থমথমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ৬ মামলা, আসামি ৫০০০ by জাবেদ রহিম বিজন
ব্রাহ্মণবাড়িয়া
শহরজুড়ে মঙ্গলবারের তাণ্ডবের ঘটনায় মোট ৬টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় প্রায়
৫ সহস্রাধিক লোককে আসামি করা হয়েছে। তবে সব আসামিই অজ্ঞাত। ব্রাহ্মণবাড়িয়া
রেলস্টেশনে ভাঙচুরের ঘটনায় হাজার-বারো শ’ লোককে আসামি করে আখাউড়া রেল
থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। এই মামলার বাদী স্টেশন মাস্টার মহিদুর রহমান।
গতকাল দুপুরে এই মামলাটি করা হয়। এ ছাড়া মঙ্গলবার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি
প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল
থানায় আরও ৫টি মামলা হয়েছে। এসব মামলার প্রত্যেকটিতে সর্বনিম্ন ৩শ’ থেকে
সর্বোচ্চ ৮শ’ লোককে আসামি করা হয়। জেলা সদর হাসপাতাল ভাঙচুরের ঘটনায়
ডাক্তার রানা নূর শামস বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কুল
ভাঙচুরের ঘটনায় এর সুপার চমন সিকান্দর জুলকার নাইন বাদী হয়ে আরেকটি মামলা
করেন। প্রশিকা অফিসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মো. হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে একটি
মামলা দিয়েছেন। আরও দুটি মামলার বাদী মো. ফেরদৌস ও রুবেল। তবে এসব মামলার
কোনো আসামি এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার
এম মাসুদ জানান- মামলার সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। এদিকে মাদরাসা ছাত্র
মাসুদুর রহমানের মৃত্যুর ঘটনায় জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসা কর্তৃপক্ষ
হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। গত রাত ৮টায় মাদরাসার শিক্ষক
মাওলানা আবদুল হক জানান, তারা মামলা করবেন।
ওদিকে হরতাল প্রত্যাহার করে নেয়ার পর গতকাল দৃশ্যত ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছিল শান্ত। একদিকে মাদরাসা ছাত্র নিহত,মাদরাসায় ডুকে পুলিশি অভিযানে ক্ষোভ, অন্যদিকে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে হামলা, ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ চলছে। ওদিকে ছাত্রের মৃত্যু এবং মাদরাসায় ঢুকে নির্যাতন ও ভাঙচুরের ঘটনায় জামিয়া ইসলামিয়া মাদরাসা কর্তৃপক্ষ সরাসরি পুলিশ ও সরকারি দলের ছাত্র ও যুব সংগঠনের কিছু নেতৃবৃন্দকে দায় করছেন। আর আওয়ামী লীগ এ ঘটনার জন্য বিএনপি জামায়াত ও জঙ্গিদের দুষছে। তারা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ সামলে ব্যর্থতার জন্য প্রশাসনকে দায়ী করছে। ক্ষোভ দেখাচ্ছে প্রশাসনের প্রতি।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি এবং জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর মাদরাসা কর্তৃপক্ষ বুধবার সকাল-সন্ধ্যার ডাকা হরতাল প্রত্যাহার করে নেয়। এরপরই পালটে যায় চিত্র। শান্ত হয়ে পড়ে শহর। অবশ্য গতকাল দিনভরই যৌথ বাহিনীর টহল ছিল শহরে। মোড়ে মোড়ে মোতায়েন ছিল অতিরিক্ত পুলিশ। মঙ্গলবার তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত আওয়ামী লীগ অফিস, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গনসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন অফিসে মোতায়েন করা হয়েছে আমর্ড পুলিশ। জেলা প্রশাসক ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন ও ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার এম মাসুদ গতকাল ঘুরে ঘুরে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন করেন। এদিকে চট্টগ্রাম রেঞ্জের পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মাহবুবুর রহমানকে প্রধান করে গঠিত ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গতকাল থেকে কাজ শুরু করেছে। তারা সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহের সঙ্গে কথা বলেন।
এদিকে, মাদরাসা ছাত্র হাফেজ মাসুদুর রহমানের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার দিনভর তাণ্ডব চালানোর জন্য বিএনপি-জামায়াত ও জঙ্গিবাদীদের দায়ী করে জেলা আওয়ামী লীগ। বুধবার দুপুর ১২টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার এ দাবি করেন। তিনি বলেন, জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসা কর্তৃপক্ষ আমাদের পরিষ্কার করে বলেছে, হামলা-ভাঙচুরের সঙ্গে মাদরাসা ছাত্ররা জড়িত নয়। তাদের মধ্যে একটি অপশক্তি প্রবেশ করেছিল। তিনি বলেন, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করেন না এবং সাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিরোধী শক্তি তারাই সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গনে হামলা চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করেছে, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের কার্যালয় ভাঙচুর করেছে। প্রশাসনের নির্লিপ্ততায় এসব ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ এনে সাংবাদিক সম্মেলনে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। এ তাণ্ডবে অন্তত ৭০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান সরকারি দলের নেতারা। তারা বলেন প্রশাসন ইচ্ছে করলে প্রতিষ্ঠানগুলোকে হামলা থেকে রক্ষা করতে পারতো। আল মামুন সরকার সরকারের কাছে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে নিহত মাদরাসা ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন ও পুরো ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও পৌর মেয়র মো. হেলাল উদ্দিন, সহসভাপতি তাজ মোহাম্মদ ইয়াছিন প্রমুখ। এদিকে সাংবাদিক সম্মেলনে আওয়ামী লীগ নেতারা মঙ্গলবারের ঘটনার জন্য বিএনপি-জামায়াত,জঙ্গিদের দায়ী করলেও মাদরাসা কর্তৃপক্ষ সরাসরি এ ঘটনার জন্য পুলিশ ও সরকারি দলের ছাত্র ও যুব সংগঠনের কয়েকজন নেতাকর্মীকে দায়ী করেন। তারা মাদরাসায় যাওয়া পুলিশের তদন্ত কমিটির কাছে সোমবার রাতে মাদরাসার ছাত্রদের ওপর পুলিশের অ্যাকশন, সরকারি সংগঠনের কারা সে সময় পুলিশের সঙ্গে ছিল, কারা মিছিল নিয়ে এসে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে তার বিবরণ দেন। এ সময় ছাত্র ও যুব সংগঠনের কয়েকজন নেতার নাম জানিয়ে অতিরিক্ত ডিআইজির কাছে তাদের গ্রেপ্তারের আলটিমেটাম দেয়া হয়। গতকাল বড় মাদরাসা এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে সরকারি দলের নেতাকর্মী ও পুলিশকে দায়ী করে বিভিন্ন স্লোগান লেখা ব্যানার টানানো হয়েছে। এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন প্রশাসনের ব্যর্থতার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সঙ্গে কথা বলেই তিনি পদক্ষেপ নিয়েছেন। এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে গতকাল থেকে। সকাল থেকে ভাঙ্গা দরজা-জানালা মেরামতের কাজ শুরু হয়। টিকিট কাউন্টারের জন্য পাঠানো হয়েছে নতুন কম্পিউটার। মঙ্গলবারের ঘটনায় এ স্টেশনটি পুরোপুরি অকার্যকর হয়ে পড়ে। ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয় স্টেশন-প্লাটফরমের সব কয়টি কক্ষ। বিভিন্ন কক্ষের আসবাবপত্র রেললাইনের ওপর ফেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। ভেঙ্গে ফেলা হয় প্যানেল বোর্ড ও সিগনাল বোর্ড। স্টেশন মাস্টার মহিদুর রহমান জানান- মঙ্গলবার রাতেই রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত রেলস্টেশন পরিদর্শন করতে আসেন। তারা ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করার কাজ শুরু করেন। স্টেশনটির প্রায় ৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান। এরমধ্যে প্যানেল বোর্ডটিরই দাম ৫০ লাখ টাকা। সহকারী স্টেশন মাস্টার শাহ মাঈনুল হক জানান- মঙ্গলবার স্টেশনটিকে ডিক্লাস স্টেশন ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে ডিক্লাস সিস্টেমে ট্রেন চলাচল করছে। অর্থাৎ গার্ডের সিগনালে গাড়ি চলছে-থামছে। পাঘাচং ও তালশহর স্টেশন থেকে ট্রেনের সিগনাল হচ্ছে। কাউন্টারে কোনো কম্পিউটার না থাকায় স্ট্যান্ডিং টিকিট ইস্যু করা হচ্ছে যাত্রীদের। এদিকে সিগনাল অপারেটিং সিস্টেম চালু হতে কমপক্ষে ৬ মাস সময় লাগতে পারে বলে জানান রেল কর্মকর্তারা। এদিকে সিগনাল সিস্টেম অচল হয়ে পড়ায় ট্রেন প্লাটফরম সংলগ্ন লাইনে যাত্রাবিরতি করতে পারছে না। সরাসরি লাইনে যাত্রা বিরতি করছে। এতে যাত্রীদের বিশেষ করে মহিলা, শিশু ও বৃদ্ধ যাত্রীদের উঠা-নামায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। গতকাল সকালে চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতী ট্রেনে উঠতে গিয়ে এক মায়ের কোল থেকে তার শিশু মাটিতে ছিটকে পড়ে। গার্ড নির্ধারিত সময়ের আগে সিগনাল দিয়ে দেয়ায় এ ঘটনা ঘটে।
ওদিকে হরতাল প্রত্যাহার করে নেয়ার পর গতকাল দৃশ্যত ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছিল শান্ত। একদিকে মাদরাসা ছাত্র নিহত,মাদরাসায় ডুকে পুলিশি অভিযানে ক্ষোভ, অন্যদিকে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে হামলা, ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ চলছে। ওদিকে ছাত্রের মৃত্যু এবং মাদরাসায় ঢুকে নির্যাতন ও ভাঙচুরের ঘটনায় জামিয়া ইসলামিয়া মাদরাসা কর্তৃপক্ষ সরাসরি পুলিশ ও সরকারি দলের ছাত্র ও যুব সংগঠনের কিছু নেতৃবৃন্দকে দায় করছেন। আর আওয়ামী লীগ এ ঘটনার জন্য বিএনপি জামায়াত ও জঙ্গিদের দুষছে। তারা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ সামলে ব্যর্থতার জন্য প্রশাসনকে দায়ী করছে। ক্ষোভ দেখাচ্ছে প্রশাসনের প্রতি।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি এবং জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের পর মাদরাসা কর্তৃপক্ষ বুধবার সকাল-সন্ধ্যার ডাকা হরতাল প্রত্যাহার করে নেয়। এরপরই পালটে যায় চিত্র। শান্ত হয়ে পড়ে শহর। অবশ্য গতকাল দিনভরই যৌথ বাহিনীর টহল ছিল শহরে। মোড়ে মোড়ে মোতায়েন ছিল অতিরিক্ত পুলিশ। মঙ্গলবার তাণ্ডবে ক্ষতিগ্রস্ত আওয়ামী লীগ অফিস, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গনসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন অফিসে মোতায়েন করা হয়েছে আমর্ড পুলিশ। জেলা প্রশাসক ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন ও ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার এম মাসুদ গতকাল ঘুরে ঘুরে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন করেন। এদিকে চট্টগ্রাম রেঞ্জের পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মাহবুবুর রহমানকে প্রধান করে গঠিত ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গতকাল থেকে কাজ শুরু করেছে। তারা সংশ্লিষ্ট পক্ষসমূহের সঙ্গে কথা বলেন।
এদিকে, মাদরাসা ছাত্র হাফেজ মাসুদুর রহমানের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার দিনভর তাণ্ডব চালানোর জন্য বিএনপি-জামায়াত ও জঙ্গিবাদীদের দায়ী করে জেলা আওয়ামী লীগ। বুধবার দুপুর ১২টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার এ দাবি করেন। তিনি বলেন, জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসা কর্তৃপক্ষ আমাদের পরিষ্কার করে বলেছে, হামলা-ভাঙচুরের সঙ্গে মাদরাসা ছাত্ররা জড়িত নয়। তাদের মধ্যে একটি অপশক্তি প্রবেশ করেছিল। তিনি বলেন, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করেন না এবং সাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিরোধী শক্তি তারাই সুর সম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতাঙ্গনে হামলা চালিয়ে অগ্নিসংযোগ করেছে, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের কার্যালয় ভাঙচুর করেছে। প্রশাসনের নির্লিপ্ততায় এসব ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ এনে সাংবাদিক সম্মেলনে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। এ তাণ্ডবে অন্তত ৭০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান সরকারি দলের নেতারা। তারা বলেন প্রশাসন ইচ্ছে করলে প্রতিষ্ঠানগুলোকে হামলা থেকে রক্ষা করতে পারতো। আল মামুন সরকার সরকারের কাছে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে নিহত মাদরাসা ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন ও পুরো ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করেন। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও পৌর মেয়র মো. হেলাল উদ্দিন, সহসভাপতি তাজ মোহাম্মদ ইয়াছিন প্রমুখ। এদিকে সাংবাদিক সম্মেলনে আওয়ামী লীগ নেতারা মঙ্গলবারের ঘটনার জন্য বিএনপি-জামায়াত,জঙ্গিদের দায়ী করলেও মাদরাসা কর্তৃপক্ষ সরাসরি এ ঘটনার জন্য পুলিশ ও সরকারি দলের ছাত্র ও যুব সংগঠনের কয়েকজন নেতাকর্মীকে দায়ী করেন। তারা মাদরাসায় যাওয়া পুলিশের তদন্ত কমিটির কাছে সোমবার রাতে মাদরাসার ছাত্রদের ওপর পুলিশের অ্যাকশন, সরকারি সংগঠনের কারা সে সময় পুলিশের সঙ্গে ছিল, কারা মিছিল নিয়ে এসে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে তার বিবরণ দেন। এ সময় ছাত্র ও যুব সংগঠনের কয়েকজন নেতার নাম জানিয়ে অতিরিক্ত ডিআইজির কাছে তাদের গ্রেপ্তারের আলটিমেটাম দেয়া হয়। গতকাল বড় মাদরাসা এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে সরকারি দলের নেতাকর্মী ও পুলিশকে দায়ী করে বিভিন্ন স্লোগান লেখা ব্যানার টানানো হয়েছে। এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন প্রশাসনের ব্যর্থতার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সঙ্গে কথা বলেই তিনি পদক্ষেপ নিয়েছেন। এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনে মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে গতকাল থেকে। সকাল থেকে ভাঙ্গা দরজা-জানালা মেরামতের কাজ শুরু হয়। টিকিট কাউন্টারের জন্য পাঠানো হয়েছে নতুন কম্পিউটার। মঙ্গলবারের ঘটনায় এ স্টেশনটি পুরোপুরি অকার্যকর হয়ে পড়ে। ধ্বংসস্তূপে পরিণত করা হয় স্টেশন-প্লাটফরমের সব কয়টি কক্ষ। বিভিন্ন কক্ষের আসবাবপত্র রেললাইনের ওপর ফেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। ভেঙ্গে ফেলা হয় প্যানেল বোর্ড ও সিগনাল বোর্ড। স্টেশন মাস্টার মহিদুর রহমান জানান- মঙ্গলবার রাতেই রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ক্ষতিগ্রস্ত রেলস্টেশন পরিদর্শন করতে আসেন। তারা ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করার কাজ শুরু করেন। স্টেশনটির প্রায় ৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান। এরমধ্যে প্যানেল বোর্ডটিরই দাম ৫০ লাখ টাকা। সহকারী স্টেশন মাস্টার শাহ মাঈনুল হক জানান- মঙ্গলবার স্টেশনটিকে ডিক্লাস স্টেশন ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে ডিক্লাস সিস্টেমে ট্রেন চলাচল করছে। অর্থাৎ গার্ডের সিগনালে গাড়ি চলছে-থামছে। পাঘাচং ও তালশহর স্টেশন থেকে ট্রেনের সিগনাল হচ্ছে। কাউন্টারে কোনো কম্পিউটার না থাকায় স্ট্যান্ডিং টিকিট ইস্যু করা হচ্ছে যাত্রীদের। এদিকে সিগনাল অপারেটিং সিস্টেম চালু হতে কমপক্ষে ৬ মাস সময় লাগতে পারে বলে জানান রেল কর্মকর্তারা। এদিকে সিগনাল সিস্টেম অচল হয়ে পড়ায় ট্রেন প্লাটফরম সংলগ্ন লাইনে যাত্রাবিরতি করতে পারছে না। সরাসরি লাইনে যাত্রা বিরতি করছে। এতে যাত্রীদের বিশেষ করে মহিলা, শিশু ও বৃদ্ধ যাত্রীদের উঠা-নামায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। গতকাল সকালে চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতী ট্রেনে উঠতে গিয়ে এক মায়ের কোল থেকে তার শিশু মাটিতে ছিটকে পড়ে। গার্ড নির্ধারিত সময়ের আগে সিগনাল দিয়ে দেয়ায় এ ঘটনা ঘটে।
No comments