পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দেয়ার লোভ দেখিয়ে ছাত্রীকে যৌন হয়রানি by নূর ইসলাম
যশোর
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান
বিভাগের একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে বিয়ে ও পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দেয়ার
প্রলোভন দেখিয়ে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ক্যাম্পাস জুড়ে শুরু
হয়েছে তোলপাড়। ওই শিক্ষক এবং ছাত্রীর রোমাঞ্চকর মুহূর্তের কিছু আপত্তিকর
ছবিও এখন শিক্ষার্থীদের মোবাইলে ঘুরপাক খাচ্ছে। ছাত্রীকে যৌন হয়রানির লিখিত
অভিযোগ জমা পড়েছে ভিসির টেবিলেও। সঙ্গে রয়েছে শিক্ষক ও ছাত্রীর বেশকিছু
ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি এবং কথোপকথনের অডিও এবং হট এসএমএস। ঘটনা তদন্তে গঠিত
হয়েছে ৩ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটিও। এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষককে অপসারণের
দাবিতে ক্যাম্পাসে চলছে ছাত্র আন্দোলন।
যবিপ্রবি’র খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্স শেষপর্বের ছাত্রী শ্রীমতি অদিতি বিশ্বাস মৌ’র ভিসি বরাবর লিখিত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সৈয়দ মাহফুজুল আল হাসান বিয়ের প্রলোভন ও পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দেয়া এবং থিসিসসহ সকল বিষয়ে পাস করিয়ে দেয়ার কথা বলে দীর্ঘ দুই বছর ওই ছাত্রীকে স্ত্রীর ন্যায় ব্যবহার করেছেন। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বাগেরহাটের মেয়ে শ্রীমতি অদিতি বিশ্বাস মৌ জানান, “২০১০ সালে তিনি যবিপ্রবিতে খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২য় ব্যাচ হলেও ওই বিভাগের প্রথম ব্যাচ। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির এক বছর পর থেকে তার ওপর কুনজর পড়ে বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সৈয়দ মাহফুজুল আল হাসান ওরফে হাসান স্যারের। তিনি কারণে-অকারণে তাকে তার অফিস কক্ষে ডেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অতিবাহিত করেন। এক পর্যায়ে মৌ ধর্মীয় বিধিনিষেধ তুলে ধরে নিজেকে রক্ষার চেষ্টা করলে হাসান স্যার ওসব ভুলে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এক পর্যায়ে মৌ পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে দেয়ারও পরিকল্পনা করেন। তখন হাসান স্যার তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখায়। স্যার বলেন, তুমি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করো আমি তোমাকে বিয়ে করবো। কিন্তু আমি ধর্মান্তরিত হতে রাজি না হলে তিনি নিজেই ধর্মান্তরিত হওয়ার ঘোষণা দিয়ে আমাকে ভোগ করার ষড়যন্ত্র করতে থাকে। সুযোগটি আসে ২০১৩ সালের জুন মাসে। থিসিসের অংশ হিসেবে তার গ্রুপের ৪ ছাত্র ও ১ ছাত্রী মৌকে অধ্যাপক হাসান সাতক্ষীরার মুন্সিগঞ্জে একটি পুষ্টিবিষয়ক প্রকল্প পরিদর্শনে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থানকালে এক রাতে ঘটে সেই দুর্ঘটনা। ঘটনাটি বর্ণনা করতে গিয়ে অনেকটা আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন মৌ। তারপরও নিজেকে সামলে নিয়ে তিনি বলেন, পরিদর্শনকালে স্থানীয় সুশীলন রেস্ট হাউজে আমাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়। আমার রুমটি ছিল দোতলায়। আর ৪ ছাত্রসহ স্যার ছিলেন নিচতলায়। রাত ১০টার দিকে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমি আমার কক্ষে চলে যাই। বেশ কিছুক্ষণ পড়াশোনা করে ঘুমাতে যাবো এমন সময় দরজায় নক করার শব্দ পাই। প্রশ্ন করে জানতে পারি দরজায় হাসান স্যার দাঁড়িয়ে। সাত পাঁচ ভেবে শেষ পর্যন্ত দরজা খুলে দিই। হাসান স্যার ভেতরে ঢুকে নিজ থেকে দরজা লক করে দেন। তারপর অনেকটা জোর করে আমার সর্বস্ব লুট করেন। আমি বাধা দিলে তিনি আমাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন। বলেন, মাস্টার্স শেষ হলেই তোমাকে আমি বিয়ে করবো। সে রাতে স্যার ২/৩ বার আমাকে ভোগ করেন। স্যার রুম থেকে চলে যাবার পর নিজেকে বড্ড অপরাধী মনে হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল নিজেকে শেষ করে ফেলি। এ মুখ আর কাউকে দেখাতে পারবো না। কিন্তু পরীক্ষা আর পরিবারের কথা ভেবে চেপে যাই। এর পর থেকে স্যার বিভিন্ন অজুহাতে আমাকে ব্যবহার করেছে। যশোর শহর ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্যারের অফিস কক্ষে, যশোর ও খুলনা শহরের বিভিন্ন বাসা বাড়িতে স্যার আমাকে নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মতো বসবাস করেছেন। এক প্রশ্নের জবাবে অদিতি জানান, “প্রথমে স্যার নিজেকে অবিবাহিত বলে দাবি করেন। এক পর্যায়ে জানতে পারি তিনি বিবাহিত। এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে হাসান জানান, অনেক আগে পারিবারিক সিদ্ধান্তে তার বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তেমন কোন সম্পর্ক নেই। সে তার স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়ে আমাকে বিয়ে করবেন। শুধু আমার মাস্টার্স পরীক্ষাটা শেষ হলেই সব চূড়ান্ত হবে। আমিও তাকে বিশ্বাস করে সব উজাড় করে দিয়েছিলাম। আসলে আমি হাসানের প্রতিটি কথা বিশ্বাস করেছিলাম। কিন্তু একটি ঘটনার পর বুঝতে পারি সে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করেছে। আসলে সে একজন লম্পট চরিত্রের লোক। তার কাজই হচ্ছে নানা ভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে বা প্রেমের অভিনয় করে ছাত্রী পটানো। তারপর সময় আর সুযোগ বুঝে ওই ছাত্রীর সর্বস্ব লুটে নেয়া।”
অদিতি জানান, “তার বাইরেও বিভাগের একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে ওই লম্পট নানা অজুহাতে শারীরিক সম্পর্ক গড়েছেন। লোক লজ্জার ভয়ে তারা মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। আর এসব বিষয়ে আমার কাছে কোন তথ্যপ্রমাণ না থাকায় আমিও ওই ছাত্রীদের পক্ষে দাঁড়াতে পারছি না।” অপর এক প্রশ্নের জবাবে অদিতি বলেন, দীর্ঘ দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে হাসান আমার সঙ্গে স্বামীর অভিনয় করেছে। সে একজন পাকা অভিনেতা। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে তার মধ্যে আমি পরিবর্তন লক্ষ্য করতে শুরু করি। সে আমাকে ওয়েটিংয়ে রেখে অপর মেয়েদের সঙ্গে কথা বলতো। প্রায়ই সে আমাকে না জানিয়ে অন্য মেয়েকে নিয়ে ঘুরতে যেত। তার ফোন ঘণ্টার পর ঘণ্টা ওয়েটিংয়ে থাকতো। এসব বিষয়ে প্রশ্ন করলে সে রেগে যেত। আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতো। এমনকি সে আমার গায়ে পর্যন্ত হাত ওঠানোর চেষ্টা করেছে। এক পর্যায়ে হাসান আমাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করে। সর্বশেষ গত ২৮শে ফেব্রুয়ারি আমি উপশহরে হাসানের বাড়িতে যাই। দেখি সেখানে তার স্ত্রী নুসরাত এ্যানি ও তার মেয়ে চারু অবস্থান করছে। আমাকে দেখে নুসরাত চমকে ওঠেন। হাসান প্রসঙ্গ তুলতেই সে আমাকে সব খুলে বলেন। নুসরাত জানান, “সে আগে থেকেই অদিতি আর হাসানের সম্পর্কের কথা জানতো। নুসরাত বলেন, আসলে হাসান একজন লম্পট ও দুশ্চরিত্রের অধিকারী। সে এর আগেও একাধিক মেয়ের সর্বনাশ করেছে। এসব বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করায় সে তার মেয়ে চারুকে বহুবার গলাটিপে মেরে ফেলার ভান করে তার স্ত্রীকে ব্ল্যাকমেইল করেছে। তাকে ইমোশনালি ব্ল্যাকমেইল করে তার মুখ বন্ধ রাখতে বাধ্য করেছে।” এদিকে মৌয়ের কাছে মুখোশ উন্মোচন হয়ে পড়লে হাসান তার কিছু পোষা গুণ্ডা দিয়ে অদিতি বিশ্বাস মৌকে ক্ষতি করার চেষ্টা করেন। সে তার বিভাগের একাধিক ছাত্রকে অদিতির পেছনে লেলিয়ে দিয়েছেন যারা প্রতিনিয়ত অদিতিকে নানা ভাবে প্রাণনাশের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন বলে অদিতি দাবি করেন। ফলে বর্তমানে অদিতি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান।
এক প্রশ্নের জবাবে অদিতি বলেন, “আমার তো সব শেষ হয়ে গেছে। এখন আমার কাছে জীবন আর মরণের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। এসব ঘটনা জানার পর আমার সমাজ বা ধর্ম আমাকে হয়তো গ্রহণ করবে না। আমার জীবন সম্পর্কে এখন আমাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাই আমি স্থির করেছি ওই লম্পটের উপযুক্ত শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আমার লড়াই চলবে।”
তিনি জানান, ইতিমধ্যে তিনি ওই লম্পট শিক্ষকের মুখোশ উন্মোচন করতে ও উপযুক্ত বিচার প্রার্থনা করে যবিপ্রবি’র ভিসি বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন। আবেদনপত্রের সঙ্গে শিক্ষক হাসানের সঙ্গে তার বিভিন্ন রোমাঞ্চকর মুহূর্তের তোলা কিছু ছবি, মোবাইল ফোনে কথাবার্তার অডিও এবং বেশ কিছু যৌন উত্তেজনাপূর্ণ এসএমএস ডকুমেন্ট হিসেবে জমা দিয়েছেন। তিনি এই ঘটনার উপযুক্ত বিচার প্রার্থনা করেন।
এদিকে এ ঘটনা জানাজানি হওয়ায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উঠেপড়ে লেগেছে। এদিকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ওই শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একাংশ যবিপ্রবি’র উপদেষ্টাসহ উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও প্রক্টরের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছে। প্রদর্শন করেছে বিক্ষোভ মিছিল।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, গত ২৪শে মার্চ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সৈয়দ মাহফুজ আল হাসানের বিরুদ্ধে স্নাতকোত্তরের ছাত্রী অদিতি বিশ্বাস মৌ যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলে। ওই ছাত্রী অভিযোগ করেন ‘বিয়ে ও প্রশ্ন দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সৈয়দ মাহফুজ আল হাসান তার সঙ্গে দুই বছর ধরে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়েছেন’। যা প্রমাণসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এনিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কিন্তু তদন্ত কমিটি তদন্ত না করেই সবকিছু স্থগিত রাখেন। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয় মাইক্রো বায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ইকবাল কবীর জাহিদকে। সদস্য করা হয় মাইক্রো বায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সেলিনা আক্তার ও ফিসারিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মীর মোশাররফ হোসেনকে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে গত ২ মাসের মধ্যে এ কমিটি তাদের কার্যক্রম শুরু করেনি।
এদিকে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষী শিক্ষকের শাস্তি না হওয়ায় গত বুধবার থেকে হয়রানির শিকার ওই শিক্ষার্থীসহ তার আরও আট বন্ধু আন্দোলনে নেমেছে। তারা দোষী শিক্ষকের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। সে সময় ক্যাম্পাসে উপস্থিত একাধিক সাংবাদিককে যৌন হয়রানির শিকার ওই ছাত্রী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করা অবস্থায় কোন ছাত্রী তার বিভাগীয় স্যারের বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলতে পারে না। তিনি বলেন, বিয়ের প্রলোভন, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দেয়া ও থিসিসে সর্বোচ্চ নম্বর দেয়ার কথা বলে তার সঙ্গে ওই লম্পট শিক্ষক যা করেছে তা যেন আর কোন শিক্ষার্থীর সঙ্গে না করতে পারে সে জন্য তিনি ওই শিক্ষকের শাস্তি ও বিচার দাবি করেন।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত শিক্ষক সৈয়দ মাহফুজ আল হাসান জানান, “দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে তার বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র চলছে এই ঘটনা তারই অংশ। একটি পক্ষ ওই ছাত্রীকে ব্যবহার করে এসব মনগড়া অভিযোগ উত্থাপন করছে। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্ত করছে। দীর্ঘ আড়াই মাস ধরে তারা তদন্ত চালাচ্ছে। তিনি দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। থিসিসের ছাত্রী হিসেবে তার সঙ্গে যতটুকু সম্পর্ক থাকা উচিত তার চেয়ে কোন অতিরিক্ত সম্পর্ক আমার ছিল না। তাছাড়া, সে যে প্রশ্নপত্র সম্পর্কিত অভিযোগ তুলছে তা ২ বছর আগে শেষ হয়েছে কি কারণে, কাদের ইন্ধনে কেন এসব সে করছে তা বোধগম্য নয়। ওই ছাত্রী তার কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে এ বিষয়ে আন্দোলন করারও চেষ্টা চালাচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন। তিনি বলেন, যেহেতু বিষয়টি ততদন্তাধীন। ফলে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা ঠিক হবে না। তবে তিনি আশা করেন তদন্তে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে। ”
ছাত্রীকে যৌন হয়রানির বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ইকবাল কবীর জাহিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তদন্ত মাঝপথে আছে। কমিটির এক সদস্য ভারতে আছেন। অপর সদস্যের বাবা সম্প্রতি মারা গেছেন। তিনি ছুটিতে আছেন। ফলে একা তদন্ত করা যায় না। এ কারণে তদন্ত একটু থমকে আছে। কমিটির অপর দুই সদস্য আসলে ফের কাজ শুরু হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন অতীতের ধারাবাহিকতায় তিনি সত্য উদঘাটন করে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিবেন।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) রেজিস্ট্রার আহসান হাবীব জানান, তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পরই এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ছাত্রদের স্মারকলিপি দেয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, কিছু শিক্ষার্থী স্মারকলিপি দিয়েছে। কিন্তু যেহেতু বিষয়টি তদন্তাধীন। ফলে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। তিনি তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের অপেক্ষা করার পরামর্শ দেন।
যবিপ্রবি’র খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্স শেষপর্বের ছাত্রী শ্রীমতি অদিতি বিশ্বাস মৌ’র ভিসি বরাবর লিখিত অভিযোগ থেকে জানা গেছে, একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সৈয়দ মাহফুজুল আল হাসান বিয়ের প্রলোভন ও পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দেয়া এবং থিসিসসহ সকল বিষয়ে পাস করিয়ে দেয়ার কথা বলে দীর্ঘ দুই বছর ওই ছাত্রীকে স্ত্রীর ন্যায় ব্যবহার করেছেন। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে বাগেরহাটের মেয়ে শ্রীমতি অদিতি বিশ্বাস মৌ জানান, “২০১০ সালে তিনি যবিপ্রবিতে খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২য় ব্যাচ হলেও ওই বিভাগের প্রথম ব্যাচ। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির এক বছর পর থেকে তার ওপর কুনজর পড়ে বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সৈয়দ মাহফুজুল আল হাসান ওরফে হাসান স্যারের। তিনি কারণে-অকারণে তাকে তার অফিস কক্ষে ডেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অতিবাহিত করেন। এক পর্যায়ে মৌ ধর্মীয় বিধিনিষেধ তুলে ধরে নিজেকে রক্ষার চেষ্টা করলে হাসান স্যার ওসব ভুলে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এক পর্যায়ে মৌ পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে দেয়ারও পরিকল্পনা করেন। তখন হাসান স্যার তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখায়। স্যার বলেন, তুমি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করো আমি তোমাকে বিয়ে করবো। কিন্তু আমি ধর্মান্তরিত হতে রাজি না হলে তিনি নিজেই ধর্মান্তরিত হওয়ার ঘোষণা দিয়ে আমাকে ভোগ করার ষড়যন্ত্র করতে থাকে। সুযোগটি আসে ২০১৩ সালের জুন মাসে। থিসিসের অংশ হিসেবে তার গ্রুপের ৪ ছাত্র ও ১ ছাত্রী মৌকে অধ্যাপক হাসান সাতক্ষীরার মুন্সিগঞ্জে একটি পুষ্টিবিষয়ক প্রকল্প পরিদর্শনে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থানকালে এক রাতে ঘটে সেই দুর্ঘটনা। ঘটনাটি বর্ণনা করতে গিয়ে অনেকটা আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন মৌ। তারপরও নিজেকে সামলে নিয়ে তিনি বলেন, পরিদর্শনকালে স্থানীয় সুশীলন রেস্ট হাউজে আমাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়। আমার রুমটি ছিল দোতলায়। আর ৪ ছাত্রসহ স্যার ছিলেন নিচতলায়। রাত ১০টার দিকে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমি আমার কক্ষে চলে যাই। বেশ কিছুক্ষণ পড়াশোনা করে ঘুমাতে যাবো এমন সময় দরজায় নক করার শব্দ পাই। প্রশ্ন করে জানতে পারি দরজায় হাসান স্যার দাঁড়িয়ে। সাত পাঁচ ভেবে শেষ পর্যন্ত দরজা খুলে দিই। হাসান স্যার ভেতরে ঢুকে নিজ থেকে দরজা লক করে দেন। তারপর অনেকটা জোর করে আমার সর্বস্ব লুট করেন। আমি বাধা দিলে তিনি আমাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন। বলেন, মাস্টার্স শেষ হলেই তোমাকে আমি বিয়ে করবো। সে রাতে স্যার ২/৩ বার আমাকে ভোগ করেন। স্যার রুম থেকে চলে যাবার পর নিজেকে বড্ড অপরাধী মনে হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল নিজেকে শেষ করে ফেলি। এ মুখ আর কাউকে দেখাতে পারবো না। কিন্তু পরীক্ষা আর পরিবারের কথা ভেবে চেপে যাই। এর পর থেকে স্যার বিভিন্ন অজুহাতে আমাকে ব্যবহার করেছে। যশোর শহর ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্যারের অফিস কক্ষে, যশোর ও খুলনা শহরের বিভিন্ন বাসা বাড়িতে স্যার আমাকে নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মতো বসবাস করেছেন। এক প্রশ্নের জবাবে অদিতি জানান, “প্রথমে স্যার নিজেকে অবিবাহিত বলে দাবি করেন। এক পর্যায়ে জানতে পারি তিনি বিবাহিত। এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে হাসান জানান, অনেক আগে পারিবারিক সিদ্ধান্তে তার বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকে তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তেমন কোন সম্পর্ক নেই। সে তার স্ত্রীকে ডিভোর্স দিয়ে আমাকে বিয়ে করবেন। শুধু আমার মাস্টার্স পরীক্ষাটা শেষ হলেই সব চূড়ান্ত হবে। আমিও তাকে বিশ্বাস করে সব উজাড় করে দিয়েছিলাম। আসলে আমি হাসানের প্রতিটি কথা বিশ্বাস করেছিলাম। কিন্তু একটি ঘটনার পর বুঝতে পারি সে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করেছে। আসলে সে একজন লম্পট চরিত্রের লোক। তার কাজই হচ্ছে নানা ভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে বা প্রেমের অভিনয় করে ছাত্রী পটানো। তারপর সময় আর সুযোগ বুঝে ওই ছাত্রীর সর্বস্ব লুটে নেয়া।”
অদিতি জানান, “তার বাইরেও বিভাগের একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে ওই লম্পট নানা অজুহাতে শারীরিক সম্পর্ক গড়েছেন। লোক লজ্জার ভয়ে তারা মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না। আর এসব বিষয়ে আমার কাছে কোন তথ্যপ্রমাণ না থাকায় আমিও ওই ছাত্রীদের পক্ষে দাঁড়াতে পারছি না।” অপর এক প্রশ্নের জবাবে অদিতি বলেন, দীর্ঘ দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে হাসান আমার সঙ্গে স্বামীর অভিনয় করেছে। সে একজন পাকা অভিনেতা। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে তার মধ্যে আমি পরিবর্তন লক্ষ্য করতে শুরু করি। সে আমাকে ওয়েটিংয়ে রেখে অপর মেয়েদের সঙ্গে কথা বলতো। প্রায়ই সে আমাকে না জানিয়ে অন্য মেয়েকে নিয়ে ঘুরতে যেত। তার ফোন ঘণ্টার পর ঘণ্টা ওয়েটিংয়ে থাকতো। এসব বিষয়ে প্রশ্ন করলে সে রেগে যেত। আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতো। এমনকি সে আমার গায়ে পর্যন্ত হাত ওঠানোর চেষ্টা করেছে। এক পর্যায়ে হাসান আমাকে এড়িয়ে চলতে শুরু করে। সর্বশেষ গত ২৮শে ফেব্রুয়ারি আমি উপশহরে হাসানের বাড়িতে যাই। দেখি সেখানে তার স্ত্রী নুসরাত এ্যানি ও তার মেয়ে চারু অবস্থান করছে। আমাকে দেখে নুসরাত চমকে ওঠেন। হাসান প্রসঙ্গ তুলতেই সে আমাকে সব খুলে বলেন। নুসরাত জানান, “সে আগে থেকেই অদিতি আর হাসানের সম্পর্কের কথা জানতো। নুসরাত বলেন, আসলে হাসান একজন লম্পট ও দুশ্চরিত্রের অধিকারী। সে এর আগেও একাধিক মেয়ের সর্বনাশ করেছে। এসব বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করায় সে তার মেয়ে চারুকে বহুবার গলাটিপে মেরে ফেলার ভান করে তার স্ত্রীকে ব্ল্যাকমেইল করেছে। তাকে ইমোশনালি ব্ল্যাকমেইল করে তার মুখ বন্ধ রাখতে বাধ্য করেছে।” এদিকে মৌয়ের কাছে মুখোশ উন্মোচন হয়ে পড়লে হাসান তার কিছু পোষা গুণ্ডা দিয়ে অদিতি বিশ্বাস মৌকে ক্ষতি করার চেষ্টা করেন। সে তার বিভাগের একাধিক ছাত্রকে অদিতির পেছনে লেলিয়ে দিয়েছেন যারা প্রতিনিয়ত অদিতিকে নানা ভাবে প্রাণনাশের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন বলে অদিতি দাবি করেন। ফলে বর্তমানে অদিতি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে জানান।
এক প্রশ্নের জবাবে অদিতি বলেন, “আমার তো সব শেষ হয়ে গেছে। এখন আমার কাছে জীবন আর মরণের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। এসব ঘটনা জানার পর আমার সমাজ বা ধর্ম আমাকে হয়তো গ্রহণ করবে না। আমার জীবন সম্পর্কে এখন আমাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তাই আমি স্থির করেছি ওই লম্পটের উপযুক্ত শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আমার লড়াই চলবে।”
তিনি জানান, ইতিমধ্যে তিনি ওই লম্পট শিক্ষকের মুখোশ উন্মোচন করতে ও উপযুক্ত বিচার প্রার্থনা করে যবিপ্রবি’র ভিসি বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন। আবেদনপত্রের সঙ্গে শিক্ষক হাসানের সঙ্গে তার বিভিন্ন রোমাঞ্চকর মুহূর্তের তোলা কিছু ছবি, মোবাইল ফোনে কথাবার্তার অডিও এবং বেশ কিছু যৌন উত্তেজনাপূর্ণ এসএমএস ডকুমেন্ট হিসেবে জমা দিয়েছেন। তিনি এই ঘটনার উপযুক্ত বিচার প্রার্থনা করেন।
এদিকে এ ঘটনা জানাজানি হওয়ায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উঠেপড়ে লেগেছে। এদিকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ওই শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একাংশ যবিপ্রবি’র উপদেষ্টাসহ উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও প্রক্টরের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেছে। প্রদর্শন করেছে বিক্ষোভ মিছিল।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, গত ২৪শে মার্চ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সৈয়দ মাহফুজ আল হাসানের বিরুদ্ধে স্নাতকোত্তরের ছাত্রী অদিতি বিশ্বাস মৌ যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলে। ওই ছাত্রী অভিযোগ করেন ‘বিয়ে ও প্রশ্ন দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সৈয়দ মাহফুজ আল হাসান তার সঙ্গে দুই বছর ধরে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়েছেন’। যা প্রমাণসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। এনিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কিন্তু তদন্ত কমিটি তদন্ত না করেই সবকিছু স্থগিত রাখেন। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয় মাইক্রো বায়োলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ইকবাল কবীর জাহিদকে। সদস্য করা হয় মাইক্রো বায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সেলিনা আক্তার ও ফিসারিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মীর মোশাররফ হোসেনকে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে গত ২ মাসের মধ্যে এ কমিটি তাদের কার্যক্রম শুরু করেনি।
এদিকে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষী শিক্ষকের শাস্তি না হওয়ায় গত বুধবার থেকে হয়রানির শিকার ওই শিক্ষার্থীসহ তার আরও আট বন্ধু আন্দোলনে নেমেছে। তারা দোষী শিক্ষকের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। সে সময় ক্যাম্পাসে উপস্থিত একাধিক সাংবাদিককে যৌন হয়রানির শিকার ওই ছাত্রী জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করা অবস্থায় কোন ছাত্রী তার বিভাগীয় স্যারের বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলতে পারে না। তিনি বলেন, বিয়ের প্রলোভন, পরীক্ষার প্রশ্নপত্র দেয়া ও থিসিসে সর্বোচ্চ নম্বর দেয়ার কথা বলে তার সঙ্গে ওই লম্পট শিক্ষক যা করেছে তা যেন আর কোন শিক্ষার্থীর সঙ্গে না করতে পারে সে জন্য তিনি ওই শিক্ষকের শাস্তি ও বিচার দাবি করেন।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত শিক্ষক সৈয়দ মাহফুজ আল হাসান জানান, “দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে তার বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র চলছে এই ঘটনা তারই অংশ। একটি পক্ষ ওই ছাত্রীকে ব্যবহার করে এসব মনগড়া অভিযোগ উত্থাপন করছে। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্ত করছে। দীর্ঘ আড়াই মাস ধরে তারা তদন্ত চালাচ্ছে। তিনি দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। থিসিসের ছাত্রী হিসেবে তার সঙ্গে যতটুকু সম্পর্ক থাকা উচিত তার চেয়ে কোন অতিরিক্ত সম্পর্ক আমার ছিল না। তাছাড়া, সে যে প্রশ্নপত্র সম্পর্কিত অভিযোগ তুলছে তা ২ বছর আগে শেষ হয়েছে কি কারণে, কাদের ইন্ধনে কেন এসব সে করছে তা বোধগম্য নয়। ওই ছাত্রী তার কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে এ বিষয়ে আন্দোলন করারও চেষ্টা চালাচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন। তিনি বলেন, যেহেতু বিষয়টি ততদন্তাধীন। ফলে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা ঠিক হবে না। তবে তিনি আশা করেন তদন্তে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে। ”
ছাত্রীকে যৌন হয়রানির বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ইকবাল কবীর জাহিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তদন্ত মাঝপথে আছে। কমিটির এক সদস্য ভারতে আছেন। অপর সদস্যের বাবা সম্প্রতি মারা গেছেন। তিনি ছুটিতে আছেন। ফলে একা তদন্ত করা যায় না। এ কারণে তদন্ত একটু থমকে আছে। কমিটির অপর দুই সদস্য আসলে ফের কাজ শুরু হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন অতীতের ধারাবাহিকতায় তিনি সত্য উদঘাটন করে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিবেন।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) রেজিস্ট্রার আহসান হাবীব জানান, তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পরই এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ছাত্রদের স্মারকলিপি দেয়া সম্পর্কে তিনি বলেন, কিছু শিক্ষার্থী স্মারকলিপি দিয়েছে। কিন্তু যেহেতু বিষয়টি তদন্তাধীন। ফলে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। তিনি তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের অপেক্ষা করার পরামর্শ দেন।
No comments