সশস্ত্র বাহিনীকে বেসামরিক কর্তৃত্ব মানতে হবে
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নেয়া টাকা ফেরত সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। রায়ে ১১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নেয়া ৬১৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা তিন মাসের মধ্যে ফেরত দিতে বলা হয়েছে। রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, ওয়ান-ইলেভেনের সময় কিছু উচ্চাভিলাষী সেনা কর্মকর্তা রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করার মধ্য দিয়ে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে ধ্বংসের কিনারে নিয়ে যায়। সামরিক বাহিনীকে বেসামরিক নিয়ন্ত্রণের নীতি মেনে চলতে হবে বলে মন্তব্য করে রায়ে ৬টি বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চের দেয়া পূর্ণাঙ্গ রায়ে এ মন্তব্য করা হয়েছে। রায়টি লিখেছেন প্রধান বিচারপতি নিজে। এতে বলা হয়েছে, ডিজিএফআই দেশের একটি স্বাধীন সংস্থা এবং নির্বাহী বিভাগ থেকে তাদের কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণ আলাদা। ডিজিএফআই নির্বাহী বিভাগের মতো তারা কাজ করতে পারে না। আবার বেআইনি কাজও তারা বৈধতা দিতে পারে না। বিশেষ পরিস্থিতি কিংবা সংবিধানের ক্ষমতাবলে জরুরি অবস্থা জারির মাধ্যমে কিংবা অন্য কোনো পরিস্থিতিতে সরকারি সংস্থা বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা ডিজিএফআইকে আইনবহির্ভূতভাবে জনগণের জীবন, সম্পদ ও ব্যবসায় হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা দেয়া হয়নি। রায়ে সামরিক বাহিনীকে বেসামরিক নিয়ন্ত্রণের নীতি মেনে চলতে হবে বলে মন্তব্য করে ৬টি বিষয় তুলে ধরা হয়। এগুলো হচ্ছে-
১. রাষ্ট্র ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে মৌলিক সম্পর্ক নির্ধারণ করে সুস্পষ্ট আইনি এবং সাংবিধানিক কাঠামো থাকা।
২. প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ে সংসদের আইন প্রণয়ের তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা।
৩. সামরিক বাহিনীর ঐতিহ্যবাহী দায়িত্ব হচ্ছে সরকারের জনপ্রশাসনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত বেসামরিক সংস্থার মাধ্যমে তাদের কার্যক্রমের দিকনির্দেশনা লাভ ও তদারকি মেনে নেয়া।
৪. প্রশিক্ষিত এবং অভিজ্ঞ সামরিক বাহিনীর জন্য দরকার গ্রহণযোগ্য বেসামরিক কর্তৃপক্ষের তহবিল জোগান দেয়া। সামরিক বাহিনীকে বেসামরিক নিয়ন্ত্রণের নীতি মেনে নিতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা এবং সশস্ত্র বাহিনীর নির্দলীয় চরিত্র।
৫. বিকশিত সুশীল সমাজের অবস্থান, যাদের থাকবে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও মূল্যবোধ সম্পর্কে সুস্পষ্ট জ্ঞান। সামরিক বাহিনীর ভূমিকা ও লক্ষ্য সম্পর্কে জাতীয় ঐকমত্যের রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তোলা।
৬. প্রতিরক্ষা (সামরিক) সম্প্রদায়ের সদস্যদের মধ্য থেকেই যুক্তিসঙ্গত বেসরকারি যোগ্য সংস্থা থাকতে হবে যারা প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা নীতি বিষয়ে প্রকাশ্যে বিতর্কে অংশ নেবেন এবং বিকল্প দৃষ্টিভঙ্গি এবং কর্মসূচি উপস্থাপন করবেন। রায়ে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ভালো ও খারাপ দুটি দিকেরই কিছু বর্ণানা দেয়া হয়েছে। এ বাহিনীর ভূয়সী প্রশংসা করে রায়ে বলা হয়েছে, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী পেশাদার সামরিক বাহিনী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। অভ্যন্তরীন শান্তি বজায় রাখতে ভূমিকা রাখছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে কোস্টগার্ড চোরাচালানের বিরুদ্ধে শক্তিশালী ভূমিকা রাখছে। সমুদ্রসীমায় সম্পদ রক্ষা করছে। সেনাবাহিনী ১৯৭০ সাল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিশেষ দায়িত্ব পালন করে আসছে। নৌবাহিনী সমুদ্রসীমা এবং মিয়ানমারের আগ্রাসন রুখতে ভূমিকা রাখছে। ১৯৮০ সাল থেকে জাতিসংঘের অধীনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শান্তি রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আজ একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ও সুশৃঙ্খল বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। তবে সশস্ত্র বাহিনীর একটি অন্ধকার দিকও রয়েছে উল্লেখ করে রায়ে বলা হয়েছে, এ বাহিনীর কিছু বিপথগামী কর্মকর্তা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার পরিবার ও আত্মীয়স্বজনকে হত্যায় অংশ নেয়। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যার মতো জঘন্য অপরাধ করে। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। ১৯৭৫ থেকে ১৯৮২ সালের মধ্যে কিছু বিভ্রান্ত উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সামরিক আইন জারি করে। একইভাবে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি কিছু বিপথগামী অফিসার রাষ্ট্রপতিকে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করতে বাধ্য করেছিল। এক্ষেত্রে তাদের পুরো দায় ছিল না। কারণ তখন প্রেসিডেন্ট ইয়াজউদ্দিন আহমেদ সংবিধান লঙ্ঘন করে নিজ দায়িত্বের পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। এই অবৈধ ক্ষমতা গ্রহণ রাজনৈতিক দল এবং জনগণের মধ্যে ক্রোধ তৈরি করে। দুর্নীতির অপবাদ ছড়িয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করে। যদিও তিনি সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না। ওই সময়ে সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময়ে গণহারে রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করা হয়।
১. রাষ্ট্র ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে মৌলিক সম্পর্ক নির্ধারণ করে সুস্পষ্ট আইনি এবং সাংবিধানিক কাঠামো থাকা।
২. প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ে সংসদের আইন প্রণয়ের তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা।
৩. সামরিক বাহিনীর ঐতিহ্যবাহী দায়িত্ব হচ্ছে সরকারের জনপ্রশাসনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত বেসামরিক সংস্থার মাধ্যমে তাদের কার্যক্রমের দিকনির্দেশনা লাভ ও তদারকি মেনে নেয়া।
৪. প্রশিক্ষিত এবং অভিজ্ঞ সামরিক বাহিনীর জন্য দরকার গ্রহণযোগ্য বেসামরিক কর্তৃপক্ষের তহবিল জোগান দেয়া। সামরিক বাহিনীকে বেসামরিক নিয়ন্ত্রণের নীতি মেনে নিতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা এবং সশস্ত্র বাহিনীর নির্দলীয় চরিত্র।
৫. বিকশিত সুশীল সমাজের অবস্থান, যাদের থাকবে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও মূল্যবোধ সম্পর্কে সুস্পষ্ট জ্ঞান। সামরিক বাহিনীর ভূমিকা ও লক্ষ্য সম্পর্কে জাতীয় ঐকমত্যের রাজনৈতিক সংস্কৃতি গড়ে তোলা।
৬. প্রতিরক্ষা (সামরিক) সম্প্রদায়ের সদস্যদের মধ্য থেকেই যুক্তিসঙ্গত বেসরকারি যোগ্য সংস্থা থাকতে হবে যারা প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা নীতি বিষয়ে প্রকাশ্যে বিতর্কে অংশ নেবেন এবং বিকল্প দৃষ্টিভঙ্গি এবং কর্মসূচি উপস্থাপন করবেন। রায়ে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ভালো ও খারাপ দুটি দিকেরই কিছু বর্ণানা দেয়া হয়েছে। এ বাহিনীর ভূয়সী প্রশংসা করে রায়ে বলা হয়েছে, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী পেশাদার সামরিক বাহিনী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। অভ্যন্তরীন শান্তি বজায় রাখতে ভূমিকা রাখছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে কোস্টগার্ড চোরাচালানের বিরুদ্ধে শক্তিশালী ভূমিকা রাখছে। সমুদ্রসীমায় সম্পদ রক্ষা করছে। সেনাবাহিনী ১৯৭০ সাল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিশেষ দায়িত্ব পালন করে আসছে। নৌবাহিনী সমুদ্রসীমা এবং মিয়ানমারের আগ্রাসন রুখতে ভূমিকা রাখছে। ১৯৮০ সাল থেকে জাতিসংঘের অধীনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শান্তি রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আজ একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ও সুশৃঙ্খল বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। তবে সশস্ত্র বাহিনীর একটি অন্ধকার দিকও রয়েছে উল্লেখ করে রায়ে বলা হয়েছে, এ বাহিনীর কিছু বিপথগামী কর্মকর্তা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার পরিবার ও আত্মীয়স্বজনকে হত্যায় অংশ নেয়। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যার মতো জঘন্য অপরাধ করে। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। ১৯৭৫ থেকে ১৯৮২ সালের মধ্যে কিছু বিভ্রান্ত উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা সামরিক আইন জারি করে। একইভাবে ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি কিছু বিপথগামী অফিসার রাষ্ট্রপতিকে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করতে বাধ্য করেছিল। এক্ষেত্রে তাদের পুরো দায় ছিল না। কারণ তখন প্রেসিডেন্ট ইয়াজউদ্দিন আহমেদ সংবিধান লঙ্ঘন করে নিজ দায়িত্বের পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নিয়েছিলেন। এই অবৈধ ক্ষমতা গ্রহণ রাজনৈতিক দল এবং জনগণের মধ্যে ক্রোধ তৈরি করে। দুর্নীতির অপবাদ ছড়িয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করে। যদিও তিনি সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না। ওই সময়ে সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। ওই সময়ে গণহারে রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করা হয়।
কিছু উচ্চাভিলাষী সেনা কর্মকর্তা রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করার মধ্য দিয়ে দেশকে অর্থনৈতিকভাবে ধ্বংসের কিনারে নিয়ে যায়। আইনবহির্ভূতভাবে কিছু সেনা কর্মকর্তা নির্বাহী বিভাগের ক্ষমতা প্রয়োগ করতে থাকে। রায়ে বলা হয়, সেনাবাহিনী আমাদের দেশের সম্পদ। সামরিক বাহিনীর প্রাথমিক কাজ হচ্ছে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা ও দেশের সীমান্তের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা। দেশের ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় এবং আইনের শাসন রক্ষায় বিশেষ ভূমিকা রাখা। গণতন্ত্রে রাষ্ট্রকে দু’ধরনের সম্ভাব্য বিপদ থেকে রক্ষার জন্য সেনাবাহিনীর ভূমিকার কথা বলা হয়েছে। প্রথমত, রাজনীতিবিদ, যাদের সামরিক উচ্চাকাক্সক্ষা রয়েছে এবং দ্বিতীয়ত, রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ নিয়ে যারা সামরিক বাহিনীতে থাকেন তাদের থেকে দেশকে রক্ষা করা। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের এপ্রিল থেকে ২০০৮ সালের নভেম্বর পর্যন্ত জরুরি অবস্থার সময় একটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা প্রায় ৪০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে মোট এক হাজার ২৩২ কোটি টাকা আদায় করেন। এই টাকা দুই শতাধিক পে-অর্ডারের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকে সরকারের ০৯০০ নম্বর হিসাবে জমা হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এই টাকা ফেরত দেয়ার বিষয়ে নানা ধরনের আলোচনা হয়। কিন্তু ফেরত না পেয়ে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন সময়ে হাইকোর্টে রিট করেন। টাকা ফেরত সংক্রান্ত মামলায় আপিল বিভাগের রায়ে বলা হয়, কোন ক্ষমতাবলে এবং কিভাবে টাকাগুলো উদ্ধার করে বা জোরপূর্বক নেয় তার ব্যাখ্যা করার দায়িত্ব ছিল সরকারের। সরকার নীরব থেকেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং তার প্রধান নির্বাহী এ অনৈতিক ও অমানবিক কাজকে সমর্থন করেছে। রিটগুলোর মধ্যে ২০১০ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে ১১টি রিটের চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে ওইসব ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বাজেয়াপ্তকৃত অর্থ ৯০ দিনের মধ্যে ফেরত দেয়ার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে নির্দেশ দেয়া হয়। আইনজীবীরা জানান,
ওই অর্থের পরিমাণ ৬১৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। পরবর্তী সময়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক লিভ টু আপিল করে (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন করে)। এর ওপর শুনানি নিয়ে ২০১৫ সালের ২ আগস্ট আপিল বিভাগ বাংলাদেশ ব্যাংককে আপিল করার অনুমতি দেন। পাশাপাশি হাইকোর্টের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করেন। এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক পৃথক আপিল করে। গত ১৬ মার্চ ওইসব আপিল খারিজ করে ১১ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে জব্দ করা টাকা ফেরতের নির্দেশ বহাল রাখা হয়। যেসব ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের টাকা ফেরতের নির্দেশ বহাল রাখা হয়েছে- এস আলম গ্রুপের সাতটি প্রতিষ্ঠানের ৬০ কোটি, দ্য কনসলিডেটেড টি অ্যান্ড ল্যান্ডস কোম্পানি লিমিটেড ও বারাউরা টি কোম্পানি লিমিটেডের ২৩৭ কোটি ৬৫ লাখ, মেঘনা সিমেন্টের ৫২ কোটি, বসুন্ধরা পেপার মিল ও ইস্ট-ওয়েস্ট প্রপার্টির ১৫ কোটি, ইস্ট-ওয়েস্ট প্রপার্টি ডেভেলপমেন্টের এক পরিচালকের ১৮৯ কোটি, ইউনিক ইস্টার্ন প্রাইভেট লিমিটেডের ৯০ লাখ, ইউনিক সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজের ৭০ লাখ, ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টসের ১৭ কোটি ৫৫ লাখ, বোরাক রিয়েল এস্টেট প্রাইভেট লিমিটেডের ৭ কোটি ১০ লাখ, ইস্টার্ন হাউজিং লিমিটেডের ৩৫ কোটি এবং ইউনিক ভোকেশনাল ট্রেনিং সেন্টারের স্বত্বাধিকারী মো. নূর আলীর ৬৫ লাখ টাকা। অন্য যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের টাকা বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে নেয়া হয় তাদের মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশনের কাছ থেকে ১৯ কোটি ৪৫ লাখ, এবি ব্যাংকের ১৯০ কোটি, এবি ব্যাংক ফাউন্ডেশনের ৩২ কোটি, আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশনের ৩২ কোটি ৫০ লাখ,
যমুনা গ্রুপের ৩০ কোটি, এমজিএইচ গ্রুপের ২৪ কোটি ও এলিট পেইন্টের কাছ থেকে ২৫ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। সেনা সমর্থিত সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় এসব টাকা আদায় করা হয়। আরও যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান সে সময় অর্থ জমা দেয় তার মধ্যে আছে ন্যাশনাল ব্যাংক ৩৯ কোটি, কবির স্টিল মিলস ৭ কোটি, কনকর্ড রিয়েল এস্টেট ৭ কোটি, কনকর্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ৮ কোটি, পিংক সিটি ৬ কোটি ৪১ লাখ, স্বদেশ প্রপার্টিজ ৯ কোটি, আশিয়ান সিটি ১ কোটি, সাগুফতা হাউজিং ২ কোটি ৫০ লাখ, হোসাফ গ্রুপ ১৫ কোটি, পারটেক্স গ্রুপ ১৫ কোটি ও ইসলাম গ্রুপ ৩৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া ব্যবসায়ী আবদুল আউয়াল মিন্টুর কাছ থেকে ২ কোটি ২০ লাখ, ব্যবসায়ী রেজাউল করিমের কাছ থেকে ১৭ কোটি, আবু সুফিয়ানের কাছ থেকে ১৪ কোটি, শওকত আলী চৌধুরীর কাছ থেকে ৬ কোটি, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের কাছ থেকে ১৫ কোটি, বিএনপির সাবেক এমপি সালিমুল হক কামালের কাছ থেকে ২০ কোটি, ওয়াকিল আহমেদের কাছ থেকে ১৬ কোটি, গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের কাছ থেকে ২০ কোটি ৪১ লাখ ও ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান পারভীন হক সিকদারের কাছ থেকে ৩ কোটি টাকা। এসব ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অনেকেই এরই মধ্যে উচ্চ আদালতে আইনের আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
No comments