বাম না তৃণমূল—দোলাচলে কংগ্রেস by অমর সাহা
পশ্চিমবঙ্গের
রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনের ঢাকে কাঠি পড়েছে। মাঠে নেমে পড়েছে সব রাজনৈতিক
দল। তবে পশ্চিমবঙ্গের জাতীয় কংগ্রেস এখনো ঠিক করে উঠতে পারেনি এই
নির্বাচনে তারা কোন দিকে বা জোটে ঝুঁকবে বা কার সঙ্গে নির্বাচনী জোট গড়বে। এ
নিয়ে এখনো কংগ্রেস শিবির সংশয়ের দোলাচলে। আগামী এপ্রিল-মে মাসে অনুষ্ঠিত
হতে যাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার ২৯৪ আসনের নির্বাচন।
পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে জাতীয় কংগ্রেসের একটা ভূমিকা বরাবরই ছিল, এখন অবশ্য কিছুটা কমেছে। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর পশ্চিমবঙ্গের শাসনক্ষমতায় ছিল এই কংগ্রেস। বলা চলে, একেবারে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত। মাঝে অবশ্য যুক্তফ্রন্টের শাসন। তবু বলা হয়, এই সুদীর্ঘকাল পশ্চিমবঙ্গের কান্ডারি ছিল কংগ্রেস। কংগ্রেস ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শে লালিত। ১৯৭৭ সালে বামফ্রন্টের কাছে এই কংগ্রেস ক্ষমতা হারায়। সেই থেকে বামফ্রন্ট ক্ষমতায় থাকে ২০১১ সাল পর্যন্ত। তারপর শুরু হয় সেই কংগ্রেস ভেঙে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গড়া তৃণমূল কংগ্রেসের শাসন। এখনো পশ্চিমবঙ্গে চলছে মমতা বা তৃণমূলের শাসন।
শক্তির বিচারে এখন এই রাজ্যে শীর্ষে রয়েছে তৃণমূল। দ্বিতীয় স্থানে বামফ্রন্ট, তৃতীয় স্থানে জাতীয় কংগ্রেস আর চতুর্থ স্থানে বিজেপি। কিন্তু ক্ষমতার শীর্ষে থেকে এখনো একদণ্ড শান্তিতে নেই মমতা বা তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেস। কারণ, মমতার এই প্রায় পৌনে পাঁচ বছরের শাসনে তিনি অনেক উন্নয়নের কাজ করলেও তাতে মন গলাতে পারেননি বিরোধীদের; সেই বাম দল থেকে কংগ্রেস বা বিজেপিকে। তাই নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে এখন মমতার ঘুম অনেকটাই চলে গিয়েছে।
কারণ, ২০১১ সালে মমতা ক্ষমতায় আসার পর কার্যত বামফ্রন্টের রাজনৈতিক অবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে। মুখ থুবড়ে পড়ে সিপিএমসহ বাম দলের শরিকেরা। এই সুযোগে জেগে ওঠেন মমতা। আবার ২০১৪ সালে ভারতের শাসনক্ষমতায় নরেন্দ্র মোদি এলে সেই জোয়ারের পানি এসে পড়ে পশ্চিমবঙ্গেও। ফলে বিজেপি এই রাজ্যে সাঁতার কাটার সুযোগ পেয়ে যায়। সংগঠিতও করে দলকে।
অন্যদিকে নির্বাচন সামনে রেখে দিনে দিনে ফের শক্তিশালী হতে শুরু করে বাম দল। এখন গোটা রাজ্যে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইতে নেমে পড়েছে বাম দল। চাঙা হচ্ছে দল। সমর্থনও মিলছে। গত ২৭ ডিসেম্বর কলকাতার ব্রিগেড ময়দানে এক বিশাল সমাবেশ করে সিপিএম দেখিয়ে দিয়েছে তারা শেষ হয়ে যায়নি, জেগে উঠছে। এদিকে কংগ্রেস এখন অনেকটা একা হয়েই রয়েছে। সংগঠনও আর তেমন শক্তিশালী করে গড়তে পারেনি। বরং তৃণমূল বাগিয়ে নেওয়ার লড়াইয়ে নেমেছে কংগ্রেসের বিধায়কদের। সফল হচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে।
গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস তৃণমূলের সঙ্গে জোট করে জিতেছিল ৪২টি আসন। তারপর মমতার নেতৃত্বে গড়া সরকারে যোগও দিয়েছিল। মন্ত্রীও হয়েছিলেন কংগ্রেসের পাঁচজন। কিন্তু সেই সুখ বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। দুই দলের মধ্যে অন্তঃকলহ শুরু হলে একপর্যায়ে কংগ্রেস বেরিয়ে আসে সরকার থেকে। তারপর থেকে কংগ্রেস একা। সেই কংগ্রেসকে নিয়ে এখন পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি তোলপাড় হচ্ছে। কারণ, কংগ্রেস জানে, এই রাজ্যে এখন বিজেপিও ভোটের বাক্সে ভাগ বসাতে চলেছে। তাদের দলের অনেকেই চলে গেছে অন্য দলে।
আবার বিজেপিও বুঝেছে, তাদের শক্তি বাড়ছে। কংগ্রেস বা তৃণমূলের একটা অংশ, যারা ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে অতটা ভাবে না, তারা হয়তো বিজেপির দিকেই ঝুঁকবে। আর বাম দলের একটা অংশও এখন দলের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে দল ছেড়েছে। এদিকে এখন তৃণমূল এবং বাম দলও টানতে শুরু করেছে কংগ্রেসকে, কখনো প্রকাশ্যে আবার কখনো অপ্রকাশ্যে। কংগ্রেস জানে, এখন যে এই রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তাতে তাদের এককভাবে লড়ে পুরোনো আসন টিকিয়ে রাখাই দায় হবে। কংগ্রেসকে জিততে হলে ফের তাদের ভিড়তে হবে হয় তৃণমূলে, নয়তো বাম দলের জোটে। এই দুটোর একটি পথে এগোতে পারলে কংগ্রেস অন্তত নির্বাচনে ভালো আসন পাওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারে। এখন কংগ্রেসের অধিকাংশ নেতা-কর্মী-সমর্থকেরা চাইছেন বাম জোটে থাকতে। তাঁদের যুক্তি, মমতার সঙ্গে থাকা কঠিন। অন্যদিকে বাম দল ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শে লালিত। এই বাম দল মনমোহনের নেতৃত্বাধীন প্রথম ইউপিএ সরকারকে সমর্থন জানিয়েছিল। সুতরাং, বাম দলের জোটে যাওয়াই শ্রেয় হবে কংগ্রেসের জন্য।
এই রাজ্যে সর্বশেষ বিধানসভা নির্বাচন হয়েছিল ২০১১ সালের এপ্রিল-মে মাসে। ওই নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস ও জাতীয় কংগ্রেস নির্বাচনী আঁতাত করে আসন সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচনে লড়ে বিপুল ভোটে তৎকালীন ক্ষমতাসীন বামফ্রন্টকে পরাস্ত করে তাদের ৩৪ বছর শাসনের অবসান ঘটিয়েছিল। ওই নির্বাচনে তৃণমূল জিতেছিল ১৮৮টি আসনে এবং তাদের জোটভুক্ত কংগ্রেস জিতেছিল ৪২টি আসনে আর বাম দল জিতেছিল ৬০টি আসনে।
সম্প্রতি রাজ্য কংগ্রেসের দলীয় নেতাদের এক সভায় দলের নেতারা মমতাকে ঠেকানোর জন্য বাম দলের সঙ্গে নির্বাচনী জোট করার পক্ষে সায়ও দিয়েছেন। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতি অধীর চৌধুরী, কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সি পি যোশীসহ কংগ্রেসের রাজ্য নেতৃবৃন্দ। এই বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের যোশী বলেছিলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ কংগ্রেস কর্মী সিপিএমের সঙ্গে জোট চান। এ-সংক্রান্ত রিপোর্ট আমি তৈরি করে তা পাঠিয়ে দেব রাহুল গান্ধীর কাছে।’
যদিও কংগ্রেসের কিছু নেতা-কর্মী আছেন, যাঁরা এখনো তৃণমূলের সঙ্গে নির্বাচনী জোট গড়তে আগ্রহী। এদিকে সিপিএমের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও জানিয়ে দিয়েছেন, বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির স্বার্থে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়া যেতে পারে। পাশাপাশি তিনি এ কথাও বলেছেন, তাঁদের মূল লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গ থেকে মমতাকে সরিয়ে দেওয়া।
কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়ার পক্ষে সায় দিয়েছেন সিপিএমের পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রও। তাই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন, এ বছরের নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত বাম দলের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট হয়েও যেতে পারে। রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে কিছু নেই, তাই রাজনৈতিক স্বার্থে এবং বিজেপিকে হটানোর লক্ষ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের জোট হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
অমর সাহা: প্রথম আলোর কলকাতা প্রতিনিধি।
পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে জাতীয় কংগ্রেসের একটা ভূমিকা বরাবরই ছিল, এখন অবশ্য কিছুটা কমেছে। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের পর পশ্চিমবঙ্গের শাসনক্ষমতায় ছিল এই কংগ্রেস। বলা চলে, একেবারে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত। মাঝে অবশ্য যুক্তফ্রন্টের শাসন। তবু বলা হয়, এই সুদীর্ঘকাল পশ্চিমবঙ্গের কান্ডারি ছিল কংগ্রেস। কংগ্রেস ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শে লালিত। ১৯৭৭ সালে বামফ্রন্টের কাছে এই কংগ্রেস ক্ষমতা হারায়। সেই থেকে বামফ্রন্ট ক্ষমতায় থাকে ২০১১ সাল পর্যন্ত। তারপর শুরু হয় সেই কংগ্রেস ভেঙে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গড়া তৃণমূল কংগ্রেসের শাসন। এখনো পশ্চিমবঙ্গে চলছে মমতা বা তৃণমূলের শাসন।
শক্তির বিচারে এখন এই রাজ্যে শীর্ষে রয়েছে তৃণমূল। দ্বিতীয় স্থানে বামফ্রন্ট, তৃতীয় স্থানে জাতীয় কংগ্রেস আর চতুর্থ স্থানে বিজেপি। কিন্তু ক্ষমতার শীর্ষে থেকে এখনো একদণ্ড শান্তিতে নেই মমতা বা তাঁর দল তৃণমূল কংগ্রেস। কারণ, মমতার এই প্রায় পৌনে পাঁচ বছরের শাসনে তিনি অনেক উন্নয়নের কাজ করলেও তাতে মন গলাতে পারেননি বিরোধীদের; সেই বাম দল থেকে কংগ্রেস বা বিজেপিকে। তাই নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে এখন মমতার ঘুম অনেকটাই চলে গিয়েছে।
কারণ, ২০১১ সালে মমতা ক্ষমতায় আসার পর কার্যত বামফ্রন্টের রাজনৈতিক অবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে। মুখ থুবড়ে পড়ে সিপিএমসহ বাম দলের শরিকেরা। এই সুযোগে জেগে ওঠেন মমতা। আবার ২০১৪ সালে ভারতের শাসনক্ষমতায় নরেন্দ্র মোদি এলে সেই জোয়ারের পানি এসে পড়ে পশ্চিমবঙ্গেও। ফলে বিজেপি এই রাজ্যে সাঁতার কাটার সুযোগ পেয়ে যায়। সংগঠিতও করে দলকে।
অন্যদিকে নির্বাচন সামনে রেখে দিনে দিনে ফের শক্তিশালী হতে শুরু করে বাম দল। এখন গোটা রাজ্যে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইতে নেমে পড়েছে বাম দল। চাঙা হচ্ছে দল। সমর্থনও মিলছে। গত ২৭ ডিসেম্বর কলকাতার ব্রিগেড ময়দানে এক বিশাল সমাবেশ করে সিপিএম দেখিয়ে দিয়েছে তারা শেষ হয়ে যায়নি, জেগে উঠছে। এদিকে কংগ্রেস এখন অনেকটা একা হয়েই রয়েছে। সংগঠনও আর তেমন শক্তিশালী করে গড়তে পারেনি। বরং তৃণমূল বাগিয়ে নেওয়ার লড়াইয়ে নেমেছে কংগ্রেসের বিধায়কদের। সফল হচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে।
গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস তৃণমূলের সঙ্গে জোট করে জিতেছিল ৪২টি আসন। তারপর মমতার নেতৃত্বে গড়া সরকারে যোগও দিয়েছিল। মন্ত্রীও হয়েছিলেন কংগ্রেসের পাঁচজন। কিন্তু সেই সুখ বেশি দিন স্থায়ী হয়নি। দুই দলের মধ্যে অন্তঃকলহ শুরু হলে একপর্যায়ে কংগ্রেস বেরিয়ে আসে সরকার থেকে। তারপর থেকে কংগ্রেস একা। সেই কংগ্রেসকে নিয়ে এখন পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি তোলপাড় হচ্ছে। কারণ, কংগ্রেস জানে, এই রাজ্যে এখন বিজেপিও ভোটের বাক্সে ভাগ বসাতে চলেছে। তাদের দলের অনেকেই চলে গেছে অন্য দলে।
আবার বিজেপিও বুঝেছে, তাদের শক্তি বাড়ছে। কংগ্রেস বা তৃণমূলের একটা অংশ, যারা ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে অতটা ভাবে না, তারা হয়তো বিজেপির দিকেই ঝুঁকবে। আর বাম দলের একটা অংশও এখন দলের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে দল ছেড়েছে। এদিকে এখন তৃণমূল এবং বাম দলও টানতে শুরু করেছে কংগ্রেসকে, কখনো প্রকাশ্যে আবার কখনো অপ্রকাশ্যে। কংগ্রেস জানে, এখন যে এই রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি, তাতে তাদের এককভাবে লড়ে পুরোনো আসন টিকিয়ে রাখাই দায় হবে। কংগ্রেসকে জিততে হলে ফের তাদের ভিড়তে হবে হয় তৃণমূলে, নয়তো বাম দলের জোটে। এই দুটোর একটি পথে এগোতে পারলে কংগ্রেস অন্তত নির্বাচনে ভালো আসন পাওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারে। এখন কংগ্রেসের অধিকাংশ নেতা-কর্মী-সমর্থকেরা চাইছেন বাম জোটে থাকতে। তাঁদের যুক্তি, মমতার সঙ্গে থাকা কঠিন। অন্যদিকে বাম দল ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শে লালিত। এই বাম দল মনমোহনের নেতৃত্বাধীন প্রথম ইউপিএ সরকারকে সমর্থন জানিয়েছিল। সুতরাং, বাম দলের জোটে যাওয়াই শ্রেয় হবে কংগ্রেসের জন্য।
এই রাজ্যে সর্বশেষ বিধানসভা নির্বাচন হয়েছিল ২০১১ সালের এপ্রিল-মে মাসে। ওই নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস ও জাতীয় কংগ্রেস নির্বাচনী আঁতাত করে আসন সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচনে লড়ে বিপুল ভোটে তৎকালীন ক্ষমতাসীন বামফ্রন্টকে পরাস্ত করে তাদের ৩৪ বছর শাসনের অবসান ঘটিয়েছিল। ওই নির্বাচনে তৃণমূল জিতেছিল ১৮৮টি আসনে এবং তাদের জোটভুক্ত কংগ্রেস জিতেছিল ৪২টি আসনে আর বাম দল জিতেছিল ৬০টি আসনে।
সম্প্রতি রাজ্য কংগ্রেসের দলীয় নেতাদের এক সভায় দলের নেতারা মমতাকে ঠেকানোর জন্য বাম দলের সঙ্গে নির্বাচনী জোট করার পক্ষে সায়ও দিয়েছেন। এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য কংগ্রেসের সভাপতি অধীর চৌধুরী, কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি সি পি যোশীসহ কংগ্রেসের রাজ্য নেতৃবৃন্দ। এই বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের যোশী বলেছিলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ কংগ্রেস কর্মী সিপিএমের সঙ্গে জোট চান। এ-সংক্রান্ত রিপোর্ট আমি তৈরি করে তা পাঠিয়ে দেব রাহুল গান্ধীর কাছে।’
যদিও কংগ্রেসের কিছু নেতা-কর্মী আছেন, যাঁরা এখনো তৃণমূলের সঙ্গে নির্বাচনী জোট গড়তে আগ্রহী। এদিকে সিপিএমের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিও জানিয়ে দিয়েছেন, বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতির স্বার্থে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়া যেতে পারে। পাশাপাশি তিনি এ কথাও বলেছেন, তাঁদের মূল লক্ষ্য পশ্চিমবঙ্গ থেকে মমতাকে সরিয়ে দেওয়া।
কংগ্রেসের সঙ্গে জোট গড়ার পক্ষে সায় দিয়েছেন সিপিএমের পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রও। তাই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন, এ বছরের নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত বাম দলের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট হয়েও যেতে পারে। রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে কিছু নেই, তাই রাজনৈতিক স্বার্থে এবং বিজেপিকে হটানোর লক্ষ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের জোট হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
অমর সাহা: প্রথম আলোর কলকাতা প্রতিনিধি।
No comments