নিউইয়র্কে উইলিয়াম ও কেট, পাশে পুলিশবিরোধী বিক্ষোভ
নিউইয়র্কে গত সোমবার এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের (ডানে) বক্তব্যের সময় হাস্যোজ্জ্বল যুক্তরাজ্যের প্রিন্স উইলিয়াম ও তাঁর স্ত্রী কেট উইলিয়াম। ছবি: রয়টার্স |
এবার ব্রিটিশ রাজকীয় দম্পতি প্রিন্স উইলিয়াম এবং তাঁর স্ত্রী ডাচেস অব কেমব্রিজ কেট মিডলটনকে নিয়ে মাতল বিক্ষোভ-শ্রান্ত নিউইয়র্ক নগর। তিন দিনের সফরে যুক্তরাষ্ট্রে আসা উইলিয়াম দম্পতি সোমবার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের বিখ্যাত বাস্কেটবল দল নেটসের খেলা দেখার জন্য ব্রুকলিনের বার্কলি সেন্টারে যান। তবে অনেক কিছুর পাশাপাশি মিছিল-সমাবেশের শহর হিসেবেও পরিচিত নিউইয়র্ক এ সময়ও বিক্ষোভ করতে ছাড়েনি। উইলিয়াম-কেটের উপস্থিতির সময়ই বার্কলি সেন্টারের অদূরে প্রায় ২০০ লোক কৃষ্ণাঙ্গদের বিরুদ্ধে পুলিশি বাড়াবাড়ির প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেন। রোববার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জেএফকে বিমানবন্দরে নামার পর ম্যানহাটনের অভিজাত কারলাইল হোটেলে ওঠেন উইলিয়াম ও পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা কেট। কনকনে শীতের মধ্যে দাঁড়িয়ে তাঁদেরকে এক নজর দেখার জন্য ভিড় জমায় বহু মানুষ।
ব্রুকলিনের বার্কলি সেন্টারে সাবেক বাস্কেটবল তারকা ডিকেমবি মোটম্বোকে পাশে নিয়ে খেলা দেখতে বসেন উইলিয়াম দম্পতি। তাঁদের উপস্থিতির কথা ঘোষণা করা হলে মাঠভর্তি লোকজন উল্লাসে ফেটে পড়ে। সাবেক বাস্কেটবল তারকা সাত ফুট দুই ইঞ্চি উচ্চতার মোটম্বোর পাশে ছয় ফুট তিন ইঞ্চি প্রিন্স উইলিয়ামকেও ছোট দেখাচ্ছিল। তিনি এ সময় মজা করে বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত আমি আমার চেয়েও লম্বা কারও পাশে দাঁড়ালাম।’ বিকেলে প্রিন্স উইলিয়াম ও কেট সাবেক মার্কিন ফার্স্টলেডি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন এবং তাঁর মেয়ে চেলসির সঙ্গে সংক্ষিপ্ত বৈঠক করেন। কেট একাই হারলেম এলাকার একটি স্কুল দেখতে যান। এক ফাঁকে প্রিন্স উইলিয়াম ওয়াশিংটন ডিসিতে গিয়ে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে দেখা করেন। বিশ্বব্যাংকের একটি সভায়ও বক্তব্য দেন তিনি। ওবামার সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং বিশ্বব্যাংকের সভায় বন্য প্রাণী সংরক্ষণের বিষয়ে কথা বলেন প্রিন্স উইলিয়াম। শান্তিপূর্ণ সমাবেশের পক্ষে ওবামা: প্রতিবাদ যদি শান্তিপূর্ণ হয়, তবে অবশ্যই তা জরুরি; এ মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। কৃষ্ণাঙ্গ পরিচালিত বিইটি নামের এক টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন ওবামা।
তিনি বলেন, এসব বিক্ষোভ, প্রতিবাদের আয়োজন সমাজকে এটাই স্মরণ করিয়ে দেয় যে সবকিছু এখনো পরিবর্তন হয়নি। ফ্লোরিডায় কৃষ্ণাঙ্গ যুবককে গুলি: এদিকে রয়টার্সের খবরে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে গত সোমবার এক নিরস্ত্র কৃষ্ণাঙ্গ যুবককে গুলি করেছেন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ সদস্য। ওই যুবককে একটি চোরাই গাড়ির মধ্যে পাওয়া গিয়েছিল। হাত ওপরে তোলা অবস্থায় তাঁকে গুলি করা হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা অভিযোগ করেছেন। কৃষ্ণাঙ্গদের বিরুদ্ধে পুলিশের বাড়াবাড়ির অভিযোগে দেশজুড়ে ইতিমধ্যে উত্তপ্ত পরিস্থতির মধ্যে নতুন এ ঘটনা ঘটল। এ ঘটনার পর সবাইকে শান্ত থাকতে বলেছেন অরল্যান্ডো কাউন্টির শেরিফ জেরি ডেমিংস। ডেমিংস এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বিচারের জন্য তাড়াহুড়ো না করে তদন্তকাজ শেষ করার সুযোগ দিতে হবে। পুলিশের গুলিতে আহত যুবকের নাম সেড্রিক বার্টি। সোমবার গভীর রাতে তাঁকে আরও দুই ব্যক্তির সঙ্গে একটি চোরাই গাড়িতে বসে থাকতে দেখা যায়। একপর্যায়ে তাঁকে গুলি করেন পুলিশের সার্জেন্ট রবার্ট ম্যাককার্থি। ঘটনাটির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ডেমিংস বলেন, ম্যাককার্থির নির্দেশ শোনেননি বার্টি। এ ছাড়া লুকোছাপার ভাব করেন। এতে পুলিশ সদস্য নিজের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে গুলি করেন। গুলিবিদ্ধ বার্টির শরীরে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল হলেও বিপদমুক্ত নয়।
No comments