স্মরণ : নূরুল মোমেন
প্রখ্যাত নাট্যকার নূরুল মোমেনের
জন্ম বুড়োইচ গ্রাম, যশোরে ২৫ নভেম্বর ১৯০৬ সালে। এখন গ্রামটি ফরিদপুরের
আলফাডাঙ্গা উপজেলায়। জমিদার পরিবারে তার জন্ম। পিতা ডাক্তার নূরুল আরেফিন।
ঢাকা মুসলিম গভর্নমেন্ট হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন (১৯২৪), ঢাকা
ইন্টারমিডিয়েট কলেজ থেকে আইএসসি (১৯২৬), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ
(১৯২৯) এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএল (১৯৩৬) ডিগ্রি লাভ করেন।
চাঁদপুর নিবাসী ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অজিহ উদ্দিন আহমদের কন্যা আমেনা
খাতুনের সাথে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন ১৯৩৬ সালে। অতঃপর কলকাতা হাইকোর্টে আইন
ব্যবসায়ে যোগ দেন। ১৯৪৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগের অধ্যাপক
নিযুক্ত হন। ১৯৪৮ সালে উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য ইংল্যান্ড গমন এবং ১৯৫১ সালে
লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। লন্ডনে
অবস্থানকালে বিবিসির বাংলা অনুষ্ঠানে শিশুদের আসর পরিচালনা করেছেন। শেষের
দিকে এক বছর তদানীন্তন পাকিস্তান দূতাবাসের শিক্ষা কর্মকর্তা ছিলেন। বিলেত
থেকে দেশে ফিরে এসে কিছুকাল সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত থাকার পর আবার ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনের অধ্যাপনায় যোগ দেন। ১৯৭২ সালে ৬৬ বছর বয়সে
অধ্যাপনাকর্ম থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা ও
মুসলিম ঐতিহ্যের দৃঢ়সমর্থক ছিলেন। সামাজিক সঙ্কটের পটভূমিকায়
অন্তর্দ্বন্দ্বমূলক নাট্য-চরিত্র অঙ্কন করে বিপুল খ্যাতি অর্জন করেন।
রূপান্তর (১৯৪৭), নেমেসিস (১৯৪৮), যদি এমন হতো (১৯৬০), নয়া খান্দান (১৯৬২),
আলোছায়া (১৯৬২), শতকরা আশি (১৯৬৭), আইনের অন্তরালে (১৯৬৭), যেমন ইচ্ছা
তেমন (১৯৭০) ইত্যাদি নূরুল মোমেনের রচিত নাটক। রম্য-সাহিত্যের রচয়িতা
হিসেবেও প্রসিদ্ধি লাভ করেছেন। বহুরূপী (১৩৬৫), নরসুন্দর (১৯৬১), হিং টিং
ছট (প্রথম ও দ্বিতীয় খণ্ড ১৯৭০) ইত্যাদি তার রম্যগ্রন্থ। নাটকে বাংলা
একাডেমি পুরস্কার (১৯৬১) লাভ করেছেন।
পাকিস্তান সরকার কর্তৃক সিতারা-ই-ইমতিয়াজ (১৯৬৭) এবং বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক তাকে একুশের পদক (১৯৭৮) প্রদান করা হয়। তিনি ১৯৮৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ইন্তেকাল করেন। বাংলাদেশে আধুনিক নাট্যচর্চার অগ্রদূত হিসেবে তিনি ‘নাট্যগুরু’ অভিধায় সম্মানিত।
পাকিস্তান সরকার কর্তৃক সিতারা-ই-ইমতিয়াজ (১৯৬৭) এবং বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক তাকে একুশের পদক (১৯৭৮) প্রদান করা হয়। তিনি ১৯৮৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় ইন্তেকাল করেন। বাংলাদেশে আধুনিক নাট্যচর্চার অগ্রদূত হিসেবে তিনি ‘নাট্যগুরু’ অভিধায় সম্মানিত।
No comments