ড. মিজানুরের বক্তব্য জঙ্গিবাদকে উৎসাহিত করতে পারে -ডিএমপির বিবৃতি
পুলিশ সর্ম্পকে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমানের বক্তব্য জঙ্গিবাদকে উৎসাহিত করতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। বৃহস্পতিবার ডিএমপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে তিনি রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা পুলিশ বাহিনীর চেইন অব কমান্ড সম্পর্কে অনভিপ্রেত মন্তব্য করেছেন, যা পুলিশ বাহিনীর মনোবল ভেঙ্গে দিতে পারে এবং ফলে জনশৃঙ্খলা ও জননিরাপত্তা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এছাড়াও এ বক্তব্য পুলিশ বাহিনীর মধ্যে শৃঙ্খলা বিনষ্টের কারণ হতে পারে। ড. মিজানের বক্তব্য জঙ্গিবাদকে উৎসাহিত করতে পারে দাবি করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘যাচাই বাছাই ব্যতীত নিষিদ্ধ ঘোষিত একটি জঙ্গি সন্ত্রাসী সংগঠনের আসামির বক্তব্যের ভিত্তিতে একতরফাভাবে বক্তব্য প্রদান জঙ্গিবাদকে উৎসাহিত করতে পারে। এর মাধ্যমে তদন্ত কাজ বাধাগগ্রস্ত হতে পারে। বর্তমান সরকারের সাফল্য হচ্ছে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান ও জঙ্গিবাদ নির্মূল। অথচ তিনি হাসপাতালে গিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের নেতার সঙ্গে দেখা করে সরকারের জঙ্গিবাদবিরোধী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তার এ বক্তব্য আন্তর্জাতিক পরিম-লে ভুল বার্তা দিতে পারে দাবি করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ড. মিজানুর রহমানের বক্তব্যে বর্তমান সরকারের জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থানের বিষয়ে আন্তর্জাতিক পরিম-লে ভুল ইঙ্গিত দিতে পারে। একটি সাংবিধানিক পদে থেকে পুলিশ বাহিনীর মনোবল ভেঙ্গে দিয়ে তিনি কি অর্জন করতে চেয়েছেন তা বোধগম্য নয়। আমরা দায়িত্বশীল সকল ব্যক্তিকে এ ধরনের ঢালাও মন্তব্য পরিহার করার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি। আইন ও শিষ্টাচার লঙ্ঘন করা হয়েছে দাবি করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ড. মিজানুর রহমান বাংলাদেশ সরকারের একটি সাংবিধানিক গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত। তিনি এ পদে কর্মরত থেকে একজন আসামির সঙ্গে আদালতের অনুমতি ব্যতীত হাসপাতালে দেখা করতে গিয়েছেন। এতে আইন এবং শিষ্টাচার লঙ্ঘিত হয়েছে, যা ভবিষ্যতে অন্য নাগরিকদের মধ্যে আইন লঙ্ঘনের প্রবণতা সৃষ্টি করতে পারে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গত বছর ডিসেম্বর মাসে আমরা একটি নির্দিষ্ট জেলাকে কটাক্ষ করে বক্তব্য প্রদান করতে দেখেছি। ড. মিজানুর রহমানের নিকট থেকে এই পর্যায়ে একই সুরে একটি জেলাকে কটাক্ষ করে একই প্রতিধ্বনি শুনতে পাচ্ছি। তার বক্তব্যে পুরো জাতি স্তম্ভিত এবং আমরা হতাশাগ্রস্ত। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বৃহস্পতিবার দেশের কয়েকটি ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত ও প্রচারিত সংবাদ সম্পর্কে ডিএমপি’র দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। ড. মিজান হিজবুত তাহরীর উলাই’য়াহ বাংলাদেশ এর সক্রিয় সদস্য মো. নাফিসকে ঢামেক হাসপাতালে দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের কাছে পুলিশ বাহিনী ও পুলিশের কার্যক্রম সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন। তিনি তার বক্তব্যে বলেছেন, পুলিশের ঔদ্ধত্যপূর্ণ এই বাড়াবাড়ি সাংঘাতিকভাবে বেড়ে গেছে। পুলিশের আচরণ দেখে মনে হচ্ছে যেন নাগরিকরা দাসে রূপান্তরিত হয়ে গেছে। তারা সবাই দাস মালিক এবং তাদের ভিতরে কোন রকম চেইন অব কমান্ড কাজ করছে বলে মনে হয় না। অভ্যন্তরীণ বিষয় এখানে পুলিশ বর্বরোচিত আচরণ করছে। আমরা সাংঘাতিকভাবে শঙ্কিত ও উদ্বেগ প্রকাশ করি যখন কোন একটি নির্দিষ্ট জেলা থেকে যখন কেউ দায়িত্বে থাকে, তাদের ধারণার সৃষ্টি হয় তারা যেন সব কিছুর উর্ধ্বে, আইন তাদের স্পর্শ করতে পারবে না।
No comments