ভুয়া প্রকল্পেই শূন্য জলবায়ু ফান্ড
ভুয়া
প্রকল্পের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের কোটি কোটি টাকা লুট
করে নিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। নামসর্বস্ব প্রকল্প দেখিয়ে একেকজন হাতিয়ে নিয়েছেন
এক থেকে দেড় কোটি টাকা। অথচ ফান্ড শূন্য করে নেয়া এ টাকার কোন সঠিক
হিসাব-নিকাশও নেই তাদের কাছে। মহাজোট সরকারের গত মেয়াদে (নবম জাতীয় সংসদ)
এসব অনিয়ম ঘটায় নতুন সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থাই
নিতে পারছেন না। গতকাল সংসদ সচিবালয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত
সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে তীব্র অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন
কমিটির সদস্যরা। তারা এ অভিযোগের তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত
ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি জানান। সংসদীয় কমিটির সভাপতি রমেশ চন্দ্র সেনের
সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, প্রতিমন্ত্রী
মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, এ কে এম ফজলুল হক, রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক,
মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও সেলিনা জাহান লিটা এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা
উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য এ কে এম ফজলুল হক সাংবাদিকদের
জানান, নবম সংসদের মেয়াদে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের টাকা খরচের কোন
হিসাবই নেই। বিষয়টি বৈঠকে উপস্থাপন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা ট্রাস্ট
ফান্ডের প্রতিনিধিদের কাছে জানতে চেয়েছেন যেসব টাকা গায়েব হয়েছে তার কোন
সন্ধান পাওয়া যাবে কিনা? এ বিষয়ে তারা কোন উত্তর দিতে পারেননি। তিনি জানান,
বৈঠকে উপস্থিত মন্ত্রীকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলা হলে তিনি
অপারগতা প্রকাশ করে বলেন, এটি আগের সরকারের মেয়াদে ঘটেছে। এতে এখন আর কিছু
করণীয় নেই। এবার জলবায়ু ফান্ডের টাকা সুনির্দিষ্ট করার প্রস্তাব করা হয়েছে
জানিয়ে তিনি বলেন, বছর শুরুর আগেই যে পরিমাণ টাকা ছাড় হবে তা সুনির্দিষ্ট
করে হিসাব রাখতে হবে। অন্যথায় প্রকল্প হাতে নিলেও তা সঠিক সময়ে শেষ করা যায়
না। এসব কারণে অনেক সময় বিভিন্ন প্রকল্প আলোর মুখই দেখতে পায় না বলে
অভিযোগ করেন তিনি। সংসদ সচিবালয় জানায়, বৈঠকে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট
ফান্ডের অর্থায়নে পরিচালিত প্রকল্পের ডিজাইনে কোন পরিবর্তন করতে হলে তা
বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টি বোর্ডকে জানানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
একই সঙ্গে এ ফান্ডের আওতায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্পগুলো দ্রুত
বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছে কমিটি। এ ছাড়া এ মন্ত্রণালয়ে সাড়ে ৮ হাজার জনবল
নিয়োগের বিষয়টিও উল্লেখ করা হয় বৈঠকে। কমিটি জনবল সঙ্কট সমস্যা সমাধানে
সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অতিদ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করে।
বৈঠকে গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলায় ব্রহ্মপুত্র নদের বামতীর ভাঙন রোধকল্পে
গৃহীত প্রকল্পের কাজও দ্রুত সম্পন্ন করার সুপারিশ করা হয়েছে।
No comments