ইলোরা-অজন্তা by আলী যাকের
বোম্বে
থেকে ট্রেনে আওরঙ্গবাদে এসে যখন পেঁৗছলাম, তখন সন্ধ্যা হয়ে গেছে।
কাছেপিঠেই ছিল ভারতীয় পর্যটন সংস্থার তারকা খচিত হোটেল 'আওরঙ্গবাদ'। সেখানে
গিয়ে উঠলাম। সকাল সকাল উঠে প্রথমেই গেলাম আওরঙ্গবাদে অবস্থিত 'বিবিকি
মাকবারা' নামে তাজমহলসদৃশ একটি ইমারত দেখতে। এটি নির্মাণ করেছিলেন বাদশা
আওরঙ্গজেব সপ্তদশ শতাব্দীতে তার স্ত্রী দিলরাস বানু বেগমের কবরের ওপর।
তাজমহলের সঙ্গে এর স্থাপত্যে মিল থাকার কারণে এটি দক্ষিণী তাজ হিসেবেও
পরিচিত। কিন্তু আওরঙ্গজেব এই ইমারতের জন্য যে অর্থ বরাদ্দ দিয়েছিলেন তা
অত্যন্ত সীমিত। অতএব এটি তাজমহলের কাছাকাছিও যেতে পারেনি। বিবিকি
মাকবারা দেখার পর আমরা ইলোরার পথে রওনা হলাম। পথিমধ্যে পড়ল প্রাচীন শহর
দৌলতাবাদ। এ শহরটি নির্মাণ করেছিলেন ভারত সম্রাট মোহাম্মদ বিন তুঘলক।
চতুর্দশ শতাব্দীতে নির্মিত মহারাষ্ট্রের এ শহরটি তুঘলক সাম্রাজ্যের রাজধানী
ছিল। এই সেই বিখ্যাত নগর যেখানে দিলি্ল থেকে ভারতের রাজধানী প্রতিস্থাপন
করতে গিয়ে অজস্র মানুষের প্রাণ যায়। আমরা ইলোরার গুহার সামনে যখন এসে
পেঁৗছলাম ট্যুরিস্ট বাসে করে তখন দুপুর।
ইলোরা আওরঙ্গবাদ থেকে ২৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এখানে রয়েছে ৩৪টি গুহা এবং পাথর কেটে তৈরি এসব গুহার স্থাপত্য বিশ্বের সব পরিব্রাজকের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয়। ইলোরা ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যের নিদর্শন হিসেবে চিহ্নিত। সবগুলো গুহাই পাথরের পাহাড় কেটে নির্মাণ করা হয়েছে। এই পাহাড়ের আঞ্চলিক নাম 'চরনন্দ্রী' এবং এখানে প্রতিষ্ঠিত মন্দিরগুলো হিন্দু, বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মের উপাসনালয় হিসেবে নির্মাণ করা হয়েছিল। অর্থাৎ বিশ্বের তিনটি প্রধান ধর্মের সনি্নবেশ ঘটেছে এই ইলোরায়। পঞ্চম থেকে দশম খ্রিস্টাব্দের মধ্যে নির্মিত এ গুহাগুলোর ১২টি বৌদ্ধ, ১৭টি হিন্দু এবং পাঁচটিতে জৈন ধর্মের নিদর্শন রয়েছে। এতেই প্রমাণিত হয় যে, সেই পৌরাণিক কাল থেকেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের উপমহাদেশে বিদ্যমান ছিল।
ইলোরা কখনও লোকচক্ষুর আড়ালে হারিয়ে যায়নি, যেটা অজন্তায় ঘটেছিল। সেই সৃষ্টির সময় থেকে আধুনিক কাল পর্যন্ত অসংখ্য ভ্রমণপিপাসু মানুষ নিত্যই এখানে এসেছে। এই নিদর্শনগুলোকে কেন্দ্রে রেখে চারপাশে দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে নানা ধরনের সেবামূলক ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। ইলোরা দেখা শেষ হলো আমাদের আড়াইটার দিকে। একটি ছোট রেস্তোরাঁয় ফুলকো রুটি আর নিরামিষ তরকারি খেয়ে রওনা দিলাম অজন্তার পথে। অজন্তায় পেঁৗছেই বাসটা গুহার কাছে না গিয়ে বেশ একটি উঁচু পাহাড়ের খাদের কাছে আমাদের নামিয়ে দিল। এখান থেকেই গুহাগুলো দেখা যায়। অর্ধবৃত্তাকার হয়ে দাঁড়িয়ে আছে অজন্তার গুহাগুলো ওই সুদূরে। চমৎকৃত হলাম। এই ভিউ পয়েন্ট জায়গাটি আবিষ্কৃত হয় ১৮১৯ খ্রিস্টাব্দের ২৮ এপ্রিল। তৎকালীন ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর ২৮ ক্যাভেলরির এক অফিসার জন স্মিথ বাঘ শিকারে বেরিয়েছিলেন। তিনি একটি বাঘের পিছে পিছে ছুটতে ছুটতে পাহাড়ের এই খাদের সামনে এসে পড়েন। আর এগোনো সম্ভব ছিল না। এখান থেকে তিনি নিচে তাকিয়ে দেখলেন, নিচে সমতল ভূমিতে ঘোড়ার ক্ষুরের মতো অর্ধবৃত্তাকারে ছড়িয়ে রয়েছে কিছু গুহা, যার মুখগুলো বনের আড়ালে ঢাকা পড়ে গেছে। ক্লান্ত ক্যাপ্টেন স্মিথ অতীব কৌতূহলী হয়ে পড়লেন এবং শারীরিক ক্লান্তি ভুলে ঘোড়ায় চড়ে সমতল ভূমিতে নেমে এসে নানা গ্রাম ঘুরে ওই গুহাগুলোর কাছে চলে এলেন। ওগুলোর ভেতরে বন্যপ্রাণী কিংবা সাপখোপ থাকতে পারে, এই কারণে তিনি একা সেখানে প্রবেশ করার চেষ্টা না করে পরের দিন প্রত্নতত্ত্বে আগ্রহী এই রকম আরও কিছু ইংরেজ সেনাবাহিনীর অফিসার নিয়ে এ গুহাগুলোর জঙ্গল সরিয়ে এগুলোকে পুনরাবিষ্কার করেন।
আমরা এই ইতিহাস শুনতে শুনতে অভিভূত হয়ে পড়েছিলাম। তারপর বাসে করে যখন গুহাগুলোর কাছে এসে পেঁৗছলাম, তখন এক ধরনের শিহরণ জাগল আমাদের মাঝে। এখানে আছে ৩০টি পাথর খোদাই করে তৈরি করা গুহা এবং এর নির্মাণ ঘটেছে খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দী থেকে প্রায় ছয়শ' পঞ্চাশ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে। গুহাগুলোর মধ্যে ফ্রেসকো করা নানা বর্ণের ছবি আঁকা রয়েছে। এগুলোর সামনে গিয়ে যখন দাঁড়ালাম আর আমাদের গাইড যখন মোমবাতির আলোয় এগুলো দেখাতে শুরু করল, আমরা যেন এক স্বপ্নের জগতে প্রবেশ করলাম। এত শতাব্দী পরেও এই চিত্রগুলো রয়েছে একেবারে অমলিন।
আমি যেন সেই অতীতে ফিরে গিয়েছিলাম, যখন বৌদ্ধ তীর্থিরা এ গুহাগুলোয় অভিনিবেশ সহকারে একের পর এক এমন সৃজনশীল সৃষ্টি করে চলেছেন। এই গুহাগুলোর বেশিরভাগই ছিল বৌদ্ধ দর্শনের শিক্ষার্থীদের শ্রেণীকক্ষ। কিছু গুহায় তারা বসবাসও করতেন। আবার কয়েকটি গুহা উপাসনার জন্য নির্দিষ্ট ছিল। চিত্রগুলো অবশ্য জাতকের গল্পের চিত্রকল্প হিসেবে আঁকা হয়েছিল। কী কারণে অজন্তাকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়, সেটা এখনও জানা যায়নি। অজন্তার গুহাগুলোর মধ্যে দেয়ালের গায়ে নানা ধরনের ভাস্কর্য দেখা যায়। এগুলো ভারতের প্রাচীন ভাস্কর্যের উজ্জ্বলতম নিদর্শন হিসেবে বিভিন্ন গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে। সপ্তম খ্রিস্টাব্দে চীনা পরিব্রাজক পণ্ডিত জুয়ান জ্যাং লিখে গেছেন, ৫ম খ্রিস্টাব্দে বিখ্যাত বৌদ্ধ দার্শনিক দিগংগ, যিনি যুক্তিবিদ্যায় অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন, এই গুহায় বসবাস করতেন। আমরা এ গুহাগুলো দেখতে দেখতে এতটাই মগ্ন হয়ে গিয়েছিলাম যে, লক্ষ্যই করিনি ইরেশ এই পরিশ্রম আর নিতে পারছিল না। ও গুহার বাইরে একটি পাথরের খণ্ডে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ছিল। অজন্তা দেখতে দেখতে সন্ধ্যা নেমে এলো। এখান থেকে ৭টায় বাস ছাড়বে। অজন্তা থেকে বাসে জলগাঁওয়ের দূরত্ব প্রায় ৫৭ কিলোমিটার, যখন পেঁৗছলাম তখন রাত ৯টা। এটি একটি জংশন স্টেশন। অবস্থান মহারাষ্ট্রের জলগাঁও জেলায়। এখান থেকেই আমরা রাত ৩টায় কলকাতাগামী বোম্বে মেইল ট্রেন ধরব।
শেষ রাতে হুইসেল দিয়ে ট্রেন যাত্রা শুরু করল কলকাতার পথে। ঘুমিয়ে পড়ার আগে নানা বিচিত্র চিন্তা আমায় আচ্ছন্ন করে ফেলল। এই অল্প কয়দিনে এত বিচিত্র জায়গা ভ্রমণ করেছি, এত বিচিত্র মানুষের সঙ্গে পরিচিত হয়েছি সব যেন পেঁজা তুলোর মতো সরে সরে যায় মনের ভেতরে। হঠাৎ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সারা বলে উঠল, 'এটা ছিল একটা টেলিগ্র্যাফিক ট্যুর'। মনে হলো সত্যিই তো!
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব
ইলোরা আওরঙ্গবাদ থেকে ২৯ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এখানে রয়েছে ৩৪টি গুহা এবং পাথর কেটে তৈরি এসব গুহার স্থাপত্য বিশ্বের সব পরিব্রাজকের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয়। ইলোরা ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যের নিদর্শন হিসেবে চিহ্নিত। সবগুলো গুহাই পাথরের পাহাড় কেটে নির্মাণ করা হয়েছে। এই পাহাড়ের আঞ্চলিক নাম 'চরনন্দ্রী' এবং এখানে প্রতিষ্ঠিত মন্দিরগুলো হিন্দু, বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মের উপাসনালয় হিসেবে নির্মাণ করা হয়েছিল। অর্থাৎ বিশ্বের তিনটি প্রধান ধর্মের সনি্নবেশ ঘটেছে এই ইলোরায়। পঞ্চম থেকে দশম খ্রিস্টাব্দের মধ্যে নির্মিত এ গুহাগুলোর ১২টি বৌদ্ধ, ১৭টি হিন্দু এবং পাঁচটিতে জৈন ধর্মের নিদর্শন রয়েছে। এতেই প্রমাণিত হয় যে, সেই পৌরাণিক কাল থেকেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের উপমহাদেশে বিদ্যমান ছিল।
ইলোরা কখনও লোকচক্ষুর আড়ালে হারিয়ে যায়নি, যেটা অজন্তায় ঘটেছিল। সেই সৃষ্টির সময় থেকে আধুনিক কাল পর্যন্ত অসংখ্য ভ্রমণপিপাসু মানুষ নিত্যই এখানে এসেছে। এই নিদর্শনগুলোকে কেন্দ্রে রেখে চারপাশে দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে নানা ধরনের সেবামূলক ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। ইলোরা দেখা শেষ হলো আমাদের আড়াইটার দিকে। একটি ছোট রেস্তোরাঁয় ফুলকো রুটি আর নিরামিষ তরকারি খেয়ে রওনা দিলাম অজন্তার পথে। অজন্তায় পেঁৗছেই বাসটা গুহার কাছে না গিয়ে বেশ একটি উঁচু পাহাড়ের খাদের কাছে আমাদের নামিয়ে দিল। এখান থেকেই গুহাগুলো দেখা যায়। অর্ধবৃত্তাকার হয়ে দাঁড়িয়ে আছে অজন্তার গুহাগুলো ওই সুদূরে। চমৎকৃত হলাম। এই ভিউ পয়েন্ট জায়গাটি আবিষ্কৃত হয় ১৮১৯ খ্রিস্টাব্দের ২৮ এপ্রিল। তৎকালীন ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর ২৮ ক্যাভেলরির এক অফিসার জন স্মিথ বাঘ শিকারে বেরিয়েছিলেন। তিনি একটি বাঘের পিছে পিছে ছুটতে ছুটতে পাহাড়ের এই খাদের সামনে এসে পড়েন। আর এগোনো সম্ভব ছিল না। এখান থেকে তিনি নিচে তাকিয়ে দেখলেন, নিচে সমতল ভূমিতে ঘোড়ার ক্ষুরের মতো অর্ধবৃত্তাকারে ছড়িয়ে রয়েছে কিছু গুহা, যার মুখগুলো বনের আড়ালে ঢাকা পড়ে গেছে। ক্লান্ত ক্যাপ্টেন স্মিথ অতীব কৌতূহলী হয়ে পড়লেন এবং শারীরিক ক্লান্তি ভুলে ঘোড়ায় চড়ে সমতল ভূমিতে নেমে এসে নানা গ্রাম ঘুরে ওই গুহাগুলোর কাছে চলে এলেন। ওগুলোর ভেতরে বন্যপ্রাণী কিংবা সাপখোপ থাকতে পারে, এই কারণে তিনি একা সেখানে প্রবেশ করার চেষ্টা না করে পরের দিন প্রত্নতত্ত্বে আগ্রহী এই রকম আরও কিছু ইংরেজ সেনাবাহিনীর অফিসার নিয়ে এ গুহাগুলোর জঙ্গল সরিয়ে এগুলোকে পুনরাবিষ্কার করেন।
আমরা এই ইতিহাস শুনতে শুনতে অভিভূত হয়ে পড়েছিলাম। তারপর বাসে করে যখন গুহাগুলোর কাছে এসে পেঁৗছলাম, তখন এক ধরনের শিহরণ জাগল আমাদের মাঝে। এখানে আছে ৩০টি পাথর খোদাই করে তৈরি করা গুহা এবং এর নির্মাণ ঘটেছে খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দী থেকে প্রায় ছয়শ' পঞ্চাশ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে। গুহাগুলোর মধ্যে ফ্রেসকো করা নানা বর্ণের ছবি আঁকা রয়েছে। এগুলোর সামনে গিয়ে যখন দাঁড়ালাম আর আমাদের গাইড যখন মোমবাতির আলোয় এগুলো দেখাতে শুরু করল, আমরা যেন এক স্বপ্নের জগতে প্রবেশ করলাম। এত শতাব্দী পরেও এই চিত্রগুলো রয়েছে একেবারে অমলিন।
আমি যেন সেই অতীতে ফিরে গিয়েছিলাম, যখন বৌদ্ধ তীর্থিরা এ গুহাগুলোয় অভিনিবেশ সহকারে একের পর এক এমন সৃজনশীল সৃষ্টি করে চলেছেন। এই গুহাগুলোর বেশিরভাগই ছিল বৌদ্ধ দর্শনের শিক্ষার্থীদের শ্রেণীকক্ষ। কিছু গুহায় তারা বসবাসও করতেন। আবার কয়েকটি গুহা উপাসনার জন্য নির্দিষ্ট ছিল। চিত্রগুলো অবশ্য জাতকের গল্পের চিত্রকল্প হিসেবে আঁকা হয়েছিল। কী কারণে অজন্তাকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়, সেটা এখনও জানা যায়নি। অজন্তার গুহাগুলোর মধ্যে দেয়ালের গায়ে নানা ধরনের ভাস্কর্য দেখা যায়। এগুলো ভারতের প্রাচীন ভাস্কর্যের উজ্জ্বলতম নিদর্শন হিসেবে বিভিন্ন গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে। সপ্তম খ্রিস্টাব্দে চীনা পরিব্রাজক পণ্ডিত জুয়ান জ্যাং লিখে গেছেন, ৫ম খ্রিস্টাব্দে বিখ্যাত বৌদ্ধ দার্শনিক দিগংগ, যিনি যুক্তিবিদ্যায় অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন, এই গুহায় বসবাস করতেন। আমরা এ গুহাগুলো দেখতে দেখতে এতটাই মগ্ন হয়ে গিয়েছিলাম যে, লক্ষ্যই করিনি ইরেশ এই পরিশ্রম আর নিতে পারছিল না। ও গুহার বাইরে একটি পাথরের খণ্ডে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ছিল। অজন্তা দেখতে দেখতে সন্ধ্যা নেমে এলো। এখান থেকে ৭টায় বাস ছাড়বে। অজন্তা থেকে বাসে জলগাঁওয়ের দূরত্ব প্রায় ৫৭ কিলোমিটার, যখন পেঁৗছলাম তখন রাত ৯টা। এটি একটি জংশন স্টেশন। অবস্থান মহারাষ্ট্রের জলগাঁও জেলায়। এখান থেকেই আমরা রাত ৩টায় কলকাতাগামী বোম্বে মেইল ট্রেন ধরব।
শেষ রাতে হুইসেল দিয়ে ট্রেন যাত্রা শুরু করল কলকাতার পথে। ঘুমিয়ে পড়ার আগে নানা বিচিত্র চিন্তা আমায় আচ্ছন্ন করে ফেলল। এই অল্প কয়দিনে এত বিচিত্র জায়গা ভ্রমণ করেছি, এত বিচিত্র মানুষের সঙ্গে পরিচিত হয়েছি সব যেন পেঁজা তুলোর মতো সরে সরে যায় মনের ভেতরে। হঠাৎ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সারা বলে উঠল, 'এটা ছিল একটা টেলিগ্র্যাফিক ট্যুর'। মনে হলো সত্যিই তো!
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব
No comments