রাতের ঢাকায় দুর্বৃত্তরা তৎপর by জিলানী মিলটন
রাজধানীতে
পুলিশের তৎপরতার মধ্যেও থেমে নেই দুর্বৃত্তরা। চেকপোস্ট, তল্লাশি আর টহল
উপেক্ষা করে দুর্বৃত্তরা রাতে রাজধানী চষে বেড়াচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর
চোখ ফাঁকি দিয়ে দুর্বৃত্তরা মাইক্রো কিংবা বাস নিয়ে নেমে পড়ছে ডাকাতি,
ছিনতাইসহ নানা অপরাধে। যাত্রীদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে টাকাসহ মূল্যবান
জিনিসপত্র। একই সাথে দুর্বৃত্তদের হাতে হতাহতের ঘটনাও ঘটছে। পিন নম্বরের
জন্য হাতুড়িপেটা : রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে ৮ মার্চ রাতে চলন্ত বাসে
যাত্রীদের সর্বস্ব লুটে নিয়ে তাদের হাত-পা বেঁধে চার ঘণ্টা ধরে নির্যাতন
করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় যাত্রীরা সব কিছু দেয়ার পরও ব্যাংকের ক্রেডিট
কার্ডের পিন নম্বর না পেয়ে হাতুড়িপেটা করে। দুর্বৃত্তদের হামলায় আহতদের
মধ্যে একজন অনলাইন পত্রিকা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সাংবাদিক হাসান
বিপুল। তিনি ওই বাসে করে উত্তরা থেকে মহাখালী যাচ্ছিলেন। রাত ১০টা থেকে
পৌনে ২টা পর্যন্ত যাত্রীদের বেঁধে মেঝেতে ফেলে রেখে বাস নিয়ে বিমানবন্দর
থেকে কাকলী মোড় হয়ে রাজধানীর বিভিন্ন ব্যস্ত সড়কে ঘুরে বেড়ায় দুর্বৃত্তরা।
পিটুনিতে আহত পাঁচ যাত্রীকে শেষ পর্যন্ত সাভার-কালিয়াকৈর সড়কে রাস্তার পাশে
ফেলে দিয়ে চলে যায়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তারা ঢাকায় ফেরেন। দুর্বৃত্তরা
যাত্রীদের আটকিয়ে দীর্ঘক্ষণ একটি বাস নিয়ে রাস্তায় ছোটাছুটি করলেও
রাজধানীজুড়ে পুলিশের চেকপোস্ট আর তল্লাশির মধ্যে ধরা পড়েনি তারা।
ভুক্তভোগী হাসান বিপুল জানান, ওই বাসের চালক তার সহকারীসহ অন্যরা এ ডাকাতির সাথে সরাসরি যুক্ত। রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি যখন উত্তরার আজমপুর থেকে মহাখালীগামী বাসটিতে ওঠেন, তখনো ২০ থেকে ২৫ আরোহী ছিলেন ওই বাসে। বাসটি বিমানবন্দর পার হওয়ার পর তাদের মধ্যে ১৫-২০ জন মিলে পাঁচ যাত্রীকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে আটকায়। তখনই বুঝতে পারেন তিনি ডাকাতের কবলে পড়েছেন। ডাকাতরা তাদের চোখ আর হাত পিছমোড়া করে বেঁধে মাথা নিচু করে রাখে। কাকলী বা চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকায় বাসটি ইউ টার্ন নিয়ে ফের বিমানবন্দরের দিকে যেতে থাকে। এর মধ্যে দুর্বৃত্তরা যাত্রীদের সাথে থাকা জিনিসপত্র, টাকা-পয়সা আর এটিএম কার্ড নিয়ে নেয়। এরপর যাত্রীদের কাছ থেকে পাওয়া এটিএম কার্ডগুলো নিয়ে দুর্বৃত্তদের কয়েকজন নেমে যায় এবং রাস্তার পাশের বুথগুলোতে গিয়ে টাকা তোলার চেষ্টা করে। বাসে থাকা দলের অন্যদের মাধ্যমে তারা সংশ্লিষ্ট যাত্রীর কাছে পিন নম্বর জানতে চায়। যাত্রীরা পিন নম্বর না বলায় শুরু হয় নির্যাতন। কিল-ঘুসির পাশাপাশি হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করা হয় শরীরের বিভিন্ন স্থানে। এমনকি মেরে ফেলারও হুমকি দেয়া হয় বলে জানান বিপুল। তিনি জানান, তার কাছে তিনটি ব্যাংকের কার্ড ছিল। এর মধ্যে দুইটি কার্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল। তিনি ওই দুইটি কার্ডের পিন তাদের বলেন। সেগুলো কাজ না করায় দুর্বৃত্তরা তাকে বেদম মারধর করে।
যাত্রীদের অপহরণ করে মুক্তিপণ পাওয়া যাবে কি না- এমন বিষয়েও দুর্বৃত্তরা আলোচনা করে বলে জানান বিপুল। একপর্যায়ে আটকে রাখা যাত্রীদের মেঝেতে শুইয়ে রেখে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে থাকে দুর্বৃত্তরা। রাত পৌনে ২টার দিকে তাদের সাভার-কালিয়াকৈর সড়কের পূর্ণিমা সিনেমা হলের কাছে রাস্তার পাশে ফেলে দেয়া হয়। তখনো তাদের হাত-চোখ বাঁধা। দুর্বৃত্তরা বাস নিয়ে চলে যাওয়ার পর ফেলে যাওয়া যাত্রীদের চিৎকারে পাশের একটি ট্রাকের গ্যারেজ থেকে কয়েকজন এগিয়ে আসেন। তারাই পাঁচজনকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। পরে স্থানীয় একটি সিএনজি ফিলিং স্টেশন থেকে একটি প্রাইভেটকারের সহায়তায় রাতে মহাখালী ফিরে আসেন বিপুল ও অন্যরা। এভাবে প্রায় দিনই রাতে রাজধানীতে ঘটছে এ ঘটনা। দুর্বৃত্তদের শিকার একাধিক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা গেছে, মূলত সন্ধ্যার পর থেকেই রাজধানীতে দুর্বৃত্তদের তৎপরতা শুরু হয়। গুলিস্তান, পল্টন, কাকরাইল, ফার্মগেইট, সংসদ ভবন এলাকা, মিরপুর, তেজগাঁও, সাত রাস্তা, নাবিস্কো, মহাখালী, কাকলী, রামপুরা, বাড্ডা, গুলশান, খিলক্ষেত, বিমানবন্দর সড়ক, উত্তরা, আবদুল্লাহপুরসহ বিভিন্ন রাস্তায় দুর্বৃত্তরা যাত্রীবেশে মাইক্রো অথবা মিনিবাস নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। সন্ধ্যার পরে ঘরেফেরা মানুষ যানবাহনের অপেক্ষায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকেন। আর এ সুযোগে আগে থেকে যানবাহনে বসে থাকা দুর্বৃত্তরা হাঁকডাক করে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়া যাত্রীদের তুলে নেয়। এরপর কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগে দুর্বৃত্তরা ঝাঁপিয়ে পড়ে যাত্রীদের ওপর। সর্বস্ব কেড়ে নেয়ার পরে তাদের রড, হাতুড়িসহ বিভিন্ন অস্ত্র দিয়ে নির্যাতন চালানো হয়। অস্ত্রের মুখে আটকিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিভিন্ন সড়কে ঘুরে বেড়ায়। পরে সুবিধা মতো নির্জন স্থানে নিয়ে গাড়ি থেকে ফেলে দেয়। ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ করেন, দুর্বৃত্তরা তাদের নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ানোর সময় একাধিকবার পুলিশের চেকপোস্ট পার হতে দেখেছেন। কিন্তু কখনোই পুলিশের তল্লাশির মুখে পড়তে হয়নি।
রাজধানীতে রাতে প্রতিনিয়ত এই ঘটনা ঘটলেও দুর্বৃত্তরা পুলিশের হাতে আটক বা ধরা পড়ছে না। ঘটনার শিকার একাধিক ব্যক্তির অভিযোগ তারা এ ব্যাপারে থানায় জিডি অথবা মামলা করলেও পুলিশ কখনো তাদের সাথে যোগাযোগ করেনি। তাদের মালামাল উদ্ধার দূরে থাক; আজ পর্যন্ত দুর্বৃত্তদের কেউ ধরাও পড়েনি। আবার ভুক্তভোগী অনেকে কোনো প্রতিকার পাবেন না ধারণা করে পুলিশের শরণাপন্ন হননি।
ভুক্তভোগী হাসান বিপুল জানান, ওই বাসের চালক তার সহকারীসহ অন্যরা এ ডাকাতির সাথে সরাসরি যুক্ত। রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি যখন উত্তরার আজমপুর থেকে মহাখালীগামী বাসটিতে ওঠেন, তখনো ২০ থেকে ২৫ আরোহী ছিলেন ওই বাসে। বাসটি বিমানবন্দর পার হওয়ার পর তাদের মধ্যে ১৫-২০ জন মিলে পাঁচ যাত্রীকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে আটকায়। তখনই বুঝতে পারেন তিনি ডাকাতের কবলে পড়েছেন। ডাকাতরা তাদের চোখ আর হাত পিছমোড়া করে বেঁধে মাথা নিচু করে রাখে। কাকলী বা চেয়ারম্যান বাড়ি এলাকায় বাসটি ইউ টার্ন নিয়ে ফের বিমানবন্দরের দিকে যেতে থাকে। এর মধ্যে দুর্বৃত্তরা যাত্রীদের সাথে থাকা জিনিসপত্র, টাকা-পয়সা আর এটিএম কার্ড নিয়ে নেয়। এরপর যাত্রীদের কাছ থেকে পাওয়া এটিএম কার্ডগুলো নিয়ে দুর্বৃত্তদের কয়েকজন নেমে যায় এবং রাস্তার পাশের বুথগুলোতে গিয়ে টাকা তোলার চেষ্টা করে। বাসে থাকা দলের অন্যদের মাধ্যমে তারা সংশ্লিষ্ট যাত্রীর কাছে পিন নম্বর জানতে চায়। যাত্রীরা পিন নম্বর না বলায় শুরু হয় নির্যাতন। কিল-ঘুসির পাশাপাশি হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করা হয় শরীরের বিভিন্ন স্থানে। এমনকি মেরে ফেলারও হুমকি দেয়া হয় বলে জানান বিপুল। তিনি জানান, তার কাছে তিনটি ব্যাংকের কার্ড ছিল। এর মধ্যে দুইটি কার্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল। তিনি ওই দুইটি কার্ডের পিন তাদের বলেন। সেগুলো কাজ না করায় দুর্বৃত্তরা তাকে বেদম মারধর করে।
যাত্রীদের অপহরণ করে মুক্তিপণ পাওয়া যাবে কি না- এমন বিষয়েও দুর্বৃত্তরা আলোচনা করে বলে জানান বিপুল। একপর্যায়ে আটকে রাখা যাত্রীদের মেঝেতে শুইয়ে রেখে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতে থাকে দুর্বৃত্তরা। রাত পৌনে ২টার দিকে তাদের সাভার-কালিয়াকৈর সড়কের পূর্ণিমা সিনেমা হলের কাছে রাস্তার পাশে ফেলে দেয়া হয়। তখনো তাদের হাত-চোখ বাঁধা। দুর্বৃত্তরা বাস নিয়ে চলে যাওয়ার পর ফেলে যাওয়া যাত্রীদের চিৎকারে পাশের একটি ট্রাকের গ্যারেজ থেকে কয়েকজন এগিয়ে আসেন। তারাই পাঁচজনকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। পরে স্থানীয় একটি সিএনজি ফিলিং স্টেশন থেকে একটি প্রাইভেটকারের সহায়তায় রাতে মহাখালী ফিরে আসেন বিপুল ও অন্যরা। এভাবে প্রায় দিনই রাতে রাজধানীতে ঘটছে এ ঘটনা। দুর্বৃত্তদের শিকার একাধিক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা গেছে, মূলত সন্ধ্যার পর থেকেই রাজধানীতে দুর্বৃত্তদের তৎপরতা শুরু হয়। গুলিস্তান, পল্টন, কাকরাইল, ফার্মগেইট, সংসদ ভবন এলাকা, মিরপুর, তেজগাঁও, সাত রাস্তা, নাবিস্কো, মহাখালী, কাকলী, রামপুরা, বাড্ডা, গুলশান, খিলক্ষেত, বিমানবন্দর সড়ক, উত্তরা, আবদুল্লাহপুরসহ বিভিন্ন রাস্তায় দুর্বৃত্তরা যাত্রীবেশে মাইক্রো অথবা মিনিবাস নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। সন্ধ্যার পরে ঘরেফেরা মানুষ যানবাহনের অপেক্ষায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকেন। আর এ সুযোগে আগে থেকে যানবাহনে বসে থাকা দুর্বৃত্তরা হাঁকডাক করে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়া যাত্রীদের তুলে নেয়। এরপর কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগে দুর্বৃত্তরা ঝাঁপিয়ে পড়ে যাত্রীদের ওপর। সর্বস্ব কেড়ে নেয়ার পরে তাদের রড, হাতুড়িসহ বিভিন্ন অস্ত্র দিয়ে নির্যাতন চালানো হয়। অস্ত্রের মুখে আটকিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিভিন্ন সড়কে ঘুরে বেড়ায়। পরে সুবিধা মতো নির্জন স্থানে নিয়ে গাড়ি থেকে ফেলে দেয়। ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ করেন, দুর্বৃত্তরা তাদের নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ানোর সময় একাধিকবার পুলিশের চেকপোস্ট পার হতে দেখেছেন। কিন্তু কখনোই পুলিশের তল্লাশির মুখে পড়তে হয়নি।
রাজধানীতে রাতে প্রতিনিয়ত এই ঘটনা ঘটলেও দুর্বৃত্তরা পুলিশের হাতে আটক বা ধরা পড়ছে না। ঘটনার শিকার একাধিক ব্যক্তির অভিযোগ তারা এ ব্যাপারে থানায় জিডি অথবা মামলা করলেও পুলিশ কখনো তাদের সাথে যোগাযোগ করেনি। তাদের মালামাল উদ্ধার দূরে থাক; আজ পর্যন্ত দুর্বৃত্তদের কেউ ধরাও পড়েনি। আবার ভুক্তভোগী অনেকে কোনো প্রতিকার পাবেন না ধারণা করে পুলিশের শরণাপন্ন হননি।
No comments