সিরিয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে হস্তশিল্প
মুহাম্মদ আবদুল্লাহ। ৪২ বছর বয়সী সিরীয় নাগরিক। পেশায় একজন হস্তশিল্প। কাঠের ফ্রেমে মুক্তাখচিত বাহারি সজ্জাসামগ্রী বানানোই তার একমাত্র কাজ। কাঠের রকমারি সরঞ্জাম যেমন- হাতির দাঁত, হাড়, সাপ ইত্যাদি। এটাই তার আয়ের উৎস। সিরিয়ার চলমান গৃহযুদ্ধের দামামায় বিলীনের পথে দেশটির দামেস্ক শহরের প্রাচীন ওই হস্তশিল্প। কাঠের প্যানেলে মুক্তাখচিত কারুশিল্প দেশটির পর্যটক আকর্ষণের অন্যতম উপাদান। অথচ দেশটির সেই সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এখন বিলুপ্তির পথে। রোববার এএফপিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে আবদুল্লাহ বলেন, দামেস্কের কারুশিল্পের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন। দেশটির যুদ্ধবিধ্বস্ততায় শিল্পীর ঘাটতি ও কাঁচামাল পরিবহন এবং পর্যটকদের ভ্রমণ হ্রাস পাওয়ায় তা এখন মুখ থুবড়ে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, দামেস্কে ৩০টির অধিক হস্তশিল্প কারখানা ছিল, কিন্তু এখন রয়েছে মাত্র ৪টি। ২০১১ সালে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ারও প্রায় একযুগ আগে থেকে নিজ হস্ত শিল্পের কারখানায় কাজ করেন আবদুল্লাহ। অথচ যুদ্ধের কারণে নিজেদের গুদাম ছেড়ে দিতে হয়েছে তার মতো অনেক কারুশিল্পীর। সিরিয়ার দামেস্ক ছাড়াও আলেপ্প শহরও কারুশিল্পের জন্য বিখ্যাত। দেশটির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য গবেষক মুহাম্মদ ফায়াদ বলেন, সিরিয়ার বার্ষিক আয়ের ১২ শতাংশই আসে হস্তশিল্প থেকে। তিনি আরও বলেন, ২০০৯ সালে দেশটিতে নিবন্ধনকৃত কারুশিল্পীর সংখ্যা ছিল ১৮ হাজার এবং আরও প্রায় ৩৯ হাজার ছিল অনিবন্ধিত। ২০১৫ সালের শেষ দিকে এসে আয়ে মন্দা, সিরিয়ান মুদ্রামান হ্রাস, হস্তশিল্প কারখানা ধ্বংস, গৃহযুদ্ধে মৃত্যুবরণ এবং গৃহহারা হয়ে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ কারুশিল্পী হ্রাস পেয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে হস্তশিল্পীর আকালে পড়বে সিরিয়া।
No comments