একটু ঘুমাতে চান রাব্বী by মানসুরা হোসাইন
ভয়ে
কুঁকড়ে আছে ২৭ বছরের যুবকের মুখ। লাল হয়ে যাওয়া চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে।
মাথার কাছে বন্ধু বসে আছেন। আর বন্ধুর কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে আছেন যুবকটি।
ছটফট করছেন। একটু পরপর পাশে বসা বন্ধুর হাত চেপে ধরছেন। হাত-পা ছুড়ছেন।
অস্থির গলায় বলছেন, ‘আমি কোনো দোষ করি নাই। আমার কোনো দোষ ছিল না। আমি একটু
ঘুমাব।’
গতকাল বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিছানায় এভাবেই দেখা গেল বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা গোলাম রাব্বীকে। ব্যাংকের যোগাযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের এই কর্মকর্তা এখনো বিশ্বাস করতে পারছেন না, আসলেই পুলিশের হাত থেকে প্রাণ নিয়ে তিনি ফিরে আসতে পেরেছেন।
গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে রাব্বী কথা বলছিলেন খুব আস্তে আস্তে। কথা বলতে বলতে উত্তেজিত হয়ে যাচ্ছিলেন। কখনো একই কথা বলছিলেন বারবার। আবার কখনো একেবারে চুপ।
গত শনিবার রাত ১১টার দিকে গোলাম রাব্বী মোহাম্মদপুরে তাঁর খালার বাসা থেকে কল্যাণপুরে নিজের বাসায় যাচ্ছিলেন। পথে হঠাৎ পেছন থেকে এক পুলিশ সদস্য তাঁর শার্টের কলার ধরে বলেন, ‘তোর কাছে ইয়াবা আছে।’ তিনি অস্বীকার করলে, তাঁকে ধরে কিছু দূরে দাঁড়িয়ে থাকা মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদ শিকদারের কাছে নিয়ে যান ওই পুলিশ সদস্য। এসআই মাসুদও তাঁকে বলেন, তাঁর (রাব্বী) কাছে ইয়াবা আছে। তিনি আবারও অস্বীকার করলে এসআই মাসুদসহ পুলিশ সদস্যরা তাঁকে নিয়ে টানাহেঁচড়া শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁকে জোর করে পুলিশের গাড়িতে তোলা হয়।
এরপরের কথা বলতে গিয়ে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সাবেক সংবাদ উপস্থাপক রাব্বী বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে সারাক্ষণ মনে হচ্ছে কে যেন আমাকে ধরতে আসছে। বাম পায়ে রডের বাড়ির ব্যথা আছে। মাথায়ও চিনচিন ব্যথা। ওই দিন যা হয়েছে তা ১০ বা ১৫টি বই লিখলেও কাহিনি শেষ করা যাবে না। শুধু বুঝতে পারছিলাম, “কাদের কেস”-এর মতো কিছু একটা হতে যাচ্ছে। একেকজন শরীরের একেক জায়গায় হাত দেয় আর বলতে থাকে ইয়াবা কই, মাদক কই, অস্ত্র কই? এসব বলে, আর মারে। পুলিশ ভ্যান এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ঘুরতে থাকে। মোটা অঙ্কের টাকা চায়। একজন বলে, তোরে তো সম্মান দিছি, থানায় নিই নাই। তুই যে ইয়াবা ব্যবসায়ী এইটা জানলে তো তোর বিয়ে হবে না।’
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অবৈতনিক মেডিকেল অফিসার রেজওয়ানুল ইসলাম জানান, রাব্বীর ডান হাতের কনুইতে এবং শরীরের ভেতরে (রক্ত বের হয়নি) বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন আছে। শারীরিক সমস্যার চেয়েও তাঁর মানসিক অবস্থা বেশি খারাপ। সারাক্ষণই একধরনের ভয়ের মধ্যে থাকছেন। কারও সঙ্গে সেভাবে যোগাযোগ করছেন না। রাব্বীর নাক, কান ও মানসিক অবস্থার পরীক্ষা করানো হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিস্তারিত বলা যাবে।
পাঁচ বোনের এক ভাই গোলাম রাব্বী বলেন, তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন, টেলিভিশনে কাজ করেছেন এ পরিচয়গুলো পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তোলে। পুলিশ সদস্যরা তাঁকে নিয়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা করতে থাকেন। কেউ কেউ তাঁকে মেরে ফেলার কথা বলেন। মানিব্যাগে টাকা ছিল, তাই এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে ফেরার পথে সন্ত্রাসীদের আক্রমণের সময় পুলিশ সন্ত্রাসীদের গুলি করলে তা রাব্বীর পায়ে লাগে বলে চালিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনাও করে। ‘ইয়াবা ব্যবসায়ী’ বলে মিথ্যা মুচলেকা দিতে চাপ দিতে থাকে। একপর্যায়ে রাব্বী যাতে ফোন করে কাউকে আসতে বলেন তা জানায়। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, গণমাধ্যম বা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাউকে ফোন দেওয়া যাবে না। রাব্বী জাহিদ নামের (নামের পাশে ডিইউ লেখা ছিল না) এক বড় ভাইকে ফোন দেন। জাহিদকে পুলিশ সদস্যরাই আসাদগেটে আসতে বলেন। তাঁরা ১০-১২ জন এসে রাব্বীকে উদ্ধার করেন। ভাগ্যক্রমে রাব্বীর মুঠোফোনটি পুলিশ সদস্যরা কেড়ে নেননি। রাব্বী এক ফাঁকে তাঁর পরিচিত কয়েকজনকে খুদে বার্তা দিয়ে শুধু লেখেন ‘কাদের কেস’।
গোলাম রাব্বী বলেন, ‘পুলিশ আমারে সার্চ করে নাই। কাউকেই করে না। ভ্যান নিয়ে ঘুরে। আমি যতক্ষণ ছিলাম দেখেছি, একেকজনকে ধরে, টাকা নেয়। যারা টাকা দিতে পারে না, তাদের থানায় নিয়ে যায়। মারধর করে।’
মাদারীপুরে বসে টেলিভিশনে একমাত্র ছেলেকে নির্যাতন করার খবরটি দেখেছেন মা রাবেয়া। বাবা আলাউদ্দিন মাস্টার শিক্ষকতা করতেন। রাব্বী কান্না জড়ানো কণ্ঠে বলেন, ‘কত বললাম, আমার বাবা শিক্ষক। খারাপ কাজ করতে শেখাননি। আমি কোনো দিন সিগারেটও খাই নাই। কিন্তু আমার কোনো কথা শুনল না।’
ঘটনার পর রাব্বী থানায় লিখিত অভিযোগ করা ছাড়া আর কোনো আইনি ব্যবস্থা নেননি। তিনি বলেন, ‘আমার যে মাথায় সমস্যা হয়েছে, ঘুমাইতে পারছি না, সারাক্ষণ ভয় পাচ্ছি তার তো কোনো প্রমাণ নেই। তাই এর কোনো আইন নেই। ফাঁসি নাই। মাইরা ফেললে ফাঁসি ছিল।’
পুলিশের সদস্যরা রাব্বীকে ৫৪ ধারা শিখিয়েছেন। খারাপ গালি দিয়েছেন। মারধর করেছেন। রাব্বী কী চান জানতে চাইলে বলেন, ‘আমি কিছুই চাই না। সময় চাই। আবার লিখতে চাই।’
ঘটনার পর রাত আড়াইটার দিকে বাসায় ফিরে রাব্বী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অগোছালোভাবে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা স্ট্যাটাসে লিখেছেন। ওই স্ট্যাটাস পড়ে ফেসবুকে কেউ যেন সব পুলিশ সদস্যকে খারাপ না বলে সে আহ্বানও জানান রাব্বী।
রাব্বীকে ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা আদায়ের চেষ্টা করার অভিযোগে গত সোমবার মোহাম্মদপুর থানার এসআই মাসুদ শিকদারকে প্রত্যাহার করা হয়। তবে এসআই মাসুদের সঙ্গে ওই রাতে যে পুলিশ সদস্যরা ছিলেন তাঁদের ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। জানতে চাইলে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, রাব্বীর অভিযোগের ভিত্তিতে এসআই মাসুদকে প্রত্যাহার করে অভিযোগের তদন্ত করা হচ্ছে। মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী কমিশনারকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্তের জন্য কত দিন সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো সুনির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি। বলা হয়েছে দ্রুততম সময়ে তদন্ত শেষ করতে। রাব্বীর অভিযোগটি কোনো মামলা বা জিডির আকারে নেওয়া হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটি অভিযোগ হিসেবে নিয়েই তদন্ত চলছে। তাঁরা যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছেন।
পুলিশকে বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠি: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান পুলিশের মহাপরিদর্শকের কাছে চিঠি দিয়ে এ ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। গতকাল ব্যাংকের কর্মকর্তারা হাসপাতালে রাব্বীকে দেখতে যান। ব্যাংকের যোগাযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক সাঈদা খানম প্রথম আলোকে বলেন, ব্যাংকের গভর্নর রাব্বীর বিষয়ে সার্বিক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। রাব্বীর কোন ধরনের সহায়তার প্রয়োজন, তা জানার জন্য ব্যাংকের কর্মকর্তারা এসেছেন।
গতকাল বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিছানায় এভাবেই দেখা গেল বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা গোলাম রাব্বীকে। ব্যাংকের যোগাযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের এই কর্মকর্তা এখনো বিশ্বাস করতে পারছেন না, আসলেই পুলিশের হাত থেকে প্রাণ নিয়ে তিনি ফিরে আসতে পেরেছেন।
গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে রাব্বী কথা বলছিলেন খুব আস্তে আস্তে। কথা বলতে বলতে উত্তেজিত হয়ে যাচ্ছিলেন। কখনো একই কথা বলছিলেন বারবার। আবার কখনো একেবারে চুপ।
গত শনিবার রাত ১১টার দিকে গোলাম রাব্বী মোহাম্মদপুরে তাঁর খালার বাসা থেকে কল্যাণপুরে নিজের বাসায় যাচ্ছিলেন। পথে হঠাৎ পেছন থেকে এক পুলিশ সদস্য তাঁর শার্টের কলার ধরে বলেন, ‘তোর কাছে ইয়াবা আছে।’ তিনি অস্বীকার করলে, তাঁকে ধরে কিছু দূরে দাঁড়িয়ে থাকা মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদ শিকদারের কাছে নিয়ে যান ওই পুলিশ সদস্য। এসআই মাসুদও তাঁকে বলেন, তাঁর (রাব্বী) কাছে ইয়াবা আছে। তিনি আবারও অস্বীকার করলে এসআই মাসুদসহ পুলিশ সদস্যরা তাঁকে নিয়ে টানাহেঁচড়া শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁকে জোর করে পুলিশের গাড়িতে তোলা হয়।
এরপরের কথা বলতে গিয়ে একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সাবেক সংবাদ উপস্থাপক রাব্বী বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে সারাক্ষণ মনে হচ্ছে কে যেন আমাকে ধরতে আসছে। বাম পায়ে রডের বাড়ির ব্যথা আছে। মাথায়ও চিনচিন ব্যথা। ওই দিন যা হয়েছে তা ১০ বা ১৫টি বই লিখলেও কাহিনি শেষ করা যাবে না। শুধু বুঝতে পারছিলাম, “কাদের কেস”-এর মতো কিছু একটা হতে যাচ্ছে। একেকজন শরীরের একেক জায়গায় হাত দেয় আর বলতে থাকে ইয়াবা কই, মাদক কই, অস্ত্র কই? এসব বলে, আর মারে। পুলিশ ভ্যান এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ঘুরতে থাকে। মোটা অঙ্কের টাকা চায়। একজন বলে, তোরে তো সম্মান দিছি, থানায় নিই নাই। তুই যে ইয়াবা ব্যবসায়ী এইটা জানলে তো তোর বিয়ে হবে না।’
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অবৈতনিক মেডিকেল অফিসার রেজওয়ানুল ইসলাম জানান, রাব্বীর ডান হাতের কনুইতে এবং শরীরের ভেতরে (রক্ত বের হয়নি) বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন আছে। শারীরিক সমস্যার চেয়েও তাঁর মানসিক অবস্থা বেশি খারাপ। সারাক্ষণই একধরনের ভয়ের মধ্যে থাকছেন। কারও সঙ্গে সেভাবে যোগাযোগ করছেন না। রাব্বীর নাক, কান ও মানসিক অবস্থার পরীক্ষা করানো হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিস্তারিত বলা যাবে।
পাঁচ বোনের এক ভাই গোলাম রাব্বী বলেন, তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরি করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন, টেলিভিশনে কাজ করেছেন এ পরিচয়গুলো পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তোলে। পুলিশ সদস্যরা তাঁকে নিয়ে বিভিন্ন পরিকল্পনা করতে থাকেন। কেউ কেউ তাঁকে মেরে ফেলার কথা বলেন। মানিব্যাগে টাকা ছিল, তাই এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলে ফেরার পথে সন্ত্রাসীদের আক্রমণের সময় পুলিশ সন্ত্রাসীদের গুলি করলে তা রাব্বীর পায়ে লাগে বলে চালিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনাও করে। ‘ইয়াবা ব্যবসায়ী’ বলে মিথ্যা মুচলেকা দিতে চাপ দিতে থাকে। একপর্যায়ে রাব্বী যাতে ফোন করে কাউকে আসতে বলেন তা জানায়। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, গণমাধ্যম বা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাউকে ফোন দেওয়া যাবে না। রাব্বী জাহিদ নামের (নামের পাশে ডিইউ লেখা ছিল না) এক বড় ভাইকে ফোন দেন। জাহিদকে পুলিশ সদস্যরাই আসাদগেটে আসতে বলেন। তাঁরা ১০-১২ জন এসে রাব্বীকে উদ্ধার করেন। ভাগ্যক্রমে রাব্বীর মুঠোফোনটি পুলিশ সদস্যরা কেড়ে নেননি। রাব্বী এক ফাঁকে তাঁর পরিচিত কয়েকজনকে খুদে বার্তা দিয়ে শুধু লেখেন ‘কাদের কেস’।
গোলাম রাব্বী বলেন, ‘পুলিশ আমারে সার্চ করে নাই। কাউকেই করে না। ভ্যান নিয়ে ঘুরে। আমি যতক্ষণ ছিলাম দেখেছি, একেকজনকে ধরে, টাকা নেয়। যারা টাকা দিতে পারে না, তাদের থানায় নিয়ে যায়। মারধর করে।’
মাদারীপুরে বসে টেলিভিশনে একমাত্র ছেলেকে নির্যাতন করার খবরটি দেখেছেন মা রাবেয়া। বাবা আলাউদ্দিন মাস্টার শিক্ষকতা করতেন। রাব্বী কান্না জড়ানো কণ্ঠে বলেন, ‘কত বললাম, আমার বাবা শিক্ষক। খারাপ কাজ করতে শেখাননি। আমি কোনো দিন সিগারেটও খাই নাই। কিন্তু আমার কোনো কথা শুনল না।’
ঘটনার পর রাব্বী থানায় লিখিত অভিযোগ করা ছাড়া আর কোনো আইনি ব্যবস্থা নেননি। তিনি বলেন, ‘আমার যে মাথায় সমস্যা হয়েছে, ঘুমাইতে পারছি না, সারাক্ষণ ভয় পাচ্ছি তার তো কোনো প্রমাণ নেই। তাই এর কোনো আইন নেই। ফাঁসি নাই। মাইরা ফেললে ফাঁসি ছিল।’
পুলিশের সদস্যরা রাব্বীকে ৫৪ ধারা শিখিয়েছেন। খারাপ গালি দিয়েছেন। মারধর করেছেন। রাব্বী কী চান জানতে চাইলে বলেন, ‘আমি কিছুই চাই না। সময় চাই। আবার লিখতে চাই।’
ঘটনার পর রাত আড়াইটার দিকে বাসায় ফিরে রাব্বী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে অগোছালোভাবে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা স্ট্যাটাসে লিখেছেন। ওই স্ট্যাটাস পড়ে ফেসবুকে কেউ যেন সব পুলিশ সদস্যকে খারাপ না বলে সে আহ্বানও জানান রাব্বী।
রাব্বীকে ক্রসফায়ারের হুমকি দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা আদায়ের চেষ্টা করার অভিযোগে গত সোমবার মোহাম্মদপুর থানার এসআই মাসুদ শিকদারকে প্রত্যাহার করা হয়। তবে এসআই মাসুদের সঙ্গে ওই রাতে যে পুলিশ সদস্যরা ছিলেন তাঁদের ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। জানতে চাইলে পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, রাব্বীর অভিযোগের ভিত্তিতে এসআই মাসুদকে প্রত্যাহার করে অভিযোগের তদন্ত করা হচ্ছে। মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী কমিশনারকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্তের জন্য কত দিন সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো সুনির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি। বলা হয়েছে দ্রুততম সময়ে তদন্ত শেষ করতে। রাব্বীর অভিযোগটি কোনো মামলা বা জিডির আকারে নেওয়া হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটি অভিযোগ হিসেবে নিয়েই তদন্ত চলছে। তাঁরা যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছেন।
পুলিশকে বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠি: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমান পুলিশের মহাপরিদর্শকের কাছে চিঠি দিয়ে এ ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। গতকাল ব্যাংকের কর্মকর্তারা হাসপাতালে রাব্বীকে দেখতে যান। ব্যাংকের যোগাযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক সাঈদা খানম প্রথম আলোকে বলেন, ব্যাংকের গভর্নর রাব্বীর বিষয়ে সার্বিক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। রাব্বীর কোন ধরনের সহায়তার প্রয়োজন, তা জানার জন্য ব্যাংকের কর্মকর্তারা এসেছেন।
No comments