গাছের ডাল ভাঙায় এমন শাস্তি! by শরিফুল হাসান
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে শিমু আক্তার । ছবি: শরিফুল হাসান |
বিছানায়
যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে মেয়েটি। দুই পা ভেঙে গেছে। গোড়ালি থেকে ওপর
পর্যন্ত প্লাস্টার করা। নাকের ভেতর নল লাগানো। মুখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে
রক্ত জমে আছে। একটু পর পর পানি পানি বলে কাতরাচ্ছে। আজ রোববার সকাল ১০টার
দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে এই দৃশ্য দেখা গেল।
না, কোনো দুর্ঘটনায় আহত হয়নি শিমু আক্তার নামের মেয়েটি। বাড়িওয়ালির নির্যাতনের শিকার হয়ে সে এখন হাসপাতালে বলে দাবি করেছে শিমু। সে অভিযোগ করে বাড়ির মেহেদিগাছের পাতা ছিঁড়তে গিয়ে ফুলগাছের একটি ডাল ভেঙে ফেলায় তাকে বাড়িওয়ালি পিটিয়ে তিনতলা থেকে নিচে ফেলে দিয়েছে।
ঘটনাস্থল ভাসানটেকের ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের শহীদ বদিউজ্জামান সড়কের এ/পি ২৭৯/২/ক নম্বর বাড়ি। বাড়িটি অবসরপ্রাপ্ত একজন সেনা কর্মকর্তার। তাঁর স্ত্রী আয়েশা বেগমের বিরুদ্ধেই মেয়েটিকে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় রাজধানীর ভাসানটেক থানায় একটি মামলা হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, ঘটনার পর থেকে বাড়িওয়ালি পলাতক।
মামলার সূত্র এবং মেয়েটির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মেয়েটির বাড়ি জামালপুরের মাদারগঞ্জের কয়রনা গ্রামে। ছোটবেলায় মা হারায় সে। বাবা দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন। এর পর প্রতিবেশী মিজানুর রহমান তাকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। ছোটবেলা থেকে তাঁর বাড়িতেই কাজ করছে শিমু। বছর দুয়েক আগে মিজানুর রহমান ভাষানটেকের ওই সেনা কর্মকর্তার বাসায় ভাড়া থাকা শুরু করেন।
শিমু কাঁদতে কাঁদতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি যে বাসায় কাজ করতাম সেই বাসার গৃহকর্ত্রী আমাকে মোটামুটি আদর করত। কিন্তু ওই বাড়ির মালিকের স্ত্রী (আয়েশা আক্তার) কারণে-অকারণে আমাকে বকত। শনিবার দুপুরের আগে বাড়ির উঠান থেকে আমি কয়েকটা মেহেদি পাতা আনতে গেলে টবের একটি ফুলগাছের ডাল ভেঙে যায়। সেটা দেখে বাড়ির মালিকের স্ত্রী আমাকে বাড়ির গ্যারেজে নিয়ে মারধর করে। এর পর রাতে আমাকে আবার ডেকে পাঠায়। আমাকে ছাদে নিয়ে গিয়ে বলে তোর সঙ্গে কথা আছে। এর পর আমাকে আবারও মারতে থাকে। আমি তখন তাকে খামচি দিয়ে বাঁচার চেষ্টা করি। কিন্তু আমাকে জোর করে মারতে মারতে ছাদ থেকে ফেলে দেয়।’
মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনার কয়েক দিন আগেই আমার স্ত্রী বাড়িতে যায়। আমি অফিস করে এসে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম। যখন ঘটনা ঘটে, তখন আমার মা বাসায় ছিল। হঠাৎ করে বাড়িওয়ালি শিমুকে ডেকে পাঠায়। তখন আমার মা বলে, যদি ডেকে থাকে তাহলে শুনে আয় কেন ডাকে। এর কিছুক্ষণ পরেই বাড়ির দারোয়ানসহ সবার চিৎকার শুনে নিচে গিয়ে দেখি শিমু পড়ে আছে। আমরা অজ্ঞান অবস্থায় তাকে কচুক্ষেতের হাইটেক হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানকার ডাক্তাররা অবস্থা গুরুতর বলে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যেতে বলেন। এর পর আমরা রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি।’
মেয়েটি বর্তমানে ২০৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। সেখানকার চিকিৎসক আশরাফউদ্দিন খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘মেয়েটির শরীরের অবস্থা দেখেই বোঝা যাচ্ছে তাকে ওপর থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। তার দুই পায়ের গোড়ালি ভেঙে গেছে। মেরুদণ্ডের একটি হাড় সরে গেছে। পেটের ভেতর রক্ত জমে আছে। এমন অবস্থায় চাইলেও অস্ত্রোপচার করা যাচ্ছে না। আমরা মেয়েটিকে পর্যবেক্ষণে রেখেছি।’
ঘটনার পর থেকেই আয়েশা বেগম বাড়িতে নেই। তাঁর স্বামী অবসরপ্রাপ্ত ওই সেনা কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ওই বাড়িতে থাকি না। এ বিষয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই। ঘটনাস্থলে গেলেই আপনারা সব জানতে পারবেন। এ বিষয়ে আমার কোনো কথা নেই।’
ভাষানটেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) এ বি এম আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। আমরা মামলার তদন্ত করছি। আইন অনুযায়ী আমরা সবকিছু করব।’
না, কোনো দুর্ঘটনায় আহত হয়নি শিমু আক্তার নামের মেয়েটি। বাড়িওয়ালির নির্যাতনের শিকার হয়ে সে এখন হাসপাতালে বলে দাবি করেছে শিমু। সে অভিযোগ করে বাড়ির মেহেদিগাছের পাতা ছিঁড়তে গিয়ে ফুলগাছের একটি ডাল ভেঙে ফেলায় তাকে বাড়িওয়ালি পিটিয়ে তিনতলা থেকে নিচে ফেলে দিয়েছে।
ঘটনাস্থল ভাসানটেকের ঢাকা ক্যান্টনমেন্টের শহীদ বদিউজ্জামান সড়কের এ/পি ২৭৯/২/ক নম্বর বাড়ি। বাড়িটি অবসরপ্রাপ্ত একজন সেনা কর্মকর্তার। তাঁর স্ত্রী আয়েশা বেগমের বিরুদ্ধেই মেয়েটিকে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় রাজধানীর ভাসানটেক থানায় একটি মামলা হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, ঘটনার পর থেকে বাড়িওয়ালি পলাতক।
মামলার সূত্র এবং মেয়েটির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মেয়েটির বাড়ি জামালপুরের মাদারগঞ্জের কয়রনা গ্রামে। ছোটবেলায় মা হারায় সে। বাবা দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন। এর পর প্রতিবেশী মিজানুর রহমান তাকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। ছোটবেলা থেকে তাঁর বাড়িতেই কাজ করছে শিমু। বছর দুয়েক আগে মিজানুর রহমান ভাষানটেকের ওই সেনা কর্মকর্তার বাসায় ভাড়া থাকা শুরু করেন।
শিমু কাঁদতে কাঁদতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি যে বাসায় কাজ করতাম সেই বাসার গৃহকর্ত্রী আমাকে মোটামুটি আদর করত। কিন্তু ওই বাড়ির মালিকের স্ত্রী (আয়েশা আক্তার) কারণে-অকারণে আমাকে বকত। শনিবার দুপুরের আগে বাড়ির উঠান থেকে আমি কয়েকটা মেহেদি পাতা আনতে গেলে টবের একটি ফুলগাছের ডাল ভেঙে যায়। সেটা দেখে বাড়ির মালিকের স্ত্রী আমাকে বাড়ির গ্যারেজে নিয়ে মারধর করে। এর পর রাতে আমাকে আবার ডেকে পাঠায়। আমাকে ছাদে নিয়ে গিয়ে বলে তোর সঙ্গে কথা আছে। এর পর আমাকে আবারও মারতে থাকে। আমি তখন তাকে খামচি দিয়ে বাঁচার চেষ্টা করি। কিন্তু আমাকে জোর করে মারতে মারতে ছাদ থেকে ফেলে দেয়।’
মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনার কয়েক দিন আগেই আমার স্ত্রী বাড়িতে যায়। আমি অফিস করে এসে বিশ্রাম নিচ্ছিলাম। যখন ঘটনা ঘটে, তখন আমার মা বাসায় ছিল। হঠাৎ করে বাড়িওয়ালি শিমুকে ডেকে পাঠায়। তখন আমার মা বলে, যদি ডেকে থাকে তাহলে শুনে আয় কেন ডাকে। এর কিছুক্ষণ পরেই বাড়ির দারোয়ানসহ সবার চিৎকার শুনে নিচে গিয়ে দেখি শিমু পড়ে আছে। আমরা অজ্ঞান অবস্থায় তাকে কচুক্ষেতের হাইটেক হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানকার ডাক্তাররা অবস্থা গুরুতর বলে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যেতে বলেন। এর পর আমরা রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি।’
মেয়েটি বর্তমানে ২০৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। সেখানকার চিকিৎসক আশরাফউদ্দিন খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘মেয়েটির শরীরের অবস্থা দেখেই বোঝা যাচ্ছে তাকে ওপর থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। তার দুই পায়ের গোড়ালি ভেঙে গেছে। মেরুদণ্ডের একটি হাড় সরে গেছে। পেটের ভেতর রক্ত জমে আছে। এমন অবস্থায় চাইলেও অস্ত্রোপচার করা যাচ্ছে না। আমরা মেয়েটিকে পর্যবেক্ষণে রেখেছি।’
ঘটনার পর থেকেই আয়েশা বেগম বাড়িতে নেই। তাঁর স্বামী অবসরপ্রাপ্ত ওই সেনা কর্মকর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ওই বাড়িতে থাকি না। এ বিষয়ে আমার কোনো বক্তব্য নেই। ঘটনাস্থলে গেলেই আপনারা সব জানতে পারবেন। এ বিষয়ে আমার কোনো কথা নেই।’
ভাষানটেক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) এ বি এম আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গেছে। আমরা মামলার তদন্ত করছি। আইন অনুযায়ী আমরা সবকিছু করব।’
No comments