ভূমিকাহীন বিরোধী দল by কাজী সোহাগ
মানুষ জাপাকে বিরোধী দল মনে করে না : এরশাদ |
সরকারের
বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সমর্থন দেয়াই ছিল সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয়
পার্টির মূলনীতি। সরকারের অংশীদারিত্ব থাকায় তারা বিরোধিতা করতে পারেননি।
এজন্য সরকারের দুই বছরেও বিরোধী দল হিসেবে আস্থা অর্জন করতে পারেনি সাবেক
প্রেসিডেন্ট এইচ এম এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি। এরশাদ নিজেও
সম্প্রতি তা কবুল করেছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটা সরকারের সাজানো বিরোধী দল। জাতীয় পার্টি সরকারে আবদ্ধ। তাই তাদের পক্ষে সত্যিকার অর্থে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করা সম্ভব নয়। জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতারাও তাই মনে করেন। বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের বর্জনের মধ্যে ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। ৩৪ জন সদস্য নিয়ে এ সংসদে বিরোধী দল হিসেবে রয়েছে জাতীয় পার্টি। দলটির সভাপতিমণ্ডলির সদস্য রওশন এরশাদ বিরোধীদলীয় নেতা। ২রা জানুয়ারি জাতীয় পার্টির ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে দলের চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ বলেন, ‘জনগণ জাতীয় পার্টিকে বিরোধী দল মনে করে না। আমি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত। সরকারে আমাদের মন্ত্রিত্ব রয়েছে। দেশের জনগণ আমাদের প্রধান বিরোধী দল মনে করে না। জাতীয় পার্টি যেন প্রকৃত বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করে, সেজন্য সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের প্রতি আবেদন জানান। রওশনকে উদ্দেশ্য করে এরশাদ বলেন, ‘আপনার কাছে আবেদন, জাতীয় পার্টি যেন প্রকৃত বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করে। এরশাদের এ বক্তব্যর সঙ্গে একমত দলের অনেক শীর্ষ নেতারাও।
এ প্রসঙ্গে দলের সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার গতকাল মানবজমিনকে বলেন, যতটুকু আমাদের এগোনো দরকার ততটুকু এগিয়েছি। হরতাল অবরোধ, সমাজ ব্যবস্থায় স্থবিরতা, অনিশ্চয়তার পরিবর্তে মানুষের আস্থা, নির্ভরতা এবং শান্তি, উন্নয়ন ও ঐক্যের পথে জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হলো সব দলের দায়িত্ব। এতে আমরা বিরোধী দল হিসেবে সরকারকে কতটুকু সহায়তা করতে পেরেছি তা জনগণই ভালো বলতে পারবে। তিনি বলেন, অতীতে বিরোধী দলগুলোর ভূমিকা ছিল অস্থিরতা, অনিশ্চয়তা ও অনৈক্য সৃষ্টি করা। জাতীয় পার্টি এসবে বিশ্বাস করে না। সরকারের খারাপ দিক বা যেগুলো করা উচিত না তা বলার চেষ্টা করা হয়েছে। বিশেষ করে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, এসিড নিক্ষেপ, নারীর অধিকার, খাবারের ভেজাল নিয়ে কড়া ভাষায় কথা বলেছেন। সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন। বিরোধী দলের কাজ হলো সরকারকে শান্তির পথে রাখা, ভালোর পথে রাখা। আগে ধরো,মারো,কাটো নীতি ছিল। এবার নতুন পদ্ধতিতে বিরোধী দল সরকারকে সহযোগিতা করছে। কতটুকু পেরেছি তা জনগণ আর মিডিয়া ভালো বলতে পারবে। প্রসঙ্গত, পার্টির চেয়ারম্যান মন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত। দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ পানি সম্পদমন্ত্রী। প্রেসিডিয়াম সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী, মশিউর রহমান রাঙ্গা স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী। এ ছাড়া বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদের রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসিহকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত করে সৌদি আরব পাঠানো হয়েছে। এদিকে সংসদে যেসব বিল উত্থাপিত হয়েছে তাতে বিরোধিতা করেনি বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। সরকারি দলের এমপিদের সঙ্গে তাল ও সুর মিলিয়ে তারা বক্তব্য রেখেছেন। তাদের এ ভূমিকার সমালোচনা হয়েছে সংসদেও। উল্টো বিরোধী দলের সমর্থনে এগিয়ে আসে সরকারি দল। ২০১৪ সালের ১০ই ফেব্রুয়ারি স্বতন্ত্র জোটের এমপি রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, বর্তমান সরকার আওয়ামী লীগের, ঐকমত্যের, নাকি জাতীয় ঐকমত্যের, তা নিয়ে বিতর্ক আছে। সরকার ঐকমত্যের হলে আমরা আছি কোন্ জায়গায়? বিশ্বে এ ধরনের কোনো নজির নেই। সংসদীয় গণতন্ত্রে সরকারি দলে থাকলে বিরোধী দলে থাকা যায় না। জবাবে সরকারের শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, ‘সরকারে ও বিরোধী দলে নজির বর্তমানে পাকিস্তানে, ইসরাইল ও জার্মানিতে আছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ওবামা ডেমোক্রাট দলের। কিন্তু তার ডিফেন্স মিনিস্টার রিপাবলিকান দলের। সংবিধানের কোথায় লেখা আছে, বিরোধী দল ও সরকারে একসঙ্গে থাকা যাবে না?’ ওইদিন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী জাতীয় পার্টির সমর্থনে বলেন, ‘পত্রিকায় পড়েছি, রওশন এরশাদ বলেছেন নির্বাচনকালীন সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকার সময় উনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট পরিদর্শনে গিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। উনার এই মানবিক দৃষ্টিকোণের প্রশংসা করি। শুধু বিরোধিতার খাতিরে বিরোধিতা করলেই শক্তিশালী বিরোধী দল বলে না। এদিকে জাতীয় পার্টি দশম সংসদে নামে বিরোধী দল হিসেবে থাকলেও সেই দায়িত্ব তারা পালন করতে পারছে না বলে মনে করছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি। নবম সংসদের পার্লামেন্ট ওয়াচ প্রতিবেদন তুলে ধরে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এ সংসদে বিরোধী দল নেই। সংসদে সরকারি দল রয়েছে। বিরোধী দল বলতে যা বোঝায় সে বিরোধী দল নেই। তিন সিটি করপোরেশন, উপজেলা নির্বাচন এবং সর্বশেষ পৌরসভা নির্বাচনে চরম ভরাডুবি হয়েছে দলটির। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় হতাশা করেন দলের নেতাকর্মীরা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটা সরকারের সাজানো বিরোধী দল। জাতীয় পার্টি সরকারে আবদ্ধ। তাই তাদের পক্ষে সত্যিকার অর্থে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করা সম্ভব নয়। জাতীয় পার্টির শীর্ষ নেতারাও তাই মনে করেন। বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের বর্জনের মধ্যে ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। ৩৪ জন সদস্য নিয়ে এ সংসদে বিরোধী দল হিসেবে রয়েছে জাতীয় পার্টি। দলটির সভাপতিমণ্ডলির সদস্য রওশন এরশাদ বিরোধীদলীয় নেতা। ২রা জানুয়ারি জাতীয় পার্টির ৩০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে দলের চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ বলেন, ‘জনগণ জাতীয় পার্টিকে বিরোধী দল মনে করে না। আমি প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত। সরকারে আমাদের মন্ত্রিত্ব রয়েছে। দেশের জনগণ আমাদের প্রধান বিরোধী দল মনে করে না। জাতীয় পার্টি যেন প্রকৃত বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করে, সেজন্য সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের প্রতি আবেদন জানান। রওশনকে উদ্দেশ্য করে এরশাদ বলেন, ‘আপনার কাছে আবেদন, জাতীয় পার্টি যেন প্রকৃত বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করে। এরশাদের এ বক্তব্যর সঙ্গে একমত দলের অনেক শীর্ষ নেতারাও।
এ প্রসঙ্গে দলের সাবেক মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার গতকাল মানবজমিনকে বলেন, যতটুকু আমাদের এগোনো দরকার ততটুকু এগিয়েছি। হরতাল অবরোধ, সমাজ ব্যবস্থায় স্থবিরতা, অনিশ্চয়তার পরিবর্তে মানুষের আস্থা, নির্ভরতা এবং শান্তি, উন্নয়ন ও ঐক্যের পথে জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হলো সব দলের দায়িত্ব। এতে আমরা বিরোধী দল হিসেবে সরকারকে কতটুকু সহায়তা করতে পেরেছি তা জনগণই ভালো বলতে পারবে। তিনি বলেন, অতীতে বিরোধী দলগুলোর ভূমিকা ছিল অস্থিরতা, অনিশ্চয়তা ও অনৈক্য সৃষ্টি করা। জাতীয় পার্টি এসবে বিশ্বাস করে না। সরকারের খারাপ দিক বা যেগুলো করা উচিত না তা বলার চেষ্টা করা হয়েছে। বিশেষ করে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ, এসিড নিক্ষেপ, নারীর অধিকার, খাবারের ভেজাল নিয়ে কড়া ভাষায় কথা বলেছেন। সরকারকে পরামর্শ দিয়েছেন। বিরোধী দলের কাজ হলো সরকারকে শান্তির পথে রাখা, ভালোর পথে রাখা। আগে ধরো,মারো,কাটো নীতি ছিল। এবার নতুন পদ্ধতিতে বিরোধী দল সরকারকে সহযোগিতা করছে। কতটুকু পেরেছি তা জনগণ আর মিডিয়া ভালো বলতে পারবে। প্রসঙ্গত, পার্টির চেয়ারম্যান মন্ত্রীর মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত। দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ পানি সম্পদমন্ত্রী। প্রেসিডিয়াম সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী, মশিউর রহমান রাঙ্গা স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী। এ ছাড়া বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদের রাজনৈতিক সচিব গোলাম মসিহকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত করে সৌদি আরব পাঠানো হয়েছে। এদিকে সংসদে যেসব বিল উত্থাপিত হয়েছে তাতে বিরোধিতা করেনি বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। সরকারি দলের এমপিদের সঙ্গে তাল ও সুর মিলিয়ে তারা বক্তব্য রেখেছেন। তাদের এ ভূমিকার সমালোচনা হয়েছে সংসদেও। উল্টো বিরোধী দলের সমর্থনে এগিয়ে আসে সরকারি দল। ২০১৪ সালের ১০ই ফেব্রুয়ারি স্বতন্ত্র জোটের এমপি রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, বর্তমান সরকার আওয়ামী লীগের, ঐকমত্যের, নাকি জাতীয় ঐকমত্যের, তা নিয়ে বিতর্ক আছে। সরকার ঐকমত্যের হলে আমরা আছি কোন্ জায়গায়? বিশ্বে এ ধরনের কোনো নজির নেই। সংসদীয় গণতন্ত্রে সরকারি দলে থাকলে বিরোধী দলে থাকা যায় না। জবাবে সরকারের শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, ‘সরকারে ও বিরোধী দলে নজির বর্তমানে পাকিস্তানে, ইসরাইল ও জার্মানিতে আছে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ওবামা ডেমোক্রাট দলের। কিন্তু তার ডিফেন্স মিনিস্টার রিপাবলিকান দলের। সংবিধানের কোথায় লেখা আছে, বিরোধী দল ও সরকারে একসঙ্গে থাকা যাবে না?’ ওইদিন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী জাতীয় পার্টির সমর্থনে বলেন, ‘পত্রিকায় পড়েছি, রওশন এরশাদ বলেছেন নির্বাচনকালীন সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী থাকার সময় উনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিট পরিদর্শনে গিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। উনার এই মানবিক দৃষ্টিকোণের প্রশংসা করি। শুধু বিরোধিতার খাতিরে বিরোধিতা করলেই শক্তিশালী বিরোধী দল বলে না। এদিকে জাতীয় পার্টি দশম সংসদে নামে বিরোধী দল হিসেবে থাকলেও সেই দায়িত্ব তারা পালন করতে পারছে না বলে মনে করছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবি। নবম সংসদের পার্লামেন্ট ওয়াচ প্রতিবেদন তুলে ধরে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এ সংসদে বিরোধী দল নেই। সংসদে সরকারি দল রয়েছে। বিরোধী দল বলতে যা বোঝায় সে বিরোধী দল নেই। তিন সিটি করপোরেশন, উপজেলা নির্বাচন এবং সর্বশেষ পৌরসভা নির্বাচনে চরম ভরাডুবি হয়েছে দলটির। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় হতাশা করেন দলের নেতাকর্মীরা।
No comments