ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন অর্থসংকটে by তানভীর সোহেল
ঢাকা
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তহবিলে নেই কোনো টাকা। উল্টো এর কাছে বিভিন্ন
সংস্থা, ব্যক্তি ও ঠিকাদারের পাওনা প্রায় সাড়ে তিন শ কোটি টাকা। অর্থের
অভাবে দৈনন্দিন কাজ চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্তাব্যক্তিরা।
দক্ষিণের চেয়ে উত্তর সিটি করপোরেশনের অবস্থা ভালো। এর দেনা নেই। তবে প্রতিবছরই উদ্বৃত্ত তহবিলে টাকার পরিমাণ কমছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উত্তরের চেয়ে দক্ষিণের রাজস্ব আদায় কম। নতুন ঢাকা ও ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো উত্তরে হওয়ায় সরকারি ও বিদেশি অনুদান এবং প্রকল্প বাস্তবায়নের সংখ্যা উত্তর সিটি করপোরেশনে বেশি। আবার রাজস্ব আদায় কম হওয়া সত্ত্বেও দক্ষিণের অলিগলি, ড্রেনেজ-ব্যবস্থা, বর্জ্য অপসারণ, বেতন-ভাতা বাবদ খরচ বেশি। তহবিলে অর্থ না থাকা সত্ত্বেও ঠিকাদারদের দিয়ে বাকিতে কাজ করানোর কারণে দক্ষিণ করপোরেশন বেশি দেনায় পড়েছে।
২০১১ সালে যখন ঢাকা সিটি করপোরেশনকে দুই ভাগ করা হয়, তখন দুই সিটি করপোরেশনের আর্থিক অবস্থা ভালোই ছিল। কাউকেই দেনা নিয়ে যাত্রা শুরু করতে হয়নি। উল্টো অবিভক্ত সিটি করপোরেশনের প্রায় ৩৮০ কোটি টাকার স্থায়ী আমানতের টাকা সমান ভাগ করে নেয় দুই করপোরেশন। কিন্তু গত চার বছরের মধ্যে উদ্বৃত্ত টাকার পরিমাণ ক্রমাগত কমেছে। দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এখন দেনাদারে পরিণত হয়েছে। আর উত্তর দেনাদার না হলেও আর্থিক সংকটে আছে।
দক্ষিণের এক কর্মকর্তা বলেন, কম প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও কিছু প্রকল্প গ্রহণ ও সড়ক নির্মাণ-উন্নয়নের কারণে দক্ষিণের আর্থিক অবস্থা ক্রমাগত নিম্নমুখী হয়েছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন প্রথম আলোকে বলেন, সিটি করপোরেশনের দেনা প্রায় সাড়ে তিন শ কোটি টাকা। করপোরেশন চলছে ধুঁকে ধুঁকে। কোনো রকমে কাজ চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
নাগরিক সুবিধা বাড়ানোর জন্য বড় কোনো কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। তিনি হেসে বলেন, ‘টানাপোড়েনের মধ্যেই চলছে দক্ষিণের সংসার।’ এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের উপায় কী, জানতে চাইলে নবনির্বাচিত এই মেয়র বলেন, অর্থমন্ত্রীকে পুরো বিষয়টি জানানো হয়েছে। দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত কী হয়।
২০১৩-১৪ অর্থবছরে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আয়ের লক্ষ্য ধরা হয় ১ হাজার ৮৭৬ কোটি টাকা। অথচ ওই অর্থবছরে তাদের আয় ছিল মাত্র ৪১৯ কোটি টাকা। সিটি করপোরেশনের একটি সূত্র বলছে, আয়ের চেয়ে ব্যয় করে ফেলা হয়েছে বেশি। গত চার বছর এভাবেই চলছে। ফলে করপোরেশনের তহবিলে উদ্বৃত্ত ছিলই না, বরং প্রতিবছর দায় বাড়ছে। তবে করপোরেশন প্রতিবছরের হিসাবে এই দেনার কথা উল্লেখ করছে না। আয়কেই ব্যয় হিসেবে দেখানো হচ্ছে। উল্টো চলতি অর্থবছরে করপোরেশন তহবিলে প্রারম্ভিক স্থিতি ১০ কোটি টাকা দেখিয়েছে। তা ছাড়া এবার তারা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৭৪৬ কোটি টাকা নির্ধারণ করেছে। এবারের আয়ও লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী হবে না।
ব্যয়ের দিক থেকে উত্তর সিটি করপোরেশন অনেক হিসেবি। আয় ও তহবিলে থাকা অর্থের পরিমাণ বুঝেই খরচ করছে তারা। ফলে এখন পর্যন্ত তাদের দেনায় পড়তে হয়নি। চলতি অর্থবছরেও তারা তহবিলে কিছু টাকা উদ্বৃত্ত রাখতে পারবে। যদিও তহবিলে উদ্বৃত্ত টাকার পরিমাণ প্রতিবছরই কমছে।
উত্তরের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, উত্তর সিটি করপোরেশন অর্থের ব্যবস্থা বুঝে তারপর খরচ করেছে। ফলে গত চার বছরে তাদের উদ্বৃত্তের পরিমাণ বছর শেষে কমলেও দেনায় পড়তে হয়নি। চলতি বছরের বাকি দিনগুলো সব ধরনের খরচ মিটিয়ে তহবিলে কিছু টাকা থাকবে। এর পরিমাণ ১০ কোটি টাকার মতো হতে পারে। তবে দৈনন্দিন কাজ চললেও পর্যাপ্ত টাকা উত্তরের তহবিলে নেই। প্রতিবছর জোগাড়ও হচ্ছে না। ফলে উন্নয়নকাজ ও নাগরিকদের সেবা বাড়ানো যাচ্ছে না।
করপোরেশনের হিসাব শাখার একজন কর্মকর্তা জানান। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে উদ্বৃত্ত বা প্রারম্ভিক স্থিতি ধারা হয় ৫৮ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ৫২ কোটি হয়। অথচ ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে উদ্বৃত্ত বা স্থিতি হলো ৪০ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে এটা আরও কমবে। ফলে আয় না বাড়লে উত্তর সিটি করপোরেশনকে দেনায় ডুবতে হবে।
উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক প্রথম আলোকে বলেন, উত্তরের উন্নয়নমূলক কাজের জন্য প্রধানমন্ত্রী ২০০ কোটি টাকা দেওয়ার কথা বলেছেন। উন্নয়নমূলক কাজের জন্য এই টাকাটা কাজে দেবে। তিনি বলেন, বড় প্রকল্প নেওয়ার মতো অর্থ করপোরেশনের নেই, এটা সত্য। তবে করপোরেশনের আয় বাড়াতে তিনি চেষ্টা করবেন। দেনা নয়, বরং করপোরেশনকে আর্থিক দিক থেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতেই তিনি বেশি মনোযোগ দেবেন।
উত্তরের একজন কর্মকর্তা জানান, চলতি অর্থবছরে করপোরেশনের বাজেট ২ হাজার ৪১ কোটি টাকা। তবে এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না। গত অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৯৪৯ কোটি টাকা। ওই বছর আয় হয় মাত্র এক হাজার নয় কোটি টাকা। এই কর্মকর্তা জানান, এভাবে চললে উত্তরকেও দেনায় পড়তে হবে।
দক্ষিণের চেয়ে উত্তর সিটি করপোরেশনের অবস্থা ভালো। এর দেনা নেই। তবে প্রতিবছরই উদ্বৃত্ত তহবিলে টাকার পরিমাণ কমছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উত্তরের চেয়ে দক্ষিণের রাজস্ব আদায় কম। নতুন ঢাকা ও ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো উত্তরে হওয়ায় সরকারি ও বিদেশি অনুদান এবং প্রকল্প বাস্তবায়নের সংখ্যা উত্তর সিটি করপোরেশনে বেশি। আবার রাজস্ব আদায় কম হওয়া সত্ত্বেও দক্ষিণের অলিগলি, ড্রেনেজ-ব্যবস্থা, বর্জ্য অপসারণ, বেতন-ভাতা বাবদ খরচ বেশি। তহবিলে অর্থ না থাকা সত্ত্বেও ঠিকাদারদের দিয়ে বাকিতে কাজ করানোর কারণে দক্ষিণ করপোরেশন বেশি দেনায় পড়েছে।
২০১১ সালে যখন ঢাকা সিটি করপোরেশনকে দুই ভাগ করা হয়, তখন দুই সিটি করপোরেশনের আর্থিক অবস্থা ভালোই ছিল। কাউকেই দেনা নিয়ে যাত্রা শুরু করতে হয়নি। উল্টো অবিভক্ত সিটি করপোরেশনের প্রায় ৩৮০ কোটি টাকার স্থায়ী আমানতের টাকা সমান ভাগ করে নেয় দুই করপোরেশন। কিন্তু গত চার বছরের মধ্যে উদ্বৃত্ত টাকার পরিমাণ ক্রমাগত কমেছে। দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এখন দেনাদারে পরিণত হয়েছে। আর উত্তর দেনাদার না হলেও আর্থিক সংকটে আছে।
দক্ষিণের এক কর্মকর্তা বলেন, কম প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও কিছু প্রকল্প গ্রহণ ও সড়ক নির্মাণ-উন্নয়নের কারণে দক্ষিণের আর্থিক অবস্থা ক্রমাগত নিম্নমুখী হয়েছে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন প্রথম আলোকে বলেন, সিটি করপোরেশনের দেনা প্রায় সাড়ে তিন শ কোটি টাকা। করপোরেশন চলছে ধুঁকে ধুঁকে। কোনো রকমে কাজ চালিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
নাগরিক সুবিধা বাড়ানোর জন্য বড় কোনো কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। তিনি হেসে বলেন, ‘টানাপোড়েনের মধ্যেই চলছে দক্ষিণের সংসার।’ এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের উপায় কী, জানতে চাইলে নবনির্বাচিত এই মেয়র বলেন, অর্থমন্ত্রীকে পুরো বিষয়টি জানানো হয়েছে। দেখা যাক, শেষ পর্যন্ত কী হয়।
২০১৩-১৪ অর্থবছরে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আয়ের লক্ষ্য ধরা হয় ১ হাজার ৮৭৬ কোটি টাকা। অথচ ওই অর্থবছরে তাদের আয় ছিল মাত্র ৪১৯ কোটি টাকা। সিটি করপোরেশনের একটি সূত্র বলছে, আয়ের চেয়ে ব্যয় করে ফেলা হয়েছে বেশি। গত চার বছর এভাবেই চলছে। ফলে করপোরেশনের তহবিলে উদ্বৃত্ত ছিলই না, বরং প্রতিবছর দায় বাড়ছে। তবে করপোরেশন প্রতিবছরের হিসাবে এই দেনার কথা উল্লেখ করছে না। আয়কেই ব্যয় হিসেবে দেখানো হচ্ছে। উল্টো চলতি অর্থবছরে করপোরেশন তহবিলে প্রারম্ভিক স্থিতি ১০ কোটি টাকা দেখিয়েছে। তা ছাড়া এবার তারা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৭৪৬ কোটি টাকা নির্ধারণ করেছে। এবারের আয়ও লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী হবে না।
ব্যয়ের দিক থেকে উত্তর সিটি করপোরেশন অনেক হিসেবি। আয় ও তহবিলে থাকা অর্থের পরিমাণ বুঝেই খরচ করছে তারা। ফলে এখন পর্যন্ত তাদের দেনায় পড়তে হয়নি। চলতি অর্থবছরেও তারা তহবিলে কিছু টাকা উদ্বৃত্ত রাখতে পারবে। যদিও তহবিলে উদ্বৃত্ত টাকার পরিমাণ প্রতিবছরই কমছে।
উত্তরের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, উত্তর সিটি করপোরেশন অর্থের ব্যবস্থা বুঝে তারপর খরচ করেছে। ফলে গত চার বছরে তাদের উদ্বৃত্তের পরিমাণ বছর শেষে কমলেও দেনায় পড়তে হয়নি। চলতি বছরের বাকি দিনগুলো সব ধরনের খরচ মিটিয়ে তহবিলে কিছু টাকা থাকবে। এর পরিমাণ ১০ কোটি টাকার মতো হতে পারে। তবে দৈনন্দিন কাজ চললেও পর্যাপ্ত টাকা উত্তরের তহবিলে নেই। প্রতিবছর জোগাড়ও হচ্ছে না। ফলে উন্নয়নকাজ ও নাগরিকদের সেবা বাড়ানো যাচ্ছে না।
করপোরেশনের হিসাব শাখার একজন কর্মকর্তা জানান। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে উদ্বৃত্ত বা প্রারম্ভিক স্থিতি ধারা হয় ৫৮ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ৫২ কোটি হয়। অথচ ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে উদ্বৃত্ত বা স্থিতি হলো ৪০ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে এটা আরও কমবে। ফলে আয় না বাড়লে উত্তর সিটি করপোরেশনকে দেনায় ডুবতে হবে।
উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক প্রথম আলোকে বলেন, উত্তরের উন্নয়নমূলক কাজের জন্য প্রধানমন্ত্রী ২০০ কোটি টাকা দেওয়ার কথা বলেছেন। উন্নয়নমূলক কাজের জন্য এই টাকাটা কাজে দেবে। তিনি বলেন, বড় প্রকল্প নেওয়ার মতো অর্থ করপোরেশনের নেই, এটা সত্য। তবে করপোরেশনের আয় বাড়াতে তিনি চেষ্টা করবেন। দেনা নয়, বরং করপোরেশনকে আর্থিক দিক থেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতেই তিনি বেশি মনোযোগ দেবেন।
উত্তরের একজন কর্মকর্তা জানান, চলতি অর্থবছরে করপোরেশনের বাজেট ২ হাজার ৪১ কোটি টাকা। তবে এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না। গত অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৯৪৯ কোটি টাকা। ওই বছর আয় হয় মাত্র এক হাজার নয় কোটি টাকা। এই কর্মকর্তা জানান, এভাবে চললে উত্তরকেও দেনায় পড়তে হবে।
No comments