ছাত্রলীগের দখলে মঞ্চ
সিলেটের
সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বেগবান করতে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের
ঐকান্তিক আগ্রহে জেলা পরিষদ নির্মাণ করেছিল ‘মুক্ত প্রাঙ্গণ’। নগরের
রিকাবীবাজার এলাকায় কবি নজরুল অডিটরিয়াম (মিলনায়তন) লাগোয়া মঞ্চটি গত ৩
এপ্রিল অর্থমন্ত্রী নিজেই উদ্বোধন করেন।
উদ্বোধনের পর থেকেই এটি সংস্কৃতিকর্মীদের জন্য উন্মুক্ত থাকার কথা থাকলেও পরদিন থেকে মুক্তমঞ্চটির দখল নিয়েছে ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মী। বিষয়টি মুক্ত প্রাঙ্গণ ও মিলনায়তন বরাদ্দ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসনকে জানানো হলেও সংস্কৃতিকর্মীরা কোনো প্রতিকার পাননি বলে অভিযোগ করেছেন।
সিলেটের আটটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রায় ২০ জন কর্মী বলেন, শুধু মুক্ত প্রাঙ্গণের দখলই নয়, মিলনায়তনেও সাংস্কৃতিক কোনো অনুষ্ঠান করতে চাইলে ছাত্রলীগ কর্মীদের চাঁদা দিতে হয়। চাহিদামতো চাঁদা দিতে না পারলে ছাত্রলীগ কর্মীরা মিলনায়তনে দর্শনার্থীদের প্রবেশে বাধা দেন, গাড়ি পার্কিং করতে দেন না।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মিলনায়তন এবং মুক্ত প্রাঙ্গণ দুই স্থানের কোনোটিতে অনুষ্ঠান করতে হলে সংস্কৃতিকর্মী কিংবা সংগঠনকে জেলা প্রশাসন থেকে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা পরিশোধ করে অনুমোদন আনতে হয়। সম্প্রতি মুক্ত প্রাঙ্গণটি নতুনভাবে নির্মাণের পাশাপাশি মিলনায়তনটি পুনঃসংস্কার করা হয়। উদ্বোধনের পর গত এক মাসে প্রায় ১০টি সংগঠন সেখানে অনুষ্ঠান করেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন নাট্যকর্মী জানান, টাকার বিনিময়ে জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে আসা সত্ত্বেও প্রায় প্রতিটি সাংস্কৃতিক সংগঠনকে ছাত্রলীগ কর্মীদের ‘ম্যানেজ’ করে অনুষ্ঠান করতে হয়েছে। এর পরও অকারণে ছাত্রলীগ কর্মীরা সংস্কৃতিকর্মীদের কটূক্তি এমনকি শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত পর্যন্ত করেছে।
সর্বশেষ ১ থেকে ৩ মে নবশিখা নাট্যদলের আয়োজনে শিহাব শাহীন পরিচালিত ছুঁয়ে দিলে মন চলচ্চিত্রের তিন দিনব্যাপী প্রদর্শনী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রদর্শনী চলাকালে ছাত্রলীগ কর্মীরা মুক্ত প্রাঙ্গণের সামনে কয়েকটি বেঞ্চ পেতে সেখানে গাঁজার আড্ডা বসান। এ সময় তাঁরা দর্শনার্থীদের সঙ্গে রূঢ় ব্যবহার করেন এবং মুক্ত প্রাঙ্গণ চত্বরে গাড়ি পার্কিংয়ে বাধা দেন। প্রদর্শনীটি সুষ্ঠুভাবে শেষ করতে আয়োজকেরা ছাত্রলীগ কর্মীদের চাহিদা অনুযায়ী তাঁদের হাতে পাঁচ হাজার টাকা তুলে দেন।
নবশিখা নাট্যদলের একজন সংগঠক অভিযোগ করেন, মুক্ত প্রাঙ্গণের সামনে আড্ডাবাজ ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক সুবায়ের আহমদ ওরফে সুহেল অন্যতম। তাঁর হাতেই তিনি নগদ পাঁচ হাজার টাকা তুলে দিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য সুবায়ের আহমদের মুঠোফোনে কয়েক দফা যোগাযোগ করা হলেও তিনি মুঠোফোন ধরেননি।
৪, ৫ ও ৬ মে সন্ধ্যায় সরেজমিনে মুক্ত প্রাঙ্গণের চত্বরে তিনটি বেঞ্চ পেতে অন্তত ১৫-২০ জন যুবককে আড্ডা দিতে দেখা গেল। সন্ধ্যার পর সংস্কৃতিকর্মী কিংবা সাধারণ পথচারী কেউ মুক্ত প্রাঙ্গণের সীমানার ভেতরে ঢুকলে ছাত্রলীগ কর্মীরা তাঁদের লাঞ্ছিত করছেন। এসব কর্মীর প্রায় সবাই ছাত্রলীগ নেতা পারভেজ আহমদের অনুসারী বলে স্থানীয়দের কয়েকজন নিশ্চিত করেছেন।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে অভিযোগ অস্বীকার করে পারভেজ আহমদ বলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে আমাকে হেয় করার জন্য একটি ভুল ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগ তোলা হয়েছে। এ স্থানে এসে বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ এবং সংস্কৃতিকর্মীরা আড্ডা দেন। আমরাও মাঝেমধ্যে সেখানে গিয়ে সবার মতোই আড্ডা দিই, চা পান করি। এর বাইরে অন্যসব অভিযোগের তথ্য সঠিক নয়।’ তবে পারভেজ ছাত্রলীগের বর্তমান জেলা ও মহানগর কমিটির সদস্য নন জানিয়ে বলেন, ‘আগামী কমিটিতে আমি পদপ্রত্যাশী।’
ছাত্রলীগ কর্মীদের উপদ্রবের কথা উল্লেখ করে গত ২৭ এপ্রিল জেলা প্রশাসকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্থানটি সংস্কৃতিকর্মীদের আড্ডার জন্য, এটি বহিরাগতদের আড্ডা দেওয়ার জন্য নির্মিত হয়নি। অভিযোগটি মহানগর পুলিশের কাছে পাঠানো হয়েছে। এখন পুলিশ প্রশাসনই বহিরাগতদের ঠেকাতে উদ্যোগ নেবে।’
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) রহমত উল্লাহ বলেন, ‘অভিযোগটি এখনো হাতে আসেনি। অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উদ্বোধনের পর থেকেই এটি সংস্কৃতিকর্মীদের জন্য উন্মুক্ত থাকার কথা থাকলেও পরদিন থেকে মুক্তমঞ্চটির দখল নিয়েছে ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মী। বিষয়টি মুক্ত প্রাঙ্গণ ও মিলনায়তন বরাদ্দ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ জেলা প্রশাসনকে জানানো হলেও সংস্কৃতিকর্মীরা কোনো প্রতিকার পাননি বলে অভিযোগ করেছেন।
সিলেটের আটটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রায় ২০ জন কর্মী বলেন, শুধু মুক্ত প্রাঙ্গণের দখলই নয়, মিলনায়তনেও সাংস্কৃতিক কোনো অনুষ্ঠান করতে চাইলে ছাত্রলীগ কর্মীদের চাঁদা দিতে হয়। চাহিদামতো চাঁদা দিতে না পারলে ছাত্রলীগ কর্মীরা মিলনায়তনে দর্শনার্থীদের প্রবেশে বাধা দেন, গাড়ি পার্কিং করতে দেন না।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মিলনায়তন এবং মুক্ত প্রাঙ্গণ দুই স্থানের কোনোটিতে অনুষ্ঠান করতে হলে সংস্কৃতিকর্মী কিংবা সংগঠনকে জেলা প্রশাসন থেকে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা পরিশোধ করে অনুমোদন আনতে হয়। সম্প্রতি মুক্ত প্রাঙ্গণটি নতুনভাবে নির্মাণের পাশাপাশি মিলনায়তনটি পুনঃসংস্কার করা হয়। উদ্বোধনের পর গত এক মাসে প্রায় ১০টি সংগঠন সেখানে অনুষ্ঠান করেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন নাট্যকর্মী জানান, টাকার বিনিময়ে জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে আসা সত্ত্বেও প্রায় প্রতিটি সাংস্কৃতিক সংগঠনকে ছাত্রলীগ কর্মীদের ‘ম্যানেজ’ করে অনুষ্ঠান করতে হয়েছে। এর পরও অকারণে ছাত্রলীগ কর্মীরা সংস্কৃতিকর্মীদের কটূক্তি এমনকি শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত পর্যন্ত করেছে।
সর্বশেষ ১ থেকে ৩ মে নবশিখা নাট্যদলের আয়োজনে শিহাব শাহীন পরিচালিত ছুঁয়ে দিলে মন চলচ্চিত্রের তিন দিনব্যাপী প্রদর্শনী মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রদর্শনী চলাকালে ছাত্রলীগ কর্মীরা মুক্ত প্রাঙ্গণের সামনে কয়েকটি বেঞ্চ পেতে সেখানে গাঁজার আড্ডা বসান। এ সময় তাঁরা দর্শনার্থীদের সঙ্গে রূঢ় ব্যবহার করেন এবং মুক্ত প্রাঙ্গণ চত্বরে গাড়ি পার্কিংয়ে বাধা দেন। প্রদর্শনীটি সুষ্ঠুভাবে শেষ করতে আয়োজকেরা ছাত্রলীগ কর্মীদের চাহিদা অনুযায়ী তাঁদের হাতে পাঁচ হাজার টাকা তুলে দেন।
নবশিখা নাট্যদলের একজন সংগঠক অভিযোগ করেন, মুক্ত প্রাঙ্গণের সামনে আড্ডাবাজ ছাত্রলীগ নেতাদের মধ্যে সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সহসম্পাদক সুবায়ের আহমদ ওরফে সুহেল অন্যতম। তাঁর হাতেই তিনি নগদ পাঁচ হাজার টাকা তুলে দিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য সুবায়ের আহমদের মুঠোফোনে কয়েক দফা যোগাযোগ করা হলেও তিনি মুঠোফোন ধরেননি।
৪, ৫ ও ৬ মে সন্ধ্যায় সরেজমিনে মুক্ত প্রাঙ্গণের চত্বরে তিনটি বেঞ্চ পেতে অন্তত ১৫-২০ জন যুবককে আড্ডা দিতে দেখা গেল। সন্ধ্যার পর সংস্কৃতিকর্মী কিংবা সাধারণ পথচারী কেউ মুক্ত প্রাঙ্গণের সীমানার ভেতরে ঢুকলে ছাত্রলীগ কর্মীরা তাঁদের লাঞ্ছিত করছেন। এসব কর্মীর প্রায় সবাই ছাত্রলীগ নেতা পারভেজ আহমদের অনুসারী বলে স্থানীয়দের কয়েকজন নিশ্চিত করেছেন।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে অভিযোগ অস্বীকার করে পারভেজ আহমদ বলেন, ‘রাজনৈতিকভাবে আমাকে হেয় করার জন্য একটি ভুল ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগ তোলা হয়েছে। এ স্থানে এসে বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ এবং সংস্কৃতিকর্মীরা আড্ডা দেন। আমরাও মাঝেমধ্যে সেখানে গিয়ে সবার মতোই আড্ডা দিই, চা পান করি। এর বাইরে অন্যসব অভিযোগের তথ্য সঠিক নয়।’ তবে পারভেজ ছাত্রলীগের বর্তমান জেলা ও মহানগর কমিটির সদস্য নন জানিয়ে বলেন, ‘আগামী কমিটিতে আমি পদপ্রত্যাশী।’
ছাত্রলীগ কর্মীদের উপদ্রবের কথা উল্লেখ করে গত ২৭ এপ্রিল জেলা প্রশাসকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসক মো. শহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্থানটি সংস্কৃতিকর্মীদের আড্ডার জন্য, এটি বহিরাগতদের আড্ডা দেওয়ার জন্য নির্মিত হয়নি। অভিযোগটি মহানগর পুলিশের কাছে পাঠানো হয়েছে। এখন পুলিশ প্রশাসনই বহিরাগতদের ঠেকাতে উদ্যোগ নেবে।’
সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) রহমত উল্লাহ বলেন, ‘অভিযোগটি এখনো হাতে আসেনি। অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
No comments