পৌরসভা নির্বাচনে মমতা ব্যানার্জির বড় জয়
পশ্চিমবঙ্গের সাতটি পৌরসভা নির্বাচনের ফলাফল বুধবার ঘোষণা করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, চারটিই নিজেদের দখলে রেখেছে ক্ষমতাসীন তৃণমূল। এর মধ্যে সমতল অঞ্চলের তিনটি পৌরসভাই শাসক দলের দখলে। পাশাপাশি প্রায় সাড়ে তিন দশকের একটা স্রোতকে স্রেফ উল্টোদিকে বইয়ে পাহাড়ি অঞ্চল মিরিক পৌরসভাও দখল করে নিয়েছে তারা। বাকি তিনটি পৌরসভায় জয় পেয়েছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। তৃণমূলের দাবি, এ জয় এসেছে কেবল উন্নয়নের মন্ত্রেই। বিরোধীদের দাবি, নির্বাচনের নামে ‘প্রহসন’ হয়েছে বলেই এমন ফল। খবর এনডিটিভির। রোববার দক্ষিণ ২৪ পরগনার পূজালি, মুর্শিদাবাদের ডোমকল, উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ এবং পাহাড়ের মিরিক, কালিম্পং, কার্শিয়ং ও দার্জিলিং পৌরসভায় নির্বাচন হয়। এর মধ্যে ১৬ ওয়ার্ডের পূজালিতে ১২টি ওয়ার্ডে জয়ী হয় তৃণমূল। দুটি ওয়ার্ডে বিজেপি, ১টিতে কংগ্রেস এবং অন্যটিতে নির্দলীয় প্রার্থী জয়ী হন। ডোমকলে ২১টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৮টিই দখল করে নেয় তৃণমূল। বাকি তিনটিতে জোট প্রার্থীরা জিতলেও পরে তাদের দু’জন তৃণমূলে যোগ দেন। মিরিকে ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে তৃণমূল ৬টি এবং মোর্চার দখলে গেছে ৩টি ওয়ার্ড। রায়গঞ্জে ২৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে তৃণমূল ২৪টি, বিজেপি ১টি এবং অন্য দুটি পেয়েছে কংগ্রেস। দার্জিলিংয়ে ৩১টি ওয়ার্ডের সবই পেয়েছে মোর্চা। কার্শিয়ংয়ে ২০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৭টি মোর্চা এবং ৩টি পেয়েছে তৃণমূল। কালিম্পংয়ে ২৩টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৮টি মোর্চা, ২টি তৃণমূল,
২টি হরকা বাহাদুর ছেত্রীর জনআন্দোলন পার্টি (জাপ) এবং অন্যটিতে জিতেছেন নির্দলীয় প্রার্থী। পশ্চিমবঙ্গের পৌর নির্বাচন একদিকে যেমন দেখিয়ে দিল তৃণমূলের জয়ের ধারা অব্যাহত, তেমনই চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দিল এ রাজ্যে বিরোধীদের কতটা দুরবস্থা। বিজেপি কোথাও মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। পাহাড়ে তারা প্রার্থী না দিয়ে মোর্চাকে সমর্থন করেছিল। দীর্ঘদিন ধরে পাহাড়ের দখল নেয়া সেই মোর্চাও এবার তৃণমূলের কাছে নাস্তানাবুদ। পাহাড়ের চারটি পৌরসভার প্রতিটিতেই খাতা খুলেছে তারা। শুধু জয় পেয়েছে মোর্চা শাসিত মিরিক পৌরসভায়। তৃণমূল নেতৃত্ব স্বভাবতই এ জয়ে খুশি। বিশেষত ৩০ বছরেরও বেশি সময় পরে সমতল অঞ্চলের কোনো দলের পাহাড়ের পৌরসভা দখলকে তারা বিশেষ কৃতিত্ব বলেই মনে করছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি টুইট বার্তায় বলেন, ‘মা মাটি মানুষকে ধন্যবাদ। এ জয় আমাদের কৃতজ্ঞ এবং বিনম্র করেছে। মানুষ আমাদের ওপর আস্থা রেখেছেন। আমরা খুশি। বিশেষ করে আমাকে সমর্থনের জন্য মিরিকের জনগণকে ধন্যবাদ।’ নির্বাচনের দিন থেকেই বিরোধী শিবির একে ‘প্রহসন’ বলে দাবি করে এসেছিল। ভোটের দিন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, ‘ফল প্রকাশের কোনো অবকাশ নেই। যেভাবে ভোট লুট হয়েছে, এ নির্বাচন পুরোটাই অবৈধ।’ একই বক্তব্য ছিল কংগ্রেসেরও। এমনকি তারা সমতলের তিনটি পৌরসভায় ফল প্রকাশের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে হাইকোর্টে মামলাও দায়ের করে। যদিও বুধবার হাইকোর্ট ভোটের ফল ঘোষণায় স্থগিতাদেশে কংগ্রেসের আর্জি খারিজ করে জানিয়ে দিয়েছে, নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় এভাবে হস্তক্ষেপ করা যায় না।
No comments