নোয়াম চমস্কির সাক্ষাৎকার, যুক্তরাষ্ট্রে একটাই দল আছে: বিজনেস পার্টি by মোহাম্মদ হাসান শরীফ
প্রশ্ন
: সাম্প্রতিক এক নিবন্ধে আপনি বলেছেন, ওবামা স্রেফ একজন উদার-রণশীল,
মডারেট রিপাবলিকান এবং নিক্সন প্রশাসন ছিল মার্কিন ইতিহাসের সবচেয়ে উদার।
চমস্কি : নিক্সন ছিলেন দারুণ লোক। মানদণ্ড বদলে গেছে। বর্তমানের মানদণ্ডে নিক্সনকে উদার মনে হয় এবং আইজেনহাওয়ারকে মনে হয় প্রচণ্ড চরম।
প্রশ্ন : অর্থাৎ ওবামা বামঘরানার প্রেসিডেন্ট নন?
চমস্কি : যুক্তরাষ্ট্রে বাম পরিভাষাটি কেন্দ্র থেকে মডারেট হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কারণ দেখার স্থানটি বদলে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রে একটি কৌতুক প্রচলিত আছে তা হলো দেশটি আসলে একদলীয় রাষ্ট্র (বিজনেস পার্টি), যার দু’টি উপদল আছে (ডেমোক্র্যাটস ও রিপাবলিকানস)। এটা একসময় সত্য ছিল। এখনো দেশটিতে একদলীয় রাষ্ট্রই রয়েছে। তবে মাত্র একটি উপদল আছে, সেটা হলো মডারেট রিপাবলিকানস। এটাই একমাত্র সক্রিয় রাজনৈতিক দল। ডেমোক্র্যাটস নামে যাদের অভিহিত করা হয়, তাদের আসলে মডারেট রিপাবলিকানস বলা যায়।
প্রশ্ন : বর্তমানে নব্যরণশীলেরা কী করছেন?
চমস্কি : দলটি দু’টি ল্য অর্জন করতে কাজ করছে : একটি হলো দেশটিকে ধ্বংস করা এবং এ কাজটি ডেমোক্র্যাটরা করছে বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা। দ্বিতীয়টা হলো ধনী ও মতাধরদের সহায়তা করা। তারা ইভ্যানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানসহ অন্যদের িেপয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। তারা শ্বেতাঙ্গদের মনে এই ভয়ও ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে যে, নিজ দেশে তারা সংখ্যালঘু হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে হিসপানিকদের সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।
প্রশ্ন : মুসলমানদের ব্যাপারেও কি?
চমস্কি : মুসলিমদের ব্যাপারেও। তবে হিসপানিকরা হলো আসল ভয়ের কারণ।
প্রশ্ন : আপনি কি এখনো আশাবাদী হওয়ার কারণ খুঁজে পান?
চমস্কি : কিছু পাওয়া যায়। আশাবাদী হওয়ার কারণের অভাব না থাকলেও মানুষকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা টিকে থাকবে নাকি তাদের সামনে আসা দু’টি মারাত্মক ও আসন্ন হুমকি স্রেফ পরিত্যাগ করবে। হুমকি দুটি হলো : পরিবেশগত বিপর্যয় এবং পারমাণবিক যুদ্ধ। পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকি বাড়ছেই। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, আমরা এখন পর্যন্ত যুদ্ধ এড়াতে পেরেছি। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক অস্ত্রের আধুনিকায়ন ও উন্নত করার কাজে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে। রাশিয়াও একই কাজ করছে, ছোট ছোট শক্তিগুলোও তা করছে।
প্রশ্ন : কিন্তু পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে বলতে গেলে কেউই কথা বলছে না।
চমস্কি : কৌশলগত বিশ্লেষক, অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ এবং সংশ্লিষ্টরা ছাড়া কেউ তা নিয়ে কথা বলছে না। অথচ ভয়াবহ সব হুমকি রয়েছে। একটি হলো ইউক্রেন নিয়ে। আমরা আশা করতে পারি, শক্তিগুলো পিছু হটবে, কিন্তু তারা যে তা করবেই, এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। আমরা জানি, এসব শক্তি কাছাকাছি হয়েছিল। একটা মাত্র উদাহরণ দেই। ১৯৮০-এর দশকের শুরুর দিকে, রিগ্যান প্রশাসন রাশিয়ার প্রতিরাব্যবস্থা যাচাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এর জের ধরে তারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্রসহ বিমান ও নৌ হামলা চালানোর ভান করল। তারা কী করতে চায়, তা রাশিয়াকে বলেনি, কারণ তারা ভান করেনি, বরং প্রকৃত হুমকিকে উসকে দিতে চেয়েছিল। তা ছিল চরম উত্তেজনার মুহূর্ত। রিগ্যান সবেমাত্র তারকা যুদ্ধের মতো কৌশলগত প্রতিরা উদ্যোগের কথা ঘোষণা করেছেন, যেটাকে সব পরে বিশ্লেষকেরা প্রথম আঘাত হানার অস্ত্র হিসেবে উপলব্ধি করেছিল। কার্যকর বিবেচিত হলে, সেটা পেণাস্ত্র প্রতিরা হিসেবে নয়, বরং প্রথম আঘাতের জন্য ঢাল হিসেবে ব্যবহৃত হতো। রুশ আর্কাইভ উন্মক্ত করার প্রোপটে মার্কিন গোয়েন্দারা এখন বুঝতে পারছেন যে, হুমকিটি ছিল মারাত্মক। একটি গোয়েন্দা বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিলেন তারা।
প্রশ্ন : তাহলে কি স্রেফ ভাগ্যের জোরে আমরা বেঁচে আছি?
চমস্কি : আমি এখন আপনার প্রথম প্রশ্নে যাচ্ছি : আশাবাদ? এটা সব সময়ই একই কাহিনী। বিশ্ব যতই বদলাক না কেন, বিষয়টা সেই একই থাকে। আপনার হাতে বিকল্প থাকে মূলত দু’টি : আপনি হতাশাবাদী হতে বলতে পারেন, কোনো আশা নেই, তারপর সব চেষ্টা ছেড়ে দিতে পারেন। এ েেত্র আপনি খারাপ পরিস্থিতির প্রতিই কিছু ভূমিকা রাখলেন। কিংবা আপনি যতটুকুই আশা থাক না কেন, (সব সময়ই কিছু আশা থাকেই) সেটা উপলব্ধি করে আপনার ভূমিকাটা সর্বাত্মকভাবে পালন করলেন। এটা করার মাধ্যমে আপনি বিপর্যয় এড়াতে সম হতে পারেন কিংবা আরো উন্নত বিশ্ব গড়ার কাছে একটু এগিয়ে গেলেন।
প্রশ্ন : সার্বিকভাবে আশাবাদী হওয়ার মতো কি কিছু আছে?
চমস্কি : সফলতা আছে, কেবল আমরা নই। বিশেষ করে সহিংসতা, আগ্রাসন ও অসাম্যের প্রবল বিরোধিতার কারণে তা হচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সিভিল রাইটস মুভমেন্টের কথা বলা যায়। তাতে তাৎপর্যপূর্ণ সাফল্য এসেছে।
প্রশ্ন : গত ৫০ বছরের মধ্যে এখন ইউরোপ সবচেয়ে অন্ধকার অধ্যায়ে ডুবে গেছে।
চমেস্কি : তাৎপর্যপূর্ণ সাফল্য এলেও তা এসেছে একটি বাধার বিপরীতে। বিশ্বের জনসংখ্যার বিরুদ্ধে ওই বাধাটি খারাপ অবস্থায় পড়ে ১৯৭০-এর দশকের শেষ দিকে এবং ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে রিগ্যান ও থ্যাচারের আমলে। এখন মন্দার মধ্যে ওইসব অর্থনৈতিক উন্মাদনামূলক নীতির ভয়াবহ শিকার হচ্ছে ইউরোপ। ওইসব নীতির কারণে কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের ধারণাকে তিগ্রস্ত করছে, শ্রমকে দুর্বল করছে, ধনী ও সুবিধাভোগী লোকদের শক্তি বাড়িয়ে দিচ্ছে।
প্রশ্ন : সমাজ এই পরিস্থিতির বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে শুরু করেছে। আপনি কি মনে করেন, পরিবর্তন সম্ভব?
চমস্কি : নব্যউদারবাদী আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ দেখা যাচ্ছে। এটা একটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়। সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা ঘটছে দণি আমেরিকায়। আমি বলতে চাচ্ছি, ৫০০ বছর ধরে দণি আমেরিকা ছিল পাশ্চাত্যের (অতিসম্প্রতি আমেরিকার) আধিপত্যে। ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে তারা ওই জোয়াল ভাঙতে চাচ্ছে। এ ঘটনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ লাতিন আমেরিকা ছিল ওয়াশিংটনের সবচেয়ে বশ্য ও আনুষ্ঠানিক শাসনের আওতায়।
প্রশ্ন : আঙিনায়...
চমস্কি : লাতিন আমেরিকা সেখান থেকে উঠে এসেছে, পুরোপুরি পারেনি অবশ্য। তবে অর্ধ সহস্রাব্দের মধ্যে এই প্রথম এখানকার দেশগুলো স্বাধীনতার পূর্বশর্ত একত্রিত হওয়ার দিকে পদপে নিচ্ছে। আগে তারা ছিল পরস্পর থেকে আলাদা, এখন তারা ঐক্যবদ্ধ হতে শুরু করেছে। একটি প্রতীক হলো, লাতিন আমেরিকায় যুক্তরাষ্ট্র তার সব সামরিক ঘাঁটি খুইয়ে ফেলেছে, শেষেরটি ছিল ইকুয়েডর-সংশ্লিষ্ট। এখানকার দেশগুলো আমেরিকা ও কানাডার বিরুদ্ধে একত্রিত হচ্ছে, অতীতে যা কখনো হয়নি।
প্রশ্ন : গুয়ান্তানামো এখনো একটি ইস্যু। আপনি কি মনে করেন, কিউবাকে যুক্তরাষ্ট্র দ্বীপটি ফিরিয়ে দেবে?
চমস্কি : আমি নিশ্চিত, কিউবা সেটি ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করবে।
চমস্কি : নিক্সন ছিলেন দারুণ লোক। মানদণ্ড বদলে গেছে। বর্তমানের মানদণ্ডে নিক্সনকে উদার মনে হয় এবং আইজেনহাওয়ারকে মনে হয় প্রচণ্ড চরম।
প্রশ্ন : অর্থাৎ ওবামা বামঘরানার প্রেসিডেন্ট নন?
চমস্কি : যুক্তরাষ্ট্রে বাম পরিভাষাটি কেন্দ্র থেকে মডারেট হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কারণ দেখার স্থানটি বদলে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রে একটি কৌতুক প্রচলিত আছে তা হলো দেশটি আসলে একদলীয় রাষ্ট্র (বিজনেস পার্টি), যার দু’টি উপদল আছে (ডেমোক্র্যাটস ও রিপাবলিকানস)। এটা একসময় সত্য ছিল। এখনো দেশটিতে একদলীয় রাষ্ট্রই রয়েছে। তবে মাত্র একটি উপদল আছে, সেটা হলো মডারেট রিপাবলিকানস। এটাই একমাত্র সক্রিয় রাজনৈতিক দল। ডেমোক্র্যাটস নামে যাদের অভিহিত করা হয়, তাদের আসলে মডারেট রিপাবলিকানস বলা যায়।
প্রশ্ন : বর্তমানে নব্যরণশীলেরা কী করছেন?
চমস্কি : দলটি দু’টি ল্য অর্জন করতে কাজ করছে : একটি হলো দেশটিকে ধ্বংস করা এবং এ কাজটি ডেমোক্র্যাটরা করছে বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা। দ্বিতীয়টা হলো ধনী ও মতাধরদের সহায়তা করা। তারা ইভ্যানজেলিক্যাল খ্রিষ্টানসহ অন্যদের িেপয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে। তারা শ্বেতাঙ্গদের মনে এই ভয়ও ধরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে যে, নিজ দেশে তারা সংখ্যালঘু হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে হিসপানিকদের সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।
প্রশ্ন : মুসলমানদের ব্যাপারেও কি?
চমস্কি : মুসলিমদের ব্যাপারেও। তবে হিসপানিকরা হলো আসল ভয়ের কারণ।
প্রশ্ন : আপনি কি এখনো আশাবাদী হওয়ার কারণ খুঁজে পান?
চমস্কি : কিছু পাওয়া যায়। আশাবাদী হওয়ার কারণের অভাব না থাকলেও মানুষকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা টিকে থাকবে নাকি তাদের সামনে আসা দু’টি মারাত্মক ও আসন্ন হুমকি স্রেফ পরিত্যাগ করবে। হুমকি দুটি হলো : পরিবেশগত বিপর্যয় এবং পারমাণবিক যুদ্ধ। পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকি বাড়ছেই। তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো, আমরা এখন পর্যন্ত যুদ্ধ এড়াতে পেরেছি। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, যুক্তরাষ্ট্র পারমাণবিক অস্ত্রের আধুনিকায়ন ও উন্নত করার কাজে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলার ব্যয় করছে। রাশিয়াও একই কাজ করছে, ছোট ছোট শক্তিগুলোও তা করছে।
প্রশ্ন : কিন্তু পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে বলতে গেলে কেউই কথা বলছে না।
চমস্কি : কৌশলগত বিশ্লেষক, অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞ এবং সংশ্লিষ্টরা ছাড়া কেউ তা নিয়ে কথা বলছে না। অথচ ভয়াবহ সব হুমকি রয়েছে। একটি হলো ইউক্রেন নিয়ে। আমরা আশা করতে পারি, শক্তিগুলো পিছু হটবে, কিন্তু তারা যে তা করবেই, এমন কোনো নিশ্চয়তা নেই। আমরা জানি, এসব শক্তি কাছাকাছি হয়েছিল। একটা মাত্র উদাহরণ দেই। ১৯৮০-এর দশকের শুরুর দিকে, রিগ্যান প্রশাসন রাশিয়ার প্রতিরাব্যবস্থা যাচাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এর জের ধরে তারা রাশিয়ার বিরুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্রসহ বিমান ও নৌ হামলা চালানোর ভান করল। তারা কী করতে চায়, তা রাশিয়াকে বলেনি, কারণ তারা ভান করেনি, বরং প্রকৃত হুমকিকে উসকে দিতে চেয়েছিল। তা ছিল চরম উত্তেজনার মুহূর্ত। রিগ্যান সবেমাত্র তারকা যুদ্ধের মতো কৌশলগত প্রতিরা উদ্যোগের কথা ঘোষণা করেছেন, যেটাকে সব পরে বিশ্লেষকেরা প্রথম আঘাত হানার অস্ত্র হিসেবে উপলব্ধি করেছিল। কার্যকর বিবেচিত হলে, সেটা পেণাস্ত্র প্রতিরা হিসেবে নয়, বরং প্রথম আঘাতের জন্য ঢাল হিসেবে ব্যবহৃত হতো। রুশ আর্কাইভ উন্মক্ত করার প্রোপটে মার্কিন গোয়েন্দারা এখন বুঝতে পারছেন যে, হুমকিটি ছিল মারাত্মক। একটি গোয়েন্দা বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিলেন তারা।
প্রশ্ন : তাহলে কি স্রেফ ভাগ্যের জোরে আমরা বেঁচে আছি?
চমস্কি : আমি এখন আপনার প্রথম প্রশ্নে যাচ্ছি : আশাবাদ? এটা সব সময়ই একই কাহিনী। বিশ্ব যতই বদলাক না কেন, বিষয়টা সেই একই থাকে। আপনার হাতে বিকল্প থাকে মূলত দু’টি : আপনি হতাশাবাদী হতে বলতে পারেন, কোনো আশা নেই, তারপর সব চেষ্টা ছেড়ে দিতে পারেন। এ েেত্র আপনি খারাপ পরিস্থিতির প্রতিই কিছু ভূমিকা রাখলেন। কিংবা আপনি যতটুকুই আশা থাক না কেন, (সব সময়ই কিছু আশা থাকেই) সেটা উপলব্ধি করে আপনার ভূমিকাটা সর্বাত্মকভাবে পালন করলেন। এটা করার মাধ্যমে আপনি বিপর্যয় এড়াতে সম হতে পারেন কিংবা আরো উন্নত বিশ্ব গড়ার কাছে একটু এগিয়ে গেলেন।
প্রশ্ন : সার্বিকভাবে আশাবাদী হওয়ার মতো কি কিছু আছে?
চমস্কি : সফলতা আছে, কেবল আমরা নই। বিশেষ করে সহিংসতা, আগ্রাসন ও অসাম্যের প্রবল বিরোধিতার কারণে তা হচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সিভিল রাইটস মুভমেন্টের কথা বলা যায়। তাতে তাৎপর্যপূর্ণ সাফল্য এসেছে।
প্রশ্ন : গত ৫০ বছরের মধ্যে এখন ইউরোপ সবচেয়ে অন্ধকার অধ্যায়ে ডুবে গেছে।
চমেস্কি : তাৎপর্যপূর্ণ সাফল্য এলেও তা এসেছে একটি বাধার বিপরীতে। বিশ্বের জনসংখ্যার বিরুদ্ধে ওই বাধাটি খারাপ অবস্থায় পড়ে ১৯৭০-এর দশকের শেষ দিকে এবং ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে রিগ্যান ও থ্যাচারের আমলে। এখন মন্দার মধ্যে ওইসব অর্থনৈতিক উন্মাদনামূলক নীতির ভয়াবহ শিকার হচ্ছে ইউরোপ। ওইসব নীতির কারণে কল্যাণমূলক রাষ্ট্রের ধারণাকে তিগ্রস্ত করছে, শ্রমকে দুর্বল করছে, ধনী ও সুবিধাভোগী লোকদের শক্তি বাড়িয়ে দিচ্ছে।
প্রশ্ন : সমাজ এই পরিস্থিতির বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে শুরু করেছে। আপনি কি মনে করেন, পরিবর্তন সম্ভব?
চমস্কি : নব্যউদারবাদী আক্রমণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ দেখা যাচ্ছে। এটা একটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বিষয়। সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা ঘটছে দণি আমেরিকায়। আমি বলতে চাচ্ছি, ৫০০ বছর ধরে দণি আমেরিকা ছিল পাশ্চাত্যের (অতিসম্প্রতি আমেরিকার) আধিপত্যে। ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে তারা ওই জোয়াল ভাঙতে চাচ্ছে। এ ঘটনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ লাতিন আমেরিকা ছিল ওয়াশিংটনের সবচেয়ে বশ্য ও আনুষ্ঠানিক শাসনের আওতায়।
প্রশ্ন : আঙিনায়...
চমস্কি : লাতিন আমেরিকা সেখান থেকে উঠে এসেছে, পুরোপুরি পারেনি অবশ্য। তবে অর্ধ সহস্রাব্দের মধ্যে এই প্রথম এখানকার দেশগুলো স্বাধীনতার পূর্বশর্ত একত্রিত হওয়ার দিকে পদপে নিচ্ছে। আগে তারা ছিল পরস্পর থেকে আলাদা, এখন তারা ঐক্যবদ্ধ হতে শুরু করেছে। একটি প্রতীক হলো, লাতিন আমেরিকায় যুক্তরাষ্ট্র তার সব সামরিক ঘাঁটি খুইয়ে ফেলেছে, শেষেরটি ছিল ইকুয়েডর-সংশ্লিষ্ট। এখানকার দেশগুলো আমেরিকা ও কানাডার বিরুদ্ধে একত্রিত হচ্ছে, অতীতে যা কখনো হয়নি।
প্রশ্ন : গুয়ান্তানামো এখনো একটি ইস্যু। আপনি কি মনে করেন, কিউবাকে যুক্তরাষ্ট্র দ্বীপটি ফিরিয়ে দেবে?
চমস্কি : আমি নিশ্চিত, কিউবা সেটি ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করবে।
No comments