তুষার এল দুয়ারে by তবারুকুল ইসলাম
তুষারঝড়ে
শুভ্র চাদরে ঢাকা পড়েছে যুক্তরাজ্য। তুষারপাতের কারণে বাতিল হয়েছে হিথরো
বিমানবন্দরের শতাধিক ফ্লাইট। দেশটির কোথাও কোথাও তাপমাত্রা নেমে গেছে
মাইনাস ১৫ ডিগ্রি পর্যন্ত। জরুরি ভিত্তিতে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে শত শত
বিদ্যালয়। তবে, এত কিছুর পর আনন্দিত লন্ডনবাসীর মন। কারণ, বেশ কয়েক বছর পর
ধবল তুষার দেখা দিল তাদের দুয়ারে। বুধবার দুপুরে লন্ডনের প্রকৃতি ছিল
অপরূপ। চারপাশ ধবল তুষারে ঢাকা। তাপমাত্রা মাইনাস ৩ ডিগ্রি। থেমে থেমে
অঝোরে পড়ছে তুষার। এর মধ্যে হুট করে ঝিলিক দিয়ে যায় চকচকে রোদ। বরফে সৃষ্ট
বিপর্যয়ের মধ্যে একধরনের ভাব আছে। যেমন গাড়ির কাচে জমা তুষার সরানো আর ধুলা
পরিষ্কার এক জিনিস নয়। তুষার সরানোর সময় ভাবখানা এমন যেন পোষা বিড়ালটাকে
আলতো করে শরীর থেকে নামিয়ে দিচ্ছে। আর ধুলা বা কাদা সরানোর সময় চোখে মুখে
থাকে বিরক্তির ছাপ। বাড়ির বেষ্টনী দেয়ালের পিলারগুলো ধবল তুষারের টুপি পরে
দাঁড়িয়ে আছে।
আঙিনার গাছের পাতাগুলো সেজেছে শুভ্রতায়। অপরূপ শুভ্রতার মাঝে
মিশে গিয়ে পার্ক করা গাড়িগুলোও যেন নিজেদের লুকিয়ে রেখেছে। কর্মব্যস্ত
মানুষগুলো হেঁটে যাচ্ছে। শরীর মোড়ানো মোটা কাপড়। তার ওপর আলতো করে এসে বসে
পড়ছে ছোট ছোট তুষার চূর্ণ। বরফ জমে পিচ্ছিল হয়ে পড়া রাস্তায় চলাচলের
অসুবিধা আছে। কিন্তু তা কাদা মাড়িয়ে হাঁটার মতো বিরক্তিকর নয়। বরং এই
অসুবিধা পোহানোর গল্পের মধ্যে একধরনের গৌরব আছে। তুষারঝড়ে জাদু আছে।
অকৃত্রিম মুগ্ধতায় ভরে দেয় মন। সে কারণেই তুমুল ঠান্ডা ভুলে মানুষ দৃষ্টি
ফেলে জানালার বাইরে। সুযোগ বুঝে রাস্তায় নেমে পড়ে। ধবল প্রকৃতির ছবি ধারণ
আর সেলফি চলছে দেদার। বাচ্চারা গড়াগড়ি খাচ্ছে সাদার রাজ্যে। সামাজিক
যোগাযোগমাধ্যম ভরে গেছে ধবল প্রকৃতির ছবিতে। যেসব শহরে তুষার নিত্য খেলা
করে, সেসব শহরের মানুষদের অনুভূতি হয়তো ভিন্ন। হয়তো বিরক্তিকরও। কিন্তু
তুষার নিয়ে লন্ডনবাসীর উচ্ছ্বাস দেখার মতো। আরও দু-চার দিন থাক না এমন
শুভ্রতা।
No comments