রাজনীতিকদের সৃষ্ট সঙ্কট তাদেরই সমাধান করতে হবে by হারুন-আর-রশিদ
২৭শে
জানুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকের সম্পাদকীয় মতামত- এভাবে আর কতদিন- দমবন্ধ
অবস্থা থেকে দেশ ও জনগণকে মুক্তি দিন। এও লিখেছেন- সরকারের অগণতান্ত্রিক
আচরণের প্রতিবাদ করতে হবে জনগণকে সঙ্গে নিয়েই। কিন্তু সমস্যাটার মূল জায়গা
অর্থাৎ সমস্যার উৎপত্তিস্থল কোথায়, এ নিয়ে হাতেগোনা কয়েকজন মানুষ কথা
বলছেন। বাকিরা দলকানায় ভুগছেন। তারাও বিষয়টি জানেন কিন্তু দলের ঊর্ধ্বে উঠে
বক্তব্য দিতে পারছেন না- লিখতেও পারছেন না। বর্তমান সমস্যাটা পুরোপুরি
রাজনৈতিক। রাজনৈতিক সঙ্কটের কারণেই গত এক মাসে নিহত হয়েছেন ৬০ জন। দগ্ধ
হয়ে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে আরও অনেক নিরীহ মানুষ কাতরাচ্ছেন। এ দৃশ্য খুব
কষ্টকর ও বেদনাদায়ক। ৫ই জানুয়ারি ঢাকায় একটি সমাবেশ করতে দিলে কি এমন
ক্ষতি হতো। সমাবেশ করতে তো দেয়া হলোই না উল্টো বেগম জিয়াকে গুলশান
কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। প্রধান দুটো ফটকে তালা লাগিয়ে দেয়া হয়।
জলকামান-রায়টকার, পুলিশ ভ্যান ও ইট-বালু ভর্তি ট্রাক গুলশান কার্যালয়ে
আড়াআড়িভাবে রাখার দৃশ্য দেখেছে জাতি। তারপর পেপার স্প্রে নিক্ষেপ করা
অফিসের অভ্যন্তরে- যা সমস্যাটিকে আরও গভীরতর করে তুলেছে। গণতান্ত্রিক
বিশ্বে একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলকে সভা-সমাবেশ করতে না দেয়া, পার্টির
কেন্দ্রীয় অফিসে তালা দিয়ে রাখা, মানববন্ধন ও শান্তিপূর্ণ মিছিল করতে না
দেয়া, রাস্তায় নেতারা বের হলেই গ্রেপ্তার, মামলা-হামলা দেয়া, বিরোধী দলের
শীর্ষ নেতা খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কয়েকটি জায়গায় হুকুমের আসামির মামলা দেয়া
পরিস্থিতিকে আরও ঘোলাটে করে তুলছে। এখানে প্রশ্ন করতে হয়- সরকারি দল ও তার
অঙ্গসংগঠন এবং শরিক দল যদি ঢাকাসহ বাংলাদেশের সব শহরে জনসভা, সমাবেশ,
হরতালবিরোধী মিছিল করতে পারে এবং এ ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের
সহযোগী পার্টনার হিসাবে কাজ করে তাহলে অন্য রাজনৈতিক দল পারবে না কেন?
গণতন্ত্র কি শুধু সরকারি দলের জন্যই প্রযোজ্য, বৃহত্তম বিরোধী দলের
মাঠপর্যায়ে কথা বলার অধিকার নেই। অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে সারা দেশে ২৪
ঘণ্টায় বিরোধী দলের ২৫০০ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে (তথ্য সূত্র-প্রঃ
আলো-২২-০১-২০১৫)। অনেকে আত্মগোপনে আছেন। আজ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জাতীয় সংসদে
বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজিত সংসদ সদস্যরা- যারা নিজেরা নিজেদের ভোটাধিকার
প্রয়োগ করেননি, তারাই আজ ভোটের ও ভাতের অধিকার নিয়ে মিডিয়ায় তোলপাড়
ছড়াচ্ছেন। তারা বলছেন, খালেদা জিয়া জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করেছেন। বিএনপি
একটি সন্ত্রাসী দল। আমার জানামতে ভিন্নমত যদি একজন ব্যক্তিও থাকে- সে
রাজনীতি করুক বা না করুক, তার মতামত প্রকাশ করতে দেয়ার নামই গণতন্ত্র। ওই
একজন মানুষের বক্তব্যকে প্রকাশ করার মধ্যেই নিহিত রয়েছে গণতন্ত্রের
সৌন্দর্য ও শক্তি। বিরোধী কণ্ঠকে অফিসে ও মাঠপর্যায়ে স্তব্ধ করে দেয়াকে
কখনোই গণতন্ত্র বলা যাবে না। তালাবদ্ধ গণতন্ত্র দেশ ও জাতির কল্যাণ বয়ে আনে
না।
আমরা যদি দু’টো বড় দলের জনসমর্থন দেখি তাহলে সরকারি দলের ৫০% এবং সকল বিরোধী দলের ৫০%- আর বিএনপির যদি একা ৪০% জনসমর্থন থাকে, তাহলে তাকে সন্ত্রাসী দল হিসাবে আখ্যায়িত কিভাবে করি? যদি সেটা করি ৪০% জনগণকে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করার সামিল নয় কি?
২৫শে জানুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকে মতামত কলামে স্বাপ্নিক রায় নামের একজন পাঠক লিখেছেন, জাতিসংঘের উচিত আমাদের দেশের দুই দলকে চাপ দেয়ার পাশাপাশি ভারতকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক না গলানোর জন্য কড়া ভাষায় বলা। কারণ, এ ভারতই বাংলাদেশের ৫ই জানুয়ারির অবৈধ নির্বাচনের জন্য বেশির ভাগ দায়ী। এরশাদের কাছে সুজাতা সিং নামে একজন দূত পাঠিয়েছিলেন- আওয়ামী লীগকে সমর্থন জানানোর জন্য। এটিএম মোসলেহ উদ্দিন নামের এক পাঠক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন- সরকারের মুখের ভাষাও শারীরিক ভাষা (ইড়ফু ষধহমঁধমব) দেখে জনগণতো সঙ্কট সমাধানের কোন আশা পাচ্ছে না। আগের সপ্তাহেও আপনারা বলেছিলেন (সরকারি দল) আগামী সপ্তাহে সঙ্কট সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু হলো না। সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী বলেছেন, নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে সরকার দেখামাত্র গুলি করার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে- এ প্রসঙ্গে মো. ইমরান হোসেন লিখেছেন- দেশে গৃহযুদ্ধের সুস্পষ্ট আভাস পাচ্ছি। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সম্প্রতি শহীদ মিনারে সন্ত্রাস দমনে একটি সমাবেশ করেছে। এ খবরের পরিপ্রেক্ষিতে উক্ত পত্রিকায় মতামত কলামে তার বক্তব্য তুলে ধরেছেন। আবুযর গিফারি নামের এই পাঠক বলেছেন- বেসম্ভব দলকানা বুদ্ধিজীবীর আমদানি হচ্ছে ইদানীং। এটা আন্দোলন নয়- সন্ত্রাস মানলাম-কিন্তু এর দায় কার? বিএনপি আন্দোলন না করলে বলা হয় ‘মুরোদ’ নাই, জনসভা করতে চাইলে বলা হয়, অনুমতি নাই, মিছিল করলে পুলিশকে বলা হয় গুলি করো, অবরোধ-হরতাল করলে বলা হয় সন্ত্রাস। পার্টির কেন্দ্রীয় অফিসে আলোচনা করলে বলা হয়, সরকার উৎখাতে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তাহলে বিএনপি করবেটা কি? রফিকুল ইসলাম নামের এক পাঠক বলেছেন- যারা শহীদ মিনারে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভায় ছিল তারা সবাই শিক্ষিত, বিবেকবান মানুষ, প্রতিবাদের পাশাপাশি একবারও কেন বললেন না যে সরকারের উচিত আলোচনায় বসা এবং সকল দলের অংশগ্রহণে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। >>৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, শনিবার
আমরা যদি দু’টো বড় দলের জনসমর্থন দেখি তাহলে সরকারি দলের ৫০% এবং সকল বিরোধী দলের ৫০%- আর বিএনপির যদি একা ৪০% জনসমর্থন থাকে, তাহলে তাকে সন্ত্রাসী দল হিসাবে আখ্যায়িত কিভাবে করি? যদি সেটা করি ৪০% জনগণকে সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত করার সামিল নয় কি?
২৫শে জানুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকে মতামত কলামে স্বাপ্নিক রায় নামের একজন পাঠক লিখেছেন, জাতিসংঘের উচিত আমাদের দেশের দুই দলকে চাপ দেয়ার পাশাপাশি ভারতকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক না গলানোর জন্য কড়া ভাষায় বলা। কারণ, এ ভারতই বাংলাদেশের ৫ই জানুয়ারির অবৈধ নির্বাচনের জন্য বেশির ভাগ দায়ী। এরশাদের কাছে সুজাতা সিং নামে একজন দূত পাঠিয়েছিলেন- আওয়ামী লীগকে সমর্থন জানানোর জন্য। এটিএম মোসলেহ উদ্দিন নামের এক পাঠক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন- সরকারের মুখের ভাষাও শারীরিক ভাষা (ইড়ফু ষধহমঁধমব) দেখে জনগণতো সঙ্কট সমাধানের কোন আশা পাচ্ছে না। আগের সপ্তাহেও আপনারা বলেছিলেন (সরকারি দল) আগামী সপ্তাহে সঙ্কট সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু হলো না। সমাজকল্যাণমন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী বলেছেন, নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে সরকার দেখামাত্র গুলি করার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে- এ প্রসঙ্গে মো. ইমরান হোসেন লিখেছেন- দেশে গৃহযুদ্ধের সুস্পষ্ট আভাস পাচ্ছি। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট সম্প্রতি শহীদ মিনারে সন্ত্রাস দমনে একটি সমাবেশ করেছে। এ খবরের পরিপ্রেক্ষিতে উক্ত পত্রিকায় মতামত কলামে তার বক্তব্য তুলে ধরেছেন। আবুযর গিফারি নামের এই পাঠক বলেছেন- বেসম্ভব দলকানা বুদ্ধিজীবীর আমদানি হচ্ছে ইদানীং। এটা আন্দোলন নয়- সন্ত্রাস মানলাম-কিন্তু এর দায় কার? বিএনপি আন্দোলন না করলে বলা হয় ‘মুরোদ’ নাই, জনসভা করতে চাইলে বলা হয়, অনুমতি নাই, মিছিল করলে পুলিশকে বলা হয় গুলি করো, অবরোধ-হরতাল করলে বলা হয় সন্ত্রাস। পার্টির কেন্দ্রীয় অফিসে আলোচনা করলে বলা হয়, সরকার উৎখাতে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তাহলে বিএনপি করবেটা কি? রফিকুল ইসলাম নামের এক পাঠক বলেছেন- যারা শহীদ মিনারে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভায় ছিল তারা সবাই শিক্ষিত, বিবেকবান মানুষ, প্রতিবাদের পাশাপাশি একবারও কেন বললেন না যে সরকারের উচিত আলোচনায় বসা এবং সকল দলের অংশগ্রহণে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। >>৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫, শনিবার
হারুন-আর-রশিদ |
No comments