সালাহউদ্দিনের নিখোঁজ রহস্য ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব by এম কে বাশার
সালাহউদ্দিন
আহমেদকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে ১০ মার্চ মঙ্গলবার রাত ১০টায়
রাজধানীর উত্তরার একটি বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে তার পরিবার
অভিযোগ করেছে। সালাহউদ্দিনকে তুলে নেয়ার পর থেকেই তার পরিবারের সদস্যরা
পুলিশ ও র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে খোঁজ নেন। কিন্তু
প্রতিটি সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে সালাহউদ্দিন আহমেদ নামে কাউকে তারা
আটক করেনি। এরপর তার পরিবারের পক্ষ থেকে প্রথমে গুলশান থানায় ও পরে
উত্তরার (পশ্চিম) থানায় জিডি করতে গেলে পুলিশ জিডি নেয়নি। এরপর
সালাহউদ্দিনের স্ত্রী হাসিনা আহমেদ হাইকোর্টে রিট করেন। কিন্তু পুলিশের সব
শাখা ও র্যাবের পক্ষ থেকে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে বলা হয়েছে,
সালাহউদ্দিন আহমেদ তাদের হেফাজতে নেই।
অথচ সালাহউদ্দিন আহমেদকে গ্রেফতারের জন্য বেশ কিছু দিন ধরেই চেষ্টা করছিল পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এ জন্য একাধিকবার তার গুলশানের বাড়িতে পুলিশ গেছে, তল্লাশিও চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। তিনি জানিয়েছেন, সালাহউদ্দিন নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন আগে তার দুই গাড়িচালক ও ব্যক্তিগত কর্মীকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের বাসাবাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়। কিন্তু এখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, তারা তার খোঁজ পাচ্ছে না। অথচ পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ ও সাংবাদিকদের সাথে আশপাশের লোকজনের কথোপকথনে জানা যায়, সালাহউদ্দিনকে অপহরণের রাত অর্থাৎ ১০ মার্চ রাতে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ১৩ বি নম্বর সড়কের একটি বাসা থেকে তাকে ধরে নেয়ার আগে একটি বাহিনীর পিকআপ সেখানে গিয়েছিল। ওই ভ্যানে আসা ব্যক্তিরা ১৩ বি নম্বর সড়কটির অবস্থান জানতে চেয়েছিলেন সেখানে কর্তব্যরত ৩ নম্বর সেক্টর কল্যাণ সমিতির নিয়োগ করা নিরাপত্তা কর্মীদের কাছে। কর্তব্যরত নিরাপত্তা কর্মীদের একজন সোমবার রাতে (১৬ মার্চ) প্রথম আলোকে বলেন, আনুমানিক রাত ৯টার দিকে তিনি উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টর কল্যাণ সমিতির কার্যালয়ের কাছেই কর্তব্য পালন করছিলেন। তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি পিকআপ ভ্যান এসে সেখানে থামে। তিনি বলেন, ‘বাহিনীর গাড়ি দেখে আমি আগায়া যাই। স্যারেরা আমাকে বলল, ১৩ বি নম্বর রোড কোন দিকে। আমি সালাম দিলাম। দেখায়া দিয়া বললাম, স্যার মাঠের পাশ দিয়া যাইতে হবে। এরপর ওরা চলে গেল।’ এসব প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণে সালাহউদ্দিনের নিখোঁজের ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে।
এখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, তারা জানে না সালাহউদ্দিন কোথায়। তা হলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নের উদ্রেক হয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিছু না জানলে সালাহউদ্দিন সাহেবের গাড়িচালককে তারা আটক করেছিল কেন? কেন ‘নিখোঁজের’ আগে তার গুলশানের বাসায় ও আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে একাধিকবার তাকে ধরার জন্য তল্লাশি চালানো হয়েছে? এখন স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠবে দেশের একজন গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক হঠাৎ করে কোথায় উধাও হয়ে যাবেন? এত দিনেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তার সন্ধান পাচ্ছে না কেন? আমাদের দেশটি কি এখন সত্যি সত্যি মগের মুল্লুকে পরিণত হয়েছে? দেশে কি কোনো দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ তথা সরকার নেই? হাইকোর্টের রুলের ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যে বক্তব্য দিয়েছে, তা কতটুকু বিশ্বাসযোগ্য ভেবে দেখা প্রয়োজন।
সালাহউদ্দিনের স্ত্রী ও পরিবার তাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আকুল আবেদন জানিয়েছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, সালাহউদ্দিনকে খুঁজে না পাওয়া রাজনীতির জন্য অশুভ লক্ষণ। জাতীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের অপহরণের তালিকায় সর্বশেষ যুক্ত হলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে দলের কর্মসূচি ঘোষণা করে আসছিলেন। এর আগে এই দায়িত্ব পালন করছিলেন দলের আরেক যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তাকে গ্রেফতার করে রিমান্ডের পর রিমান্ডে নিয়ে চরম নির্যাতন করা হচ্ছে। সালাহউদ্দিনের নিখোঁজ রহস্য উদঘাটনের দায়িত্ব সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। দেশের প্রতিটি নাগরিকের জানমাল ইজ্জত আব্রুর নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব সরকারের। এ দায়িত্ব সরকার কিছুতেই এড়াতে পারে না। এ ধরনের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি মোটেই কাম্য নয়। সরকার অবিলম্বে সালাহউদ্দিন আহমেদকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে তাদের যথাযথ দায়িত্ব পালন করবেÑ এটাই দেশবাসী আশা করে। সালাহউদ্দিনের অন্তর্ধানের সাথে সরকারের ভাবমূর্তি জড়িত। তাই এই রহস্য উন্মোচন করে সরকার তার ভাবমর্যাদা রক্ষা করবেÑ এটাই সবার প্রত্যাশা।
অথচ সালাহউদ্দিন আহমেদকে গ্রেফতারের জন্য বেশ কিছু দিন ধরেই চেষ্টা করছিল পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এ জন্য একাধিকবার তার গুলশানের বাড়িতে পুলিশ গেছে, তল্লাশিও চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। তিনি জানিয়েছেন, সালাহউদ্দিন নিখোঁজ হওয়ার তিন দিন আগে তার দুই গাড়িচালক ও ব্যক্তিগত কর্মীকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের বাসাবাড়িতেও তল্লাশি চালানো হয়। কিন্তু এখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, তারা তার খোঁজ পাচ্ছে না। অথচ পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ ও সাংবাদিকদের সাথে আশপাশের লোকজনের কথোপকথনে জানা যায়, সালাহউদ্দিনকে অপহরণের রাত অর্থাৎ ১০ মার্চ রাতে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ১৩ বি নম্বর সড়কের একটি বাসা থেকে তাকে ধরে নেয়ার আগে একটি বাহিনীর পিকআপ সেখানে গিয়েছিল। ওই ভ্যানে আসা ব্যক্তিরা ১৩ বি নম্বর সড়কটির অবস্থান জানতে চেয়েছিলেন সেখানে কর্তব্যরত ৩ নম্বর সেক্টর কল্যাণ সমিতির নিয়োগ করা নিরাপত্তা কর্মীদের কাছে। কর্তব্যরত নিরাপত্তা কর্মীদের একজন সোমবার রাতে (১৬ মার্চ) প্রথম আলোকে বলেন, আনুমানিক রাত ৯টার দিকে তিনি উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টর কল্যাণ সমিতির কার্যালয়ের কাছেই কর্তব্য পালন করছিলেন। তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি পিকআপ ভ্যান এসে সেখানে থামে। তিনি বলেন, ‘বাহিনীর গাড়ি দেখে আমি আগায়া যাই। স্যারেরা আমাকে বলল, ১৩ বি নম্বর রোড কোন দিকে। আমি সালাম দিলাম। দেখায়া দিয়া বললাম, স্যার মাঠের পাশ দিয়া যাইতে হবে। এরপর ওরা চলে গেল।’ এসব প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণে সালাহউদ্দিনের নিখোঁজের ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে।
এখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, তারা জানে না সালাহউদ্দিন কোথায়। তা হলে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নের উদ্রেক হয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিছু না জানলে সালাহউদ্দিন সাহেবের গাড়িচালককে তারা আটক করেছিল কেন? কেন ‘নিখোঁজের’ আগে তার গুলশানের বাসায় ও আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে একাধিকবার তাকে ধরার জন্য তল্লাশি চালানো হয়েছে? এখন স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠবে দেশের একজন গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক হঠাৎ করে কোথায় উধাও হয়ে যাবেন? এত দিনেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তার সন্ধান পাচ্ছে না কেন? আমাদের দেশটি কি এখন সত্যি সত্যি মগের মুল্লুকে পরিণত হয়েছে? দেশে কি কোনো দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ তথা সরকার নেই? হাইকোর্টের রুলের ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যে বক্তব্য দিয়েছে, তা কতটুকু বিশ্বাসযোগ্য ভেবে দেখা প্রয়োজন।
সালাহউদ্দিনের স্ত্রী ও পরিবার তাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আকুল আবেদন জানিয়েছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। আওয়ামী লীগ নেতা সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, সালাহউদ্দিনকে খুঁজে না পাওয়া রাজনীতির জন্য অশুভ লক্ষণ। জাতীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের অপহরণের তালিকায় সর্বশেষ যুক্ত হলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে দলের কর্মসূচি ঘোষণা করে আসছিলেন। এর আগে এই দায়িত্ব পালন করছিলেন দলের আরেক যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তাকে গ্রেফতার করে রিমান্ডের পর রিমান্ডে নিয়ে চরম নির্যাতন করা হচ্ছে। সালাহউদ্দিনের নিখোঁজ রহস্য উদঘাটনের দায়িত্ব সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। দেশের প্রতিটি নাগরিকের জানমাল ইজ্জত আব্রুর নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব সরকারের। এ দায়িত্ব সরকার কিছুতেই এড়াতে পারে না। এ ধরনের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি মোটেই কাম্য নয়। সরকার অবিলম্বে সালাহউদ্দিন আহমেদকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে তাদের যথাযথ দায়িত্ব পালন করবেÑ এটাই দেশবাসী আশা করে। সালাহউদ্দিনের অন্তর্ধানের সাথে সরকারের ভাবমূর্তি জড়িত। তাই এই রহস্য উন্মোচন করে সরকার তার ভাবমর্যাদা রক্ষা করবেÑ এটাই সবার প্রত্যাশা।
No comments