দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে লিবিয়ায় নিখোঁজ কানাইঘাটের ফারহান: স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

লিবিয়ায় নিখোঁজ ফারহান আহমদের সন্ধান চেয়ে কানাইঘাট প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার স্ত্রী রুমানা বেগম চৌধুরী। গতকাল সকাল ১১টায় ক্লাব কার্যালয়ে তিনি এ সংবাদ সম্মেলন করেন। রুমানা বেগম চৌধুরী লিখিত বক্তব্যে বলেন, তার স্বামী ফারহান আহমদ সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সাতবাঁক ইউপি’র জুলাই মাঝরচটি গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের পুত্র। ২০২৩ সালের অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে ফারহান আহমদ জীবনের তাগিদে উত্তর আফ্রিকার দেশ লিবিয়ায় যান। তার পাসপোর্ট নং এ-০৬৪৮২৫৮৯। সেখানে প্রায় ৯ মাস বসবাসের পর হঠাৎ একদিন তাকে একটি অজ্ঞাত মানব পাচারকারী দালাল চক্র ধরে নিয়ে যায়। এরপর মুক্তিপণের আশায় দালাল চক্রটি ফারহান আহমদের ওপর অমানুষিক নির্যাতন শুরু করে এবং তার দেশে থাকা স্ত্রী রুমানা বেগম চৌধুরীর কাছে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বাংলাদেশি ৮ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এতে ফরহান আহমদের পরিবার দারিদ্র্য হওয়ার কারণে এত টাকা মুক্তিপণ দিতে পারেননি। যার কারণে দালাল চক্রটি নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়াতে ফারহান আহমদকে গাড়িযোগে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যেতে রওয়ানা হয়। পথিমধ্যে সুযোগ বুঝে কৌশলে ফারহান পালিয়ে একটি পুলিশ ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়। এই তথ্যটি ফারহান আহমদ গত ২৪শে জুলাই বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায় তার স্ত্রী রুমানা বেগম চৌধুরীর কাছে ফোন দিয়ে নিশ্চিত করেন। এই ফোনে ফারহান আহমদ তার স্ত্রী রুমানা বেগম চৌধুরীর কাছে আরও জানান যে, মানব পাচারকারী দালাল চক্রটি তার বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে। এমনকি তিনি হয়তো লিবিয়ার কোনো জেলে যেতে পারেন। এরপর থেকে ফারহান আহমদের সঙ্গে তার স্ত্রী কিংবা পরিবারের আর কোনো যোগাযোগ নেই। সংবাদ সম্মেলনে রুমানা বেগম চৌধুরী বলেন, তার স্বামী ফারহান আহমদ সত্যি কি জেলে রয়েছেন নাকি মানব পাচারকারী দালাল চক্র তার স্বামীর বড় ধরনের কোনো ক্ষতি করেছে, এ বিষয়টি তিনি জানতে সংশ্লিষ্ট দূতাবাসের সুদৃষ্টি কামনা করছেন এবং সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ত্রিপোলিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাস ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম)’র কাছে আবেদন জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন লিবিয়ায় নিখোঁজ ফারহান আহমদের অবুঝ দুই মেয়ে সন্তান, ফারহান আহমদের মা রাবেয়া বেগম ও বাবা আব্দুল কুদ্দুস।
mzamin

No comments

Powered by Blogger.