মৃত্যুর কাছে হার আজহার পুত্র আইয়াজউদ্দিনের
খেলা আর পুত্রশোকের ট্র্যাজেডি মিলেমিশে একাকার হয়ে গেল মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনের জীবনে। টানা পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে মারা গেলেন সাবেক ভারতীয় অধিনায়কের ছোট ছেলে আইয়াজউদ্দিন। গত রোববার হায়দরাবাদে মোটর দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন ১৯ বছরের আইয়াজউদ্দিন। মাথায় প্রচণ্ড আঘাত লাগায় হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। কিডনিও গুরুতর জখম হয়। এরপর কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্রের সাহায্যে তাকে বাঁচিয়ে রাখা হয়। দুর্ঘটনার পর তার আর জ্ঞান ফেরেনি। অ্যাপোলো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গতকাল তাকে মৃত ঘোষণা করে।
আইয়াজউদ্দিন সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক আজহারউদ্দিনের প্রথম স্ত্রী নওরিনের সন্তান। হায়দরাবাদের হয়ে সে অনূধ্ব-১৯ দলের পক্ষে ক্রিকেট খেলেছেন। তার ক্রিকেটের হাতেখড়ি হয় আজহারের আস্থাভাজন আরশাদ আয়ুবের তত্ত্বাবধানে। সোমবার আইয়াজের একটি ক্লাব ম্যাচ খেলার কথা ছিল। রোববার বিমানবন্দরের দিক থেকে বন্ধুদের সঙ্গে বাইকে করে গাচিবাউলার দিকে যাচ্ছিলেন আইয়াজ। মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন তিনি। পেছনে বসা ছিলেন কাজিন আজমল-উর-রহমান। নিজেদের মধ্যে রেস করতে গিয়েই দুর্ঘটনার শিকার হন আজহারপুত্র। মাথায় হেলমেট থাকলেও প্রচণ্ডগতিতে ডিভাইডারে ধাক্কা লেগে হেলমেট পুরো থেঁতলে যায়। পথচারীরা দুর্ঘটনা দেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশের প্যাট্রল ভ্যান দ্রুত ঘটনাস্থলে পেঁৗছে। অ্যাম্বুলেন্স না থাকায় ভ্যানে করেই অ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় আহত দু'জনকে। সেখানে আজমলকে মৃত ঘোষণা করা হয়। অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কিরণ কুমার রেড্ডি আইয়াজকে দেখতে গিয়েছিলেন। এ ছাড়া দুর্ঘটনার খবরে সানিয়া মির্জা, যুবরাজ ও হর্শ ভোগলে নিজেদের টুইটারে আজহারপুত্রের আরোগ্য কামনা করেন। ভিভিএস লক্ষ্মণ আইয়াজের জন্য প্রার্থনা করেন। সেন্ট ম্যারিজ কলেজের প্রিন্সিপাল রমা রাও আইয়াজকে বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর জন্য আগে সতর্ক করেছিলেন। এ কলেজেই পড়তেন আইয়াজ।জিএসএক্সআর-১০০০ মডেলের যে মোটরসাইকেল চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন আইয়াজ সেটির মূল্য ১৩ লাখ রুপি। গত ঈদে আজহার এটি পুত্রকে উপহার দিয়েছিলেন। ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস! সেই মোটরবাইক দুর্ঘটনায় পুত্রের মৃত্যু হলো। যখন আইয়াজ দুর্ঘটনার শিকার হন তখন আজহার ছিলেন লন্ডনে; কিন্তু পুত্রের জীবন সংশয়ের কথা শুনে হায়দরাবাদে ছুটে আসেন তিনি। অরোগ্য কামনায় নিরন্তর প্রার্থনাও করতে থাকেন; কিন্তু পিতার আকুল প্রার্থনা ব্যর্থ করে লোকান্তরে চলে গেলেন আজহারপুত্র।
No comments