মসলার বাজার দখলের লড়াইয়ে ২২ দেশ by মাসুদ মিলাদ
খাবার
সুস্বাদু করতে মসলার জুড়ি নেই। আর ভোগ্যপণ্যের মধ্যে এই মসলায় বৈচিত্র্য
সবচেয়ে বেশি। প্রতিদিন রান্নায় ব্যবহৃত হচ্ছে নানা জাতের নানা দেশের
মসলা। এই মসলার বাজার দখলে প্রতিযোগিতা করছে ২২টি দেশ।
বন্দর ও কাস্টমসের হিসাবে, গত বছর চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দেশে যত মসলা আমদানি হয়েছে, তা এসেছে বিশ্বের ২২টি দেশ থেকে। পাশের দেশ ভারত থেকে শুরু করে হাজার মাইল দূরের দেশ থেকেও ব্যবসায়ীরা মসলা এনে তুলে দিচ্ছেন ভোক্তার হাতে। এই ২২ দেশ থেকে গত অর্থবছরে ১ লাখ ২৬ হাজার টন মসলা আমদানি হয়। বাজারমূল্য ১ হাজার ১৮১ কোটি টাকা। সরকার রাজস্ব পায় ২৬৫ কোটি টাকা। বন্দর ছাড়াও স্থলপথে ভারত থেকে মসলা আমদানি হয়।
একসময় মসলার লোভে ভারত ও পূর্ব ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জে উপনিবেশ স্থাপন করেছিল ইউরোপীয় শক্তি। নানা দুর্লভ মসলার খোঁজে যুদ্ধও বেধেছিল। মসলার যুদ্ধ নিয়ে আস্ত একটি বইও লিখেছেন সাংবাদিক-সাহিত্যিক সত্যেন সেন। তবে এখন আর মসলার জন্য যুদ্ধ না হলেও মসলা রপ্তানিকারক দেশগুলো নানা দেশের বাজার দখলে ঠিকই লড়ছেন।
প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে একসময় মসলা আমদানি হলেও এখন হচ্ছে কম। ভারতের মসলা বোর্ডের হিসাবে, ২০১০-১১ অর্থবছরে ৫৩ হাজার ৫৮৪ টন মসলা রপ্তানি হয় বাংলাদেশে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে এসে তা দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৯৬৯ টনে। এখন বিশ্বের নানা দেশ থেকে সাশ্রয়ী দামে মসলা নিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে মসলার বাজারে বৈচিত্র্য বাড়ছে।
বন্দর দিয়ে আমদানি হওয়া গোলমরিচ, দারুচিনি, লবঙ্গ, এলাচি, জিরা, আদা, হলুদ, রসুন ও গুঁড়া মসলা—এই নয় ধরনের মসলার বাজার দখলে শীর্ষে আছে চীন। গত বছর এই দেশ থেকে আমদানি হয় ৮৫ হাজার ৮৯৪ টন মসলা। এরপর বাজার দখল করে আছে মসলার দেশ ইন্দোনেশিয়া। ভারতের অবস্থান ৩ নম্বরে।
দেশে সব মসলা উৎপাদিত হয় না। এলাচি, দারুচিনি, লবঙ্গ ও জিরা আমদানি করেই মেটানো হয়। আবার আদা, রসুন ও হলুদ দেশে উৎপাদন হলেও চাহিদার তুলনায় কম।
মসলা আমদানিকারক সমিতির সহসভাপতি ও এ বি ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী অমর কান্তি দাশ গত বুধবার খাতুনগঞ্জে নিজ কার্যালয়ে বলেন, ‘দেশে সাধারণত পঞ্চম থেকে সপ্তম গ্রেডের মসলা বেশি আমদানি হয়। দাম বেশি হলে বাজারে চলে কম। মসলা আনার সময় দাম ও মোটামুটি মান—এ দুটি বিষয় বিবেচনা করা হয়।’
এলাচি: ব্যবসায়ীরা জানান, বিশ্বে ১৭ জাতের এলাচি রয়েছে। দেশে আমদানি হয় অন্তত ১৩ জাতের। বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি বা ৯৯ শতাংশই এলাচি আমদানি হয় গুয়াতেমালা থেকে। বাকি এক শতাংশ ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিঙ্গাপুর ও ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি হয়। অর্থবছর আমদানি হয় ১৬৭ কোটি টাকার ২ হাজার ৬৯৭ টন এলাচি।
জিরা: ভারত থেকে অবৈধপথে জিরা আসছে—ব্যবসায়ীদের এমন অভিযোগ আছে। তবে বৈধপথেও সবচেয়ে বেশি জিরা আসছে ভারত থেকে। বন্দরের হিসাবে, জিরার বাজারের ৬১ শতাংশ ভারতের দখলে। তুরস্কের দখলে ৩২ শতাংশ। মিসর, পাকিস্তান ও কম্বোডিয়া থেকেও আমদানি হয়। গত অর্থবছর ১১৪ কোটি টাকার ৭ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকার জিরা আমদানি হয়।
দারুচিনি: দারুচিনির বাজারে চীন ও ভিয়েতনামের আধিপত্য। মোট আমদানির ৫৬ শতাংশই আসে চীন থেকে। ভিয়েতনাম থেকে আসে প্রায় ৪৩ শতাংশ। গত বছর প্রায় ৮৮ কোটি টাকার ১১ হাজার ৬২ টন দারুচিনি আমদানি হয়েছিল।
লবঙ্গ: লবঙ্গ আমদানির পরিমাণ খুবই কম। বছরে আমদানি মাত্র ৩১০ টন। পরিমাণে অল্প হলেও লবঙ্গের বাজার ছয় দেশের দখলে। আমদানির ৩৯ শতাংশই আসে ব্রাজিল থেকে। এরপরই আছে মাদাগাস্কার, ২৩ শতাংশ। শ্রীলঙ্কা, কমোরোজ দ্বীপ, ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার লবঙ্গও ঢুকছে দেশের বাজারে।
রসুন: দেশীয় রসুনের কোয়া ছোট। গুণগত মানও ভালো। তবু গৃহিণীদের পছন্দ আমদানি করা রসুনের দিকে। কারণ, এসব রসুনের কোয়া বড়। আমদানি করা রসুনের বাজারে ৯৯ শতাংশ চীনের দখলে। বাকিটা ভারত, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়া থেকে।
আদা: দেশীয় আদার বাইরে বাজারে শুধু চীনা আদার কথাই বলেন ব্যবসায়ীরা। তবে আমদানির তথ্য বলে ভিন্ন কথা। আমদানি করা আদার ৬৫ শতাংশই আসে ইন্দোনেশিয়া থেকে। চীন থেকে আসে ৩২ শতাংশ। মাত্র ৩ শতাংশ আসে মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, মাদাগাস্কার থেকে।
হলুদ: ভারত, মিয়ানমার ও ইথিওপিয়া থেকে হলুদ আমদানি হয়। গত অর্থবছর প্রায় দুই হাজার টন হলুদ আমদানি হয়।
গোলমরিচ: গোলমরিচের চাহিদা মেটানো হয় মূলত ভিয়েতনাম থেকে। মোট আমদানির ৬১ শতাংশ আসে এই দেশ থেকে। এ ছাড়া ভারত, মাদাগাস্কার, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড থেকে আমদানি হয়। গত বছর আমদানি হয় ৬৯৮ টন।
অন্যান্য মসলা: রসুনের গুঁড়া ও গুঁড়া মসলা আমদানি হয় নয়টি দেশ থেকে। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ভারত ও পাকিস্তান থেকে আমদানি হয় প্রায় ৯৪ শতাংশ। এর বাইরে চীন, নেদারল্যান্ডস, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের দ্বীপ ‘সেন্ট বার্থেলেমি’ থেকেও আমদানি হচ্ছে।
বন্দর ও কাস্টমসের হিসাবে, গত বছর চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে দেশে যত মসলা আমদানি হয়েছে, তা এসেছে বিশ্বের ২২টি দেশ থেকে। পাশের দেশ ভারত থেকে শুরু করে হাজার মাইল দূরের দেশ থেকেও ব্যবসায়ীরা মসলা এনে তুলে দিচ্ছেন ভোক্তার হাতে। এই ২২ দেশ থেকে গত অর্থবছরে ১ লাখ ২৬ হাজার টন মসলা আমদানি হয়। বাজারমূল্য ১ হাজার ১৮১ কোটি টাকা। সরকার রাজস্ব পায় ২৬৫ কোটি টাকা। বন্দর ছাড়াও স্থলপথে ভারত থেকে মসলা আমদানি হয়।
একসময় মসলার লোভে ভারত ও পূর্ব ভারতীয় দ্বীপপুঞ্জে উপনিবেশ স্থাপন করেছিল ইউরোপীয় শক্তি। নানা দুর্লভ মসলার খোঁজে যুদ্ধও বেধেছিল। মসলার যুদ্ধ নিয়ে আস্ত একটি বইও লিখেছেন সাংবাদিক-সাহিত্যিক সত্যেন সেন। তবে এখন আর মসলার জন্য যুদ্ধ না হলেও মসলা রপ্তানিকারক দেশগুলো নানা দেশের বাজার দখলে ঠিকই লড়ছেন।
প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে একসময় মসলা আমদানি হলেও এখন হচ্ছে কম। ভারতের মসলা বোর্ডের হিসাবে, ২০১০-১১ অর্থবছরে ৫৩ হাজার ৫৮৪ টন মসলা রপ্তানি হয় বাংলাদেশে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে এসে তা দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৯৬৯ টনে। এখন বিশ্বের নানা দেশ থেকে সাশ্রয়ী দামে মসলা নিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে মসলার বাজারে বৈচিত্র্য বাড়ছে।
বন্দর দিয়ে আমদানি হওয়া গোলমরিচ, দারুচিনি, লবঙ্গ, এলাচি, জিরা, আদা, হলুদ, রসুন ও গুঁড়া মসলা—এই নয় ধরনের মসলার বাজার দখলে শীর্ষে আছে চীন। গত বছর এই দেশ থেকে আমদানি হয় ৮৫ হাজার ৮৯৪ টন মসলা। এরপর বাজার দখল করে আছে মসলার দেশ ইন্দোনেশিয়া। ভারতের অবস্থান ৩ নম্বরে।
দেশে সব মসলা উৎপাদিত হয় না। এলাচি, দারুচিনি, লবঙ্গ ও জিরা আমদানি করেই মেটানো হয়। আবার আদা, রসুন ও হলুদ দেশে উৎপাদন হলেও চাহিদার তুলনায় কম।
মসলা আমদানিকারক সমিতির সহসভাপতি ও এ বি ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী অমর কান্তি দাশ গত বুধবার খাতুনগঞ্জে নিজ কার্যালয়ে বলেন, ‘দেশে সাধারণত পঞ্চম থেকে সপ্তম গ্রেডের মসলা বেশি আমদানি হয়। দাম বেশি হলে বাজারে চলে কম। মসলা আনার সময় দাম ও মোটামুটি মান—এ দুটি বিষয় বিবেচনা করা হয়।’
এলাচি: ব্যবসায়ীরা জানান, বিশ্বে ১৭ জাতের এলাচি রয়েছে। দেশে আমদানি হয় অন্তত ১৩ জাতের। বন্দর দিয়ে সবচেয়ে বেশি বা ৯৯ শতাংশই এলাচি আমদানি হয় গুয়াতেমালা থেকে। বাকি এক শতাংশ ভারত, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিঙ্গাপুর ও ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি হয়। অর্থবছর আমদানি হয় ১৬৭ কোটি টাকার ২ হাজার ৬৯৭ টন এলাচি।
জিরা: ভারত থেকে অবৈধপথে জিরা আসছে—ব্যবসায়ীদের এমন অভিযোগ আছে। তবে বৈধপথেও সবচেয়ে বেশি জিরা আসছে ভারত থেকে। বন্দরের হিসাবে, জিরার বাজারের ৬১ শতাংশ ভারতের দখলে। তুরস্কের দখলে ৩২ শতাংশ। মিসর, পাকিস্তান ও কম্বোডিয়া থেকেও আমদানি হয়। গত অর্থবছর ১১৪ কোটি টাকার ৭ হাজার ৫৫৩ কোটি টাকার জিরা আমদানি হয়।
দারুচিনি: দারুচিনির বাজারে চীন ও ভিয়েতনামের আধিপত্য। মোট আমদানির ৫৬ শতাংশই আসে চীন থেকে। ভিয়েতনাম থেকে আসে প্রায় ৪৩ শতাংশ। গত বছর প্রায় ৮৮ কোটি টাকার ১১ হাজার ৬২ টন দারুচিনি আমদানি হয়েছিল।
লবঙ্গ: লবঙ্গ আমদানির পরিমাণ খুবই কম। বছরে আমদানি মাত্র ৩১০ টন। পরিমাণে অল্প হলেও লবঙ্গের বাজার ছয় দেশের দখলে। আমদানির ৩৯ শতাংশই আসে ব্রাজিল থেকে। এরপরই আছে মাদাগাস্কার, ২৩ শতাংশ। শ্রীলঙ্কা, কমোরোজ দ্বীপ, ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার লবঙ্গও ঢুকছে দেশের বাজারে।
রসুন: দেশীয় রসুনের কোয়া ছোট। গুণগত মানও ভালো। তবু গৃহিণীদের পছন্দ আমদানি করা রসুনের দিকে। কারণ, এসব রসুনের কোয়া বড়। আমদানি করা রসুনের বাজারে ৯৯ শতাংশ চীনের দখলে। বাকিটা ভারত, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়া থেকে।
আদা: দেশীয় আদার বাইরে বাজারে শুধু চীনা আদার কথাই বলেন ব্যবসায়ীরা। তবে আমদানির তথ্য বলে ভিন্ন কথা। আমদানি করা আদার ৬৫ শতাংশই আসে ইন্দোনেশিয়া থেকে। চীন থেকে আসে ৩২ শতাংশ। মাত্র ৩ শতাংশ আসে মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, মাদাগাস্কার থেকে।
হলুদ: ভারত, মিয়ানমার ও ইথিওপিয়া থেকে হলুদ আমদানি হয়। গত অর্থবছর প্রায় দুই হাজার টন হলুদ আমদানি হয়।
গোলমরিচ: গোলমরিচের চাহিদা মেটানো হয় মূলত ভিয়েতনাম থেকে। মোট আমদানির ৬১ শতাংশ আসে এই দেশ থেকে। এ ছাড়া ভারত, মাদাগাস্কার, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড থেকে আমদানি হয়। গত বছর আমদানি হয় ৬৯৮ টন।
অন্যান্য মসলা: রসুনের গুঁড়া ও গুঁড়া মসলা আমদানি হয় নয়টি দেশ থেকে। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ভারত ও পাকিস্তান থেকে আমদানি হয় প্রায় ৯৪ শতাংশ। এর বাইরে চীন, নেদারল্যান্ডস, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের দ্বীপ ‘সেন্ট বার্থেলেমি’ থেকেও আমদানি হচ্ছে।
No comments