নিজেদের স্বার্থে আমাকে ব্যবহার করেছেন রাজনীতিবিদরা
বাংলাদেশের
বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন বললেন, সুইডেনে একটি নারীবাদী দল রয়েছে।
ভারতে নেই কেন? সুইডেনের চেয়ে নারীবাদী দলের প্রয়োজনীয়তা ভারতে অনেক বেশি।
সম্প্রতি ভারত ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমানো এই লেখিকা এক সাক্ষাৎকারে এসব
কথা বলেছেন টাইমস অব ইন্ডিয়াকে। ভারত ছাড়ার পর বিভিন্ন মিডিয়ায় খবর
প্রকাশিত হয়েছিল যে, তিনি স্থায়ীভাবে ভারত ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছেন। তবে
তসলিমা নাসরিন এ খবরের সত্যতা অস্বীকার করেন। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন,
ব্লগারদের খুনিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর বদলে অন্যদিকে তাকিয়ে আছে
বাংলাদেশ সরকার। তারা ইসলাম-বিরোধী তকমা পেতে চায় না। এর ফলে ভোট হারানোর
ভয় রয়েছে তাদের। এখানে তার সাক্ষাৎকারটি তুলে ধরা হলো:
প্রশ্ন: আপনি যুক্তরাষ্ট্রে কেন?
উত্তর: আমি বক্তৃতা দেয়ার জন্য দেশটিতে প্রায়ই আসি। এ ছাড়া পরিবারের সঙ্গে দেখা করতেও আসি। কিন্তু সমপ্রতি বাংলাদেশের একটি পত্রিকা পুলিশের একটি প্রতিবেদনকে উদ্ধৃত করে জানায়, নাস্তিক ব্লগারদের হত্যাকারী একটি সন্ত্রাসী সংগঠন ভারতে গিয়ে আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করছে। এ খবরটি আমাকে বিচলিত করেছে। আমি বন্ধুদের সঙ্গে কথা বললাম। আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, যদি আমি কিছুদিনের জন্য ভারত ছেড়ে যাই, তাহলে ভাল হবে। কিন্তু বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ছাপিয়েছে যে, আমি পাকাপাকিভাবে যুক্তরাষ্ট্রে চলে এসেছি। এসব কাণ্ডজ্ঞানহীন কথাবার্তা। ভারত সব সময়ই আমার হৃদয়ে থাকবে। আমার সব বই, জিনিসপত্র ও পোষা বিড়ালটি পর্যন্ত এখনও ভারতে। যাই হোক। নিরাপত্তা হুমকির চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ চলছে। আমেরিকার একটি মানবতাবাদী সংগঠন বাংলাদেশের হুমকিপ্রাপ্ত ব্লগারদের যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে তহবিল সংগ্রহ করছে।
প্রশ্ন: বাংলাদেশে ব্লগারদের কেন খুন করা হচ্ছে?
উত্তর: ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বাংলাদেশী বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। একই উপায়ে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সন্ত্রাসীরা নাস্তিক বুদ্ধিজীবীদের নৃশংস কায়দায় হত্যা করে যাচ্ছে। ওই দলটি ইয়েমেনভিত্তিক সাবেক আল কায়েদা নেতা আনওয়ার আল আওলাকির দ্বারা প্রভাবিত। এসব খুনির উদ্দেশ্য একই। তারা ধর্মান্ধ ও নারীবিদ্বেষী ব্যতিত কাউকে দেশে রাখতে চায় না। তারা ইসলামের সমালোচনার কারণে রাজিব হায়দার, অভিজিৎ রায় সহ অনেক মুক্তমনা ব্লগারকে হত্যা করেছে। খুনিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর বদলে, সরকার তাকিয়ে আছে। সরকার ইসলামবিরোধী তকমা পেতে চায় না, এর ফলে ভোট হারানোর ভয় রয়েছে তাদের।
প্রশ্ন: আপনি কি ভারত সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন?
উত্তর: সরকারের কারো সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা আমার ছিল। আমি যদি তাদের কাছ থেকে কোন নিশ্চয়তা পেতাম, তাহলে ভারত ছেড়ে যেতাম না। কোন ব্লগার বন্ধুকে কুপিয়ে খুন হতে দেখে আমার অবস্থা যখন বিপর্যস্ত, তখন আমার একটি যত্নমাখা হাতের দরকার ছিল। কিন্তু ভারতে আমার অবস্থান শেষ হয়ে যায় নি। ইউরোপে আমার নির্বাসন শেষে আমি কলকাতায় যাই। আমি কলকাতা অনেক উপভোগ করেছিলাম। কিন্তু নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে আমাকে ব্যবহার করেছে রাজনীতিবিদরা। আমাকে গৃহবন্দি অবস্থায় থাকতে হয়েছে। সাজানো দাঙ্গার পর আমাকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। আমাকে দিল্লিতে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। ভারত ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। কিন্তু আমি হাল ছাড়ি নি। আমি ভারতে প্রবেশ করা অব্যাহত রাখলাম। সরকার অবশেষে আমাকে ভারতে বাস করার অনুমতি দেয়। ভারতীয় উপমহাদেশের মধ্যে দিল্লিই একমাত্র জায়গা যেখানে আমি বাস করতে পারি। আমি খুশি যে, আমি উপমহাদেশেই আছি। এ জায়গাটাকে আমার বাড়ি মনে হয়।
প্রশ্ন: বাংলাদেশে নারীরা কি মুক্তভাবে বাস করে না?
উত্তর: এটা খুব কঠিন। নারীদের বোরকা ও হিজাব পরতে বাধ্য করা হয়। তাদের সঙ্গে আধা-মানবের মতো আচরণ করা হয়। পুরুষরা এখনও তাদের প্রভু।
প্রশ্ন: আপনি মাঝে বলেছিলেন, ‘আম আউরাত পার্টি’র প্রয়োজন। বিষয়টি ব্যাখ্যা করুন।
উত্তর: মোট জনসংখ্যার অর্ধেকই নারী ও তারা নির্যাতিত। তাদের সমস্যাগুলো অবশ্যই সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে সমাধান করতে হবে। সুইডেন বিশ্বের সবচেয়ে লিঙ্গ-সমমাত্রিক দেশগুলোর অন্যতম। দেশটি একটি দৃঢ় ধারণার ওপর পরিচালিত হয়, যা হলো, পুরুষ ও নারীদের ক্ষমতা সমানভাবে ভাগাভাগি করা উচিত। সুইডেনের একটি নারীবাদী দল রয়েছে। ভারতে নেই কেন? সুইডেনের চেয়ে নারীবাদী দলের প্রয়োজনীয়তা ভারতে অনেক বেশি।
প্রশ্ন: আপনি যুক্তরাষ্ট্রে কেন?
উত্তর: আমি বক্তৃতা দেয়ার জন্য দেশটিতে প্রায়ই আসি। এ ছাড়া পরিবারের সঙ্গে দেখা করতেও আসি। কিন্তু সমপ্রতি বাংলাদেশের একটি পত্রিকা পুলিশের একটি প্রতিবেদনকে উদ্ধৃত করে জানায়, নাস্তিক ব্লগারদের হত্যাকারী একটি সন্ত্রাসী সংগঠন ভারতে গিয়ে আমাকে হত্যার পরিকল্পনা করছে। এ খবরটি আমাকে বিচলিত করেছে। আমি বন্ধুদের সঙ্গে কথা বললাম। আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, যদি আমি কিছুদিনের জন্য ভারত ছেড়ে যাই, তাহলে ভাল হবে। কিন্তু বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ছাপিয়েছে যে, আমি পাকাপাকিভাবে যুক্তরাষ্ট্রে চলে এসেছি। এসব কাণ্ডজ্ঞানহীন কথাবার্তা। ভারত সব সময়ই আমার হৃদয়ে থাকবে। আমার সব বই, জিনিসপত্র ও পোষা বিড়ালটি পর্যন্ত এখনও ভারতে। যাই হোক। নিরাপত্তা হুমকির চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ চলছে। আমেরিকার একটি মানবতাবাদী সংগঠন বাংলাদেশের হুমকিপ্রাপ্ত ব্লগারদের যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে তহবিল সংগ্রহ করছে।
প্রশ্ন: বাংলাদেশে ব্লগারদের কেন খুন করা হচ্ছে?
উত্তর: ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বাংলাদেশী বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। একই উপায়ে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সন্ত্রাসীরা নাস্তিক বুদ্ধিজীবীদের নৃশংস কায়দায় হত্যা করে যাচ্ছে। ওই দলটি ইয়েমেনভিত্তিক সাবেক আল কায়েদা নেতা আনওয়ার আল আওলাকির দ্বারা প্রভাবিত। এসব খুনির উদ্দেশ্য একই। তারা ধর্মান্ধ ও নারীবিদ্বেষী ব্যতিত কাউকে দেশে রাখতে চায় না। তারা ইসলামের সমালোচনার কারণে রাজিব হায়দার, অভিজিৎ রায় সহ অনেক মুক্তমনা ব্লগারকে হত্যা করেছে। খুনিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোর বদলে, সরকার তাকিয়ে আছে। সরকার ইসলামবিরোধী তকমা পেতে চায় না, এর ফলে ভোট হারানোর ভয় রয়েছে তাদের।
প্রশ্ন: আপনি কি ভারত সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন?
উত্তর: সরকারের কারো সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছা আমার ছিল। আমি যদি তাদের কাছ থেকে কোন নিশ্চয়তা পেতাম, তাহলে ভারত ছেড়ে যেতাম না। কোন ব্লগার বন্ধুকে কুপিয়ে খুন হতে দেখে আমার অবস্থা যখন বিপর্যস্ত, তখন আমার একটি যত্নমাখা হাতের দরকার ছিল। কিন্তু ভারতে আমার অবস্থান শেষ হয়ে যায় নি। ইউরোপে আমার নির্বাসন শেষে আমি কলকাতায় যাই। আমি কলকাতা অনেক উপভোগ করেছিলাম। কিন্তু নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে আমাকে ব্যবহার করেছে রাজনীতিবিদরা। আমাকে গৃহবন্দি অবস্থায় থাকতে হয়েছে। সাজানো দাঙ্গার পর আমাকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। আমাকে দিল্লিতে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। ভারত ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। কিন্তু আমি হাল ছাড়ি নি। আমি ভারতে প্রবেশ করা অব্যাহত রাখলাম। সরকার অবশেষে আমাকে ভারতে বাস করার অনুমতি দেয়। ভারতীয় উপমহাদেশের মধ্যে দিল্লিই একমাত্র জায়গা যেখানে আমি বাস করতে পারি। আমি খুশি যে, আমি উপমহাদেশেই আছি। এ জায়গাটাকে আমার বাড়ি মনে হয়।
প্রশ্ন: বাংলাদেশে নারীরা কি মুক্তভাবে বাস করে না?
উত্তর: এটা খুব কঠিন। নারীদের বোরকা ও হিজাব পরতে বাধ্য করা হয়। তাদের সঙ্গে আধা-মানবের মতো আচরণ করা হয়। পুরুষরা এখনও তাদের প্রভু।
প্রশ্ন: আপনি মাঝে বলেছিলেন, ‘আম আউরাত পার্টি’র প্রয়োজন। বিষয়টি ব্যাখ্যা করুন।
উত্তর: মোট জনসংখ্যার অর্ধেকই নারী ও তারা নির্যাতিত। তাদের সমস্যাগুলো অবশ্যই সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে সমাধান করতে হবে। সুইডেন বিশ্বের সবচেয়ে লিঙ্গ-সমমাত্রিক দেশগুলোর অন্যতম। দেশটি একটি দৃঢ় ধারণার ওপর পরিচালিত হয়, যা হলো, পুরুষ ও নারীদের ক্ষমতা সমানভাবে ভাগাভাগি করা উচিত। সুইডেনের একটি নারীবাদী দল রয়েছে। ভারতে নেই কেন? সুইডেনের চেয়ে নারীবাদী দলের প্রয়োজনীয়তা ভারতে অনেক বেশি।
No comments