সংঘাতের শিকার বিশ্বের দেড় কোটি শিশু
২০১৪ সাল ছিল বিশ্বব্যাপী শিশুদের জন্য এক ধ্বংসাত্মক বছর। এ বছরে বিশ্বজুড়ে ক্রমবর্ধমান সংঘর্ষের শিকার হয়েছে দেড় কোটি শিশু। জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) সোমবার এ তথ্য দিয়েছে। ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক অ্যান্টনি লেক এ বিষয়ে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, লাখো শিশুর জন্য এ বছরটি ছিল চরম ভয়াবহ। এমনকি শ্রেণিকক্ষে লেখাপড়া করার সময় ও বিছানায় ঘুমন্ত অবস্থায় অনেক শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। এতিম হয়েছে অনেকে। কেউ কেউ হয়েছে অপহরণ, শারীরিক নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার। আবার অনেক শিশুকে জোর করে যোদ্ধা বানানো হয়েছে অথবা দাস হিসেবে বিক্রি করা হয়েছে। ইউনিসেফের তথ্যমতে, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, ইরাক, দক্ষিণ সুদান, ফিলিস্তিন, সিরিয়া ও ইউক্রেনে চলমান রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের শিকার হয়েছে প্রায় দেড় কোটি শিশু। স্মরণকালে এত বেশিসংখ্যক শিশু এমন ভয়াবহতার শিকার হয়নি। বহু শিশু গৃহহীন হয়ে ঠাঁই নিয়েছে উদ্বাস্তু শিবিরে। সংস্থাটির তথ্যমতে, বিশ্বের সংঘাতপূর্ণ দেশ বা অঞ্চলে বসবাসকারী শিশুর সংখ্যা এখন ২৩ কোটি। ইউনিসেফ জানিয়েছে,
চলতি বছর কয়েক শ শিশু বিদ্যালয় থেকে বা বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে অপহরণের শিকার হয়েছে। সরকারি সামরিক বাহিনী বা সশস্ত্র গোষ্ঠীর হাতে পড়ে যোদ্ধা হয়েছে প্রায় ১০ হাজার শিশু। এ ছাড়া বিশ্বের অনেক স্থানেই শিক্ষাব্যবস্থা ও স্বাস্থ্য খাতে হামলা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী সামরিক প্রয়োজনে বিদ্যালয় দখলের হারও বেড়েছে। মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের সংঘাতের শিকার হয়েছে ২৩ লাখ শিশু। গত বছর দেশটির সামরিক বাহিনী বা সশস্ত্র গোষ্ঠী ১০ হাজার শিশুকে যোদ্ধা বানিয়েছে। এর মধ্যে ৪৩০টি শিশু নিহত বা বিকলাঙ্গ হয়েছে। এ সংখ্যা গত ২০১৩ সালের তিন গুণ। ফিলিস্তিনের গাজায় ৫০ দিনব্যাপী সংঘাতে গৃহহীন হয় ৫৪ হাজার শিশু। নিহত হয় বেশ কয়েক শ। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের শিকার হয়েছে ৭৩ লাখ শিশু। এর মধ্যে ১৭ লাখের আশ্রয় হয়েছে উদ্বাস্তু শিবিরে। ইউনিসেফ সংঘাতময় অঞ্চলের শিশুদের সুরক্ষায় বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে আছে শিশুদের বিদ্যালয়ে ফেরানো, পোলিওসহ বিভিন্ন রোগের টিকা খাওয়ানো। এ ছাড়া ইবোলা উপদ্রুত অঞ্চলের শিশুদের সুরক্ষায়ও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
No comments