প্রশিক্ষণের নামে প্রমোদভ্রমণ
প্রশিক্ষণের নামে বিদেশ ভ্রমণের হিড়িক পড়েছে সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে। শিক্ষা খাতে চলমান ৭ ডজন প্রকল্পের অধীনে প্রায় প্রতি মাসেই এ ধরনের বিদেশ সফর হচ্ছে। শিক্ষা ও শিক্ষকদের জন্য প্রকল্প হলেও তাদের অধিকাংশই উপেক্ষিত। অগ্রাধিকার পাচ্ছেন শিক্ষাসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব এবং নানা পর্যায়ের কর্মকর্তা। সফর থেকে ফেরার পরদিনই অবসরে গেছেন- এমন কর্মকর্তার নামও আছে এ তালিকায়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শীর্ষব্যক্তির ঘনিষ্ঠ, মুখচেনা ব্যক্তিরাই ঘুরেফিরে যাচ্ছেন বিদেশ। নামে প্রশিক্ষণ হলেও বাস্তবে একেকটি নতুন দেশ ভ্রমণ করাই যেন কর্মকর্তাদের মূল উদ্দেশ্য। শীর্ষব্যক্তির জ্ঞাতসারে বিনা বাধায় এসব ঘটছে বলে জানা গেছে। বিদেশ থেকে ফিরে অধিকাংশ সদস্য প্রায় একই ধরনের দায়সারা গোছের প্রতিবেদন দিয়েই তাদের দায়িত্ব শেষ করেন। মাঠপর্যায়ে এ প্রশিক্ষণের তেমন একটা প্রতিফলন দেখা যায় না। ফলে কোটি কোটি টাকা খরচে প্রতি মাসেই শিক্ষা কর্মকর্তাদের বিদেশে প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হলেও তা কাজে আসছে না। প্রায় প্রতিটি প্রশিক্ষণ শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের জন্য আয়োজন করা হলেও সেখানে রাখা হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগসহ একাধিক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাকে। ফলে এ প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন তোলার কেউ থাকে না। যুগান্তরের অনুসন্ধান ও সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। এদিকে প্রশিক্ষণে একই বা মুখচেনা কিছু ব্যক্তির ঘন ঘন বিদেশে যাওয়ার বিষয়টি শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদেরও দৃষ্টি এড়ায়নি। এ কারণেই তিনি রোববার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরে (মাউশি) এক অনুষ্ঠানে বলেন, একই কর্মকর্তা ঘুরেফিরে বিভিন্ন দেশে যাচ্ছেন। মাউশি থেকে যাদের নাম প্রস্তাব করা হয়, তাদেরই অনুমোদন দেয়া হয়। অথচ এর জন্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নাম হয়। তিনি বলেন, সবাইকেই সুযোগ দিতে হবে। এতে সবার কাজে উৎসাহ বাড়বে। জাতীয় শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার প্রার্থীদের কাছ থেকে নেয়া ফি’র টাকায় চলে এ প্রতিষ্ঠান। সেই টাকায় ঘন ঘন বিদেশ ভ্রমণে যাচ্ছেন কিছু ব্যক্তি।
ইউজিসির উচ্চশিক্ষা মান উন্নয়ন প্রকল্পের (হেকেপ) অধীনে প্রশিক্ষণের জন্য ৬২ জনকে অস্ট্রেলিয়া পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তাদের মধ্যে একজন শিক্ষকও নেই। ৫০ জন ছিলেন ইউজিসির কর্মকর্তা। বাকি ১২ জন মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের কর্মকর্তা। এভাবে মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব বা বিভিন্ন প্রকল্প ও সংস্থার অর্থায়নে আয়োজিত প্রায় সব প্রশিক্ষণই ‘প্রমোদভ্রমণে’ পরিণত হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, ২৯ জুলাই ৯৬ জনের একটি বিশাল টিম যাচ্ছে মালয়েশিয়ায়। কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (সিডিইপি) অধীনে সরকারি-বেসরকারি কলেজের ডিগ্রি-অনার্স পড়ানো শিক্ষকদের মানোন্নয়নের লক্ষ্যে ইউনিভার্সিটি অব নটিংহামের মালয়েশিয়া ক্যাম্পাসে (ইউএনএমসি) প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। কিন্তু এ তালিকার ব্যাপারে নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রশিক্ষণার্থী তালিকাভুক্তির সার্কুলার ব্যাপক প্রচার পায়নি। তাছাড়া আবেদনের সময় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সফটওয়্যারে ত্রুটি ছিল। যে কারণে ইচ্ছুক অনেকেই আবেদন করতে পারেননি। আবার যে ক’জন আবেদন করেছেন, তাদের অনেককে আগেই বাদ দেয়া হয়। তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের পরিচিতজন, ব্যাচমেট, একই বিভাগের শিক্ষকদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়। কথা ছিল, বিদেশে প্রশিক্ষণের জন্য ভাষাগত পরীক্ষা নেয়া হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা করা হয়নি। ফলে শুধু একাডেমিক ফলের ওপর ভিত্তি করে তালিকাভুক্ত ব্যক্তিরা কতটা সফলতার সঙ্গে প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গেছে। জানা গেছে, প্রশিক্ষণে অংশ নেয়া প্রত্যেককে দৈনিক ১৭০ ডলার বা ১৩ হাজার ৬০০ টাকা (এক ডলার ৮০ টাকা হিসাবে) করে দেয়া হবে। প্রায় ১০ মাস আগে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের ব্যাপারে এমন অস্বচ্ছতা ও অনিয়মের অভিযোগে অসন্তুষ্ট সংশ্লিষ্টরা। প্রকল্পের একজন কর্মকর্তা জানান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে অন্ধকারে রেখে প্রতিষ্ঠানটির একজন ডিন এবং প্রকল্পের দুই কর্মকর্তা এ তালিকা তৈরির প্রাথমিক কাজ করেন। বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর অবশ্য এভাবে তালিকা তৈরির প্রাথমিক দায়িত্ব পালনকারী ডিনের কাছে কৈফিয়ত চান ভিসি। তার হস্তক্ষেপে পরবর্তী ব্যাচ নির্বাচনের জন্য প্রার্থীদের কাছ থেকে আইইএলটিএসের সনদ চেয়ে ১৬ জুলাই বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। এতে ৬.৫ স্কোর করতে হবে। এ প্রসঙ্গে জানতে সোমবার রাতে প্রকল্প পরিচালক (পিডি) জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সবকিছু শুনে মঙ্গলবার অফিসে যেতে বলেন। পরদিন বেলা ১১টার থেকে বিকাল ৪টা এ কর্মকর্তার জন্য অপেক্ষা করে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে দু’বার কল করা হলে একবার ধরেননি, আরেকবার লাইন কেটে দেন। পরে এসএমএস করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে তালিকা তৈরির প্রাথমিক দায়িত্বপ্রাপ্ত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের কাজ ছিল শুধু শিক্ষকের তালিকা পাঠানো, ভাষাগত পরীক্ষা নয়। যারা যাচ্ছেন, তাদের এ পরীক্ষা নেয়া হয়েছে বলে আমাদের জানানো হয়েছে। অবশ্য ভবিষ্যতে যারা যাবেন, তাদের আইইএলটিএসের সনদ চাওয়া হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যারা চলে যাচ্ছেন, তাদের সরকারি আদেশ (জিও) হয়ে গেছে। তাই তাদের ব্যাপারে আমাদের এখন আর কিছু করার নেই। জানা যায়, মাধ্যমিক শিক্ষা নিয়ে একাধিক প্রকল্প থেকে বছরে বেশকিছু বিদেশ প্রশিক্ষণ থাকে। মাউশির একাধিক কর্মকর্তা প্রতিবারের প্রশিক্ষণেই থাকেন। সবচেয়ে বেশি প্রশিক্ষণের আয়োজন করে টিচিং কোয়ালিটি ইমপ্র“ভমেন্ট (টিকিউআই)-২ এবং সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (সেসিপ)। বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থার ঋণে পরিচালিত এসব প্রকল্পের প্রশিক্ষণে কর্মকর্তাদের জন্য রাখা হয় বড় অঙ্কের সম্মানীও। প্রতিটি প্রশিক্ষণ শিক্ষা কর্মকর্তাদের ও শিক্ষকদের জন্য আয়োজন করা হলেও সেখানে রাখা হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগসহ একাধিক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের। ফলে এ প্রশিক্ষণ নিয়ে কেউ কোনো প্রশ্নই তুলতে পারেন না। গত ফেব্রুয়ারিতেও এ প্রকল্পের অধীনে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বাড়ানোর এক প্রশিক্ষণে ১৩ জন কর্মকর্তা ফিলিপাইনে গেছেন। গত বছরের নভেম্বরেও একই বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে ১৯ জন কর্মকর্তা গেছেন অস্ট্রেলিয়া। একই বিষয়ের প্রশিক্ষণ হলেও একই ব্যক্তি পর পর দু’বার প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। অথচ যারা সুযোগ পাননি, তাদের কোনো প্রশিক্ষণেই পাঠানো হচ্ছে না।
অস্ট্রেলিয়ার প্রশিক্ষণটি মূলত মাউশির কর্মকর্তাদের জন্য হলেও সেখানে ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দু’জন অতিরিক্ত সচিব, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের একজন যুগ্ম সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন যুগ্ম সচিব, বাস্তবায়ন মনিটরিং ও মূল্যায়ন বিভাগের মহাপরিচালক, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের একজন কর্মকর্তা। এছাড়া বাকি ১১ জনের মধ্যে মাউশির সাতজন ও অন্যান্য দফতরের চারজন কর্মকর্তা রয়েছেন। ফিলিপাইন থেকে প্রশিক্ষণ শেষ করে আসা মাউশির একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘আমাদের যারা প্রশিক্ষণ দিয়েছেন তারা ছিলেন মূলত স্কুলপ্রধান। কিন্তু এ দলে স্কুলপ্রধানের সংখ্যা তেমন একটা ছিল না। তাই প্রশিক্ষকরাও পরিচয়ের পর থেকে কিছুটা বিব্রত ছিলেন। পরিচয় পর্বেই যদি ঝামেলা বাধে, তাহলে বাকি প্রশিক্ষণ কেমন হয়েছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।’ গত অক্টোবরে এই টিকিআই-২ এর অধীনে নিউজিল্যান্ডে প্রশিক্ষণ নিতে যান ১৬ কর্মকর্তা। মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়নে এ প্রশিক্ষণে অংশ নেয়া ১৬ জনের মধ্যে আটজন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, ছয়জন সরকারি কলেজের শিক্ষক এবং একজন মাত্র সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। প্রশিক্ষণে অংশ নেয়া একজন জানান, পরিচয় পর্বে আটজনই মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা থাকায় তাদের প্রশিক্ষণ প্রদানে অপারগতা প্রকাশ করে নিউজিল্যান্ডের একটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে বাধ্য হয়ে ওই আটজন নিউজিল্যান্ডে ঘুরেফিরে বেড়িয়েছেন। বাকিরা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। জানা গেছে, এ দলটির নেতৃত্বে ছিলেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন এক অতিরিক্ত সচিব। তিনি ২৮ অক্টোবর প্রশিক্ষণ শেষ করে দেশে ফিরে ২৯ অক্টোবরই অবসরোত্তর ছুটিতে যান। এ প্রসঙ্গে প্রকল্পের পিডি জহিরউদ্দিন বাবর যুগান্তরকে বলেন, অতীতে বিদেশ প্রশিক্ষণে শিক্ষকের চেয়ে কর্মকর্তা বেশি ছিল। প্রকল্প চলে ডিপিপির আলোকে। ডিপিপির নির্দেশনার বাইরে আমাদের কাজ করার সুযোগ নেই। তাছাড়া এ প্রকল্পে প্রায় ৮৩ শতাংশ অর্থ বিনিয়োগ করেছে এডিবি (এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক)। শুধু তাই নয়, প্রশিক্ষণের সব অর্থ তাদের দেয়া। তাই তাদের প্রেসক্রিপশন আমাদের মানতে হয়। তবে এ বাস্তবতা সামনে রেখে আমরা ভবিষ্যতে বিদেশে পাঠানো টিমের ৮৫ শতাংশ সদস্য শিক্ষক রাখার পরিকল্পনা করেছি। টিম ব্যবস্থাপনার জন্য বাকি সদস্য কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। এডিবি অনুমোদন করলে এ প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কোনো প্রশিক্ষণে কেউ বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে- এমন তথ্য আমার জানা নেই। এমন ঘটনা ঘটলে প্রশিক্ষণে যাওয়া কর্মকর্তারা না হোক, ওই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাদের অবহিত করত।’ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অধীনে বাস্তবায়িত হচ্ছে হেকেপ প্রকল্প। এর অধীনে বিদেশ গমনের রীতিমতো মচ্ছব চলছে। মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির একই ব্যক্তিকে এ প্রকল্পের অর্থে একাধিকবার বিদেশ পাঠানো হয়েছে। কোন ধরনের কর্মকর্তা কোন মহাদেশ পর্যন্ত যেতে পারবেন, তা ডিপিপিতে (প্রকল্প প্রস্তাবনা) উল্লেখ আছে। তা সত্ত্বেও জুনিয়র কর্মকর্তাদের সিনিয়রদের ট্যুরে পাঠানো হচ্ছে। ২০১২ সালে প্রকল্পের প্রথম পর্যায় শেষ হওয়ার আগে তড়িঘড়ি করে শুধু অর্থ ব্যয়ের উদ্দেশ্যে বিদেশে ভ্রমণ আয়োজন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের গত নভেম্বর পর্যন্ত ছয়টি ট্যুর বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, শিক্ষাবিদের চেয়ে আমলা কিংবা নন-শিক্ষাবিদদের সংখ্যাই ছিল বেশি। গত অক্টোবর-নভেম্বরে প্রায় ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬২ জনকে প্রশিক্ষণে অস্ট্রেলিয়ায় পাঠানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক ব্যবস্থাপনার ওপর ছিল ওই প্রশিক্ষণ। কিন্তু কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বা কর্মকর্তা তাতে ছিলেন না। ৬২ জনের মধ্যে ৫০ জন ইউজিসির কর্মকর্তা। হেকেপের আটজন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চারজন। মন্ত্রণালয়ের চারজনের মধ্যে দু’জন যুগ্ম সচিব এবং দু’জন উপসচিব পদমর্যাদার। তাদের মধ্যে একজন উপসচিবের উচ্চশিক্ষার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। অথচ একই কর্মকর্তা এর আগেও এ প্রকল্প থেকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেন। ৬২ জনের মধ্যে ৩২ জন জুনিয়র কর্মকর্তা। ডিপিপি অনুযায়ী তারা এ প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন না। এর মধ্যে আছেন হেকেপের সিস্টেম অ্যানালিস্ট, প্রোগ্রাম অফিসার। আরডিপিপি অনুযায়ী সিনিয়র সহকারী সচিবের নিচে কোনো কর্মকর্তা এ ধরনের প্রশিক্ষণে যেতে পারবেন না। এ প্রসঙ্গে হেকেপের প্রকল্প পরিচালক ড. গৌরাঙ্গ চন্দ্র মোহান্তর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, সব নিয়মনীতি মেনেই প্রকল্পের ট্যুরগুলো হচ্ছে। গত অক্টোবরের অস্ট্রেলিয়া প্রশিক্ষণ নিয়ে ইউজিসির কয়েকজন কর্মকর্তা বিশ্বব্যাংকে অভিযোগ করেছিলেন। তবে পরে তা নিষ্পত্তি হয়ে যায়।
No comments