পরমাণু অস্ত্ররোধ চুক্তির নানা দিক
৪০ বছরের পুরোনো পরমাণু অস্ত্রবিরোধী বৈশ্বিক চুক্তি খতিয়ে দেখতে আগামী সোমবার নিউইয়র্কে শুরু হচ্ছে ১৮৯টি দেশের মাসব্যাপী বৈঠক।
পরমাণু অস্ত্রের বিস্তার রোধ চুক্তিতে (এনপিটি) পরমাণু অস্ত্রের অধিকারী দেশগুলোকে তাদের অস্ত্রভান্ডার হ্রাস করার এবং আণবিক অস্ত্রহীন দেশগুলোকে তা তৈরি করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়। এ নিয়ে এক মাস ধরে যে আলোচনা হবে, খতিয়ে দেখা যাক তার কিছু দিক।
আলোচনা সভাটির লক্ষ্য কী
স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালে স্বাক্ষরিত এনপিটির সদস্যরা চুক্তিটির লক্ষ্য পূরণের ক্ষেত্রে কী অগ্রগতি হয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে এবং এটিকে আরও উন্নত করার সম্ভাব্য উপায় বের করতে প্রতি পাঁচ বছরে একবার চুক্তিটির পর্যালোচনা করেন। প্রথা হচ্ছে, মতৈক্যের ভিত্তিতে গৃহীত একটি চূড়ান্ত ঘোষণায় পরবর্তী পাঁচ বছরের দায়িত্ব ও কাজ বিশদভাবে ব্যক্ত করা।
পশ্চিমা দেশগুলোর বক্তব্য হচ্ছে, ইরান ও উত্তর কোরিয়ার আণবিক কর্মসূচি চুক্তিটির ভিত্তিমূল কাঁপিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে কিছু দেশের অভিমত হচ্ছে, বড় শক্তিগুলো নিজেদের নিরস্ত্রীকরণে ব্যর্থ হওয়ায় চুক্তিটির বিশ্বাসযোগ্যতা কমে গেছে।
আসন্ন বৈঠকে চুক্তিটির কোনো বড় ধরনের পরিবর্তনের প্রত্যাশা করেন না বিশ্লেষকেরা। তবে তাঁরা ২০০৫ সালের চেয়ে ভালো ফলাফল আশা করেন। ২০০৫ সালের বৈঠকটি কার্যপ্রণালী নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও ইরানের তর্কাতর্কির ফলে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।
আলোচনায় অংশগ্রহণকারীদের মনোভাব
বিশ্লেষকেরা বলছেন, এক বছর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ঘোষণা দেন, তিনি একটি ‘পরমাণু অস্ত্রমুক্ত বিশ্বের’ ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়া পরমাণু অস্ত্রের সবচেয়ে বড় মজুদের মালিক রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র হ্রাসকরণ চুক্তি একটি ইতিবাচক গতি তৈরি করতে সাহায্য করেছে।
মার্কিন প্রতিরক্ষানীতিতে আণবিক অস্ত্রের ভূমিকা হ্রাসকারী এক নতুন কৌশল এবং এ মাসে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত পরমাণু নিরাপত্তাবিষয়ক শীর্ষ সম্মেলনও এই আলোচনাসভার জন্য একটি ভালো ভিত্তি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অবদান রেখেছে। আর এ বৈঠকেই ওবামার কূটনৈতিক উদ্যোগের কার্যকারিতার পরীক্ষা হয়ে যাবে।
যদিও কিছু উন্নয়নশীল দেশ হয়তো বড় শক্তিকে নিরস্ত্রীকরণের জন্য যথেষ্ট চেষ্টা না করার জন্য সমালোচনা করবে, কিন্তু সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলোর কারণে সম্ভবত এ যুক্তি এবার গত বৈঠকের মতো তত গুরুত্ব পাবে না।
চ্যালেঞ্জগুলো কী
মিসর ও আরও কিছু উন্নয়নশীল দেশ মধ্যপ্রাচ্যে একটি পরমাণু অস্ত্রমুক্ত অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করার জোর চেষ্টা চালাচ্ছে। এ উদ্যোগের ফলে ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি হবে। উল্লেখ্য, ভারত ও পাকিস্তানের মতো ইসরায়েলও এনপিটিতে স্বাক্ষর করেনি।
মিসর ও আরও কিছু আরব দেশ বলেছে, ইসরায়েলের প্রশ্নে কোনো সমঝোতা না হলে তারা চূড়ান্ত ঘোষণার ব্যাপারে মতৈক্য সৃষ্টিতে বাধা দেবে। এনপিটি সভায় সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মতৈক্যের ভিত্তিতে। কিন্তু কূটনীতিক ও বিশ্লেষকেরা বলেন, মিসরকে যদি মধ্যপ্রাচ্যে কোনো বিশেষ সুযোগ দেওয়া হয়, তবে সে সম্ভবত ইরানকে অন্যান্য প্রশ্নে সহায়তা করবে না, ফলে তেহরান হয়ে পড়বে একঘরে।
বিদ্যমান কিছু বিষয়
চুক্তি স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর মধ্যে ইরানও রয়েছে। এনপিটি ব্যবহার করে পরমাণু প্রযুক্তির ওপর একচেটিয়া মালিকানা বজায় রাখছে এবং অন্যান্য দেশের বেসামরিক আণবিক কর্মসূচি বাস্তবায়নের অধিকার খর্ব করছে—পাশ্চাত্য শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তুলে অতীতে ইরান উন্নয়নশীল দেশগুলোকে একজোট করতে পারত।
সাফল্য বা ব্যর্থতা
প্রায় সব পক্ষই এ ব্যাপারে একমত যে যদি কোনো চূড়ান্ত ঘোষণা না দেওয়া যায়, তবে বৈঠকটি ব্যর্থ হবে। তবে সাফল্যের জন্য কারও খুব বেশি উচ্চাকাঙ্ক্ষী হওয়ারও প্রয়োজন নেই।
পরমাণু অস্ত্রের বিস্তার রোধ চুক্তিতে (এনপিটি) পরমাণু অস্ত্রের অধিকারী দেশগুলোকে তাদের অস্ত্রভান্ডার হ্রাস করার এবং আণবিক অস্ত্রহীন দেশগুলোকে তা তৈরি করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়। এ নিয়ে এক মাস ধরে যে আলোচনা হবে, খতিয়ে দেখা যাক তার কিছু দিক।
আলোচনা সভাটির লক্ষ্য কী
স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালে স্বাক্ষরিত এনপিটির সদস্যরা চুক্তিটির লক্ষ্য পূরণের ক্ষেত্রে কী অগ্রগতি হয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে এবং এটিকে আরও উন্নত করার সম্ভাব্য উপায় বের করতে প্রতি পাঁচ বছরে একবার চুক্তিটির পর্যালোচনা করেন। প্রথা হচ্ছে, মতৈক্যের ভিত্তিতে গৃহীত একটি চূড়ান্ত ঘোষণায় পরবর্তী পাঁচ বছরের দায়িত্ব ও কাজ বিশদভাবে ব্যক্ত করা।
পশ্চিমা দেশগুলোর বক্তব্য হচ্ছে, ইরান ও উত্তর কোরিয়ার আণবিক কর্মসূচি চুক্তিটির ভিত্তিমূল কাঁপিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে কিছু দেশের অভিমত হচ্ছে, বড় শক্তিগুলো নিজেদের নিরস্ত্রীকরণে ব্যর্থ হওয়ায় চুক্তিটির বিশ্বাসযোগ্যতা কমে গেছে।
আসন্ন বৈঠকে চুক্তিটির কোনো বড় ধরনের পরিবর্তনের প্রত্যাশা করেন না বিশ্লেষকেরা। তবে তাঁরা ২০০৫ সালের চেয়ে ভালো ফলাফল আশা করেন। ২০০৫ সালের বৈঠকটি কার্যপ্রণালী নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও ইরানের তর্কাতর্কির ফলে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।
আলোচনায় অংশগ্রহণকারীদের মনোভাব
বিশ্লেষকেরা বলছেন, এক বছর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ঘোষণা দেন, তিনি একটি ‘পরমাণু অস্ত্রমুক্ত বিশ্বের’ ব্যাপারে অঙ্গীকারবদ্ধ। এছাড়া পরমাণু অস্ত্রের সবচেয়ে বড় মজুদের মালিক রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র হ্রাসকরণ চুক্তি একটি ইতিবাচক গতি তৈরি করতে সাহায্য করেছে।
মার্কিন প্রতিরক্ষানীতিতে আণবিক অস্ত্রের ভূমিকা হ্রাসকারী এক নতুন কৌশল এবং এ মাসে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত পরমাণু নিরাপত্তাবিষয়ক শীর্ষ সম্মেলনও এই আলোচনাসভার জন্য একটি ভালো ভিত্তি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অবদান রেখেছে। আর এ বৈঠকেই ওবামার কূটনৈতিক উদ্যোগের কার্যকারিতার পরীক্ষা হয়ে যাবে।
যদিও কিছু উন্নয়নশীল দেশ হয়তো বড় শক্তিকে নিরস্ত্রীকরণের জন্য যথেষ্ট চেষ্টা না করার জন্য সমালোচনা করবে, কিন্তু সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলোর কারণে সম্ভবত এ যুক্তি এবার গত বৈঠকের মতো তত গুরুত্ব পাবে না।
চ্যালেঞ্জগুলো কী
মিসর ও আরও কিছু উন্নয়নশীল দেশ মধ্যপ্রাচ্যে একটি পরমাণু অস্ত্রমুক্ত অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করার জোর চেষ্টা চালাচ্ছে। এ উদ্যোগের ফলে ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি হবে। উল্লেখ্য, ভারত ও পাকিস্তানের মতো ইসরায়েলও এনপিটিতে স্বাক্ষর করেনি।
মিসর ও আরও কিছু আরব দেশ বলেছে, ইসরায়েলের প্রশ্নে কোনো সমঝোতা না হলে তারা চূড়ান্ত ঘোষণার ব্যাপারে মতৈক্য সৃষ্টিতে বাধা দেবে। এনপিটি সভায় সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মতৈক্যের ভিত্তিতে। কিন্তু কূটনীতিক ও বিশ্লেষকেরা বলেন, মিসরকে যদি মধ্যপ্রাচ্যে কোনো বিশেষ সুযোগ দেওয়া হয়, তবে সে সম্ভবত ইরানকে অন্যান্য প্রশ্নে সহায়তা করবে না, ফলে তেহরান হয়ে পড়বে একঘরে।
বিদ্যমান কিছু বিষয়
চুক্তি স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর মধ্যে ইরানও রয়েছে। এনপিটি ব্যবহার করে পরমাণু প্রযুক্তির ওপর একচেটিয়া মালিকানা বজায় রাখছে এবং অন্যান্য দেশের বেসামরিক আণবিক কর্মসূচি বাস্তবায়নের অধিকার খর্ব করছে—পাশ্চাত্য শক্তিগুলোর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তুলে অতীতে ইরান উন্নয়নশীল দেশগুলোকে একজোট করতে পারত।
সাফল্য বা ব্যর্থতা
প্রায় সব পক্ষই এ ব্যাপারে একমত যে যদি কোনো চূড়ান্ত ঘোষণা না দেওয়া যায়, তবে বৈঠকটি ব্যর্থ হবে। তবে সাফল্যের জন্য কারও খুব বেশি উচ্চাকাঙ্ক্ষী হওয়ারও প্রয়োজন নেই।
No comments