পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে এখনই আলোচনা চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন
৫ই
জানুয়ারির নির্বাচন প্রশ্নে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে
জানিয়ে ঢাকায় সফররত ইইউ সংসদের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সংসদীয় প্রতিনিধি দলের
চেয়ারম্যান জাঁ ল্যাম্বার্ট বলেছেন, বাংলাদেশে পরবর্তী নির্বাচনটি যখনই
হোক, সেটি যাতে সবার অংশগ্রহণে হয়- সেই আলোচনা এখনই শুরু করতে হবে। চলমান
রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধানে
পৌঁছানোর তাগিদও দেন তিনি। ঢাকায় চার দিনের ‘শুভেচ্ছা সফর’-এর সমাপনীতে
গতকাল গুলশানের ইইউ ডেলিগেশন প্রধানের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে
তিনি এসব কথা। সেখানে দেশের সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ
প্রকাশ করেন ইইউ পার্লামেন্টের প্রভাবশালী ওই সদস্য। নির্বাচনের বিষয়ে তিনি
বলেন, নতুন নির্বাচনের আহ্বান নয়, ইইউ চায় বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচনটি
যাতে অংশগ্রহণমূলক হয়। সেখানে ভোটাররা যেন মুক্তভাবে তাদের অধিকার প্রয়োগ
করতে পারেন। ভোটারদের পছন্দের প্রতিফলন যেন ঘটে- সেটি নিশ্চিত করা দেশের
রাজনৈতিক নেতৃত্বের দায়িত্ব। ওই নির্বাচন আয়োজনের পন্থা-পদ্ধতি কি হবে- সে
বিষয়ে এখনই সমাধান খোঁজার অনুরোধ জানিয়ে ইইউ’র ওই সংসদ সদস্য বলেন, এটি
সমঝোতার জন্য বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতিনিয়ত আমরা উৎসাহ
যুগিয়ে যাচ্ছি। এখানে কোন পদ্ধতিতে, কখন নির্বাচন হবে তা দেশের মানুষই ঠিক
করবে, ইইউ সহযোগিতা করবে মাত্র। ৫ই জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনে ২৮
রাষ্ট্রের ওই জোট পর্যবেক্ষক পাঠায়নি স্মরণ করে তিনি বলেন, ওই নির্বাচনে
অর্ধেকেরও বেশি আসনে কোন প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়নি। বাকি আসনগুলোতেও ক্ষমতাসীন
আওয়ামী লীগের প্রাধান্য ছিল। নির্বাচনটি ‘বিশ্বাসযোগ্য’ হয়নি বলে ইউরোপীয়
পার্লামেন্টে যে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে তা-ও উল্লেখ করেন ল্যাম্বার্ট। তৈরী
পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র আমন্ত্রণে অ্যাপারেল
সম্মেলনে যোগ দিতে গত শনিবার ঢাকা আসেন তিনি। গতকাল রাতে তিনি ঢাকা ছেড়ে
যান। সফরকালে সরকারি দল আওয়ামী লীগ ও সংসদের বাইরে থাকা ২০ দলীয় জোটের
নেতৃত্বদানকারী বিএনপি’র শীর্ষ স্থানীয় প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজ ও শ্রম
সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিদের সঙ্গে তার বৈঠক হয়েছে। ঢাকার অদূরে একটি কারখানার
কর্মপরিবেশ বিশেষ করে অগ্নি নিরাপত্তার বিষয়টি পরিদর্শনও করেছেন তিনি।
ঢাকায় রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গ টেনে এক কূটনৈতিক
প্রতিবেদক ল্যাম্বার্টের কাছে জানতে চান, সফরকালে বাংলাদেশের চলমান
রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসন বা প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার কোন আভাস
তিনি পেয়েছেন কিনা? জবাবে ইইউ এমপি বলেন, আমার মনে হয়েছে- এখনও অনেক দূর
যেতে হবে। সফলতা কখন আসবে তা নিয়ে মন্তব্য করা কঠিন। তবে এটা এমন নয় যে,
জনগণ আশা ছেড়ে দেবে। তৈরী পোশাক খাত নিয়ে আলোচনায় ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এই
সদস্য বলেন, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠকে অনেককেই বলেছেন শুধু রানা প্লাজা
দিয়ে বাংলাদেশের পোশাক খাতকে বিবেচনা করা যাবে না। আমিও তা-ই মনে করি। এ
খাতের অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। তবে রানা প্লাজার ঘটনাকে সতর্কবার্তা হিসেবে
নিয়ে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। ওই মর্মান্তিক ঘটনার পর পোশাক শিল্পের
কর্মপরিবেশ উন্নয়নে বাংলাদেশের অনেক অগ্রগতি হয়েছে। তবে বেশ কিছু এখনও করার
বাকি আছে। পরিদর্শক নিয়োগসহ অনেক কিছু বাস্তবায়ন হয়েছে। রাজনৈতিক
স্থিতিশীলতা, অবকাঠামোসহ বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা এখনও রয়েছে উল্লেখ করে তিনি
বলেন, এ সব দূর করতে পরিবর্তিত দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।
শ্রমিকদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনেরও আহ্বান জানান তিনি।
গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার পূর্ণ তদন্তের তাগিদ: দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিশেষ করে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং গুমের বিষয়ে বরাবরের মতো উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রত্যেকটি ঘটনার পূর্ণ তদন্তের আহ্বান জানান ইইউ সংসদের ওই প্রতিনিধি। একই সঙ্গে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান, ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করা- যাতে ভুক্তভোগীরা ন্যায় বিচার পায়। এনজিওদের নিয়ন্ত্রণে প্রণীত আইনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ইইউ পার্লামেন্টের ওই সদস্য বলেন, এমন কোন নিয়ন্ত্রণমূলক আইন করা উচিত নয়, যা গতিশীল নাগরিক সমাজের কণ্ঠ রোধ করে। বাংলাদেশের একটি দায়িত্বশীল সুশীল সমাজ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি দেশের উন্নয়নে সুশীল সমাজের অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। এটি একটি দেশের শক্তি বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সুশীল সমাজ ও বিরোধীদের কথা বলার নিশ্চয়তা সহ গণতন্ত্র চর্চায় তিনি মুক্ত মিডিয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
বিএনপি’র জোট প্রসঙ্গ: সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে ইইউ’র সংসদ সদস্য জাঁ ল্যাম্বার্ট বলেন, বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটে কোন দলের থাকা না থাকা নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে যে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে সেটি এখনও রয়েছে। তার কাছে প্রশ্ন ছিল বিএনপির নেতৃত্বের সঙ্গে জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করা নিয়ে কোন আলোচনা হয়েছে কিনা? জবাবে তিনি কোন দলের নাম না নিয়ে বলেন, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের অবস্থান আগের মতোই আছে। সেখানে কোন পরিবর্তন আনা হয়নি।
গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার পূর্ণ তদন্তের তাগিদ: দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিশেষ করে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং গুমের বিষয়ে বরাবরের মতো উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রত্যেকটি ঘটনার পূর্ণ তদন্তের আহ্বান জানান ইইউ সংসদের ওই প্রতিনিধি। একই সঙ্গে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান, ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করা- যাতে ভুক্তভোগীরা ন্যায় বিচার পায়। এনজিওদের নিয়ন্ত্রণে প্রণীত আইনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ইইউ পার্লামেন্টের ওই সদস্য বলেন, এমন কোন নিয়ন্ত্রণমূলক আইন করা উচিত নয়, যা গতিশীল নাগরিক সমাজের কণ্ঠ রোধ করে। বাংলাদেশের একটি দায়িত্বশীল সুশীল সমাজ রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটি দেশের উন্নয়নে সুশীল সমাজের অংশগ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। এটি একটি দেশের শক্তি বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সুশীল সমাজ ও বিরোধীদের কথা বলার নিশ্চয়তা সহ গণতন্ত্র চর্চায় তিনি মুক্ত মিডিয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
বিএনপি’র জোট প্রসঙ্গ: সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে ইইউ’র সংসদ সদস্য জাঁ ল্যাম্বার্ট বলেন, বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটে কোন দলের থাকা না থাকা নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টে যে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে সেটি এখনও রয়েছে। তার কাছে প্রশ্ন ছিল বিএনপির নেতৃত্বের সঙ্গে জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগ করা নিয়ে কোন আলোচনা হয়েছে কিনা? জবাবে তিনি কোন দলের নাম না নিয়ে বলেন, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের অবস্থান আগের মতোই আছে। সেখানে কোন পরিবর্তন আনা হয়নি।
No comments