কুষ্টিয়ায় শিক্ষক দম্পতিকে কুপিয়েছে দুর্বৃত্তরা
কুষ্টিয়া শহরের হাউজিং এলাকায় গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে ঘরের ভেতর ঢুকে এক শিক্ষক দম্পতিকে কুপিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তাঁরা হলেন আলী ইসা (৫২) ও তাঁর স্ত্রী সামসুন্নাহার খানম (৪৬)। আলী ইসা কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের ইসলামিক স্টাডিজের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান। তাঁর স্ত্রী কুষ্টিয়া পৌর এলাকার জগতি কেএসএম কলেজের প্রভাষক। রাতে তাঁদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
হাউজিং ই-৩৭১ নম্বর বাড়ির একতলা ভবনে সপরিবারে বাস করেন আলী ইসা। চিকিৎসকেরা বলছেন, দুজনের মাথা ও ডান হাতে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। দুজনেরই হাতের অবস্থা গুরুতর। হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় আলী ইসা প্রথম আলোকে বলেন, তিনি তাঁর শয়নকক্ষে ঘুমাচ্ছিলেন। রাত তিনটার দিকে ঘুম থেকে জেগে শিয়রে দুজনকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন। তিনি লাফ দিয়ে ওঠেন। এ সময় একজন দুর্বৃত্তের সঙ্গে তাঁর ধস্তাধস্তি শুরু হয়। তিনি দৌড়ে ড্রয়িংরুমে চলে আসেন। সেখানে আরও দুজন দুর্বৃত্ত তাঁকে কোপ দেয়। দুর্বৃত্তদের কাছে এভাবে হামলা চালানোর কারণ জানতে চাইলে তারা কোনো উত্তর দেয়নি। এ সময় তাঁর স্ত্রী দৌড়ে এসে তাঁকে বাঁচাতে চেষ্টা করলে তাঁকেও কোপ দেয় দুর্বৃত্তরা। এ সময় রড দিয়ে তাঁর মাথায় বাড়ি দেওয়া হয়। আলী ইসা ও তাঁর স্ত্রীর ভাষ্য, ধারালো দা দিয়ে তাঁদের কোপানো হয়। দুর্বৃত্তরা সংখ্যায় চার থেকে পাঁচজন ছিল। বয়স ২৫ থেকে ৩০-এর মধ্যে। একজনের মুখ বাঁধা ছিল।
তারা সাত-আট মিনিট বাসায় অবস্থায় করে। আলী ইসার মেয়ে জারিন তাসমীম বলেন, তিনি পাশের রুমে ঘুমাচ্ছিলেন। জেগে দেখেন, মা-বাবা দুজনই পাশের মেঝেতে পড়ে আছেন। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের অর্থোপেডিক চিকিৎসক আনিসুর রহমান বলেন, শিক্ষকের ডান হাতের কনুই থেকে কবজি পর্যন্ত রগ কেটে গেছে। তাঁর স্ত্রীর কবজি বরাবর আঘাত লেগেছে। শিক্ষকের কাঁধের পেছনে কোপের আঘাতও রয়েছে। চিকিৎসকেরা বলছেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য দুজনকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হচ্ছে। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাবুদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। আহত দুজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ওই বাড়ির একটি ছোট দরজা খুলে ভেতরে ঢুকে তাঁদের কোপানো হয়েছে। এটি ডাকাতির ঘটনা মনে হলেও বাড়ি থেকে কোনো কিছু খোয়া যায়নি। এই ব্যাপারকে পুলিশ সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। এ ঘটনায় মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
No comments