একনায়কতন্ত্র থেকে গণতন্ত্র by সাজেদুল হক
ঐতিহাসিক
কথাটি আজকাল খুব বেশি শোনা যায়। অধিক ব্যবহার হয়তো শব্দটির গুরুত্বও
খানিকটা কমিয়ে দিয়েছে। তবে এই যুদ্ধপীড়িত ঝড়-ঝঞ্ঝার দুনিয়াতেও এমন ঘটনা
ঘটে যা সত্যিকার অর্থেই ঐতিহাসিক। বাড়ির পাশের দেশ মিয়ানমারে যা ঘটে গেল
তাকে একবাক্যেই ঐতিহাসিক বলা যায়। ৮ই নভেম্বর ছিল মিয়ানমারের জনগণের জন্য
সিদ্ধান্ত গ্রহণের দিন। ইংরেজিতে যাকে বলে ডিসিশনস ডে। না, সিদ্ধান্ত নিতে
মিয়ানমারের জনগণ কোন ভুল করেননি। পৃথিবীর কোন দেশের জনগণই আসলে সুযোগ পেলে
ভুল করেন না।
মিয়ানমার নামটিই অবশ্য ফৌজি শাসকদের আবিষ্কার। পূর্বে এ দেশটির নাম ছিল বর্মা বা বার্মা। ১৩ হাজার বছর পূর্বে পিউ নামের উপজাতিরা এ অঞ্চলে বসবাস শুরু করেন। ইতিহাসের পরিক্রমায় এ দেশটি এক সময় বৃটিশ সাম্রাজের অংশে পরিণত হয়। ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর শুরুর দিকে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাই জারি ছিল বার্মায়। তবে ১৯৬২ সালে নেমে আসে অন্ধকার। দেশটির সশস্ত্রবাহিনী এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে। ১৯৮৯ সালে সামরিক জান্তারা দেশটির নতুন নাম দেয় মিয়ানমার। মিয়ানমারে ফৌজি শাসন দীর্ঘায়িত হওয়ার পেছনে প্রধানতম ভূমিকা পালন করে চীন। ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থে দেশটি সব সময়ই মিয়ানমারের সামরিক শাসকদের সমর্থন দিয়ে গেছে। তবে বিপরীত দিক থেকে গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ লড়াই করে গেছেন অং সান সু চি। দীর্ঘ ১৫ বছর গৃহবন্দিতে কাটাতে হয়েছে তাকে। ১৯৯০ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়েও ক্ষমতায় বসতে পারেননি তিনি। তবে নোবেল শান্তি পুরস্কার হয়তো তার সংগ্রামে সান্ত্বনা জুগিয়েছে।
প্রাচীন গ্রিসে জন্ম নেয়া গণতন্ত্রকে নানা সময়ে নানা দেশে নানা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। গণতন্ত্র একটি জীবন দর্শন। এ জীবন দর্শনের নানা সমালোচনাও রয়েছে। বিশেষ করে যেখানে শিক্ষার খুব বেশি অগ্রগতি হয়নি সেখানে গণতন্ত্রকে বারবারই মুখ থুবড়ে পড়তে দেখা গেছে। তবে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা সব সময়ই একমত পোষণ করেছেন, গণতন্ত্রের বহু সমালোচনা সত্ত্বেও এর থেকে ভালো কোন শাসন ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি। গণতন্ত্র অন্তত একদিনের জন্য হলেও দেশের প্রেসিডেন্ট এবং একজন সাধারণ নাগরিককে একই কাতারে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়। ভোটের দিন প্রেসিডেন্ট যেমন একটি ভোট দেয়ার সুযোগ পান, তেমনি সাধারণ একজন নাগরিকও একটি ভোট দেয়ার সুযোগ পান। গণতন্ত্র হয়তো চূড়ান্ত অর্থে মানুষে মানুষে সাম্য প্রতিষ্ঠা করতে পারে না। তবে মানুষকে সমতার কাছাকাছি নিয়ে আসতে গণতন্ত্র প্রধান ভূমিকা রেখে থাকে। আইনের শাসন ও মুক্ত গণমাধ্যম জনসাধারণকে অনেক বিপদ থেকেই রক্ষা করে। নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর অমর্ত্য সেন দেখিয়েছেন, মুক্ত গণমাধ্যম কিভাবে মানুষকে দুর্ভিক্ষসহ নানা বিপদ থেকে রক্ষা করে। আমাদের মহান মুক্তিসংগ্রামের প্রধান আকাঙ্ক্ষাও ছিল গণতন্ত্র।
বছরের পর বছর মিয়ানমারের জনগণ বঞ্চিত হয়েছে সামাজিক আর আইনি অধিকার থেকে। ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানোর দীক্ষাই পায়নি প্রজন্মের পর প্রজন্ম। রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠী নির্যাতনের শিকার হয়েছে সবচেয়ে বেশি। মিয়ানমারের কোন দলই তাদের পক্ষে শক্ত ভূমিকা রাখেনি। তারপরও অবশ্য রোহিঙ্গা মুসলিমরা নির্বাচনে অং সান সু চিকেই সমর্থন দিয়েছেন।
পাঁচ দশক খাঁচায় বন্দি থাকার পর গণতন্ত্র ফিরে এসেছে মিয়ানমারে। একদিনের বাদশারা তাদের ভোটাধিকার ফিরে পেয়েছেন। গণতন্ত্র এখন তাদের জীবনে কোন ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসে কিনা, তা-ই দেখার বিষয়।
মিয়ানমার নামটিই অবশ্য ফৌজি শাসকদের আবিষ্কার। পূর্বে এ দেশটির নাম ছিল বর্মা বা বার্মা। ১৩ হাজার বছর পূর্বে পিউ নামের উপজাতিরা এ অঞ্চলে বসবাস শুরু করেন। ইতিহাসের পরিক্রমায় এ দেশটি এক সময় বৃটিশ সাম্রাজের অংশে পরিণত হয়। ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর শুরুর দিকে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাই জারি ছিল বার্মায়। তবে ১৯৬২ সালে নেমে আসে অন্ধকার। দেশটির সশস্ত্রবাহিনী এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে। ১৯৮৯ সালে সামরিক জান্তারা দেশটির নতুন নাম দেয় মিয়ানমার। মিয়ানমারে ফৌজি শাসন দীর্ঘায়িত হওয়ার পেছনে প্রধানতম ভূমিকা পালন করে চীন। ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থে দেশটি সব সময়ই মিয়ানমারের সামরিক শাসকদের সমর্থন দিয়ে গেছে। তবে বিপরীত দিক থেকে গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ লড়াই করে গেছেন অং সান সু চি। দীর্ঘ ১৫ বছর গৃহবন্দিতে কাটাতে হয়েছে তাকে। ১৯৯০ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়েও ক্ষমতায় বসতে পারেননি তিনি। তবে নোবেল শান্তি পুরস্কার হয়তো তার সংগ্রামে সান্ত্বনা জুগিয়েছে।
প্রাচীন গ্রিসে জন্ম নেয়া গণতন্ত্রকে নানা সময়ে নানা দেশে নানা পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। গণতন্ত্র একটি জীবন দর্শন। এ জীবন দর্শনের নানা সমালোচনাও রয়েছে। বিশেষ করে যেখানে শিক্ষার খুব বেশি অগ্রগতি হয়নি সেখানে গণতন্ত্রকে বারবারই মুখ থুবড়ে পড়তে দেখা গেছে। তবে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা সব সময়ই একমত পোষণ করেছেন, গণতন্ত্রের বহু সমালোচনা সত্ত্বেও এর থেকে ভালো কোন শাসন ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি। গণতন্ত্র অন্তত একদিনের জন্য হলেও দেশের প্রেসিডেন্ট এবং একজন সাধারণ নাগরিককে একই কাতারে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়। ভোটের দিন প্রেসিডেন্ট যেমন একটি ভোট দেয়ার সুযোগ পান, তেমনি সাধারণ একজন নাগরিকও একটি ভোট দেয়ার সুযোগ পান। গণতন্ত্র হয়তো চূড়ান্ত অর্থে মানুষে মানুষে সাম্য প্রতিষ্ঠা করতে পারে না। তবে মানুষকে সমতার কাছাকাছি নিয়ে আসতে গণতন্ত্র প্রধান ভূমিকা রেখে থাকে। আইনের শাসন ও মুক্ত গণমাধ্যম জনসাধারণকে অনেক বিপদ থেকেই রক্ষা করে। নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর অমর্ত্য সেন দেখিয়েছেন, মুক্ত গণমাধ্যম কিভাবে মানুষকে দুর্ভিক্ষসহ নানা বিপদ থেকে রক্ষা করে। আমাদের মহান মুক্তিসংগ্রামের প্রধান আকাঙ্ক্ষাও ছিল গণতন্ত্র।
বছরের পর বছর মিয়ানমারের জনগণ বঞ্চিত হয়েছে সামাজিক আর আইনি অধিকার থেকে। ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধা দেখানোর দীক্ষাই পায়নি প্রজন্মের পর প্রজন্ম। রোহিঙ্গা মুসলিম জনগোষ্ঠী নির্যাতনের শিকার হয়েছে সবচেয়ে বেশি। মিয়ানমারের কোন দলই তাদের পক্ষে শক্ত ভূমিকা রাখেনি। তারপরও অবশ্য রোহিঙ্গা মুসলিমরা নির্বাচনে অং সান সু চিকেই সমর্থন দিয়েছেন।
পাঁচ দশক খাঁচায় বন্দি থাকার পর গণতন্ত্র ফিরে এসেছে মিয়ানমারে। একদিনের বাদশারা তাদের ভোটাধিকার ফিরে পেয়েছেন। গণতন্ত্র এখন তাদের জীবনে কোন ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসে কিনা, তা-ই দেখার বিষয়।
No comments