোগীদের অবশ্যই খাদ্য গ্রহণের বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে এবং অতি মাত্রায় তৈলাক্ত খাবার ও গুরুপাক খাবার বর্জন করতে হবে। বয়স্কদের বিশেষ কিছু সতর্কতা মেনে চলতে হবে যেমন যাঁদের দাঁত নেই তাঁরা যেন শক্ত, বড় মাংসের টুকরো গিলে না খান। বড় মাংসের টুকরো গিললে তা খাদ্যনালিতে আটকে যেতে পারে। খাদ্যনালিতে মাংসের টুকরো আটকে গেলে তা অ্যান্ডোসকোপের মাধ্যমে বের করা যায়, কিন্তু সমস্যা হলো ঈদের সময় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বেশির ভাগই ছুটিতে থাকেন এবং এ ধরনের চিকিৎসাসেবার সুয়োগ বন্ধ থাকে।
শারীরিক সুস্থতার প্রয়োজনে সাময়িক খাদ্য গ্রহণের আনন্দ কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কম খেয়ে সুস্থ থাকি, আনন্দে থাকি এই যেন হয়।
করণীয় কী?
মনে রাখতে হবে, রমজান মাসে সম্পূর্ণ ভিন্ন রুটিনমাফিক এক মাস খাদ্য গ্রহণের পর হঠাৎ করেই ঈদের দিন সকাল থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত বাড়িতে বাড়িতে বেড়ানো ও সুস্বাদু খাবার গ্রহণ করতে গিয়ে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটে এবং এর ফলে নানা ধরনের পেটের পীড়া হয়ে যায়।
অসুস্থতা কারও কাম্য নয়। তারপরও অসুস্থ হয়ে পড়লে ঈদের আনন্দও মাটি হয়ে যায় পুরো পরিবারের। একটু সাবধান হলেই এসব ভোগান্তি থেকে রেহাই পাওয়া যেতে পারে।
সুস্থ থাকার প্রথম শর্ত হলো পরিমিত ও নিয়ন্ত্রিত খাদ্য গ্রহণ। অতি ভোজন অবশ্যই পরিহার করতে হবে।
অতীত অভিজ্ঞতায় যেসব খাবার গ্রহণে পেটের অস্বস্তি বা সমস্যা হয়েছে তা বর্জন করতে হবে। যেমন: দুধ বা দুধের তৈরি খাদ্য গ্রহণে যাদের পেটের সমস্যা হয়, তাদের অবশ্যই দুধের তৈরি ফিরনি, সেমাই, পুডিং ইত্যাদি অতি অল্প মাত্রায় খেতে হবে বা পরিহার করতে হবে।
যাদের গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স বা বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা আছে, তাদের অতি মাত্রায় তৈলাক্ত খাবার যেমন: পোলাও, বিরিয়ানি ও খিচুড়ি কম খেতে হবে। যাদের ডায়াবেটিস আছে, তাদের অবশ্যই চিনির তৈরি খাদ্য বর্জন করতে হবে বা ডায়াবেটিস মিষ্টি দিয়ে তৈরি সেমাই ও পায়েস খেতে হবে। এ ছাড়া কিছু বিশেষ বিশেষ রোগে আত্রান্ত রোগীর খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অত্যাবশ্যক, যেমন: ক্রনিক লিভার ডিজিস, বিশেষ করে লিভার সিরোসিস ও ক্রনিক কিডনি ডিজিজের রোগীর খাদ্যে আমিষের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে অর্থাৎ মাংস নিয়মমাফিক পরিমিত ও নিয়ন্ত্রিত পরিমাণ থাকতে হবে। লিভার সিরোসিসের রোগী, যাদের লিভারের কার্যক্ষমতা কমে গেছে তারা বেশি পরিমাণ আমিষ খেলে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে। তেমনি ক্রনিক কিডনি রোগের রোগী বেশি পরিমাণ আমিষ খেলে রক্তের ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেড়ে যাবে। যাদের পিত্তনালিতে পাথর আছে এবং এর কারণে দু-একবার পেটের ব্যথা হয়েছে, তারা বেশি পরিমাণ তৈলাক্ত খাবার খেলে তীব্র পেটে ব্যথা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যাদের অতীতে একিউট প্যানক্রিয়াটাইটিস হয়েছে এবং যাদের ক্রনিক প্যানক্রিয়াটাইটিস আছে, তাদের অবশ্যই খাদ্য গ্রহণে সতর্ক থাকতে হবে এবং গুরুপাক ও তৈলাক্ত খাবার পরিহার করতে হবে।
অন্যথায় পেটে তীব্র ব্যথা হতে পারে। ক্রনিক ডায়রিয়ার রোগী যেমন: আইবিএস, আলসারেটিভ কোলাইটিস, সিলিয়াক ডিজিজ, কোলাইটিস ও ট্রপিক্যাল সপ্রুর রোগীদের অবশ্যই খাদ্য গ্রহণের বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে এবং অতি মাত্রায় তৈলাক্ত খাবার ও গুরুপাক খাবার বর্জন করতে হবে। বয়স্কদের বিশেষ কিছু সতর্কতা মেনে চলতে হবে যেমন যাঁদের দাঁত নেই তাঁরা যেন শক্ত, বড় মাংসের টুকরো গিলে না খান। বড় মাংসের টুকরো গিললে তা খাদ্যনালিতে আটকে যেতে পারে। খাদ্যনালিতে মাংসের টুকরো আটকে গেলে তা অ্যান্ডোসকোপের মাধ্যমে বের করা যায়, কিন্তু সমস্যা হলো ঈদের সময় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বেশির ভাগই ছুটিতে থাকেন এবং এ ধরনের চিকিৎসাসেবার সুয়োগ বন্ধ থাকে।
শারীরিক সুস্থতার প্রয়োজনে সাময়িক খাদ্য গ্রহণের আনন্দ কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। কম খেয়ে সুস্থ থাকি, আনন্দে থাকি এই যেন হয়।
No comments