বাদ দেওয়ার আজব শর্ত by মানসুরা হোসাইন
(বাংলাদেশ বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শারমীন সুলতানা জ্বরের কারণে তিন দিন মহড়ায় অংশ নিতে পারেননি। এ কারণে তাঁকে আন্তর্জাতিক ও জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। ছবি: খালেদ সরকার) আন্তর্জাতিক ও জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আজব এক শর্তের কারণে প্রতিবন্ধীদের অংশগ্রহণে বাধার সৃষ্টি হয়েছে। ওই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার অন্যতম শর্ত রিহার্সেলে প্রতিদিন (৩০ দিনই) উপস্থিত থাকতে হবে। অক্ষরে অক্ষরে এ শর্ত পালন না করতে পারায় বাদ পড়েছেন অনেকে। বাদ পড়া প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কর্মরত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা প্রতিবন্ধীদের জন্য আনুষ্ঠানিকতা পালনের বেলায় এত কঠিন শর্তের যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। আজ বুধবার পালিত হবে ২৩তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস। সরকার এ দিবসে ‘জাতীয় প্রতিবন্ধী’ দিবস হিসেবেও পালন করে। এবার ১৬তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস। আজ বিকেল তিনটায় দিবসটির অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, সমাজসেবা অধিদপ্তর ও জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এ অনুষ্ঠানের জন্যই নির্বাচিত হওয়ার পরও অনেককে বাদ পড়তে হয়েছে শর্তপূরণের বাধ্যবাধকতার কারণে। অনুষ্ঠান আয়োজকদের সদস্য সচিব দিলারা সাত্তার বলেন, ‘শর্ত পূরণ করতে না পারায় অনেককে বাদ দিতে হয়েছে। অনুশীলন শুরুর আগেই সবাইকে বলে দেওয়া হয়েছে, প্রতিদিন উপস্থিত হতে পারলে তাঁরা অংশ নিতে পারবেন।’
দিলারা সাত্তার বলেন, ‘প্রতিবন্ধীরা প্রতিদিন উপস্থিত হতে পারবে না, তা ঠিক নয়। প্রতিবন্ধীদের মধ্যে যে মেধা আছে, তা আমরা তুলে ধরতে চাই। তাই প্রতিদিন আসতেই হবে। এ ছাড়া এ ধরনের শর্ত ওপর মহল থেকেই দেওয়া হয়েছে, আমার কিছু করার নেই।’
বাদ পড়াদের কথা
শ্রবণপ্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করছে হাই কেয়ার। এ প্রতিষ্ঠানের ভাইস প্রিন্সিপাল জুলেখা বেগম বললেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠানের আটটি বাচ্চা নাচের জন্য নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু দুঃখের কথা হলো, তারা শেষ পর্যন্ত অংশ নিতে পারছে না। কেননা “এক দিনও মিস করলে নেওয়া যাবে না”—এ শর্ত মানা কঠিন। প্রায় মাসব্যাপী রিহার্সেল হয়েছে। এখন বার্ষিক পরীক্ষার সময়। শর্ত মানা সম্ভব নয় বলে নিজেরাই আর বাচ্চাদের নিয়ে যাইনি। এতে বাচ্চাদের খুব মন খারাপ।’
বাংলাদেশ বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শারমীন সুলতানা জ্বরের কারণে তিন দিন রিহার্সেলে যেতে পারেননি। জ্বরের কথা অপর একজন অংশগ্রহণকারীর মাধ্যমে জানানোর পাশাপাশি দিলারা সাত্তারকে ফোনও করেছিলেন তিনি। কিন্তু লাভ হয়নি। বাদ দেওয়া হয়েছে তাঁকে। শারমীন সুলতানা বলেন, ‘অনেক শখ ছিল রাষ্ট্রপতির সামনে গাইব। আমাদের ব্যাপারে আপনারা (সমাজে সুস্থরা) যদি এত কড়াকড়ি করেন, তাহলে কেমনে চলবে?’
এ ব্যাপারে দিলারা সাত্তার বলেন, ‘অটিস্টিক বাচ্চারা যদি প্রতিদিন আসতে পারে, তিনি (শারমীন) দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হয়ে কেন পারবেন না? এ ছাড়া নাচের সঙ্গে তাঁর যে গান গাওয়ার কথা ছিল, তা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বাদ দিতে হয়েছে।’ অন্যদিকে শারমীন সুলতানা জানালেন, তাঁকে জানানো হয়েছে, তাঁর জায়গায় অন্য একজনকে নেওয়া হয়েছে। সেই একজনের সঙ্গে হলেও গান গাওয়ার একটু সুযোগ চাইলেও তা দেওয়া হয়নি।
এর আগেও দিবসের এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে নানা অভিযোগ উঠেছিল। সাভারে সালভেশন আর্মি ইন্টিগ্রেটেড চিলড্রেন সেন্টার প্রতিবন্ধী শিশুদের সঙ্গে স্বাভাবিক শিশুদের পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত একসঙ্গে পড়ানো হচ্ছে। এই প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘গত বছর চার দিন রিহার্সেলে যাই। বাচ্চাদের পরীক্ষার কথা জানাই। তখন বলা হয়, কালকে না আসতে পারলে আর আসবেন না। বাচ্চাদের পরীক্ষা বাদ দিয়ে তো আর যেতে পারি না। এবার তাই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য কোনো প্রস্তুতিই নেইনি।’
জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গাজী মোহাম্মদ নুরুল কবীরের ভাষ্য, এ ধরনের অভিযোগ সম্পর্কে তিনি অবগত নন। অনুষ্ঠান আয়োজন-সংক্রান্ত সাংস্কৃতিক উপকমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন বলেন, ‘এ অভিযোগ সঠিক নয়। কেউ আমাকে কিছু জানায়নি। দিলারা সাত্তার অনেক কষ্ট করে অনুষ্ঠান সাজাচ্ছেন। কেউ তাঁর সঙ্গে ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে এ অভিযোগ করেছে। আর এটা নিউজ হওয়ার মতোও কোনো ঘটনা না।’
দিলারা সাত্তার বলেন, ‘প্রতিবন্ধীরা প্রতিদিন উপস্থিত হতে পারবে না, তা ঠিক নয়। প্রতিবন্ধীদের মধ্যে যে মেধা আছে, তা আমরা তুলে ধরতে চাই। তাই প্রতিদিন আসতেই হবে। এ ছাড়া এ ধরনের শর্ত ওপর মহল থেকেই দেওয়া হয়েছে, আমার কিছু করার নেই।’
বাদ পড়াদের কথা
শ্রবণপ্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করছে হাই কেয়ার। এ প্রতিষ্ঠানের ভাইস প্রিন্সিপাল জুলেখা বেগম বললেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠানের আটটি বাচ্চা নাচের জন্য নির্বাচিত হয়েছে। কিন্তু দুঃখের কথা হলো, তারা শেষ পর্যন্ত অংশ নিতে পারছে না। কেননা “এক দিনও মিস করলে নেওয়া যাবে না”—এ শর্ত মানা কঠিন। প্রায় মাসব্যাপী রিহার্সেল হয়েছে। এখন বার্ষিক পরীক্ষার সময়। শর্ত মানা সম্ভব নয় বলে নিজেরাই আর বাচ্চাদের নিয়ে যাইনি। এতে বাচ্চাদের খুব মন খারাপ।’
বাংলাদেশ বেতারের তালিকাভুক্ত শিল্পী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শারমীন সুলতানা জ্বরের কারণে তিন দিন রিহার্সেলে যেতে পারেননি। জ্বরের কথা অপর একজন অংশগ্রহণকারীর মাধ্যমে জানানোর পাশাপাশি দিলারা সাত্তারকে ফোনও করেছিলেন তিনি। কিন্তু লাভ হয়নি। বাদ দেওয়া হয়েছে তাঁকে। শারমীন সুলতানা বলেন, ‘অনেক শখ ছিল রাষ্ট্রপতির সামনে গাইব। আমাদের ব্যাপারে আপনারা (সমাজে সুস্থরা) যদি এত কড়াকড়ি করেন, তাহলে কেমনে চলবে?’
এ ব্যাপারে দিলারা সাত্তার বলেন, ‘অটিস্টিক বাচ্চারা যদি প্রতিদিন আসতে পারে, তিনি (শারমীন) দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হয়ে কেন পারবেন না? এ ছাড়া নাচের সঙ্গে তাঁর যে গান গাওয়ার কথা ছিল, তা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বাদ দিতে হয়েছে।’ অন্যদিকে শারমীন সুলতানা জানালেন, তাঁকে জানানো হয়েছে, তাঁর জায়গায় অন্য একজনকে নেওয়া হয়েছে। সেই একজনের সঙ্গে হলেও গান গাওয়ার একটু সুযোগ চাইলেও তা দেওয়া হয়নি।
এর আগেও দিবসের এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে নানা অভিযোগ উঠেছিল। সাভারে সালভেশন আর্মি ইন্টিগ্রেটেড চিলড্রেন সেন্টার প্রতিবন্ধী শিশুদের সঙ্গে স্বাভাবিক শিশুদের পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত একসঙ্গে পড়ানো হচ্ছে। এই প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘গত বছর চার দিন রিহার্সেলে যাই। বাচ্চাদের পরীক্ষার কথা জানাই। তখন বলা হয়, কালকে না আসতে পারলে আর আসবেন না। বাচ্চাদের পরীক্ষা বাদ দিয়ে তো আর যেতে পারি না। এবার তাই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য কোনো প্রস্তুতিই নেইনি।’
জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গাজী মোহাম্মদ নুরুল কবীরের ভাষ্য, এ ধরনের অভিযোগ সম্পর্কে তিনি অবগত নন। অনুষ্ঠান আয়োজন-সংক্রান্ত সাংস্কৃতিক উপকমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন বলেন, ‘এ অভিযোগ সঠিক নয়। কেউ আমাকে কিছু জানায়নি। দিলারা সাত্তার অনেক কষ্ট করে অনুষ্ঠান সাজাচ্ছেন। কেউ তাঁর সঙ্গে ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে এ অভিযোগ করেছে। আর এটা নিউজ হওয়ার মতোও কোনো ঘটনা না।’
No comments