শ্রীলঙ্কার মুসলিমবিরোধী প্রত্যাঘাতে উচ্ছেদ হওয়া উদ্বাস্তুরা নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছে
শ্রীলঙ্কায়
গত এপ্রিলে ২৫০ জনের বেশি নিহত হওয়ার সন্ত্রাসী ঘটনার পর সৃষ্ট
মুসলিমবিরোধী প্রত্যাঘাতের ফলে উচ্ছেদ হওয়া এক হাজারের বেশি উদ্বাস্তু ও
আশ্রয়প্রার্থী তিন মাস ধরে নিরাপদ স্থান খুঁজে ফিরছে।
ভাড়া করা বাড়ি থেকে উচ্ছেদ হওয়া এক হাজারের বেশি উদ্বাস্তু ও আশ্রয়প্রার্থী কোনো নিরাপদ ঠিকানা পাচ্ছে না। মানবাধিকার গ্রুপগুলো জানিয়েছে, ওই বোমা হামলার পর উপকূলীয় নগরী নেগোম্বোতে দাঙ্গাবাজেরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে উদ্বাস্তুদের উচ্ছেদ করার জন্য মালিকদের প্রতি দাবি জানায়। উদ্বাস্তুদের বেশির ভাগই পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের নির্যাতিত সম্প্রদায়সহ সংখ্যালঘু।
স্থানীয় অধিকার গ্রুপ ও জাতিসঙ্ঘ উদ্বাস্তু সংস্থা ইউএনএইচসিআর উত্তপ্ত পরিস্থিতির কথা জানিয়েছে। তারা জানায়, তারা উদ্বাস্তুদের জন্য অস্থায়ীভাবে বসবাসের জায়গার ব্যবস্থা করলে তার বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ হয়। অনেক ক্ষেত্রে উদ্বাস্তু পরিবারগুলো বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধর্না দিলেও কোথাও আশ্রয় মেলেনি।
ইউএনএইচসিআরের শ্রীলঙ্কা অফিসের প্রধান মেনেরিক অমরসিঙ্গে বলেন, এসব লোককে বসবাসের ব্যবস্থা করার প্রতিটি উদ্যোগে বাধা এসেছে।
উচ্ছেদ হওয়া ৯০ জন উদ্বাস্তু ও আশ্রয়প্রার্থী বর্তমানে সরকারি স্থাপনা ভাবুনিয়ায় বাস করছে। তাদের জন্য সামরিক বাহিনীর প্রহরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নেগোম্বোর একটি মসজিদে এখনো শতাধিক উদ্বাস্তু বসবাস করছে। তারা আশপাশের লোকালয়ে যেতে ভয় পাচ্ছে।
কলম্বোভিত্তিক ইনফর্ম হিউম্যান ডকুমেন্টেশন সেন্টারের মানবাধিকার কর্মী রুকি ফারনান্ডো ওই সরকারি স্থাপনাকে কার্যত কারাগার হিসেবে অভিহিত করেন।
তিনি বলেন, আমাদের ইতিহাসে এ ধরনের পরিস্থিতি কখনো দেখিনি। উদ্বাস্তুরা এত ভীত যে তারা সশস্ত্র বাহিনীর পাহারা ছাড়া ক্যাম্পের বাইরে যেতে চায় না।
ইউএনএইচসিআর জানায় শুরুতে আশ্রয়হারা এক হাজার লোকের মধ্যে এখনো ২২৮ জন নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছে। এদের মধ্যে ভাভুনিয়ার ৯০ জনও রয়েছে।
ইস্টার সানডে হামলার পর থেকে শ্রীলঙ্কার জাতিগত বিভাজন আরো গভীর হয়েছে। তথাকথিত ইসলামিক স্টেটের প্রতি অনুগত একটি সংগঠন ওই হামলা চালানোর দাবি করে।
শ্রীলঙ্কায় এক দশক আগে ২৬ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের অবসান হলেও বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, দেশটিতে দায়মুক্তির সংস্কৃতির কারণে যুদ্ধকালীন নির্যাতনের ঘটনাগুলোর সুরাহা করা যায়নি। শ্রীলঙ্কায় বৌদ্ধদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও সেখানে রয়েছে হিন্দু তামিল, মুসলিম ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়।
অধিকার গ্রুপগুলো অভিযোগ করছে যে বৌদ্ধ গ্রুপগুলো সামাজিক মাধ্যমে মুসলিমবিরোধী ভাবাবেগ ছড়িয়ে দিচ্ছে।
আর হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, কর্তৃপক্ষ সন্ত্রাসদমন আইনে শ্রীলঙ্কার শত শত মুসলিমকে নির্বিচারে গ্রেফতার করেছে।
মসজিদগুলো এখন আশ্রয়কেন্দ্র
কলম্বো থেকে ৩০ কিলোমিটার উত্তরে সমুদের তীরে অবস্থিত নেগোম্বোতে এক আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী এপ্রিলে নগরীর সেন্ট সেবাস্তিয়ান্স চার্চে হামলা চালায়। দাঙ্গাবাজেরা মে মাসে মুসলিম মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে হামলা চালালে সরকার কারফিউ জারি করে। স্থানীয় ভূস্বামীরাও ২৪ বছর বয়স্ক আহমদিয়া মুসলিম আহসান মাহমুদের মতো আশ্রয়প্রার্থী ও উদ্বাস্তুদের উচ্ছেদ করে।
মাহমুদ দুই বছর আগে পাকিস্তান থেকে শ্রীলঙ্কায় পালিয়ে গিয়েছিল। আরো ১০০ জনের সাথে তিন মাস ধরে তিনি নগরীর আহমদিয়া মসজিদে বসবাস করছেন। স্থানটি ক্ষতিগ্রস্ত চার্চটি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে। শ্রীলঙ্কায় আশ্রয়প্রার্থী প্রায় ১৭ শ’ জনের মধ্যে পাকিস্তানি আহমদিয়া ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের রয়েছে প্রায় ১,৩৫০ জন।
মাহমুদ জানান, তার দাড়ির কারণে তিনি মসজিদের বাইরে যেতে ভয় পান। তিনি ধর্মীয় সংস্থা ও মানবিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে দান করে আনা খাবারের ওপর নির্ভর করেন।
নতুন আশ্রয়ের খোঁজে উদ্বাস্তুরা
ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, মাহমুদের মতো লোকজনকে নতুন কোনো স্থানে পুনর্বাসন করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।
অমরসিঙ্ঘে বলেন, আমরা সরকারকে বলেছি তাদের জন্য জায়গা নির্ধারণ করে দিতে, তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে। কিন্তু তাদের জন্য যথাযথ জায়গা পাওয়া কঠিন ব্যাপার।
মাহমুদ বলেন, এপ্রিলের বোমা হামলার আগে ও পরে তাদের জীবন ব্যাপকভাবে বদলে গেছে। আগেও স্থানীয় পুলিশ ও সৈন্যরা তাদের মাঝে মধ্যে হয়রানি করত। কিন্তু জীবন ছিল দেশের নির্যাতিত অবস্থা থেকে অনেক ভালো।
তিনি পাকিস্তানে রয়ে যাওয়া তার পরিবারের অবশিষ্ট সদস্যদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতেন। তিনি বলেন, এখন এখানেও তিনি আতঙ্কে আছেন।
তিনি বলেন, আমি শ্রীলঙ্কার জন্য প্রার্থনা করি। আমি চাই এই স্থানটি ইস্টার সানডের আগের অবস্থায় ফিরে যাক।
ভাড়া করা বাড়ি থেকে উচ্ছেদ হওয়া এক হাজারের বেশি উদ্বাস্তু ও আশ্রয়প্রার্থী কোনো নিরাপদ ঠিকানা পাচ্ছে না। মানবাধিকার গ্রুপগুলো জানিয়েছে, ওই বোমা হামলার পর উপকূলীয় নগরী নেগোম্বোতে দাঙ্গাবাজেরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে উদ্বাস্তুদের উচ্ছেদ করার জন্য মালিকদের প্রতি দাবি জানায়। উদ্বাস্তুদের বেশির ভাগই পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের নির্যাতিত সম্প্রদায়সহ সংখ্যালঘু।
স্থানীয় অধিকার গ্রুপ ও জাতিসঙ্ঘ উদ্বাস্তু সংস্থা ইউএনএইচসিআর উত্তপ্ত পরিস্থিতির কথা জানিয়েছে। তারা জানায়, তারা উদ্বাস্তুদের জন্য অস্থায়ীভাবে বসবাসের জায়গার ব্যবস্থা করলে তার বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ হয়। অনেক ক্ষেত্রে উদ্বাস্তু পরিবারগুলো বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধর্না দিলেও কোথাও আশ্রয় মেলেনি।
ইউএনএইচসিআরের শ্রীলঙ্কা অফিসের প্রধান মেনেরিক অমরসিঙ্গে বলেন, এসব লোককে বসবাসের ব্যবস্থা করার প্রতিটি উদ্যোগে বাধা এসেছে।
উচ্ছেদ হওয়া ৯০ জন উদ্বাস্তু ও আশ্রয়প্রার্থী বর্তমানে সরকারি স্থাপনা ভাবুনিয়ায় বাস করছে। তাদের জন্য সামরিক বাহিনীর প্রহরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নেগোম্বোর একটি মসজিদে এখনো শতাধিক উদ্বাস্তু বসবাস করছে। তারা আশপাশের লোকালয়ে যেতে ভয় পাচ্ছে।
কলম্বোভিত্তিক ইনফর্ম হিউম্যান ডকুমেন্টেশন সেন্টারের মানবাধিকার কর্মী রুকি ফারনান্ডো ওই সরকারি স্থাপনাকে কার্যত কারাগার হিসেবে অভিহিত করেন।
তিনি বলেন, আমাদের ইতিহাসে এ ধরনের পরিস্থিতি কখনো দেখিনি। উদ্বাস্তুরা এত ভীত যে তারা সশস্ত্র বাহিনীর পাহারা ছাড়া ক্যাম্পের বাইরে যেতে চায় না।
ইউএনএইচসিআর জানায় শুরুতে আশ্রয়হারা এক হাজার লোকের মধ্যে এখনো ২২৮ জন নিরাপদ আশ্রয় খুঁজছে। এদের মধ্যে ভাভুনিয়ার ৯০ জনও রয়েছে।
ইস্টার সানডে হামলার পর থেকে শ্রীলঙ্কার জাতিগত বিভাজন আরো গভীর হয়েছে। তথাকথিত ইসলামিক স্টেটের প্রতি অনুগত একটি সংগঠন ওই হামলা চালানোর দাবি করে।
শ্রীলঙ্কায় এক দশক আগে ২৬ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধের অবসান হলেও বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, দেশটিতে দায়মুক্তির সংস্কৃতির কারণে যুদ্ধকালীন নির্যাতনের ঘটনাগুলোর সুরাহা করা যায়নি। শ্রীলঙ্কায় বৌদ্ধদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও সেখানে রয়েছে হিন্দু তামিল, মুসলিম ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়।
অধিকার গ্রুপগুলো অভিযোগ করছে যে বৌদ্ধ গ্রুপগুলো সামাজিক মাধ্যমে মুসলিমবিরোধী ভাবাবেগ ছড়িয়ে দিচ্ছে।
আর হিউম্যান রাইটস ওয়াচ জানিয়েছে, কর্তৃপক্ষ সন্ত্রাসদমন আইনে শ্রীলঙ্কার শত শত মুসলিমকে নির্বিচারে গ্রেফতার করেছে।
মসজিদগুলো এখন আশ্রয়কেন্দ্র
কলম্বো থেকে ৩০ কিলোমিটার উত্তরে সমুদের তীরে অবস্থিত নেগোম্বোতে এক আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী এপ্রিলে নগরীর সেন্ট সেবাস্তিয়ান্স চার্চে হামলা চালায়। দাঙ্গাবাজেরা মে মাসে মুসলিম মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে হামলা চালালে সরকার কারফিউ জারি করে। স্থানীয় ভূস্বামীরাও ২৪ বছর বয়স্ক আহমদিয়া মুসলিম আহসান মাহমুদের মতো আশ্রয়প্রার্থী ও উদ্বাস্তুদের উচ্ছেদ করে।
মাহমুদ দুই বছর আগে পাকিস্তান থেকে শ্রীলঙ্কায় পালিয়ে গিয়েছিল। আরো ১০০ জনের সাথে তিন মাস ধরে তিনি নগরীর আহমদিয়া মসজিদে বসবাস করছেন। স্থানটি ক্ষতিগ্রস্ত চার্চটি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে। শ্রীলঙ্কায় আশ্রয়প্রার্থী প্রায় ১৭ শ’ জনের মধ্যে পাকিস্তানি আহমদিয়া ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের রয়েছে প্রায় ১,৩৫০ জন।
মাহমুদ জানান, তার দাড়ির কারণে তিনি মসজিদের বাইরে যেতে ভয় পান। তিনি ধর্মীয় সংস্থা ও মানবিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে দান করে আনা খাবারের ওপর নির্ভর করেন।
নতুন আশ্রয়ের খোঁজে উদ্বাস্তুরা
ইউএনএইচসিআর জানিয়েছে, মাহমুদের মতো লোকজনকে নতুন কোনো স্থানে পুনর্বাসন করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।
অমরসিঙ্ঘে বলেন, আমরা সরকারকে বলেছি তাদের জন্য জায়গা নির্ধারণ করে দিতে, তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে। কিন্তু তাদের জন্য যথাযথ জায়গা পাওয়া কঠিন ব্যাপার।
মাহমুদ বলেন, এপ্রিলের বোমা হামলার আগে ও পরে তাদের জীবন ব্যাপকভাবে বদলে গেছে। আগেও স্থানীয় পুলিশ ও সৈন্যরা তাদের মাঝে মধ্যে হয়রানি করত। কিন্তু জীবন ছিল দেশের নির্যাতিত অবস্থা থেকে অনেক ভালো।
তিনি পাকিস্তানে রয়ে যাওয়া তার পরিবারের অবশিষ্ট সদস্যদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করতেন। তিনি বলেন, এখন এখানেও তিনি আতঙ্কে আছেন।
তিনি বলেন, আমি শ্রীলঙ্কার জন্য প্রার্থনা করি। আমি চাই এই স্থানটি ইস্টার সানডের আগের অবস্থায় ফিরে যাক।
No comments