যেখানে রাজনীতিবিদেরা এক by সাজেদুল হক
ক্রমশ
ছোট হয়ে আসছে দুনিয়া। টেলিভিশন সারা পৃথিবীকে পরিণত করেছে এক বিশ্বগ্রামে।
তাহলে ফেসবুকের মতো সোশ্যাল মিডিয়া কী দুনিয়াকে একটি বাড়িতে পরিণত করেনি?
কয়েকদিন আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফর আলোচনার ঝড় তোলে। তিনি যে বাঙালি আবেগে হাওয়া দিতে পুরোমাত্রায় সক্ষম হন, তার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে সোশ্যাল মিডিয়া। ফেসবুক, টুইটার দুই মিডিয়াতেই সরব হালআমলে দুনিয়া কাঁপানো এ নেতা। ঢাকায় আসার আগে আগেই টুইটার আর ফেসবুকে এ সফর নিয়ে মন্তব্য করা শুরু করেন তিনি। বাংলাদেশের পথে রওনা দেয়ার আগেই টুইটে তিনি লেখেন, বাংলাদেশে রওনা দিচ্ছি। এ সফর আমাদের দুই দেশের বন্ধন আরও শক্তিশালী করবে, যার ফলে উপকৃত হবেন আমাদের দুই দেশের মানুষ তথা এ অঞ্চলের মানুষ। এ টুইটের ঘণ্টা তিনেক পর মোদি বাংলায় টুইট করেন, বাংলাদেশ, আমি আমার সঙ্গে ভারতের মানুষের ভালবাসা এবং শুভেচ্ছা নিয়ে আসছি। আর ৩৬ ঘণ্টা ঢাকা সফর শেষে মোদির টুইট বার্তাটি ছিল এমন- ‘ধন্যবাদ বাংলাদেশ। এই সফর আমার স্মৃতিতে ভাস্বর হয়ে থাকবে। এই সফর ভারত-বাংলাদেশ অংশীদারিত্ব সুদৃঢ় করবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, আমরা অতীতের অমীমাংসিত বিষয় সাফল্যের সঙ্গে কাটিয়ে উঠেছি। এটি আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত সৃষ্টি করবে।’ মন্তব্যের পাশাপাশি টুইটার আর ফেসবুকে সফরের বিভিন্ন ছবিও শেয়ার করেন নরেন্দ্র মোদি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা থেকে ডেভিড ক্যামেরন প্রায় সবাই সরব রয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাদের প্রতিদিনের কর্মকা-ের চিত্র ফুটে উঠছে সেখানে।
সারা দুনিয়ায় এই যখন অবস্থা তখন কেমন চলছে ডিজিটাল বাংলাদেশ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কতটা সক্রিয় আমাদের রাজনীতিবিদেরা। এমনিতে টুইটার এখনও বাংলাদেশে খুব বেশি জনপ্রিয়তা পায়নি। তবে ফেসবুক এদেশে বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
দুনিয়ার অন্যান্য দেশের রাজনীতিবিদেরা যেখানে প্রতিনিয়ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান করছেন সেখানে বাংলাদেশের নেতারা নিজেদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে দূরে রেখেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই। তেমনিভাবে সংসদের বিরোধীদলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমেদ কারোরই কোন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই। প্রধানমন্ত্রীর নামে ফেসবুকে একাধিক অ্যাকাউন্ট থাকলেও এর কোনটিই তার নয়। এসব অ্যাকাউন্ট থেকে অনেক সময়ই বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালানো হয়। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার নামেও ফেসবুকে একাধিক অ্যাকাউন্ট আছে। যদিও এর কোনটিই তার নয়। এসব অ্যাকাউন্ট থেকেও অনেক সময় নানা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন স্ট্যাটাস দেয়া হয়। রওশন এরশাদের নামে অবশ্য ফেসবুকে তেমন কোন অ্যাকাউন্ট চোখে পড়েনি। তাকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় হইচইও নেই। তবে রওশন এরশাদের স্বামী সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা রয়েছে বিপুল। তার দেয়া বিভিন্ন বক্তব্য নিয়ে ফেসবুকে তৈরি হয়েছে নানা কোলাজ কার্টুন। যদিও অন্য শীর্ষ রাজনীতিবিদদের মতো তিনি নিজে ফেসবুকে অনুপস্থিত।
রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকা অন্য বেশিরভাগ রাজনীতিবিদেরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোন তৎপরতা নেই। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ফেসবুকে কোন অ্যাকাউন্ট নেই। যদিও মাঝে মাঝে তার বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত হয়। বর্তমানে কারাবন্দি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরেরও কোন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই। যদিও তার বিভিন্ন কোলাজ ছবি ছড়িয়ে রয়েছে ফেসবুকে। জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন বাবলুরও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোন তৎপরতা দেখা যায় না।
প্রচলিত ধারার রাজনীতিবিদদের মতো ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের নেতারাও সোশ্যাল মিডিয়ায় অনুপস্থিত। জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমেদ, দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানসহ কোন শীর্ষ নেতাই ফেসবুকে সক্রিয় নেই। আলোচিত সংগঠন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা আহমদ শফি, মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী কারোরই কোন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই। যদিও নারী ও তেঁতুল প্রসঙ্গে আহমদ শফির দেয়া একটি বক্তব্য এখনও সোশ্যাল মিডিয়ায় বিপুল আলোচিত। ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের মতো বামপন্থি শীর্ষ রাজনীতিবিদেরাও ফেসবুকে অনুপস্থিত।
শীর্ষ পর্যায়ের রাজনীতিবিদদের মধ্যে সবচেয়ে বড় ব্যতিক্রম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরই মধ্যে বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তিনি। রাজনীতি সামাজিক নানা ইস্যুতে নিজের মতামত প্রকাশ করছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। সাধারণত একই সঙ্গে বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষাতেই স্ট্যাটাস দেন তিনি। তার সর্বশেষ স্ট্যাটাসটি বাংলাদেশের অর্থনীতির অগ্রগতি সংক্রান্ত। এর আগের স্ট্যাটাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকে ঐতিহাসিক হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। ওই স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছিলেন, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এই সফর সফল এবং ঐতিহাসিক। বাণিজ্য এবং সহযোগিতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই সফর দুই দেশের সম্পর্ককে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে, যা পুরো উপমহাদেশকে উপকৃত করবে। তিনি কথায় এবং কাজে সর্বোচ্চভাবে আন্তরিক। সবচেয়ে মজার বিষয় এটাই যে, বিএনপি এখন চরমভাবে তাদের ভারতবিরোধী অবস্থানকে অস্বীকার করছে। তারা জনগণকে বোকা ভাবে। আপনাদেরকে শুধু খালেদা জিয়ার ভারতবিরোধী বক্তব্যগুলো খুঁজতে হবে। খালেদা জিয়া এমনকি ভারতীয় প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জির বাংলাদেশ সফরকালে তাকে উপেক্ষা করেছেন এবং তার সঙ্গে একটি পূর্বনির্ধারিত সাক্ষাৎ বাতিল করেছেন। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে খালেদা জিয়ার কোন সাক্ষাৎ নির্ধারিত ছিল না। বিএনপি মরিয়া হয়ে এ সাক্ষাতের জন্য তদবির করেছিল।
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান দীর্ঘদিন ধরেই বৃটেনে অবস্থান করছেন। হাইকোর্টের আদেশের কারণে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে তার খবর প্রচার বন্ধ রয়েছে। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তারেক রহমানের কোন অ্যাকাউন্ট নেই। যদিও তার নামে অসংখ্য অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এসব অ্যাকাউন্ট থেকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারেক রহমানের বক্তব্য-বিবৃতি প্রচার করা হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে নানা প্রচারণাও চালানো হয়। তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের নামেও ফেসবুকে একাধিক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এসব অ্যাকাউন্ট থেকে দেয়া স্ট্যাটাসের ভিত্তিতে কখনও কখনও সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে। তবে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, এর কোনটিই তার নয়।
শীর্ষ পর্যায়ের রাজনীতিবিদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবচেয়ে সক্রিয় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি তার দৈনন্দিন বিভিন্ন কার্যক্রম ফেসবুকের মাধ্যমে জনগণকে অবগত করেন। কখনও ছবির মাধ্যমে কখনও স্ট্যাটাসের মাধ্যমে তুলে ধরেন নিজের অবস্থান। নানাক্ষেত্রে তার আন্তরিক প্রচেষ্টা প্রশংসিত হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। যদিও কখনও কখনও তাকে নিয়ে সমালোচনাও হয়। বর্তমানে কারাবন্দি ডাকসুর সাবেক ভিপি ও নাগরিক আন্দোলনের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাও ফেসবুকে বেশ সক্রিয় ছিলেন। নানা ইস্যুতে তিনি তার মতামত প্রকাশ করতেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এমনকি গ্রেপ্তারের আগেও তিনি তার অবস্থান ফেসবুকে পরিষ্কার করে যান। সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনিও ফেসবুকে খুবই সক্রিয়। এখন দেশের বিভিন্ন পত্রিকায় কলাম লিখছেন তিনি। এসব কলাম দ্রুতই স্ট্যাটাস আকারে দিয়ে দেয়া হয় তার ফেসবুক পেইজ এবং অ্যাকাউন্টে। রাজনীতি, ইতিহাস, সমকালীন নানা প্রসঙ্গে নিজের মতামত প্রকাশ করেন তিনি। এসব মতামত কখনও প্রশংসিত হয়, কখনও হয় আলোচিত। বিজেপি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় রয়েছেন।
কয়েকদিন আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফর আলোচনার ঝড় তোলে। তিনি যে বাঙালি আবেগে হাওয়া দিতে পুরোমাত্রায় সক্ষম হন, তার পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে সোশ্যাল মিডিয়া। ফেসবুক, টুইটার দুই মিডিয়াতেই সরব হালআমলে দুনিয়া কাঁপানো এ নেতা। ঢাকায় আসার আগে আগেই টুইটার আর ফেসবুকে এ সফর নিয়ে মন্তব্য করা শুরু করেন তিনি। বাংলাদেশের পথে রওনা দেয়ার আগেই টুইটে তিনি লেখেন, বাংলাদেশে রওনা দিচ্ছি। এ সফর আমাদের দুই দেশের বন্ধন আরও শক্তিশালী করবে, যার ফলে উপকৃত হবেন আমাদের দুই দেশের মানুষ তথা এ অঞ্চলের মানুষ। এ টুইটের ঘণ্টা তিনেক পর মোদি বাংলায় টুইট করেন, বাংলাদেশ, আমি আমার সঙ্গে ভারতের মানুষের ভালবাসা এবং শুভেচ্ছা নিয়ে আসছি। আর ৩৬ ঘণ্টা ঢাকা সফর শেষে মোদির টুইট বার্তাটি ছিল এমন- ‘ধন্যবাদ বাংলাদেশ। এই সফর আমার স্মৃতিতে ভাস্বর হয়ে থাকবে। এই সফর ভারত-বাংলাদেশ অংশীদারিত্ব সুদৃঢ় করবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, আমরা অতীতের অমীমাংসিত বিষয় সাফল্যের সঙ্গে কাটিয়ে উঠেছি। এটি আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত সৃষ্টি করবে।’ মন্তব্যের পাশাপাশি টুইটার আর ফেসবুকে সফরের বিভিন্ন ছবিও শেয়ার করেন নরেন্দ্র মোদি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা থেকে ডেভিড ক্যামেরন প্রায় সবাই সরব রয়েছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাদের প্রতিদিনের কর্মকা-ের চিত্র ফুটে উঠছে সেখানে।
সারা দুনিয়ায় এই যখন অবস্থা তখন কেমন চলছে ডিজিটাল বাংলাদেশ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কতটা সক্রিয় আমাদের রাজনীতিবিদেরা। এমনিতে টুইটার এখনও বাংলাদেশে খুব বেশি জনপ্রিয়তা পায়নি। তবে ফেসবুক এদেশে বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
দুনিয়ার অন্যান্য দেশের রাজনীতিবিদেরা যেখানে প্রতিনিয়ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান করছেন সেখানে বাংলাদেশের নেতারা নিজেদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে দূরে রেখেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই। তেমনিভাবে সংসদের বিরোধীদলীয় নেত্রী রওশন এরশাদ, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমেদ কারোরই কোন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই। প্রধানমন্ত্রীর নামে ফেসবুকে একাধিক অ্যাকাউন্ট থাকলেও এর কোনটিই তার নয়। এসব অ্যাকাউন্ট থেকে অনেক সময়ই বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালানো হয়। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার নামেও ফেসবুকে একাধিক অ্যাকাউন্ট আছে। যদিও এর কোনটিই তার নয়। এসব অ্যাকাউন্ট থেকেও অনেক সময় নানা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন স্ট্যাটাস দেয়া হয়। রওশন এরশাদের নামে অবশ্য ফেসবুকে তেমন কোন অ্যাকাউন্ট চোখে পড়েনি। তাকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় হইচইও নেই। তবে রওশন এরশাদের স্বামী সাবেক প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা রয়েছে বিপুল। তার দেয়া বিভিন্ন বক্তব্য নিয়ে ফেসবুকে তৈরি হয়েছে নানা কোলাজ কার্টুন। যদিও অন্য শীর্ষ রাজনীতিবিদদের মতো তিনি নিজে ফেসবুকে অনুপস্থিত।
রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকা অন্য বেশিরভাগ রাজনীতিবিদেরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোন তৎপরতা নেই। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ফেসবুকে কোন অ্যাকাউন্ট নেই। যদিও মাঝে মাঝে তার বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত হয়। বর্তমানে কারাবন্দি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরেরও কোন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই। যদিও তার বিভিন্ন কোলাজ ছবি ছড়িয়ে রয়েছে ফেসবুকে। জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন বাবলুরও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোন তৎপরতা দেখা যায় না।
প্রচলিত ধারার রাজনীতিবিদদের মতো ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের নেতারাও সোশ্যাল মিডিয়ায় অনুপস্থিত। জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমেদ, দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানসহ কোন শীর্ষ নেতাই ফেসবুকে সক্রিয় নেই। আলোচিত সংগঠন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা আহমদ শফি, মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী কারোরই কোন ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই। যদিও নারী ও তেঁতুল প্রসঙ্গে আহমদ শফির দেয়া একটি বক্তব্য এখনও সোশ্যাল মিডিয়ায় বিপুল আলোচিত। ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের মতো বামপন্থি শীর্ষ রাজনীতিবিদেরাও ফেসবুকে অনুপস্থিত।
শীর্ষ পর্যায়ের রাজনীতিবিদদের মধ্যে সবচেয়ে বড় ব্যতিক্রম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরই মধ্যে বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছেন তিনি। রাজনীতি সামাজিক নানা ইস্যুতে নিজের মতামত প্রকাশ করছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। সাধারণত একই সঙ্গে বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষাতেই স্ট্যাটাস দেন তিনি। তার সর্বশেষ স্ট্যাটাসটি বাংলাদেশের অর্থনীতির অগ্রগতি সংক্রান্ত। এর আগের স্ট্যাটাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরকে ঐতিহাসিক হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি। ওই স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছিলেন, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এই সফর সফল এবং ঐতিহাসিক। বাণিজ্য এবং সহযোগিতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই সফর দুই দেশের সম্পর্ককে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে, যা পুরো উপমহাদেশকে উপকৃত করবে। তিনি কথায় এবং কাজে সর্বোচ্চভাবে আন্তরিক। সবচেয়ে মজার বিষয় এটাই যে, বিএনপি এখন চরমভাবে তাদের ভারতবিরোধী অবস্থানকে অস্বীকার করছে। তারা জনগণকে বোকা ভাবে। আপনাদেরকে শুধু খালেদা জিয়ার ভারতবিরোধী বক্তব্যগুলো খুঁজতে হবে। খালেদা জিয়া এমনকি ভারতীয় প্রেসিডেন্ট প্রণব মুখার্জির বাংলাদেশ সফরকালে তাকে উপেক্ষা করেছেন এবং তার সঙ্গে একটি পূর্বনির্ধারিত সাক্ষাৎ বাতিল করেছেন। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে খালেদা জিয়ার কোন সাক্ষাৎ নির্ধারিত ছিল না। বিএনপি মরিয়া হয়ে এ সাক্ষাতের জন্য তদবির করেছিল।
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান দীর্ঘদিন ধরেই বৃটেনে অবস্থান করছেন। হাইকোর্টের আদেশের কারণে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে তার খবর প্রচার বন্ধ রয়েছে। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তারেক রহমানের কোন অ্যাকাউন্ট নেই। যদিও তার নামে অসংখ্য অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এসব অ্যাকাউন্ট থেকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারেক রহমানের বক্তব্য-বিবৃতি প্রচার করা হয়। কোন কোন ক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে নানা প্রচারণাও চালানো হয়। তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানের নামেও ফেসবুকে একাধিক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। এসব অ্যাকাউন্ট থেকে দেয়া স্ট্যাটাসের ভিত্তিতে কখনও কখনও সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে। তবে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, এর কোনটিই তার নয়।
শীর্ষ পর্যায়ের রাজনীতিবিদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সবচেয়ে সক্রিয় সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি তার দৈনন্দিন বিভিন্ন কার্যক্রম ফেসবুকের মাধ্যমে জনগণকে অবগত করেন। কখনও ছবির মাধ্যমে কখনও স্ট্যাটাসের মাধ্যমে তুলে ধরেন নিজের অবস্থান। নানাক্ষেত্রে তার আন্তরিক প্রচেষ্টা প্রশংসিত হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। যদিও কখনও কখনও তাকে নিয়ে সমালোচনাও হয়। বর্তমানে কারাবন্দি ডাকসুর সাবেক ভিপি ও নাগরিক আন্দোলনের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাও ফেসবুকে বেশ সক্রিয় ছিলেন। নানা ইস্যুতে তিনি তার মতামত প্রকাশ করতেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এমনকি গ্রেপ্তারের আগেও তিনি তার অবস্থান ফেসবুকে পরিষ্কার করে যান। সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনিও ফেসবুকে খুবই সক্রিয়। এখন দেশের বিভিন্ন পত্রিকায় কলাম লিখছেন তিনি। এসব কলাম দ্রুতই স্ট্যাটাস আকারে দিয়ে দেয়া হয় তার ফেসবুক পেইজ এবং অ্যাকাউন্টে। রাজনীতি, ইতিহাস, সমকালীন নানা প্রসঙ্গে নিজের মতামত প্রকাশ করেন তিনি। এসব মতামত কখনও প্রশংসিত হয়, কখনও হয় আলোচিত। বিজেপি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় রয়েছেন।
No comments