শিক্ষকদের কর্মবিরতিতে অচল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় by এম তৌহিদ
প্রায়
সাড়ে আট মাস ধরে সরকারকে ধারাবাহিক সময় দিয়েও দাবি আদায় না হওয়ায় কঠোর
আন্দোলনই শুরু করলেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। পূর্ব ঘোষণা
অনুযায়ী আজ সোমবার থেকে শুরু হওয়া লাগাতার কর্মবিরতিতে অনেকটা অচল হয়ে গেছে
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম। ক্লাস বন্ধ থাকার পাশাপাশি
অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়েই পরীক্ষাও হচ্ছে না। দেশের ৩৭টি পাবলিক
বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে ‘মর্যাদা রক্ষা’র এই আন্দোলন করছেন শিক্ষকেরা।
শিক্ষক নেতারা বলছেন, অবনমন করতে করতে শিক্ষকদেরকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এবার আর তারা পিছু হঠবেন না। সম্মান রক্ষার আন্দোলনে যেকোনো ধরণের ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত। দাবি আদায় করে তবেই ক্লাসে ফিরতে চান তারা। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সাথে মাত্র ১০ মিনিট আলোচনা হলেই সমস্যার সমাধান সম্ভব। চলমান অচলাবস্থা নিরসনে সরকারের সাথে যেকোনো মুহূর্তে আলোচনার জন্য তারা প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন।
অষ্টম জাতীয় বেতন কাঠামোতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অবমূল্যায়ন এবং বৈষম্য দূরীকরণের দাবিতে গত কয়েকমাস ধরেই ধারাবাহিক আন্দোলন করছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। সর্বশেষ গত ২ জানুয়ারি শনিবার দাবি আদায়ে ১১ জানুয়ারি থেকে লাগাতার কর্মবিরতি (টোটালি শাট ডাউন) কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। ফলে সেশন জটের একটা শঙ্কাও ঘিরে ধরেছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। এজন্য অবিলম্বে এই সঙ্কটের সমাধান চাচ্ছেন তারা।
তবে সেশন জট হলে তার দায় শিক্ষকেরা নেবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। তিনি বলেন, আন্দোলনের কারণে সেশন জটের সৃষ্টি হলে তার দায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী বা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ওপর পড়বে না। সরকারকে এ বিষয়ে অনেক সময় দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একসাথে আন্দোলন চলছে। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েই ক্লাস হচ্ছে না। অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়েই পরীক্ষাও হচ্ছে না। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনুরোধে পূর্বঘোষিত পরীক্ষাগুলো নেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে নতুন করে আর কোনো পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য মিডটার্ম পরীক্ষা, টিউটোরিয়াল ও ক্লাস বন্ধ রয়েছে।
দেশের ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির এই সংগঠন গত ৩ জানুয়ারি থেকে কালো ব্যাজ ধারণ করে ক্লাস নেন। এছাড়া ৭ জানুয়ারি দুই ঘণ্টার কর্মবিরতি এবং অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। আজ থেকে শুরু হওয়া কর্মবিরতি চলাকালে প্রতিদিন বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে বটতলায় সাংবাদিকদের সাথে কথা বলবেন শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।
কর্মবিরতির প্রথমদিনে আজ বটতলায় ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। এসময় তারা শিক্ষকদের অসম্মান করার পেছনে সরকারের একটা গোষ্ঠী দায়ী বলে অভিযোগ করেন। প্রধানমন্ত্রীকে বেতন কাঠামো এবং চলমান আন্দোলন সম্পর্কে সঠিক তথ্য দেয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন শিক্ষক নেতৃবৃন্দ। এত কঠোর আন্দোলন শুরু হলেও তাদের শিক্ষামন্ত্রী ছাড়া সরকারের অন্য কোনো স্তর থেকে কোনো ধরণের যোগাযোগ করা হয়নি বলে তারা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান খুব সহজেই সম্ভব। কয়েক মাস ধরে প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা যদি প্রধানমন্ত্রীর সাথে ১০ মিনিট কথা বলতে পারতাম তাহলে সমস্যার সমাধান হয়ে যেত। ভুল বুঝিয়ে ওনার মাধ্যমে আমাদের বিরুদ্ধে বিরুপ মন্তব্য করানো হচ্ছে। আসলে শিক্ষকদেরকে অবনমন করানোর জন্য একটা গোষ্ঠী লেগে আছে।
তিনি বলেন, সরকারের সাথে মুখোমুখি অবস্থান করানোর জন্য এই গোষ্ঠী লেগে আছে। আমরা যাতে ক্লাস পরীক্ষার বাইরে এসে কর্মবিরতি দিই সে দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। আমরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করেছি ওই জায়গায় না আসতে। ক্লাস, পরীক্ষা, শিক্ষা কার্যক্রম যাতে বিঘ্নিত না হয় সেই চেষ্টা করেছি। কিন্তু জোর করে এখানে দাঁড় করানো হয়েছে। আমাদের মর্যাদার জন্য আমরা লড়াই করছি। বেতন ভাতা নয়, মর্যাদাটাই শিক্ষকদের কাছে বড়। মর্যাদার জন্য যেকোনো ধরণের ত্যাগ করতে আমরা রাজি। মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।’
অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘অবনমন করতে করতে আমাদের মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে। আমরা ধুলায় গড়াগড়ি খাচ্ছি। আমাদের সম্পর্কে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। অর্থমন্ত্রণালয় থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আমাদেরকে অপমান করা হচ্ছে। ভুল তথ্য জাতিকে জানানো হচ্ছে। আমরা এর প্রতিকার চাই। মর্যাদার লড়াইয়ে শিক্ষকদের জিততে হবে এবং আমরাই জিতব। দেশবাসী আমাদের সাথে আছে, কারণ তারা শিক্ষকদেরকে সম্মান করে। শিক্ষকদের অমর্যাদা কেউ চায় না একটা গোষ্ঠী ছাড়া। তারা কিসের জন্য শিক্ষকদের অমর্যাদা করতে চায় এটা আমাদের জানা নেই।’
তিনি আরো বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য প্রধানমন্ত্রী একটা কমিটি করেছেন, কিন্তু আমাদের সাথে কমিটির কেউ যোগাযোগ করেনি। কেউ চাননা এর সমাধান হোক, কিন্তু আমরা চাচ্ছি সমাধান হোক। আমরা আলোচনা করে সমাধান করতে চাই। কিন্তু না চাইলে কিভাবে আলোচনা করব। শুধুমাত্র শিক্ষামন্ত্রী ডেকে কথা বলেছেন। কিন্তু তিনি তো আর্থিক বিষয়টা দেখেন না। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কেউ আমাদের সাথে কথা বলেনি। সাড়ে আট মাস অপেক্ষা করেছি শান্তিপূর্ণ সুরাহার জন্য। আমরা আর কি করতে পারি। যতদিন সমাধান না হবে ততদিন আন্দোলন লাগাতার চলতে থাকবে।’
কর্মবিরতির প্রথম দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো বিভাগেরই ক্লাস হয়নি। কিছু শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে এলেও তারা ক্লাসরুমে বসে কিংবা ফাঁকা স্থানে আড্ডা দিয়ে ফিরে গেছেন। কলাভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ ভবনসমূহের অনেক রুমই তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিল। তবে যেসব বিভাগের পূর্ব নির্ধারিত পরীক্ষা ছিল সেগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া কর্মসূচি শুরুর আগে যেসব পরীক্ষার সময়সূচি নির্ধারিত সেগুলো কর্মবিরতি চলাকালে অনুষ্ঠিত হবে। দেশের বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষাও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
আন্দোলনরত শিক্ষকদের দাবিগুলো হলো- অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য সপ্তম জাতীয় বেতন স্কেলের সম্পূর্ণ অনুরূপ সিলেকশন গ্রেড ও টাইম-স্কেল বহালসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা অব্যাহত রাখতে হবে; অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেলে সিনিয়র সচিবের যে স্থান রাখা হয়েছে, সেই স্থানে গ্রেড-১ প্রাপ্ত অধ্যাপকদের মধ্য থেকে একটি অংশকে শতকরা হারে উন্নীত করার বিধান রাখতে হবে; সরকারি কর্মকর্তাদের অনুরূপ গাড়ি ও অন্যান্য সুবিধা শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও নিশ্চিত করতে হবে।
শিক্ষক নেতারা বলছেন, অবনমন করতে করতে শিক্ষকদেরকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এবার আর তারা পিছু হঠবেন না। সম্মান রক্ষার আন্দোলনে যেকোনো ধরণের ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত। দাবি আদায় করে তবেই ক্লাসে ফিরতে চান তারা। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সাথে মাত্র ১০ মিনিট আলোচনা হলেই সমস্যার সমাধান সম্ভব। চলমান অচলাবস্থা নিরসনে সরকারের সাথে যেকোনো মুহূর্তে আলোচনার জন্য তারা প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন।
অষ্টম জাতীয় বেতন কাঠামোতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অবমূল্যায়ন এবং বৈষম্য দূরীকরণের দাবিতে গত কয়েকমাস ধরেই ধারাবাহিক আন্দোলন করছেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। সর্বশেষ গত ২ জানুয়ারি শনিবার দাবি আদায়ে ১১ জানুয়ারি থেকে লাগাতার কর্মবিরতি (টোটালি শাট ডাউন) কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন। ফলে সেশন জটের একটা শঙ্কাও ঘিরে ধরেছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। এজন্য অবিলম্বে এই সঙ্কটের সমাধান চাচ্ছেন তারা।
তবে সেশন জট হলে তার দায় শিক্ষকেরা নেবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল। তিনি বলেন, আন্দোলনের কারণে সেশন জটের সৃষ্টি হলে তার দায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী বা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ওপর পড়বে না। সরকারকে এ বিষয়ে অনেক সময় দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একসাথে আন্দোলন চলছে। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েই ক্লাস হচ্ছে না। অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়েই পরীক্ষাও হচ্ছে না। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অনুরোধে পূর্বঘোষিত পরীক্ষাগুলো নেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে নতুন করে আর কোনো পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য মিডটার্ম পরীক্ষা, টিউটোরিয়াল ও ক্লাস বন্ধ রয়েছে।
দেশের ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির এই সংগঠন গত ৩ জানুয়ারি থেকে কালো ব্যাজ ধারণ করে ক্লাস নেন। এছাড়া ৭ জানুয়ারি দুই ঘণ্টার কর্মবিরতি এবং অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। আজ থেকে শুরু হওয়া কর্মবিরতি চলাকালে প্রতিদিন বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের সামনে বটতলায় সাংবাদিকদের সাথে কথা বলবেন শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।
কর্মবিরতির প্রথমদিনে আজ বটতলায় ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। এসময় তারা শিক্ষকদের অসম্মান করার পেছনে সরকারের একটা গোষ্ঠী দায়ী বলে অভিযোগ করেন। প্রধানমন্ত্রীকে বেতন কাঠামো এবং চলমান আন্দোলন সম্পর্কে সঠিক তথ্য দেয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন শিক্ষক নেতৃবৃন্দ। এত কঠোর আন্দোলন শুরু হলেও তাদের শিক্ষামন্ত্রী ছাড়া সরকারের অন্য কোনো স্তর থেকে কোনো ধরণের যোগাযোগ করা হয়নি বলে তারা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান খুব সহজেই সম্ভব। কয়েক মাস ধরে প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা যদি প্রধানমন্ত্রীর সাথে ১০ মিনিট কথা বলতে পারতাম তাহলে সমস্যার সমাধান হয়ে যেত। ভুল বুঝিয়ে ওনার মাধ্যমে আমাদের বিরুদ্ধে বিরুপ মন্তব্য করানো হচ্ছে। আসলে শিক্ষকদেরকে অবনমন করানোর জন্য একটা গোষ্ঠী লেগে আছে।
তিনি বলেন, সরকারের সাথে মুখোমুখি অবস্থান করানোর জন্য এই গোষ্ঠী লেগে আছে। আমরা যাতে ক্লাস পরীক্ষার বাইরে এসে কর্মবিরতি দিই সে দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। আমরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করেছি ওই জায়গায় না আসতে। ক্লাস, পরীক্ষা, শিক্ষা কার্যক্রম যাতে বিঘ্নিত না হয় সেই চেষ্টা করেছি। কিন্তু জোর করে এখানে দাঁড় করানো হয়েছে। আমাদের মর্যাদার জন্য আমরা লড়াই করছি। বেতন ভাতা নয়, মর্যাদাটাই শিক্ষকদের কাছে বড়। মর্যাদার জন্য যেকোনো ধরণের ত্যাগ করতে আমরা রাজি। মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে।’
অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘অবনমন করতে করতে আমাদের মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে। আমরা ধুলায় গড়াগড়ি খাচ্ছি। আমাদের সম্পর্কে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। অর্থমন্ত্রণালয় থেকে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আমাদেরকে অপমান করা হচ্ছে। ভুল তথ্য জাতিকে জানানো হচ্ছে। আমরা এর প্রতিকার চাই। মর্যাদার লড়াইয়ে শিক্ষকদের জিততে হবে এবং আমরাই জিতব। দেশবাসী আমাদের সাথে আছে, কারণ তারা শিক্ষকদেরকে সম্মান করে। শিক্ষকদের অমর্যাদা কেউ চায় না একটা গোষ্ঠী ছাড়া। তারা কিসের জন্য শিক্ষকদের অমর্যাদা করতে চায় এটা আমাদের জানা নেই।’
তিনি আরো বলেন, ‘দুঃখজনক হলেও সত্য প্রধানমন্ত্রী একটা কমিটি করেছেন, কিন্তু আমাদের সাথে কমিটির কেউ যোগাযোগ করেনি। কেউ চাননা এর সমাধান হোক, কিন্তু আমরা চাচ্ছি সমাধান হোক। আমরা আলোচনা করে সমাধান করতে চাই। কিন্তু না চাইলে কিভাবে আলোচনা করব। শুধুমাত্র শিক্ষামন্ত্রী ডেকে কথা বলেছেন। কিন্তু তিনি তো আর্থিক বিষয়টা দেখেন না। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কেউ আমাদের সাথে কথা বলেনি। সাড়ে আট মাস অপেক্ষা করেছি শান্তিপূর্ণ সুরাহার জন্য। আমরা আর কি করতে পারি। যতদিন সমাধান না হবে ততদিন আন্দোলন লাগাতার চলতে থাকবে।’
কর্মবিরতির প্রথম দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো বিভাগেরই ক্লাস হয়নি। কিছু শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে এলেও তারা ক্লাসরুমে বসে কিংবা ফাঁকা স্থানে আড্ডা দিয়ে ফিরে গেছেন। কলাভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ ভবনসমূহের অনেক রুমই তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিল। তবে যেসব বিভাগের পূর্ব নির্ধারিত পরীক্ষা ছিল সেগুলো অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া কর্মসূচি শুরুর আগে যেসব পরীক্ষার সময়সূচি নির্ধারিত সেগুলো কর্মবিরতি চলাকালে অনুষ্ঠিত হবে। দেশের বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষাও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
আন্দোলনরত শিক্ষকদের দাবিগুলো হলো- অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য সপ্তম জাতীয় বেতন স্কেলের সম্পূর্ণ অনুরূপ সিলেকশন গ্রেড ও টাইম-স্কেল বহালসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা অব্যাহত রাখতে হবে; অষ্টম জাতীয় বেতন স্কেলে সিনিয়র সচিবের যে স্থান রাখা হয়েছে, সেই স্থানে গ্রেড-১ প্রাপ্ত অধ্যাপকদের মধ্য থেকে একটি অংশকে শতকরা হারে উন্নীত করার বিধান রাখতে হবে; সরকারি কর্মকর্তাদের অনুরূপ গাড়ি ও অন্যান্য সুবিধা শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও নিশ্চিত করতে হবে।
No comments