রমজানের আগেই নিত্যপণ্যের দাম চড়া by হামিদ বিশ্বাস
রমজানের
আগেই অত্যাবশ্যকীয় সব পণ্যের দাম বেড়েছে। যদিও সরকারের তরফে বারবার
ক্রেতাদের আশ্বস্ত ও বিক্রেতাদের সতর্ক করা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তব চিত্র তার
উল্টো। এক শ্রেণীর শীর্ষপর্যায়ের অসাধু কোম্পানি ইতিমধ্যেই বাজার
অস্থিতিশীল করার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। যার প্রমাণ মাঠপর্যায়ের
চিত্রই যথেষ্ট। সঙ্গে রয়েছে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আংশিক চিত্র।
রমজানের আগেই অত্যাবশ্যকীয় ও সহযোগী সব পণ্যের দাম আকাশছোঁয়া। বিশেষত
খেজুর, ছোলা, ডাল, আলু, বেগুনি, ধনেপাতা, লেবু, মাংসসহ অনেক পণ্যের বাজার
অস্থির। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে ও সরকারি বিপণন প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং
করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ওয়েব সাইটে এসব তথ্য মিলেছে। টিসিবির
তথ্যমতে, সাধারণ মানের প্রতি কেজি খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ২২০ টাকায়।
যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৯০ থেকে ১৫০ টাকা। প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে
৬০ থেকে ৬৫ টাকা। যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। কেজিপ্রতি আলু
বিক্রি হচ্ছে ১৬ থেকে ২২ টাকা। যা আগের বছর ছিল ১৬ থেকে ১৮ টাকা।
কেজিপ্রতি মশুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১২০ টাকা। যা আগের বছর ছিল ৭৫
থেকে ১১৫ টাকা। আবার টিসিবির দেয়া তথ্যের সঙ্গে মিলছে না বাজারের চিত্র।
টিসিবির দেয়া তথ্য ছাড়িয়েছে খুচরা বাজার। প্রতিপণ্যে ৫ থেকে ২০ টাকা বেশি
নিচ্ছে খুচরা ব্যবসায়ীরা। এ ছাড়া কোম্পানিগুলো সয়াবিন, পাম অয়েল, চিনি ও
পিয়াজ- এ ৪টি পণ্য অতিরিক্ত মূল্যে বাজারে বিক্রি করা শুরু করেছে। এ
প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো ভোক্তার পকেট কেটে বের করে
নিচ্ছে শত কোটি টাকা। বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের (বিটিসি) এক পর্যবেক্ষণ
প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য। বিটিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, যৌক্তিক মূল্য
থেকে প্রতি লিটার (বোতল) সয়াবিনে ২০ টাকা, প্রতি লিটার খোলা সয়াবিনে ১৮
টাকা, পামওয়েল লিটারে ১৩ টাকা, চিনির কেজিতে ৩ টাকা ও পিয়াজের কেজিতে
সর্বোচ্চ ১০ টাকা ভোক্তাদের কাছ থেকে বেশি নেয়া হচ্ছে। বিদ্যমান পরিস্থিতি
মোকাবিলায় ৪টি পণ্যসহ অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পরিবেশকদের মাধ্যমে
বাজারজাত করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলা হয় বিটিসির প্রতিবেদনে। চিনি,
সয়াবিন, পামওয়েল ও পিয়াজের আমদানি মূল্য সংগ্রহ করেছে বিটিসির বাজার
মনিটরিং সেল। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর উৎপাদন ব্যয়, পাইকার, খুচরা
ও উৎপাদনকারীর মুনাফাসহ সংশ্লিষ্ট ব্যয় ধরে পণ্যের মূল্য বের করেছে। এ ৪টি
পণ্যের সর্বোচ্চ খুচরা বিক্রয় মূল্য যা হওয়া উচিত তার চেয়ে বেশি দামে
বিক্রি হচ্ছে বলে মন্তব্য করা হয় প্রতিবেদনে। চিনির মূল্য বৃদ্ধির ব্যাপারে
ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ১লা এপ্রিল থেকে ৩০শে এপ্রিল পর্যন্ত
এক মাসের এক টন অপরিশোধিত চিনির ইন বন্ডের গড় মূল্য পাওয়া গেছে ২৮,২১০
টাকা। একই সময় এলসি খোলার গড় মূল্য ছিল ২৫ হাজার ৬১৩ টাকা। এই দুটির
মূল্যের পুনরায় গড় মূল্য দাঁড়ায় ২৬ হাজার ৯১১ টাকা। রিফাইনারি ব্যয়সহ এক
কেজি চিনির মিল গেট মূল্য দাঁড়ায় ৩৫ টাকা। এর সঙ্গে পরিবেশকদের ২ টাকা
মুনাফা ও খুচরা ব্যবসায়ীদের ২ টাকা মুনাফা যোগ করা হয়। এতে প্রতি কেজি
চিনির সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য হওয়া উচিত ৩৯ টাকা। কিন্তু খুচরা বাজারে বিক্রি
হচ্ছে সর্বোচ্চ ৪২ টাকা। অর্থাৎ ভোক্তাদের কাছ থেকে প্রতি কেজিতে ৩ টাকা
বেশি আদায় করা হচ্ছে। ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাজারে
পিয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। স্থানীয় বাজারে প্রতি কেজি পিয়াজ
বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪৫ টাকা। এ মূল্য বৃদ্ধির যৌক্তিক কোন কারণ নেই।
ট্যারিফ কমিশনের হিসাব মতে, প্রতি কেজি পিয়াজের মূল্য হবে সর্বোচ্চ ২৮ থেকে
৩৫ টাকা। সেখানে আরও বলা হয়, আমদানি করা হয় চাহিদার ৩০ শতাংশ, দেশীয়
উৎপাদন হয় ৭০ শতাংশ। যেহেতু সদ্য মওসুম শেষ হয়েছে তাই এ মূল্য বৃদ্ধির কোন
কারণ নেই।
এ বিষয়ে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, আমদানি পণ্যের দাম বাড়ার কারণ নেই। তবুও এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী বেশি মুনাফা করতে গিয়ে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। হুকুম দিয়ে নয়, একটু কৌশলে তাদের দমন করতে হবে।
রমজানে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের বাইরেও কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিকেজি ধনে পাতা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা। যা কয়েক দিন আগেও ছিল মাত্র ৬০ থেকে ৮০ টাকা। একই সঙ্গে ২০ টাকার ভেন্ডি ৫০ টাকা, ১৫ টাকার শসা ৩০ টাকা, বরবটি ৩০ টাকা, টমেটো ৩০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা ও লেবু ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাওরান বাজারের কাঁচা পণ্য বিক্রেতা জসিম বলেন, রমজান উপলক্ষে দাম বেড়ে গেছে। মোকামেই দাম বাড়তি। এ ছাড়া প্রতিকেজি পোল্ট্রি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা, লেয়ার ২০০ টাকা। যা কয়েক দিন আগেও ছিল ১৬০ ও ১৮০ টাকা। মুরগি বিক্রেতা সেলিম জানান, পাইকারি পর্যায়ে দাম বাড়তি। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, আমদানি পণ্যের দাম বাড়ার কারণ নেই। তবুও এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী বেশি মুনাফা করতে গিয়ে দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। হুকুম দিয়ে নয়, একটু কৌশলে তাদের দমন করতে হবে।
রমজানে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের বাইরেও কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিকেজি ধনে পাতা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা। যা কয়েক দিন আগেও ছিল মাত্র ৬০ থেকে ৮০ টাকা। একই সঙ্গে ২০ টাকার ভেন্ডি ৫০ টাকা, ১৫ টাকার শসা ৩০ টাকা, বরবটি ৩০ টাকা, টমেটো ৩০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকা ও লেবু ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাওরান বাজারের কাঁচা পণ্য বিক্রেতা জসিম বলেন, রমজান উপলক্ষে দাম বেড়ে গেছে। মোকামেই দাম বাড়তি। এ ছাড়া প্রতিকেজি পোল্ট্রি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা, লেয়ার ২০০ টাকা। যা কয়েক দিন আগেও ছিল ১৬০ ও ১৮০ টাকা। মুরগি বিক্রেতা সেলিম জানান, পাইকারি পর্যায়ে দাম বাড়তি। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।
No comments