কাশ্মিরে আরও ৮ হাজার সেনা মোতায়েন, সতর্ক সশস্ত্র বাহিনী
সংবিধানের
৩৭০ ধারার আওতায় জম্মু-কাশ্মিরকে দেওয়া ‘বিশেষ মর্যাদা’ বাতিলের ঘোষণার পর
সেখানে আধা-সামরিক বাহিনীর আরও ৮ হাজার সেনা মোতায়েন করেছে ভারতের
কেন্দ্রীয় সরকার। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এসব সেনাকে পাঠানো হয়েছে।
পাশাপাশি সেদেশের সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীকেও সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায়
থাকতে বলা হয়েছে। ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই-এর প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য
জানা গেছে।
বুকারজয়ী ভারতীয় লেখক ও মানবাধিকারকর্মী অরুন্ধতী রায় কাশ্মিরকে দেখেন ‘একটি পরমাণু যুদ্ধক্ষেত্র এবং পৃথিবীর সবচেয়ে সামরিকীকরণকৃত এলাকা’ হিসেবে। সেই ২০১৩ সালে ‘আফজাল গুরুর ফাঁসি ভারতীয় গণতন্ত্রের জন্য কলঙ্ক’ শীর্ষক নিবন্ধে তিনি বলেছিলেন, ‘এখানে [কাশ্মিরে] রয়েছে ভারতের পাঁচ লাখ সৈনিক। প্রতি চারজন বেসামরিক নাগরিকের বিপরীতে একজন সৈন্য! আবু গারিবের আদলে এখানকার আর্মি ক্যাম্প ও টর্চার কেন্দ্রগুলোই কাশ্মিরিদের জন্য ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্রের বার্তাবাহক।’ ২০১৩ সালের পর আরও ৫ বছর পেরিয়ে গেছে। কাশ্মির সংকটের সমাধানে সেখানে সেনা-সংখ্যা আরও বাড়ানো হয়েছে। দমনপীড়নের পথেই হেঁটেছে ভারতীয় বাহিনী। গত সপ্তাহে আধাসামরিক বাহিনীর ৩৫ হাজার সদস্য মোতায়েন, আর আজ ৩৭০ ধারা বাতিলের ঘোষণার পর নতুন করে সেখানে আরও ৮ হাজার সেনা পাঠানো হলো।
ভারতীয় সংবিধানের যে ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদে কাশ্মিরকে স্বায়ত্তশাসিত রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে সোমবার সেটি বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সোমবার (৫ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের পর এ ঘোষণা দেন তিনি। ইতোমধ্যে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় এ সংক্রান্ত বিলও উত্থাপন করেছেন অমিত শাহ। আর ৩৭০ ধারা বাতিলের ঘোষণার পর কাশ্মিরজুড়ে নিরাপত্তা জোরদারের কথা বলে নতুন করে সেখানে সেনা সংখ্যা আরও বাড়ানো হলো। সূত্রকে উদ্ধৃত করে এএনআই-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সপ্তাহে সরকার অমরনাথ যাত্রা বাতিলের ঘোষণা দেওয়ার পর বাড়ির উদ্দেশে রওনা করা তীর্থযাত্রীদের অনেকে এখনও পথে আছেন। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সেনা উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার দাবি করছে, রাজ্যে উচ্চ মাত্রার জঙ্গি হুমকি ঠেকাতে বিপুল সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, ২৯ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত তিন দিন ধরে জঙ্গিরা নিয়ন্ত্রণরেখা পার হওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি প্রচেষ্টা চালিয়েছে। এর মধ্যে ৪-৫টি প্রচেষ্টা সফল হয়েছে। তারা বলছে চাইছে, ফেব্রুয়ারিতে পুলওয়ামায় চালানো হামলার মতো করে অমরনাথ তীর্থযাত্রীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল তাদের। চার-পাঁচজন ভারতে অনুপ্রবেশ করতেও সক্ষম হয়েছে। তবে সামরিক পথে যে কাশ্মিরে জঙ্গি হামলাসহ কোনও সংকটেরই সমাধান সম্ভব নয়, বিশ্লেষকরা তা বারবার বলে আসছেন।
খুব বেশিদিন আগের কথা নয়; পুলওয়ামা হামলার মূল হোতা আদিল আহমেদ দার পাকিস্তানের সঙ্গে ক্রিকেট খেলায় ভারতকে সমর্থন করতেন। কদিন আগেও তিনি ছিলেন সুফি ধারার অনুসারী। আচমকা সেই মানুষটিই জঙ্গি হয়ে ওঠেন। গত বছর একইভাবে নিজের চিন্তাধারায় রূপান্তর এনেছিলেন কাশ্মিরি একজন অধ্যাপক। সমাজবিজ্ঞানের সেই মেধাবী শিক্ষার্থী একসময় কার্ল মার্ক্সের বস্তুবাদী তত্ত্বে শনাক্তকৃত ধর্মের অবস্থান নিয়ে আলোচনামুখর থাকলেও সামিল হয়েছিলেন সশস্ত্রপন্থী হিজবুল মুজাহিদীনের পতাকাতলে। গত বছর মে মাসে তিনি ‘শহীদ’ হন। বিশ্লেষকরা মনে করেন, ব্যাপক মাত্রায় সামরিকায়ন, নিরাপত্তা তল্লাশির সূত্রে হওয়া নির্বিচার হয়রানি ও স্বশাসনের অধিকার ক্ষুণ্ন করার মতো বিষয়গুলো স্থানীয়দের মধ্যে বিচ্ছিন্নতাবোধ জাগিয়ে তুলছে। তাদেরকে ঠেলে দিচ্ছে পাকিস্তান সমর্থিত জঙ্গি সংগঠনগুলোর দিকে। তার মধ্যে ৩৭০ ধারা বিলোপ করে স্বায়ত্তশাসনের আনুষ্ঠানিক অধিকারও কেড়ে নেওয়া হলো।
উল্লেখ্য, ৩৭০ ধারার আওতায় জম্মু ও কাশ্মিরকে নিজস্ব সংবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। সেইসঙ্গে প্রতিরক্ষা, যোগাযোগ ও পররাষ্ট্র সংক্রান্ত বিষয় বাদ রেখে সব ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নির্মাণের অধিকারও দেওয়া হয় এর আওতায়। সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করার মানে হলো কাশ্মিরের ‘বিশেষ মর্যাদা’ হারানো। আর এ বিশেষ মর্যাদা হলো, ১৯৪৭ সালে ভারতের সঙ্গে কাশ্মিরের সংযুক্ত হওয়ার মূল চাবিকাঠি।
বুকারজয়ী ভারতীয় লেখক ও মানবাধিকারকর্মী অরুন্ধতী রায় কাশ্মিরকে দেখেন ‘একটি পরমাণু যুদ্ধক্ষেত্র এবং পৃথিবীর সবচেয়ে সামরিকীকরণকৃত এলাকা’ হিসেবে। সেই ২০১৩ সালে ‘আফজাল গুরুর ফাঁসি ভারতীয় গণতন্ত্রের জন্য কলঙ্ক’ শীর্ষক নিবন্ধে তিনি বলেছিলেন, ‘এখানে [কাশ্মিরে] রয়েছে ভারতের পাঁচ লাখ সৈনিক। প্রতি চারজন বেসামরিক নাগরিকের বিপরীতে একজন সৈন্য! আবু গারিবের আদলে এখানকার আর্মি ক্যাম্প ও টর্চার কেন্দ্রগুলোই কাশ্মিরিদের জন্য ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্রের বার্তাবাহক।’ ২০১৩ সালের পর আরও ৫ বছর পেরিয়ে গেছে। কাশ্মির সংকটের সমাধানে সেখানে সেনা-সংখ্যা আরও বাড়ানো হয়েছে। দমনপীড়নের পথেই হেঁটেছে ভারতীয় বাহিনী। গত সপ্তাহে আধাসামরিক বাহিনীর ৩৫ হাজার সদস্য মোতায়েন, আর আজ ৩৭০ ধারা বাতিলের ঘোষণার পর নতুন করে সেখানে আরও ৮ হাজার সেনা পাঠানো হলো।
ভারতীয় সংবিধানের যে ৩৭০ নম্বর অনুচ্ছেদে কাশ্মিরকে স্বায়ত্তশাসিত রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে সোমবার সেটি বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সোমবার (৫ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সাক্ষাতের পর এ ঘোষণা দেন তিনি। ইতোমধ্যে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় এ সংক্রান্ত বিলও উত্থাপন করেছেন অমিত শাহ। আর ৩৭০ ধারা বাতিলের ঘোষণার পর কাশ্মিরজুড়ে নিরাপত্তা জোরদারের কথা বলে নতুন করে সেখানে সেনা সংখ্যা আরও বাড়ানো হলো। সূত্রকে উদ্ধৃত করে এএনআই-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সপ্তাহে সরকার অমরনাথ যাত্রা বাতিলের ঘোষণা দেওয়ার পর বাড়ির উদ্দেশে রওনা করা তীর্থযাত্রীদের অনেকে এখনও পথে আছেন। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সেনা উপস্থিতি বাড়ানো হয়েছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার দাবি করছে, রাজ্যে উচ্চ মাত্রার জঙ্গি হুমকি ঠেকাতে বিপুল সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রের দাবি, ২৯ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত তিন দিন ধরে জঙ্গিরা নিয়ন্ত্রণরেখা পার হওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি প্রচেষ্টা চালিয়েছে। এর মধ্যে ৪-৫টি প্রচেষ্টা সফল হয়েছে। তারা বলছে চাইছে, ফেব্রুয়ারিতে পুলওয়ামায় চালানো হামলার মতো করে অমরনাথ তীর্থযাত্রীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল তাদের। চার-পাঁচজন ভারতে অনুপ্রবেশ করতেও সক্ষম হয়েছে। তবে সামরিক পথে যে কাশ্মিরে জঙ্গি হামলাসহ কোনও সংকটেরই সমাধান সম্ভব নয়, বিশ্লেষকরা তা বারবার বলে আসছেন।
খুব বেশিদিন আগের কথা নয়; পুলওয়ামা হামলার মূল হোতা আদিল আহমেদ দার পাকিস্তানের সঙ্গে ক্রিকেট খেলায় ভারতকে সমর্থন করতেন। কদিন আগেও তিনি ছিলেন সুফি ধারার অনুসারী। আচমকা সেই মানুষটিই জঙ্গি হয়ে ওঠেন। গত বছর একইভাবে নিজের চিন্তাধারায় রূপান্তর এনেছিলেন কাশ্মিরি একজন অধ্যাপক। সমাজবিজ্ঞানের সেই মেধাবী শিক্ষার্থী একসময় কার্ল মার্ক্সের বস্তুবাদী তত্ত্বে শনাক্তকৃত ধর্মের অবস্থান নিয়ে আলোচনামুখর থাকলেও সামিল হয়েছিলেন সশস্ত্রপন্থী হিজবুল মুজাহিদীনের পতাকাতলে। গত বছর মে মাসে তিনি ‘শহীদ’ হন। বিশ্লেষকরা মনে করেন, ব্যাপক মাত্রায় সামরিকায়ন, নিরাপত্তা তল্লাশির সূত্রে হওয়া নির্বিচার হয়রানি ও স্বশাসনের অধিকার ক্ষুণ্ন করার মতো বিষয়গুলো স্থানীয়দের মধ্যে বিচ্ছিন্নতাবোধ জাগিয়ে তুলছে। তাদেরকে ঠেলে দিচ্ছে পাকিস্তান সমর্থিত জঙ্গি সংগঠনগুলোর দিকে। তার মধ্যে ৩৭০ ধারা বিলোপ করে স্বায়ত্তশাসনের আনুষ্ঠানিক অধিকারও কেড়ে নেওয়া হলো।
উল্লেখ্য, ৩৭০ ধারার আওতায় জম্মু ও কাশ্মিরকে নিজস্ব সংবিধান প্রণয়নের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল। সেইসঙ্গে প্রতিরক্ষা, যোগাযোগ ও পররাষ্ট্র সংক্রান্ত বিষয় বাদ রেখে সব ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নির্মাণের অধিকারও দেওয়া হয় এর আওতায়। সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করার মানে হলো কাশ্মিরের ‘বিশেষ মর্যাদা’ হারানো। আর এ বিশেষ মর্যাদা হলো, ১৯৪৭ সালে ভারতের সঙ্গে কাশ্মিরের সংযুক্ত হওয়ার মূল চাবিকাঠি।
>>>সাউথ এশিয়ান মনিটর
No comments