প্যারিসের পর কী? by-রিচার্ড এন হাস
বৈরুতে বোমাবর্ষণ ও মিসরের সিনাই উপদ্বীপে রুশ বিমান ভূপাতিত করার পর ইসলামিক স্টেট প্যারিসে হামলা করল, এতে বোঝা যাচ্ছে, সন্ত্রাসবাদের হুমকি এক নতুন স্তরে প্রবেশ করেছে। ইসলামিক স্টেট ঠিক মুহূর্তে কেন হামলা করল, তার কারণ আমরা শুধু অনুমান করতে পারি। হতে পারে যে তারা ইরাকে ভূমি হারানোর ক্ষতি বৈশ্বিক পরিসরে পুষিয়ে নিতে চাইছে। এখন যুক্তি যা-ই হোক না কেন, এটা নিশ্চিত যে আমাদের পরিষ্কারভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে।
আসলে ইসলামিক স্টেট যে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে, সেটা মোকাবিলায় নানা স্তরে কাজ করতে হবে। কারণ, কোনো একক নীতি যথেষ্ট মনে হচ্ছে না বলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম প্রচেষ্টা চালাতে হবে। এর একটি হচ্ছে সামরিক ব্যাপার, আকাশ থেকে ইসলামিক স্টেটের তেল, গ্যাস ও নেতাদের ওপর আরও তীব্র হামলা করাটা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কোনো বিমানবাহিনীই এককভাবে এ কাজ করতে পারবে না, যদি তাদের জমি কেড়ে নিতে হয়, তাহলে ভূমিতেও যথেষ্ট তীব্র আক্রমণ চালাতে হবে।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে ভূমিতে একদম শুরু থেকে অংশীদার বাহিনী গড়ে তোলা সম্ভব নয়। এটা করার চেষ্টা করা হলেও শেষমেশ তা ব্যর্থ হয়েছে, আর আরব রাষ্ট্রগুলো তেমন কিছু একটা করতে অনাগ্রহী। ইরাকি সেনাবাহিনীও কোনো লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি, আর ইরান-সমর্থিত রক্ষী সেনারা পরিস্থিতি আরও খারাপ করে ফেলেছে।
ফলে বিকল্প হিসেবে সবচেয়ে ভালো ব্যাপার হচ্ছে, কুর্দি সেনাদের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা এবং ইরাক ও সিরিয়ায় সুন্নি গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করা। এর মানে হচ্ছে, গোয়েন্দা ও অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করা এবং আরও সেনা পাঠানোর ইচ্ছা পোষণ করা, সামরিক সহায়তা দেওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ, পরামর্শ ও সাহায্য করা।
এমন কোনো প্রচেষ্টা নেওয়া হলে তার প্রকৃতি সামষ্টিক হতে হবে। এটা অনানুষ্ঠানিক হতে পারে, ‘ইচ্ছুকদের জোট’ জাতীয় কিছু একটা হতে পারে, যেখানে সঠিক পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, আরব রাষ্ট্র এমনকি রাশিয়াও থাকতে পারে, যে জোট ন্যাটো ও জাতিসংঘের আনুকূল্যে পরিচালিত হতে পারে। জোটে কে কে থাকল তার চেয়ে ফলাফলটাই গুরুত্বপূর্ণ। যদিও প্রতীকী যুদ্ধ ঘোষণার ব্যাপারটা সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে, পাছে ইসলামিক স্টেট না প্রতিদিনই জিততে শুরু করে।
কূটনৈতিক তৎপরতাও খুব গুরুত্বপূর্ণ, তা আমরা যা-ই করার চেষ্টা করি না কেন। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের শাসনের ফলে ইসলামিক স্টেটের সদস্য বাড়ছে, তাঁকে অবশ্যই যেতে হবে। কিন্তু পরবর্তী সরকারকে অবশ্যই আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে, ইসলামিক স্টেট যাতে ক্ষমতার শূন্যতার সুযোগ নিতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে, লিবিয়াতে তারা যেটা করেছে।
এ ছাড়া নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে রাজনৈতিক পরিবর্তন আনতে গেলে তা রুশ ও ইরানি সমর্থন ছাড়া সম্ভব হবে না। যে এক মেয়াদি বিকল্প বাজিয়ে দেখা যেতে পারে, সেটা হলো সংখ্যালঘু আলাওয়াইট সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিসহ জোট সরকার গঠন করা। আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরানোর মূল্য হিসেবে এই ছাড়টা দেওয়া যেতে পারে। সময়ের সঙ্গে ও নীতিগতভাবে একটি অধিকতর প্রতিনিধিত্বশীল জাতীয় সরকার গঠন করা যেতে পারে, যদিও ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচন করার আলোচনা যেকোনো পরিস্থিতিতেই উদ্ভট।
এই ধারায় কোনো আপসরফায় আসা একরকম অসম্ভবই বটে। সে কারণে বেসামরিক মানুষদের রক্ষা করতে আরও বড় ও নিরাপদ জায়গা বের করতে হবে, আর ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াই করা যায়। সিরিয়া কোনোভাবেই আর স্বাভাবিক দেশ নয়, আরও দীর্ঘদিন সে স্বাভাবিক হবে না, যদি কোনো দিন সে আদৌ স্বাভাবিক হয়। ফলে দৃশ্যগোচর ভবিষ্যতে আমরা হয়তো এমন এক সিরিয়াকে দেখব, যেখানে থাকবে শুধু ছিটমহল ও প্রশাসনিক উপবিভাগ।
কোনো কার্যকর কৌশলের অপরিহার্য বিষয় হচ্ছে, তুরস্ককে সাহায্য করা বা তাকে আরও চাপ দেওয়া, যাতে সে ইসলামিক স্টেটের দলভুক্তিকরণ প্রক্রিয়া বন্ধ করতে পারে। জর্ডান ও লেবাননের মতো তুরস্কের আরও আর্থিক সহায়তা দরকার, কারণ শরণার্থী সংকটের সিংহভাগই তাকে সামলাতে হচ্ছে। আরব ও মুসলিম নেতারা ইসলামিক স্টেটের লক্ষ্যকে চ্যালেঞ্জ করে নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে পারেন, তাদের কর্মকাণ্ডকে অবৈধ ঘোষণা করতে পারেন।
সব নীতিরই একটি অভ্যন্তরীণ মাত্রা রয়েছে। সব দেশকেই অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা প্রয়োগের ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান হুমকি মোকাবিলা করতে হবে, সীমান্ত ও দেশের ভেতরের নিরাপত্তা বাড়াতে হবে। যারা উন্মুক্ত সমাজে সহজ লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায়—এমন খুচরা সন্ত্রাসীদের মোকাবিলা করা খুব কঠিন কাজ। এসব হামলার বাস্তবতা ও হুমকি মোকাবিলায় আরও গুরুতর সামাজিক প্রতিরোধ লাগবে, আর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও সামগ্রিক নিরাপত্তার মধ্যে নতুন করে ভারসাম্য আনতে হবে।
আরও একটি প্রয়োজনীয়তা হচ্ছে, বাস্তবতা সম্পর্কে অধিকতর স্পষ্ট ধারণা। ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াই করাটা প্রথাগত যুদ্ধের মতো নয়। আমরা এদের শিগগিরই নিশ্চিহ্ন করতে পারব না, কারণ এরা যেমন একটি সংগঠন, তেমনি একটা নেটওয়ার্ক ও চিন্তা। একই সঙ্গে তারা কার্যত একটি রাষ্ট্র, যাদের দখলে আছে ভূমি ও সম্পদ।
হ্যাঁ, সন্ত্রাসবাদ আজকের যুগের এক কলঙ্ক, ভবিষ্যতে আরও অনেক দিন সে সভ্যতার কপালে কলঙ্ক তিলক হয়েই থাকবে। ভালো খবর হচ্ছে, ইসলামিক স্টেট মধ্যপ্রাচ্য ও সারা পৃথিবীর জন্য যে হুমকি হয়ে উঠেছে, সেটা দীর্ঘ ও সমন্বিত উদ্যোগের মধ্য দিয়ে সামাল দেওয়া সম্ভব। প্যারিস হামলার শিক্ষা হচ্ছে, আগামী দিনগুলোতে বিভিন্ন জায়গায় আমাদের একইভাবে কাজ করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
ইংরেজি থেকে অনূদিত; স্বত্ব: প্রজেক্ট সিন্ডিকেট
রিচার্ড এন হাস: যুক্তরাষ্ট্রের কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সের প্রেসিডেন্ট।
আসলে ইসলামিক স্টেট যে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে, সেটা মোকাবিলায় নানা স্তরে কাজ করতে হবে। কারণ, কোনো একক নীতি যথেষ্ট মনে হচ্ছে না বলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম প্রচেষ্টা চালাতে হবে। এর একটি হচ্ছে সামরিক ব্যাপার, আকাশ থেকে ইসলামিক স্টেটের তেল, গ্যাস ও নেতাদের ওপর আরও তীব্র হামলা করাটা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কোনো বিমানবাহিনীই এককভাবে এ কাজ করতে পারবে না, যদি তাদের জমি কেড়ে নিতে হয়, তাহলে ভূমিতেও যথেষ্ট তীব্র আক্রমণ চালাতে হবে।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে ভূমিতে একদম শুরু থেকে অংশীদার বাহিনী গড়ে তোলা সম্ভব নয়। এটা করার চেষ্টা করা হলেও শেষমেশ তা ব্যর্থ হয়েছে, আর আরব রাষ্ট্রগুলো তেমন কিছু একটা করতে অনাগ্রহী। ইরাকি সেনাবাহিনীও কোনো লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি, আর ইরান-সমর্থিত রক্ষী সেনারা পরিস্থিতি আরও খারাপ করে ফেলেছে।
ফলে বিকল্প হিসেবে সবচেয়ে ভালো ব্যাপার হচ্ছে, কুর্দি সেনাদের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করা এবং ইরাক ও সিরিয়ায় সুন্নি গোষ্ঠীকে চিহ্নিত করা। এর মানে হচ্ছে, গোয়েন্দা ও অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করা এবং আরও সেনা পাঠানোর ইচ্ছা পোষণ করা, সামরিক সহায়তা দেওয়ার জন্য প্রশিক্ষণ, পরামর্শ ও সাহায্য করা।
এমন কোনো প্রচেষ্টা নেওয়া হলে তার প্রকৃতি সামষ্টিক হতে হবে। এটা অনানুষ্ঠানিক হতে পারে, ‘ইচ্ছুকদের জোট’ জাতীয় কিছু একটা হতে পারে, যেখানে সঠিক পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, আরব রাষ্ট্র এমনকি রাশিয়াও থাকতে পারে, যে জোট ন্যাটো ও জাতিসংঘের আনুকূল্যে পরিচালিত হতে পারে। জোটে কে কে থাকল তার চেয়ে ফলাফলটাই গুরুত্বপূর্ণ। যদিও প্রতীকী যুদ্ধ ঘোষণার ব্যাপারটা সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে, পাছে ইসলামিক স্টেট না প্রতিদিনই জিততে শুরু করে।
কূটনৈতিক তৎপরতাও খুব গুরুত্বপূর্ণ, তা আমরা যা-ই করার চেষ্টা করি না কেন। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের শাসনের ফলে ইসলামিক স্টেটের সদস্য বাড়ছে, তাঁকে অবশ্যই যেতে হবে। কিন্তু পরবর্তী সরকারকে অবশ্যই আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে, ইসলামিক স্টেট যাতে ক্ষমতার শূন্যতার সুযোগ নিতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে, লিবিয়াতে তারা যেটা করেছে।
এ ছাড়া নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে রাজনৈতিক পরিবর্তন আনতে গেলে তা রুশ ও ইরানি সমর্থন ছাড়া সম্ভব হবে না। যে এক মেয়াদি বিকল্প বাজিয়ে দেখা যেতে পারে, সেটা হলো সংখ্যালঘু আলাওয়াইট সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিসহ জোট সরকার গঠন করা। আসাদকে ক্ষমতা থেকে সরানোর মূল্য হিসেবে এই ছাড়টা দেওয়া যেতে পারে। সময়ের সঙ্গে ও নীতিগতভাবে একটি অধিকতর প্রতিনিধিত্বশীল জাতীয় সরকার গঠন করা যেতে পারে, যদিও ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচন করার আলোচনা যেকোনো পরিস্থিতিতেই উদ্ভট।
এই ধারায় কোনো আপসরফায় আসা একরকম অসম্ভবই বটে। সে কারণে বেসামরিক মানুষদের রক্ষা করতে আরও বড় ও নিরাপদ জায়গা বের করতে হবে, আর ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াই করা যায়। সিরিয়া কোনোভাবেই আর স্বাভাবিক দেশ নয়, আরও দীর্ঘদিন সে স্বাভাবিক হবে না, যদি কোনো দিন সে আদৌ স্বাভাবিক হয়। ফলে দৃশ্যগোচর ভবিষ্যতে আমরা হয়তো এমন এক সিরিয়াকে দেখব, যেখানে থাকবে শুধু ছিটমহল ও প্রশাসনিক উপবিভাগ।
কোনো কার্যকর কৌশলের অপরিহার্য বিষয় হচ্ছে, তুরস্ককে সাহায্য করা বা তাকে আরও চাপ দেওয়া, যাতে সে ইসলামিক স্টেটের দলভুক্তিকরণ প্রক্রিয়া বন্ধ করতে পারে। জর্ডান ও লেবাননের মতো তুরস্কের আরও আর্থিক সহায়তা দরকার, কারণ শরণার্থী সংকটের সিংহভাগই তাকে সামলাতে হচ্ছে। আরব ও মুসলিম নেতারা ইসলামিক স্টেটের লক্ষ্যকে চ্যালেঞ্জ করে নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে পারেন, তাদের কর্মকাণ্ডকে অবৈধ ঘোষণা করতে পারেন।
সব নীতিরই একটি অভ্যন্তরীণ মাত্রা রয়েছে। সব দেশকেই অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা প্রয়োগের ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান হুমকি মোকাবিলা করতে হবে, সীমান্ত ও দেশের ভেতরের নিরাপত্তা বাড়াতে হবে। যারা উন্মুক্ত সমাজে সহজ লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায়—এমন খুচরা সন্ত্রাসীদের মোকাবিলা করা খুব কঠিন কাজ। এসব হামলার বাস্তবতা ও হুমকি মোকাবিলায় আরও গুরুতর সামাজিক প্রতিরোধ লাগবে, আর ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও সামগ্রিক নিরাপত্তার মধ্যে নতুন করে ভারসাম্য আনতে হবে।
আরও একটি প্রয়োজনীয়তা হচ্ছে, বাস্তবতা সম্পর্কে অধিকতর স্পষ্ট ধারণা। ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াই করাটা প্রথাগত যুদ্ধের মতো নয়। আমরা এদের শিগগিরই নিশ্চিহ্ন করতে পারব না, কারণ এরা যেমন একটি সংগঠন, তেমনি একটা নেটওয়ার্ক ও চিন্তা। একই সঙ্গে তারা কার্যত একটি রাষ্ট্র, যাদের দখলে আছে ভূমি ও সম্পদ।
হ্যাঁ, সন্ত্রাসবাদ আজকের যুগের এক কলঙ্ক, ভবিষ্যতে আরও অনেক দিন সে সভ্যতার কপালে কলঙ্ক তিলক হয়েই থাকবে। ভালো খবর হচ্ছে, ইসলামিক স্টেট মধ্যপ্রাচ্য ও সারা পৃথিবীর জন্য যে হুমকি হয়ে উঠেছে, সেটা দীর্ঘ ও সমন্বিত উদ্যোগের মধ্য দিয়ে সামাল দেওয়া সম্ভব। প্যারিস হামলার শিক্ষা হচ্ছে, আগামী দিনগুলোতে বিভিন্ন জায়গায় আমাদের একইভাবে কাজ করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
ইংরেজি থেকে অনূদিত; স্বত্ব: প্রজেক্ট সিন্ডিকেট
রিচার্ড এন হাস: যুক্তরাষ্ট্রের কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশন্সের প্রেসিডেন্ট।
No comments