জেলে কার্ড জেলেদের জন্যই by নেয়ামত উল্যাহ
নভেম্বর থেকে মে। টানা সাত মাস মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে ‘জাটকা সংরক্ষণ অভিযান’ চালানো হয়। এরই মধ্যে দুই মাসে (মার্চ-এপ্রিল) দুটি নদীতে কোনো প্রকার জাল না ফেলার ‘নিষেধাজ্ঞা’ আছে। মোট ৩৩০ কিলোমিটার জলাশয়ের ওপর ২০০৭ সাল থেকে এ নিষেধাজ্ঞা আনা হয়েছে। ইলিশ বাঁচানোর জন্য পুলিশ, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, মৎস্য অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসন একসঙ্গে দৌড়াচ্ছে। সঙ্গে আছেন ইউনিয়ন পরিষদের নেতারা। বেকার জেলেরা এ সময় কী খাবেন, কী করবেন, তা কিন্তু ঠিক হয়নি। অনির্ধারিতভাবে জেলেদের ঘরে বসে খাবারের ব্যবস্থা ও বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য বরাদ্দ আসে। কিন্তু সেগুলোর কোনো খোঁজ থাকে না। এখন আবার প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, জেলেদের জন্য ‘জেলে কার্ড’ করবেন। এটা জেলেদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। কিন্তু এ জেলে কার্ড যাবে কোথায়?
বয়স্ক জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একসময় জেলেরাই অনেক নিয়মকানুন মান্য করে নদীতে মাছ ধরতেন। তাঁরা ছোট মাছ ধরতেন না, ডিমওয়ালা মাছ ধরতেন না, ছোট ফাঁকার জাল ব্যবহার করতেন না। কিন্তু এখন সরকার আইনকানুন করেও আইন মানাতে পারছে না। বয়স্ক জেলেরা বলেন, ‘মারু হাপ্পু প্যান্ট পরোইন্যারা অইছে জাইল্যা, খিদা লাগজে খাইল আড়ি (পাত্র) হুদা করি। পরের বেলা কী খাবি, দরকার কী চিন্তা করি। মাছ থাইকপো কুডেত্তেন?’ কারা ধরেছে এ মাছ? অবশ্যই সাধারণ জেলেরা। তবে তাঁদের দিয়ে ধরানো হচ্ছে। ধরাচ্ছেন প্রভাবশালী মৎস্য ব্যবসায়ীরা। তাঁরা ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী, নয়তো নেতাকে বখরা দিয়ে তাঁর ছত্রচ্ছায়ায় মৎস্য ব্যবসা করেন। এঁদের সঙ্গে আছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসন। দেখা গেছে, গত দুই বছর এই প্রভাবশালী মহল নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের দিয়ে ঠিকই মাছ ধরিয়েছে। আর সেটা মাছের রেণু পোনা বংশসহ।
গত মার্চে ভোলা সদর উপজেলার ‘ভোলা খালের মাথা’ নামের মাছঘাটে গিয়ে দেখা যায়, দিনদুপুরে জেলেরা ঝুড়ি ভরে ছোট ছোট মাছের পোনা ধরে আনছেন। একেকটি ঝুড়িতে কমপক্ষে ১৫ কেজি মাছ হবে, যা মাছঘাটে বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ১১৫ টাকায়। ওই ১৫ কেজিতে কয়েক লাখ মাছ হবে। এ মাছ কোন জাল দিয়ে ধরা হয়—জানতে চাইলে জেলেরা জানালেন, বেহুন্দি, খরচি-মশারি, ঘুন্ডি জাল দিয়ে—যে জালগুলো সারা বছরই সরকার নিষিদ্ধ করেছে। দৌলতখান মাঝিরহাট ও পাতার খাল মৎস্যঘাট থেকে লালমোহন বাত্তিরখাল মাছঘাটের দৃশ্যও একই। নিষিদ্ধ সময়ে কোনো অভিযানের বালাই ছিল না। ফলে নিষিদ্ধ সময়ে রাত-দিন এসব জালে মাছ ধরা হয়েছে। সঙ্গে আছে কারেন্ট জাল, যে জাল দোকানে বিক্রি নিষেধ নয়, কিন্তু তা দিয়ে মাছ ধরা নিষেধ। ফলে চুরি করে ঠিকই মাছ ধরা হচ্ছে। ৮-১০ প্রকার জাল দিয়ে মাছ ধরা সারা বছর নিষিদ্ধ, কিন্তু প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শুধু কারেন্ট জাল নিয়ে ব্যস্ত থাকে।
নদীতে জাল ফেলা নিষিদ্ধ সময়ে দাঁড়ের নৌকার জেলেরা মাছ ধরেন না। কারণ, তাঁরা যে আড়তে মাছ বিক্রি করেন, তারা শক্তিশালী নয়, নয়তো নিজের শেষ সম্বল জালটি হারানোর ভয় থাকে। ওই জেলেরাই প্রকৃতভাবে বেকার থাকেন, তাঁদের সংসারে অভাব থাকে। সন্তানদের দুবেলা খেতে দিতে পারেন না। এরপর আছে এনজিওর কিস্তি। দাদন ও এনজিওর কিস্তি মিলিয়ে এঁরা ১৫-২০ হাজার টাকায় একটি জেলে নৌকা তৈরি করেন। আর ১২ মাসই এ ঋণের কিস্তি টানতে হচ্ছে। তাই যেসব জেলে চুরি করে মাছ না ধরতে পারেন, বেকার থাকা দুই মাসে তাঁর সব খোয়া যায়। গরিব জেলেদের নালিশ কখনো তাঁরা প্রশাসনকে বলতে পারেন না।
নিষিদ্ধ সময়ে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছের জাটকা, রেণু পোনা ধরা হলো। কিন্তু ওই মাছ কিনল কে? বেচল কোথায়? জানা গেল, আড়তদারেরা সারা দিন মাছ কিনে বরফ দিয়ে রাখেন। ভোররাতে ইঞ্জিনের নৌকায় চাঁদপুর অথবা লক্ষ্মীপুরে পাঠিয়ে দেন। কারণ, নিষিদ্ধ জলসীমা পার হলেই অবৈধ মাছ বৈধ হয়ে যায়। মাছ ক্রেতার ব্যাগে ঢোকার পর ‘দাঁতে রোদ’ লাগিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজন নদীতে অভিযানে বের হন। অন্যদিকে এসব বাহিনী নদীতে অভিযান না চালিয়ে ওপরে অভিযান চালাতে ভালোবাসে। এ সুযোগের সদ্ব্যবহার করেন প্রভাবশালীরা। জেলেরা জানান, দাদনভুক্ত জেলেরা মাছ ধরে আড়তদারের কাছে বিক্রি করেন। কিন্তু আড়তদার যদি মাছ কেনা বন্ধ করে দেন, তবে জেলেরা আর মাছ ধরবেন না। কিন্তু মৎস্য বিভাগ সেটা করে না। অন্যদিকে ভোলায় কী পরিমাণ মৎস্য ব্যবসায়ী রয়েছেন, তার কোনো পরিসংখ্যান নেই। তাঁদের কতটি নৌকা, কতটি জাল ও কতজন দাদনভুক্ত জেলে রয়েছেন, মৎস্য বিভাগের কাছে তারও কোনো হিসাব নেই। নেই জবাবদিহি। ক্ষমতা আর টাকা থাকলেই একজন ‘প্যান্ট পরা’ লোক মৎস্য ব্যবসায় নামছেন।
দুই মাস বেকার জেলেদের পুনর্বাসনে এ বছর সরকার সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দিয়েছে। এ বছর ৪৪ হাজার ৩৭২টি জেলে-পরিবারকে চার মাসে ১২০ কেজি চাল দেওয়া হয়। এবং এক হাজার ৪০০ জেলেকে তাঁদের দারিদ্র্যের ধরন অনুযায়ী অর্থসহায়তা দেওয়া হয়েছে পুনর্বাসনের জন্য। কিন্তু ওই চাল আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসেও অনেক ইউনিয়নে বিতরণ করা হয়নি। মৎস্য বিভাগ ও ইউনিয়ন পরিষদ প্রতিবছর তালিকা করে। মৎস্য বিভাগ, ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বাররা প্রতিবছর তাঁদের কে কী সুবিধা দিলেন, তার ওপর নির্ভর করে তালিকা করেন। এ বছর প্রথম তিন-চার মাস লেগেছে জেলেদের তালিকা করতে।
গত দুই বছর তালিকা নিয়ে জটিলতা বেশি হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের দ্বন্দ্ব সংঘাতের কারণে। এ চাল বিতরণ নিয়ে অন্তত ১০টি ইউনিয়নে বিক্ষোভ, হাতাহাতি, সংঘাত-সংঘর্ষ হয়েছে। যেসব ইউনিয়নে চাল বিতরণ করা হয়েছে, সেখানেও সঠিক নিয়মে বিতরণ করা হয়নি। প্রতি মাসে ৩০ কেজির স্থলে ২০-২৬ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে। যদি প্রকৃত জেলেদের সঠিক তালিকা করে কার্ড দেওয়া হয় এবং নিষিদ্ধ সময়ে সংসার চালানোর মতো চাল দেওয়া হয়, তবে জেলেরা সে সময়ে নদীতে মাছ ধরতে যাবেন না। কথায় আছে, পেটে দিলে পিঠে সয়। প্রধানমন্ত্রী জেলে কার্ড করবেন। সে কার্ড বিতরণের আগে একটি নিরপেক্ষ জরিপ দরকার। জরিপকাজটি পরিসংখ্যান বিভাগ করতে পারে। তারপর প্রকৃত জেলেদের মধ্যে রেশনিং পদ্ধতিতে নদীতে জাল ফেলা নিষিদ্ধ দুই মাস চাল-ডাল-তেল বিতরণ করা উচিত। নইলে দলীয় কর্মী আর ভুয়া জেলেরা প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া জেলে কার্ডের মালিক হবেন।
নেয়ামত উল্যাহ: প্রথম আলোর ভোলা প্রতিনিধি।
বয়স্ক জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একসময় জেলেরাই অনেক নিয়মকানুন মান্য করে নদীতে মাছ ধরতেন। তাঁরা ছোট মাছ ধরতেন না, ডিমওয়ালা মাছ ধরতেন না, ছোট ফাঁকার জাল ব্যবহার করতেন না। কিন্তু এখন সরকার আইনকানুন করেও আইন মানাতে পারছে না। বয়স্ক জেলেরা বলেন, ‘মারু হাপ্পু প্যান্ট পরোইন্যারা অইছে জাইল্যা, খিদা লাগজে খাইল আড়ি (পাত্র) হুদা করি। পরের বেলা কী খাবি, দরকার কী চিন্তা করি। মাছ থাইকপো কুডেত্তেন?’ কারা ধরেছে এ মাছ? অবশ্যই সাধারণ জেলেরা। তবে তাঁদের দিয়ে ধরানো হচ্ছে। ধরাচ্ছেন প্রভাবশালী মৎস্য ব্যবসায়ীরা। তাঁরা ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী, নয়তো নেতাকে বখরা দিয়ে তাঁর ছত্রচ্ছায়ায় মৎস্য ব্যবসা করেন। এঁদের সঙ্গে আছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসন। দেখা গেছে, গত দুই বছর এই প্রভাবশালী মহল নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের দিয়ে ঠিকই মাছ ধরিয়েছে। আর সেটা মাছের রেণু পোনা বংশসহ।
গত মার্চে ভোলা সদর উপজেলার ‘ভোলা খালের মাথা’ নামের মাছঘাটে গিয়ে দেখা যায়, দিনদুপুরে জেলেরা ঝুড়ি ভরে ছোট ছোট মাছের পোনা ধরে আনছেন। একেকটি ঝুড়িতে কমপক্ষে ১৫ কেজি মাছ হবে, যা মাছঘাটে বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ১১৫ টাকায়। ওই ১৫ কেজিতে কয়েক লাখ মাছ হবে। এ মাছ কোন জাল দিয়ে ধরা হয়—জানতে চাইলে জেলেরা জানালেন, বেহুন্দি, খরচি-মশারি, ঘুন্ডি জাল দিয়ে—যে জালগুলো সারা বছরই সরকার নিষিদ্ধ করেছে। দৌলতখান মাঝিরহাট ও পাতার খাল মৎস্যঘাট থেকে লালমোহন বাত্তিরখাল মাছঘাটের দৃশ্যও একই। নিষিদ্ধ সময়ে কোনো অভিযানের বালাই ছিল না। ফলে নিষিদ্ধ সময়ে রাত-দিন এসব জালে মাছ ধরা হয়েছে। সঙ্গে আছে কারেন্ট জাল, যে জাল দোকানে বিক্রি নিষেধ নয়, কিন্তু তা দিয়ে মাছ ধরা নিষেধ। ফলে চুরি করে ঠিকই মাছ ধরা হচ্ছে। ৮-১০ প্রকার জাল দিয়ে মাছ ধরা সারা বছর নিষিদ্ধ, কিন্তু প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শুধু কারেন্ট জাল নিয়ে ব্যস্ত থাকে।
নদীতে জাল ফেলা নিষিদ্ধ সময়ে দাঁড়ের নৌকার জেলেরা মাছ ধরেন না। কারণ, তাঁরা যে আড়তে মাছ বিক্রি করেন, তারা শক্তিশালী নয়, নয়তো নিজের শেষ সম্বল জালটি হারানোর ভয় থাকে। ওই জেলেরাই প্রকৃতভাবে বেকার থাকেন, তাঁদের সংসারে অভাব থাকে। সন্তানদের দুবেলা খেতে দিতে পারেন না। এরপর আছে এনজিওর কিস্তি। দাদন ও এনজিওর কিস্তি মিলিয়ে এঁরা ১৫-২০ হাজার টাকায় একটি জেলে নৌকা তৈরি করেন। আর ১২ মাসই এ ঋণের কিস্তি টানতে হচ্ছে। তাই যেসব জেলে চুরি করে মাছ না ধরতে পারেন, বেকার থাকা দুই মাসে তাঁর সব খোয়া যায়। গরিব জেলেদের নালিশ কখনো তাঁরা প্রশাসনকে বলতে পারেন না।
নিষিদ্ধ সময়ে নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছের জাটকা, রেণু পোনা ধরা হলো। কিন্তু ওই মাছ কিনল কে? বেচল কোথায়? জানা গেল, আড়তদারেরা সারা দিন মাছ কিনে বরফ দিয়ে রাখেন। ভোররাতে ইঞ্জিনের নৌকায় চাঁদপুর অথবা লক্ষ্মীপুরে পাঠিয়ে দেন। কারণ, নিষিদ্ধ জলসীমা পার হলেই অবৈধ মাছ বৈধ হয়ে যায়। মাছ ক্রেতার ব্যাগে ঢোকার পর ‘দাঁতে রোদ’ লাগিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজন নদীতে অভিযানে বের হন। অন্যদিকে এসব বাহিনী নদীতে অভিযান না চালিয়ে ওপরে অভিযান চালাতে ভালোবাসে। এ সুযোগের সদ্ব্যবহার করেন প্রভাবশালীরা। জেলেরা জানান, দাদনভুক্ত জেলেরা মাছ ধরে আড়তদারের কাছে বিক্রি করেন। কিন্তু আড়তদার যদি মাছ কেনা বন্ধ করে দেন, তবে জেলেরা আর মাছ ধরবেন না। কিন্তু মৎস্য বিভাগ সেটা করে না। অন্যদিকে ভোলায় কী পরিমাণ মৎস্য ব্যবসায়ী রয়েছেন, তার কোনো পরিসংখ্যান নেই। তাঁদের কতটি নৌকা, কতটি জাল ও কতজন দাদনভুক্ত জেলে রয়েছেন, মৎস্য বিভাগের কাছে তারও কোনো হিসাব নেই। নেই জবাবদিহি। ক্ষমতা আর টাকা থাকলেই একজন ‘প্যান্ট পরা’ লোক মৎস্য ব্যবসায় নামছেন।
দুই মাস বেকার জেলেদের পুনর্বাসনে এ বছর সরকার সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দিয়েছে। এ বছর ৪৪ হাজার ৩৭২টি জেলে-পরিবারকে চার মাসে ১২০ কেজি চাল দেওয়া হয়। এবং এক হাজার ৪০০ জেলেকে তাঁদের দারিদ্র্যের ধরন অনুযায়ী অর্থসহায়তা দেওয়া হয়েছে পুনর্বাসনের জন্য। কিন্তু ওই চাল আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসেও অনেক ইউনিয়নে বিতরণ করা হয়নি। মৎস্য বিভাগ ও ইউনিয়ন পরিষদ প্রতিবছর তালিকা করে। মৎস্য বিভাগ, ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বাররা প্রতিবছর তাঁদের কে কী সুবিধা দিলেন, তার ওপর নির্ভর করে তালিকা করেন। এ বছর প্রথম তিন-চার মাস লেগেছে জেলেদের তালিকা করতে।
গত দুই বছর তালিকা নিয়ে জটিলতা বেশি হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের দ্বন্দ্ব সংঘাতের কারণে। এ চাল বিতরণ নিয়ে অন্তত ১০টি ইউনিয়নে বিক্ষোভ, হাতাহাতি, সংঘাত-সংঘর্ষ হয়েছে। যেসব ইউনিয়নে চাল বিতরণ করা হয়েছে, সেখানেও সঠিক নিয়মে বিতরণ করা হয়নি। প্রতি মাসে ৩০ কেজির স্থলে ২০-২৬ কেজি চাল দেওয়া হয়েছে। যদি প্রকৃত জেলেদের সঠিক তালিকা করে কার্ড দেওয়া হয় এবং নিষিদ্ধ সময়ে সংসার চালানোর মতো চাল দেওয়া হয়, তবে জেলেরা সে সময়ে নদীতে মাছ ধরতে যাবেন না। কথায় আছে, পেটে দিলে পিঠে সয়। প্রধানমন্ত্রী জেলে কার্ড করবেন। সে কার্ড বিতরণের আগে একটি নিরপেক্ষ জরিপ দরকার। জরিপকাজটি পরিসংখ্যান বিভাগ করতে পারে। তারপর প্রকৃত জেলেদের মধ্যে রেশনিং পদ্ধতিতে নদীতে জাল ফেলা নিষিদ্ধ দুই মাস চাল-ডাল-তেল বিতরণ করা উচিত। নইলে দলীয় কর্মী আর ভুয়া জেলেরা প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া জেলে কার্ডের মালিক হবেন।
নেয়ামত উল্যাহ: প্রথম আলোর ভোলা প্রতিনিধি।
No comments