সৎকারের তিন মাস পর ‘প্রত্যাবর্তন’
ভারতের পশ্চিমবঙ্গে সৎকারের তিন মাস পর ‘মৃত’ এক নারী বাড়ি ফিরে এসেছেন। তবে স্বেচ্ছায় তিনি ফিরে আসেননি। তাকে পুলিশ ধরে এনেছে। পুলিশ জানায়, নিমতার অধিবাসী মিঠু কুণ্ডু গত ২১ মার্চ অফিসে যাচ্ছেন বলে বেরিয়ে আর বাড়ি ফেরেননি। এর পর ২৪ মার্চ নিমতা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। ৩ এপ্রিল একটি অপহরণের মামলা দায়ের হয়। এর পর ১২ এপ্রিল খড়দহের উদয়শঙ্কর মাঠ থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক মহিলার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুরো শরীর আগুনে ঝলসে যাওয়ায় পেট কাটা মৃতদেহটি দেখে কারও কিছু বোঝার উপায় ছিল না। অবশেষে দেহের পাশে পড়ে থাকা টপ ও লেগিংসের টুকরো দেখে নিখোঁজ মায়ের দেহ শনাক্ত করা গেছে বলে জানিয়েছিলেন ওই নারীর ছেলেমেয়েরা। কিন্তু ঘটনাটি নিয়ে সন্দেহ দেখা দেয় তদন্তকারীদের মনে। দেহটির শেষকৃত্য হয়ে গেলেও হাল ছাড়েননি তারা। অবশেষে চব্বিশ পরগনা জেলার নিমতা থানার পুলিশ একই এলাকার ৩৫ বছর বয়সী মিঠুকে পাঞ্জাব থেকে উদ্ধার করে। এর মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়, ওই নারী আসলে মরেননি। তবে মিঠুর দেহ ভেবে তার ছেলেমেয়েরা যার সৎকার করেন, তার পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, যে ফোনটি নিয়ে মিঠু নিখোঁজ হন, তার আইএমইআই নম্বর ধরে টাওয়ার লোকেশন মেলে বিহারের পাটনায়। ইতিমধ্যে জোড়াবাগান এলাকায় মিঠুর এক পরিচিতের কাছ থেকে পুলিশ জানতে পারে, হরমন সিংহ নামে ১৯ বছরের এক যুবকের সঙ্গে ওই মহিলার ঘনিষ্ঠতা ছিল। ইতিমধ্যে পুলিশের নজরে আসে, আচমকা মিঠুর একটি বন্ধ নম্বরও চালু হয়ে গিয়েছে। জানা যায়, ফোনটি ব্যবহার করছেন সোনু নামের এক যুবক। সেই সূত্র ধরেই পুলিশ পৌঁছে যায় পাটনায়। সোনুর থেকে পুলিশ জানতে পারে, গত ২১ মার্চ ট্রেনে মিঠু ও হরমনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। দু’জনে বিয়ে করে আশ্রয় খুঁজছেন জেনে সোনু তাদের নিজের বাড়িতে থাকতে দেন। কয়েক দিন থাকার পর পাঞ্জাবের বাটালার বাসিন্দা হরমন বাড়ির লোকজনকে রাজি করিয়ে মিঠুকে নিয়ে সেখানে চলে যান। ফোনটি দিয়ে যান সোনুকে। গত বৃহস্পতিবার পাঞ্জাবে অভিযান চালিয়ে পুলিশ মিঠুর সন্ধান পায়।
No comments