ডেমোক্রেটিক পার্টির ভরাডুবির তিন কারণ
চার বছর আগে বারাক ওবামার শাসনামলের প্রথম মধ্যবর্তী নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টি কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ, অর্থাৎ প্রতিনিধি পরিষদ হারিয়েছিল। গতকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত মধ্যবর্তী নির্বাচনে তারা হারাল সিনেট। এই পরাজয় অপ্রত্যাশিত ছিল না, মধ্যবর্তী নির্বাচনে ভোটাররা চিরকালই ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে ভোট দিয়ে তাদের অসন্তোষের কথা জানায়। যা ডেমোক্রেটিক দল ও স্বয়ং প্রেসিডেন্ট ওবামা আশা করেননি, তা হলো পরাজয়ের ব্যাপকতা। সব পর্যবেক্ষকই এ ব্যাপারে একমত যে এবারের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটদের পরাজয়ের প্রধান কারণ ওবামা নিজে। তাঁর ব্যক্তিগত সমর্থনের পরিমাণ চল্লিশের কোঠায়। অর্থাৎ তাঁকে সমর্থন করে না এমন মার্কিন নাগরিকের সংখ্যা ৫০ শতাংশের বেশি। ওবামার অনুসৃত নীতিমালা দেশের জন্য ক্ষতিকর, এ কথা মনে করে এ দেশের প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষ। ওবামা নিজে স্বীকার করেছেন, এই নির্বাচনে তিনি ভোটে দাঁড়াননি বটে, কিন্তু তাঁর সরকারের অনুসৃত নীতিসমূহ বিচারের সম্মুখীন। প্রতিপক্ষ রিপাবলিকানদের বক্তব্য ছিল উল্টো: এই নির্বাচন ওবামার ওপর গণভোট। নির্বাচনী মানচিত্রটিও ছিল ডেমোক্র্যাটদের বিপক্ষে। সিনেট নির্বাচনের মোট ৩৬টি আসনের ২১টি আসন ছিল ডেমোক্র্যাটদের, রিপাবলিকানদের ১৫।
আমেরিকা এমনিতেই লাল (অর্থাৎ রিপাবলিকান) ও নীল (অর্থাৎ ডেমোক্র্যাট) এই দুই ভাগে বিভক্ত। এবারের নির্বাচনে ওবামার দলকে যে আসনগুলোতে লড়তে হয়, তার অধিকাংশই ‘লাল’ নির্বাচনী এলাকায়। নিজের আসন রক্ষার জন্য যেসব ডেমোক্র্যাট সিনেটর আত্মপক্ষ সমর্থন করেছিলেন, তাঁদের অনেকেই নতুন। এ দুই কারণে অধিকাংশ সিনেট পদপ্রার্থী সরাসরি ওবামার বিরুদ্ধাচরণ করেছেন অথবা ওবামার কাছ থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছেন। ব্যাপারটা কোথাও কোথাও রীতিমতো হাস্যকর হয়ে পড়ে। কেন্টাকিতে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী এলিসন গ্রাইমস প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ওবামার পক্ষে ভোট দিয়েছেন কি না, এমন সাধারণ প্রশ্নের জবাব দিতেও অস্বীকার করেন। যাঁদের পক্ষে ওবামার সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্তি অস্বীকার করা অসম্ভব, তাঁরাও জোর দাবি করেন, ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হলে কী হবে, অধিকাংশ নীতিগত প্রশ্নে তাঁরা ওবামার বিরোধী। কোনো নির্বাচনী এলাকায় ওবামা এখনো জনপ্রিয়, যেমন ফ্লোরিডা। অথচ সেখানেও প্রেসিডেন্ট ওবামাকে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে দেখা যায়নি।
No comments