ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আমরা সবাই বাংলাদেশি -তারেক রহমান

বাংলাদেশে ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে আমরা সবাই বাংলাদেশি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গতকাল শারদীয় দুর্গাপূজা ও বিজয়া দশমী উপলক্ষে এক বাণীতে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি-হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান নির্বিশেষে বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিকের সমঅধিকার ও সুরক্ষার সমান সুযোগের অলঙ্ঘনীয় বিধান থাকতে হবে। আমাদের দেশ একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি হিসেবে জনগোষ্ঠীর সকল সম্প্রদায়কে অন্তর্ভুক্ত করে। আমরা সবাই মিলে এমন একটি যৌথ সম্প্রদায় গঠন করি, যেখানে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়। আমি এই আনন্দময় দুর্গাপূজার উৎসবে সংশ্লিষ্ট সকলকে উষ্ণ শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। এই উৎসব প্রতিটি গৃহে সমৃদ্ধি, সম্প্রীতি ও শান্তিতে ভরে তুলে এবং সকল সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক শুভেচ্ছা ও সংহতি প্রসারিত করুক। আমি এবারের শারদীয় দুর্গোৎসবের সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করি।

তারেক রহমান বলেন, উৎসব যে ধর্মেরই হোক, উৎসবের প্রাঙ্গণ সব মানুষের জন্য উন্মুক্ত। উৎসবের প্রাঙ্গণের দরজা কখনোই বন্ধ থাকে না। যেকোনো ধর্মীয় উৎসবই মানুষে মানুষে নিবিড় বন্ধন রচনা করে, সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ জাগরিত হয়। সকল ধর্মের মর্মবাণী দেশপ্রেম, শান্তি ও মানব কল্যাণ। এক বর্বর হিংসাযুদ্ধের বিপরীতে সমাজে শান্তি ও সাম্য প্রতিষ্ঠায় ব্রতী হওয়া আমাদের সকলের কর্তব্য।

তিনি বলেন, দুর্গাপূজার অন্তর্নিহিত বাণীই হচ্ছে-হিংসা, লোভ ও ক্রোধরূপী অসুরকে বিনাশ করে সমাজে স্বর্গীয় শান্তি প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে মানবিক সাম্য ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে। উৎপীড়ন ও প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার মধ্যদিয়ে যারা সমাজকে, মানব সভ্যতাকে ধ্বংস করতে চায়, প্রতিষ্ঠিত করতে চায় কুশাসন তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে মানবকল্যাণ প্রতিষ্ঠাই এই উপাসনার অন্তর্নিহিত তাগিদ। সেই বাণীকে আত্মস্থ করেই দুর্গাপূজার উৎসবের আনন্দকে সকলে মিলে ভাগ করে নিতে হবে। উৎসবের পরিসর সংকীর্ণ নয়, বরং এটি উন্মুক্ত ও সর্বজনীন।

হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা ও বিজয়া দশমী উপলক্ষে হিন্দু ধর্মাবলম্বী সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে তাদের সুখ শান্তি ও কল্যাণ কামনা করেন তারেক রহমান।

অপর এক বাণীতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজা বাংলা ভাষাভাষীর হিন্দু জনগোষ্ঠীর সকল মানুষের জীবনে একটা বিশেষ স্থান অধিকার করে আছে। সুদীর্ঘকাল ধরেই এই উপমহাদেশে এই ধর্মীয় উৎসবটি এক সমৃদ্ধশালী ঐতিহ্য ধারণ করে আছে। যেকোনো ধর্মীয় উৎসবই সাম্প্রদায়িক বিভেদ-বিভাজনকে অতিক্রম করে উৎসবের পরিসরে সবাইকে নিয়ে আমাদের যে সমাবেশ তা আবহমান সৌহার্দের শাশ্ব্ব্বত চিত্র। শারদীয় দুর্গাপূজার উৎসব সকলের মধ্যে নিয়ে আসে স্বর্গীয় আনন্দ ও শুভেচ্ছার বার্তা। উৎসব সব মানুষের মিলনই শুধু সম্পন্ন করে না, পরোক্ষে নানা সম্প্রদায়কে সংযুক্ত করে নানাভাবে। যেকোনো ধর্মীয় উৎসব জাতি-রাষ্ট্রে সর্বমানুষের মিলন ক্ষেত্র। বিএনপি আবহমানকালের বৈশ্বিক চেতনা ও ঐতিহ্যের ধারায় ধর্মীয় স্বাধীনতা ও মূল্যবোধে বিশ্বাস করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, সম্প্রতি আওয়ামী পতিত সরকারের আমলে সাম্প্রদায়িক উস্কানি, বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়সহ হিন্দুু সম্প্রদায়ের দেবালয়ে আক্রমণ ও ভাঙচুর হয়েছে বারবার। বর্তমানে অশুভ চক্রের আক্রমণ ঠেকাতে হিন্দু সম্প্রদায় ও মন্দিরকে ঘিরে অশুভ চক্রের চক্রান্ত ঠেকাতে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে পাহারা দিচ্ছে। যাতে শান্তি ও সহাবস্থানের মধ্যদিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হতে পারে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীরা দেশ ও মানবতার শত্রু। তাদের প্রতিহত করতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি অঙ্গীকারাবদ্ধ।

mzamin


No comments

Powered by Blogger.