২৫ প্রতিষ্ঠানে খেলাপি ঋণ সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকা
ঋণখেলাপি
প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে শীর্ষ ২৫টি প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৯
হাজার ৬৯৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকা (২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত)। বাংলাদেশ
ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। আজ বুধবার অর্থ মন্ত্রণালয়
সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়।
বিভিন্ন ব্যাংক থেকে এসব প্রতিষ্ঠান ঋণ নিয়েছে। তবে কোন প্রতিষ্ঠান কোন
ব্যাংক থেকে কত টাকা নিয়েছে, তা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি। কমিটির
কার্যপত্র থেকে জানা যায়, শীর্ষ ২৫টি ঋণখেলাপি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে
মোহাম্মদ ইলিয়াস ব্রাদার্সের খেলাপি ঋণ ৮৮৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকা, কোয়ান্টাম
পাওয়ার সিস্টেমস লিমিটেডের ৫৫৮ কোটি ৯ লাখ টাকা, জাসমির ভেজিটেবল অয়েল
লিমিটেড ৫৪৭ কোটি ৯৫ লাখ, ম্যাক্স স্পিনিং মিলস ৫২৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা,
বেনেটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ ৫১৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা, ঢাকা ট্রেডিং হাউস ৪৮৫ কোটি
২৯ লাখ টাকা, আনোয়ার স্পিনিং মিলস ৪৭৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা, সিদ্দিক
ট্রেডার্স ৪২৮ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, ইয়াসির এন্টারপ্রাইজ ৪১৪ কোটি ৮০ লাখ
টাকা, আলফা কম্পোজিট টাওয়েলস লিমিটেড ৪০১ কোটি ৭৩ লাখ টাকা, লিজেন্ড
হোল্ডিংস ৩৪৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, হল-মার্ক ফ্যাশন লিমিটেড ৩৩৯ কোটি ৩৪ লাখ
টাকা, ম্যাক ইন্টারন্যাশনাল ৩৩৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকা, মুন্নু ফেব্রিক্স ৩৩৮
কোটি ৩৭ লাখ টাকা, ফেয়ার ট্রেড ফেব্রিক্স লিমিটেড ৩২২ কোটি ৪ লাখ টাকা,
সাহারিশ কম্পোজিট টাওয়েল লিমিটেড ৩১২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা, নুরজাহান সুপার
অয়েল লিমিডেট ৩০৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা, কেয়া ইয়ার্ন লিমিটেড ২৯২ কোটি ৫৩ লাখ
টাকা, সালেহ কার্পেট মিলস লিমিটেড ২৮৭ কোটি ১ লাখ টাকা, ফেয়ার ইয়ার্ন
প্রসেসিং লিমিটেড ২৭৩ কোটি ১৬ লাখ টাকা,
এসকে স্টিল ২৭১ কোটি ৪৮ লাখ টাকা,
চৌধুরী নিটওয়্যার লিমিটেড ২৬৯ কোটি ৩৮ লাখ টাকা, হেল্প লাইন রিসোর্সেস
লিমিটেড ২৫৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা, সিক্স সিজন অ্যাপার্টমেন্ট লিমিটেড ২৫৪ কোটি
৫৭ লাখ টাকা, বিসমিল্লাহ টাওয়েলস লিমিটেড ২৪৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। কমিটির
একজন সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, বৈঠকে খেলাপি ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে
প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করে তা দূর করা, ঋণখেলাপি বন্ধে আইনি সংস্কারে করণীয়
ঠিক করে প্রতিবেদন দিতে বলেছে সংসদীয় কমিটি। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক এবং
মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছে।
কমিটিকে ৪৫ দিনের মধ্যে বাস্তবভিত্তিক একটি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এ
ছাড়া খেলাপি প্রতিষ্ঠানগুলো কোন কোন ব্যাংক থেকে কত টাকা ঋণ নিয়েছে, তাদের
পারিবারিক পরিচয়সহ বিস্তারিত তথ্য দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। বৈঠক শেষে
সংসদীয় কমিটির সভাপতি মো. আবদুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলেন, খেলাপি ঋণ কমিয়ে
আনা এবং আইনে দুর্বলতা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। ব্যাংকগুলো
বলে, ঋণখেলাপি প্রতিষ্ঠানগুলো উচ্চ আদালতে গিয়ে আবার অন্য ব্যাংক থেকে ঋণ
নেওয়ার সুযোগ নেয়। এ জন্য আইন মন্ত্রণালয় ও উচ্চ আদালতের সঙ্গেও বিষয়টি
নিয়ে কথা বলার চিন্তা আছে সংসদীয় কমিটির। এ ছাড়া কমিটির বৈঠকে শেয়ারবাজার
নিয়েও আলোচনা হয়। আবদুর রাজ্জাক বলেন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের কৌশলগত
অংশীদার হিসেবে ভারত ও চীনের দুটি কনসোর্টিয়ামের বিষয়ে সতর্কতার সঙ্গে
সিদ্ধান্ত নিতে বলেছে কমিটি। আবদুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে কমিটির সদস্য
নাজমুল হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান, ফরহাদ হোসেন এবং আখতার জাহান বৈঠকে অংশ
নেন।
No comments