অসংক্রামক রোগের প্রকোপ বাড়ছে by ফরিদ উদ্দিন আহমেদ
দেশে
দিন দিন অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। অসংক্রামক রোগে বেশি
লোক মারা যাচ্ছে। ডায়াবেটিস, ক্যানসার, হৃদরোগ, ফুসফুস, কিডনি রোগ
ইত্যাদিতে এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। আর আগে মানুষ বেশি মারা যেত ছোঁয়াচে রোগ
কলেরা, টাইফয়েড ইত্যাদিতে। এখন ৬১ ভাগ মৃত্যু হচ্ছে অসংক্রামক রোগে বা
এনসিডিতে। জীবনযাত্রার ধরন তথা লাইফ-স্টাইল পরিবর্তনের সূত্র ধরে রোগের
ধরনে গুণগত পরিবর্তন এসেছে।
এটা নিয়ন্ত্র?ণে রাখ?তে হ?বে। সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এখন অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ। এর জন্য জনসচেতনতা প্র?য়োজন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। খাদ্যাভ্যাস ও জীবনাচারের পরিবর্তন, দ্রুত নগরায়ণ, ধূমপান, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের প্রসার, বায়ুদূষণ, সড়ক দুর্ঘটনা, মানসিক চাপের কারণে অসংক্রামক রোগের প্রকোপ বাড়ছে। তাই অসংক্রামক রোগ থেকে বাঁচতে মানুষকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রতিবেদনে হৃদরোগ, স্নায়বিক রোগ, ক্যানসার, ডায়াবেটিস, কিডনি, স্থায়ী বক্ষব্যাধি, আর্সেনিকোসিস, শ্রবণ প্রতিবন্ধিতা, মুখের রোগ- এগুলোকে অসংক্রামক রোগ বলা হচ্ছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার সুবিধার্থে পানিতে ডোবা, সাপে কামড়, আত্মহত্যা, নারীর প্রতি সহিংসতা, এসিডে পোড়া রোগীদেরও এর আওতাভুক্ত করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনেক অসংক্রামক রোগের শতভাগ চিকিৎসা ব্যবস্থা দেশে নেই। তাই অনেক অসংক্রামক রোগীকে চিকিৎসার অভাবে অকালে মৃত্যুবরণ করতে হচ্ছে। বর্তমানে দেশের শতকরা ৬১ ভাগ রোগই হচ্ছে অসংক্রামক। এসব রোগ মোকাবিলায় কোনো জাতীয় দিক নির্দেশনা নেই। বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো নিজেদের মতো করে ব্যবসায়িক মনোভাব নিয়ে এ জাতীয় রোগের চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছে।
অসংক্রামক রোগ বেড়ে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে দেশের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. এ বিএম আব্দুল্লাহ মানবজমিনকে বলেন, মানসিক চাপ, ধূমপান, ভেজাল খাবার, বায়ুদূষণের কারণে অসংক্রামক রোগ বাড়ছে। ফাস্ট ফুডে অভ্যস্ত হওয়ার পাশাপাশি শারীরিক পরিশ্রম না করার কারণেও এর ঝুঁকি বাড়ছে। তিনি বলেন, ভেজাল, ধূমপান, বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি মানুষকে সচেতন করার ব্যাপকভিত্তিক উদ্যোগ নিতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রামক রোগ ধীরে ধীরে কমছে, দ্রুত বাড়ছে অসংক্রামক রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। আর অসংক্রামক রোগে আক্রান্তরা খুব তাড়াতাড়ি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন। এ ধরনের রোগের চিকিৎসা ব্যয় দেশের অধিকাংশ মানুষের সামর্থ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। অসংক্রামক রোগ আজ এক মারাত্মক জনস্বাস্থ্য সমস্যা, যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রতিকার ও প্রতিরোধযোগ্য।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ২০১৭ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদনের পরিসংখ্যানে বিভিন্ন বিশেষায়িত ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের অসংক্রামক রোগীদের কয়েক বছরের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। পরিসংখানে দেখা গেছে, গত ২০০৯ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে রোগী আসার সংখ্যা বাড়ছে। এতে দেখা যায়, ২০০৯ সালে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৪১ হাজার ৫৫৪ জন রোগী, এই বছরের বহির্বিভাগ দিয়ে সেবা নিয়েছিলেন এক লাখ ৬০ হাজার ৮ জন। একইভাবে ২০১৬ সালে ভর্তি ৬৪ হাজার ৯০৬ জন এবং বহির্বিভাগ দিয়ে চিকিৎসা নেয়া রোগীর সংখ্যা ছিল দুই লাখ ২৬ হাজার ১৩৮ জন। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে কিডনি রোগী বৃদ্ধি পেয়েছে। হাসপাতালটির পরিসংখ্যান মতে, ২০১২ সালে ভর্তি ৪ হাজার ৪৩৯ জন এবং বহির্বিভাগ দিয়ে চিকিৎসা নিয়েছে ৫০ হাজার ৪১৭ জন। ২০১৬ সালে ভর্তি হয় ৫ হাজার ৬২৪ জন এবং বহির্বিভাগ দিয়ে চিকিৎসা নিয়েছে এক লাখ ৭ হাজার ৪৩৫ জন। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ক্যানসার রিসার্চ অ্যান্ড হাসপাতালের পরিসংখ্যানেও রোগী বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১২ সালে ভর্তি হয় ৩ হাজার ৫০১ জন ও বহির্বিভাগ দিয়ে সেবা নেয় ৬১ হাজার ২৪ জন, ২০১৬ সালে ভর্তি ৮ হাজার ৮০৪ জন এবং বহির্বিভাগ দিয়ে চিকিৎসা গ্রহণকারীর সংখ্যা ছিল এক লাখ ৯৪ হাজার ৯৮৭ জন। ওই হেলথ বুলেটিনে বিশেষজ্ঞরা সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য সেবায় দেশে অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ করার ওপর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের কথা বলেছেন।
এটা নিয়ন্ত্র?ণে রাখ?তে হ?বে। সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এখন অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ। এর জন্য জনসচেতনতা প্র?য়োজন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। খাদ্যাভ্যাস ও জীবনাচারের পরিবর্তন, দ্রুত নগরায়ণ, ধূমপান, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের প্রসার, বায়ুদূষণ, সড়ক দুর্ঘটনা, মানসিক চাপের কারণে অসংক্রামক রোগের প্রকোপ বাড়ছে। তাই অসংক্রামক রোগ থেকে বাঁচতে মানুষকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রতিবেদনে হৃদরোগ, স্নায়বিক রোগ, ক্যানসার, ডায়াবেটিস, কিডনি, স্থায়ী বক্ষব্যাধি, আর্সেনিকোসিস, শ্রবণ প্রতিবন্ধিতা, মুখের রোগ- এগুলোকে অসংক্রামক রোগ বলা হচ্ছে। স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার সুবিধার্থে পানিতে ডোবা, সাপে কামড়, আত্মহত্যা, নারীর প্রতি সহিংসতা, এসিডে পোড়া রোগীদেরও এর আওতাভুক্ত করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনেক অসংক্রামক রোগের শতভাগ চিকিৎসা ব্যবস্থা দেশে নেই। তাই অনেক অসংক্রামক রোগীকে চিকিৎসার অভাবে অকালে মৃত্যুবরণ করতে হচ্ছে। বর্তমানে দেশের শতকরা ৬১ ভাগ রোগই হচ্ছে অসংক্রামক। এসব রোগ মোকাবিলায় কোনো জাতীয় দিক নির্দেশনা নেই। বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো নিজেদের মতো করে ব্যবসায়িক মনোভাব নিয়ে এ জাতীয় রোগের চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছে।
অসংক্রামক রোগ বেড়ে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে দেশের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. এ বিএম আব্দুল্লাহ মানবজমিনকে বলেন, মানসিক চাপ, ধূমপান, ভেজাল খাবার, বায়ুদূষণের কারণে অসংক্রামক রোগ বাড়ছে। ফাস্ট ফুডে অভ্যস্ত হওয়ার পাশাপাশি শারীরিক পরিশ্রম না করার কারণেও এর ঝুঁকি বাড়ছে। তিনি বলেন, ভেজাল, ধূমপান, বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি মানুষকে সচেতন করার ব্যাপকভিত্তিক উদ্যোগ নিতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রামক রোগ ধীরে ধীরে কমছে, দ্রুত বাড়ছে অসংক্রামক রোগে আক্রান্তের সংখ্যা। আর অসংক্রামক রোগে আক্রান্তরা খুব তাড়াতাড়ি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন। এ ধরনের রোগের চিকিৎসা ব্যয় দেশের অধিকাংশ মানুষের সামর্থ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। অসংক্রামক রোগ আজ এক মারাত্মক জনস্বাস্থ্য সমস্যা, যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রতিকার ও প্রতিরোধযোগ্য।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ২০১৭ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদনের পরিসংখ্যানে বিভিন্ন বিশেষায়িত ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের অসংক্রামক রোগীদের কয়েক বছরের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। পরিসংখানে দেখা গেছে, গত ২০০৯ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে রোগী আসার সংখ্যা বাড়ছে। এতে দেখা যায়, ২০০৯ সালে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ৪১ হাজার ৫৫৪ জন রোগী, এই বছরের বহির্বিভাগ দিয়ে সেবা নিয়েছিলেন এক লাখ ৬০ হাজার ৮ জন। একইভাবে ২০১৬ সালে ভর্তি ৬৪ হাজার ৯০৬ জন এবং বহির্বিভাগ দিয়ে চিকিৎসা নেয়া রোগীর সংখ্যা ছিল দুই লাখ ২৬ হাজার ১৩৮ জন। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেস অ্যান্ড ইউরোলজি হাসপাতালে কিডনি রোগী বৃদ্ধি পেয়েছে। হাসপাতালটির পরিসংখ্যান মতে, ২০১২ সালে ভর্তি ৪ হাজার ৪৩৯ জন এবং বহির্বিভাগ দিয়ে চিকিৎসা নিয়েছে ৫০ হাজার ৪১৭ জন। ২০১৬ সালে ভর্তি হয় ৫ হাজার ৬২৪ জন এবং বহির্বিভাগ দিয়ে চিকিৎসা নিয়েছে এক লাখ ৭ হাজার ৪৩৫ জন। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ক্যানসার রিসার্চ অ্যান্ড হাসপাতালের পরিসংখ্যানেও রোগী বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১২ সালে ভর্তি হয় ৩ হাজার ৫০১ জন ও বহির্বিভাগ দিয়ে সেবা নেয় ৬১ হাজার ২৪ জন, ২০১৬ সালে ভর্তি ৮ হাজার ৮০৪ জন এবং বহির্বিভাগ দিয়ে চিকিৎসা গ্রহণকারীর সংখ্যা ছিল এক লাখ ৯৪ হাজার ৯৮৭ জন। ওই হেলথ বুলেটিনে বিশেষজ্ঞরা সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য সেবায় দেশে অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ করার ওপর সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের কথা বলেছেন।
No comments