নুরুল হক নুরের বিস্ময়কর জয়ের নেপথ্যে by মুনির হোসেন
নুরুল
হক নুর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নবনির্বাচিত
ভিপি। ২৮ বছর পর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগের প্রার্থী
রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনকে হারিয়ে ডাকসুর ২৫তম ভিপি নির্বাচিত হয়েছেন নুর।
ছাত্র হলগুলোতে একচেটিয়া জয় ছাত্রলীগের। কেন্দ্রীয় সংসদেও দুটি ছাড়া সব পদ
ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনের দখলে। এ অবস্থায় নুরের বিস্ময়কর জয় নিয়ে
আলোচনা সর্বত্র। কোটা সংস্কার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া নুরের পরিচিতি
দেশজুড়ে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নেতার কাঁধে এখন
ডাকসুর দায়িত্ব।
এত বৈরিতার মধ্যেও কীভাবে জয় ছিনিয়ে আনলেন নুর এ প্রশ্ন এখন মুখে মুখে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থী নুর হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ছিলেন আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফরম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক। এ আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে হামলা, মামলা ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে নুরকে। কঠিন চাপের মুখে নতি স্বীকার করেন নি শাসক শ্রেণির কাছে। বীরদর্পে লড়ে গিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে। আর প্রিয়ভাজন হয়েছেন দেশের সকল শিক্ষার্থীর কাছে। দলমত নির্বিশেষে সবার কাছে প্রিয় হয়ে ওঠা নুরকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘ছাত্রবন্ধু’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন শুভাকাঙ্ক্ষীরা। আর সাধারণ শিক্ষার্থীদের ইচ্ছেতে লড়েছেন ডাকসু নির্বাচনে।
কেন্দ্রীয় সংসদের ভিপি পদে। এ পদে তার অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন। সাধারণ শিক্ষার্থীরাও আস্থা রেখেছেন নুরের প্রতি। নির্বাচিত হয়েছেন ডাকসুর ২৫তম ভিপি হিসেবে। পেয়েছেন ১১ হাজার ৬২ ভোট। যদিও এ নির্বাচনে নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে নির্বাচন বয়কট করেছিলেন নুর। তবুও আস্থার দায়বদ্ধতা থেকে এখন কাজ করতে চান সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য। গতকাল দুপুরে ভিপি হয়ে ক্যাম্পাসে এসেছেন নুর। বক্তব্য দিয়েছেন তিন দফায়। প্রথম দফায় গণমাধ্যমের মুখোমুখি হতে গিয়ে টিএসসির প্রধান ফটকে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হন। দ্বিতীয় দফায় রাজু ভাস্কর্যের সামনে নির্বাচন বর্জনকারী সবার সঙ্গে মিলিত হয়েছিলেন সমাবেশে।
তৃতীয় দফায় ভিপি পদে ছাত্রলীগের পরাজিত প্রার্থী শোভন শুভেচ্ছা জানাতে এলে আবারো গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন নুর। বলেন, শোভন আমার বড় ভাই। আমি চাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী ও সব ছাত্র সংগঠন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলবে। এক সঙ্গে কাজ করবে। ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকবে। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিরাজ করবে। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি শাহবাগে শুরু হয় সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলন। এ দাবিতে একাট্টা হয় সারা দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের প্রয়োজনে গঠন করা হয় বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। সেই আন্দোলনে নুরুল হক নুরকে করা হয় যুগ্ম আহ্বায়ক। আহ্বায়ক হাসান আল মামুনের সঙ্গে যে তিনজন যুগ্ম আহ্বায়ক কোটা সংস্কার আন্দোলনের শীর্ষ নেতৃত্বে ছিলেন তাদের একজন নুর। ফেব্রুয়ারি-মার্চ-এপ্রিল।
এ তিন মাসে আন্দোলন করতে গিয়ে কঠিন পরীক্ষাগুলোর মোকাবিলা করতে হয় নুরদের। প্রথম পর্যায়ে পুলিশের হামলা ও মামলা। এরপর ছাত্রলীগের হামলা। কোনো খ্তগই বাদ যায়নি নুরের ওপর। এরপর আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছেন। সেদিন ছাত্রলীগের টার্গেটে পড়ে হাসপাতালে ছিলেন বেশ কিছুদিন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেয়া হয়নি চিকিৎসা। প্রাইভেটে গিয়েও চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। সরকারের নির্দেশনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে বের করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন। এরপরও দমেন নি। মামলা মোকাবিলা করে নেতৃত্ব চালিয়ে গেছেন। আর এসব হামলা ও মামলার কারণে শিক্ষার্থীদের কাছেও হয়ে উঠেন জনপ্রিয়। কোটা বাতিল হয়েছে সরকারি চাকরিতে। এরই মধ্যে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনেও নিজেকে যুক্ত করে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। প্রতিবাদ করেছেন ‘ঘ’ ইউনিটের প্রশ্নফাঁসের। সফলও হয়েছেন সে আন্দোলনে। এদিকে নুরের ডাকসুতে বিস্ময়কর সাফল্যের অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভালোবাসা। যেটি গত ১১ই মার্চের নির্বাচনে ব্যালটের মাধ্যমে প্রমাণও দিয়েছেন তারা।
নির্বাচিত হয়েছেন দেশের ঐতিহাসিক সব অর্জনে যে সংগঠনের ভূমিকা ছিল সর্বাগ্রে সেই ডাকসুর। নুরের নির্বাচিত হওয়ার পেছনে অবশ্য আরো কারণ দেখছেন সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রসংগঠনগুলো। তাদের মতে ছাত্রলীগের পরাজয়ের পেছনে সংগঠনটির অভ্যন্তরীণ কোন্দল, সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধ অবস্থান ছাত্রলীগের এবং যোগ্য প্রার্থী না দিতে পারায় ছাত্রলীগের পরাজয় হয়েছে। যেখানে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন নুরের জনপ্রিয়তার কাছে কিছুই ছিলেন না। যার কারণে নানা অনিয়মের অভিযোগের পরও ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল লেখেছেন, ‘নুরের মধ্যে আমি দেখি তরুণ বয়সের বঙ্গবন্ধুর ছায়া। সাধারণ ছাত্রদের নির্যাতনকারীদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু কোনোভাবেই নেই। ‘নুরের বিজয়, নুরের শপথ’ শিরোনামে তিনি লেখেন- কুয়েত মৈত্রী হলের নির্বাচনের ফলাফল ভালো করে লক্ষ্য করুন- এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে ব্যালট ভরা বাক্স উদ্ধারের পর ছাত্রীদের তুমুল প্রতিবাদে ফেটে পড়লে নতুন প্রভোস্ট নিয়োগ দিতে হয়েছে। নির্বাচনে কারচুপির কোনো সুযোগ ছিল না সেখানে। ফলাফল? ১৩টির সব আসনে পরাজিত ছাত্রলীগ।
নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হলে ডাকসু ও বাকি সব হলের ফলাফল হয়তো তাই হতো। ডাকসুতে শুধু নুর আর আখতার না, জিততো কোটা আন্দোলনের আরো অনেকে। বিভিন্ন আলামত দেখে এটা মনে হয় যে কোটার অনেককে কারচুপি করে হারিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু নুর আর আখতারের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বীর ব্যবধান এত বিশাল ছিল যে কারচুপি করেও তাদের হারানো যায়নি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে নুরের কি ডাকসু ভিপি পদ গ্রহণ করা উচিত? আমার মতে কোটা আন্দোলনের নেতারা সবাই যদি রাজি থাকে তাহলে তার ডাকসু ভিপির পদ গ্রহণ করা উচিত। ডাকসু ভিপি হিসেবেই হয়তো ছাত্রদের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে আরো বেগবান করা সম্ভব। তবে নুরকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোটা আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে। বাম বা ছাত্রদলের মতামত এখানে গুরুত্বপূর্ণ হতো যদি তারা কোটার নেতাদের সঙ্গে একসঙ্গে নির্বাচন করতো। তারা এটি করেনি। নুরের মধ্যে আমি দেখি তরুণ বয়সের বঙ্গবন্ধুর ছায়া। সাধারণ ছাত্রদের নির্যাতনকারীদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু কোনোভাবেই নেই।’
এত বৈরিতার মধ্যেও কীভাবে জয় ছিনিয়ে আনলেন নুর এ প্রশ্ন এখন মুখে মুখে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থী নুর হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ছিলেন আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফরম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক। এ আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে হামলা, মামলা ও নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে নুরকে। কঠিন চাপের মুখে নতি স্বীকার করেন নি শাসক শ্রেণির কাছে। বীরদর্পে লড়ে গিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে। আর প্রিয়ভাজন হয়েছেন দেশের সকল শিক্ষার্থীর কাছে। দলমত নির্বিশেষে সবার কাছে প্রিয় হয়ে ওঠা নুরকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘ছাত্রবন্ধু’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন শুভাকাঙ্ক্ষীরা। আর সাধারণ শিক্ষার্থীদের ইচ্ছেতে লড়েছেন ডাকসু নির্বাচনে।
কেন্দ্রীয় সংসদের ভিপি পদে। এ পদে তার অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন ক্ষমতাসীন ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন। সাধারণ শিক্ষার্থীরাও আস্থা রেখেছেন নুরের প্রতি। নির্বাচিত হয়েছেন ডাকসুর ২৫তম ভিপি হিসেবে। পেয়েছেন ১১ হাজার ৬২ ভোট। যদিও এ নির্বাচনে নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে নির্বাচন বয়কট করেছিলেন নুর। তবুও আস্থার দায়বদ্ধতা থেকে এখন কাজ করতে চান সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য। গতকাল দুপুরে ভিপি হয়ে ক্যাম্পাসে এসেছেন নুর। বক্তব্য দিয়েছেন তিন দফায়। প্রথম দফায় গণমাধ্যমের মুখোমুখি হতে গিয়ে টিএসসির প্রধান ফটকে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হন। দ্বিতীয় দফায় রাজু ভাস্কর্যের সামনে নির্বাচন বর্জনকারী সবার সঙ্গে মিলিত হয়েছিলেন সমাবেশে।
তৃতীয় দফায় ভিপি পদে ছাত্রলীগের পরাজিত প্রার্থী শোভন শুভেচ্ছা জানাতে এলে আবারো গণমাধ্যমের মুখোমুখি হন নুর। বলেন, শোভন আমার বড় ভাই। আমি চাই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থী ও সব ছাত্র সংগঠন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলবে। এক সঙ্গে কাজ করবে। ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকবে। শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিরাজ করবে। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি শাহবাগে শুরু হয় সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলন। এ দাবিতে একাট্টা হয় সারা দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের প্রয়োজনে গঠন করা হয় বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। সেই আন্দোলনে নুরুল হক নুরকে করা হয় যুগ্ম আহ্বায়ক। আহ্বায়ক হাসান আল মামুনের সঙ্গে যে তিনজন যুগ্ম আহ্বায়ক কোটা সংস্কার আন্দোলনের শীর্ষ নেতৃত্বে ছিলেন তাদের একজন নুর। ফেব্রুয়ারি-মার্চ-এপ্রিল।
এ তিন মাসে আন্দোলন করতে গিয়ে কঠিন পরীক্ষাগুলোর মোকাবিলা করতে হয় নুরদের। প্রথম পর্যায়ে পুলিশের হামলা ও মামলা। এরপর ছাত্রলীগের হামলা। কোনো খ্তগই বাদ যায়নি নুরের ওপর। এরপর আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছেন। সেদিন ছাত্রলীগের টার্গেটে পড়ে হাসপাতালে ছিলেন বেশ কিছুদিন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দেয়া হয়নি চিকিৎসা। প্রাইভেটে গিয়েও চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। সরকারের নির্দেশনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে বের করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন। এরপরও দমেন নি। মামলা মোকাবিলা করে নেতৃত্ব চালিয়ে গেছেন। আর এসব হামলা ও মামলার কারণে শিক্ষার্থীদের কাছেও হয়ে উঠেন জনপ্রিয়। কোটা বাতিল হয়েছে সরকারি চাকরিতে। এরই মধ্যে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনেও নিজেকে যুক্ত করে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। প্রতিবাদ করেছেন ‘ঘ’ ইউনিটের প্রশ্নফাঁসের। সফলও হয়েছেন সে আন্দোলনে। এদিকে নুরের ডাকসুতে বিস্ময়কর সাফল্যের অন্যতম কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভালোবাসা। যেটি গত ১১ই মার্চের নির্বাচনে ব্যালটের মাধ্যমে প্রমাণও দিয়েছেন তারা।
নির্বাচিত হয়েছেন দেশের ঐতিহাসিক সব অর্জনে যে সংগঠনের ভূমিকা ছিল সর্বাগ্রে সেই ডাকসুর। নুরের নির্বাচিত হওয়ার পেছনে অবশ্য আরো কারণ দেখছেন সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রসংগঠনগুলো। তাদের মতে ছাত্রলীগের পরাজয়ের পেছনে সংগঠনটির অভ্যন্তরীণ কোন্দল, সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধ অবস্থান ছাত্রলীগের এবং যোগ্য প্রার্থী না দিতে পারায় ছাত্রলীগের পরাজয় হয়েছে। যেখানে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন নুরের জনপ্রিয়তার কাছে কিছুই ছিলেন না। যার কারণে নানা অনিয়মের অভিযোগের পরও ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল লেখেছেন, ‘নুরের মধ্যে আমি দেখি তরুণ বয়সের বঙ্গবন্ধুর ছায়া। সাধারণ ছাত্রদের নির্যাতনকারীদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু কোনোভাবেই নেই। ‘নুরের বিজয়, নুরের শপথ’ শিরোনামে তিনি লেখেন- কুয়েত মৈত্রী হলের নির্বাচনের ফলাফল ভালো করে লক্ষ্য করুন- এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেখানে ব্যালট ভরা বাক্স উদ্ধারের পর ছাত্রীদের তুমুল প্রতিবাদে ফেটে পড়লে নতুন প্রভোস্ট নিয়োগ দিতে হয়েছে। নির্বাচনে কারচুপির কোনো সুযোগ ছিল না সেখানে। ফলাফল? ১৩টির সব আসনে পরাজিত ছাত্রলীগ।
নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে হলে ডাকসু ও বাকি সব হলের ফলাফল হয়তো তাই হতো। ডাকসুতে শুধু নুর আর আখতার না, জিততো কোটা আন্দোলনের আরো অনেকে। বিভিন্ন আলামত দেখে এটা মনে হয় যে কোটার অনেককে কারচুপি করে হারিয়ে দেয়া হয়েছে। কিন্তু নুর আর আখতারের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বীর ব্যবধান এত বিশাল ছিল যে কারচুপি করেও তাদের হারানো যায়নি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে নুরের কি ডাকসু ভিপি পদ গ্রহণ করা উচিত? আমার মতে কোটা আন্দোলনের নেতারা সবাই যদি রাজি থাকে তাহলে তার ডাকসু ভিপির পদ গ্রহণ করা উচিত। ডাকসু ভিপি হিসেবেই হয়তো ছাত্রদের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে আরো বেগবান করা সম্ভব। তবে নুরকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোটা আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে। বাম বা ছাত্রদলের মতামত এখানে গুরুত্বপূর্ণ হতো যদি তারা কোটার নেতাদের সঙ্গে একসঙ্গে নির্বাচন করতো। তারা এটি করেনি। নুরের মধ্যে আমি দেখি তরুণ বয়সের বঙ্গবন্ধুর ছায়া। সাধারণ ছাত্রদের নির্যাতনকারীদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু কোনোভাবেই নেই।’
No comments