শেষ দিনের নাটকের অপেক্ষা by তারেক মাহমুদ
তিনটি কঠিন শর্ত দিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। এর মধ্যে দুটি শর্ত মোটামুটি ভালোভাবেই পূরণ করা গেছে। বাকি শুধু ইনিংস ঘোষণা করে জিম্বাবুয়ের ১০ উইকেট নেওয়া। খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে এই কঠিন কাজটাও আজ করে ফেলতে চায় বাংলাদেশ দল। পরশু দিন শেষের সংবাদ সম্মেলনে সাকিব বলেছিলেন, জিততে হলে জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংসটাকে অল্প রানে শেষ করে দিতে হবে এবং পারলে সেটা চতুর্থ দিনের প্রথম ঘণ্টাতেই। এরপর নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ভালো একটা সংগ্রহ জমা করতে হবে স্কোরবোর্ডে। সব শেষে জিম্বাবুয়েকে অলআউট করতে হবে দ্বিতীয় ইনিংসেও। সাকিব বলেছেন বলেই নয়, খুলনা টেস্টে জিম্বাবুয়েকে হারাতে হলে আসলে এর বিকল্প কোনো সমীকরণ নেই বাংলাদেশ দলের সামনে। কাল চতুর্থ দিন শেষ হওয়া পর্যন্ত সে সমীকরণ মোটামুটি ভালোভাবেই মেলানো গেছে। প্রথম ঘণ্টায় না হলেও লাঞ্চের আগেই অলআউট জিম্বাবুয়ে। আগের দিনের ৫ উইকেটে করা ৩৩১ রানের সঙ্গে আর মাত্র ৩৭ রান যোগ করতে পেরেছে তারা। লাঞ্চের ঠিক আগের ওভারে ব্যাটিংয়ে নেমে চতুর্থ দিন শেষে বাংলাদেশ ৫ উইকেটে ২০১। অর্থাৎ লিডটা এর মধ্যেই ২৬৬ রানের। আজ আরও ৫০-৬০ রান যোগ করে জিম্বাবুয়ের সামনে ৩১০-৩২০ রানের লক্ষ্য দেওয়ার পরিকল্পনা টিম ম্যানেজমেন্টের। এর পরই সামনে আসবে জিম্বাবুয়েকে অলআউট করার শেষ চ্যালেঞ্জটা। লক্ষ্য যখন জয়, রোমাঞ্চে মোড়া শেষ চ্যালেঞ্জটাও তো জিততে হবে মুশফিকের দলকে! তার আগে অবশ্য লিডটাকে দ্রুত বাড়িয়ে জিম্বাবুয়ের সামনে নিরাপদ লক্ষ্য ছুড়ে দেওয়ার চ্যালেঞ্জও আছে। সে চ্যালেঞ্জে কতটা সফল হতে পারবে, তা অনেকটাই নির্ভর করছে কাল দিন শেষে অবিচ্ছিন্ন থাকা মাহমুদউল্লাহ-শুভাগত হোম চৌধুরীর ষষ্ঠ উইকেট জুটির ওপর। ১৪৫ রানে পঞ্চম উইকেট পড়ার পর তাঁরা অবিচ্ছিন্ন ছিলেন ৫৬ রানে।
জিম্বাবুয়ের সামনে দ্রুত বড় লক্ষ্য দাঁড় করাতে গিয়েই কিনা বাংলাদেশ উইকেটও হারাতে লাগল দ্রুত। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে মন্থরতম সেঞ্চুরি করা তামিম শুরুতেই চড়াও হতে চেয়েছিলেন জিম্বাবুয়ে ব্যাটসম্যানদের ওপর। ২৫ বলে ২০ রানের ইনিংসেই চারটি চার। কিন্তু দলের ২৮ রানের সময় তিনাশে পানিয়াঙ্গারার স্লোয়ারে বিভ্রান্ত হয়ে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন তাঁরই হাতে। তামিমের বিদায়ের পর ১১৭ রানের মধ্যে নেই আরও চার উইকেট এবং চারটাই জিম্বাবুয়ের অনিয়মিত অফ স্পিনার ম্যালকম ওয়ালারের দখলে। একবার তো সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন হ্যাটট্রিকেরও। ওপেনার শামসুর রহমান ছাড়াও এই চার উইকেটের মধ্যে আছে আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান সাকিব আল হাসান (৬), অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম (০) এবং কালই বাংলাদেশের পক্ষে টেস্টে দ্রুততম এক হাজার রান করা মুমিনুলের (৫৪) উইকেট। এর মধ্যে সাকিব এলবিডব্লুটা এড়াতে পারেননি রিভিউ চেয়েও। তবে টেলিভিশন রিপ্লে যেমনটা দেখিয়েছে, তাতে মনে হলো আম্পায়ার আউটটা না দিলেও পারতেন।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে সফল না হলেও শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে কালও ছিল ‘সাকিব সাকিব’ রব। থাকবেই তো, এবার যে বল হাতেও নায়ক তিনি! প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরির পর কাল ৮০ রানে নিয়েছেন ৫ উইকেট। একই টেস্টে সেঞ্চুরি ও ৫ উইকেট এই নিয়ে দ্বিতীয়বার পেলেন সাকিব। এর আগে ২০১১-এর ডিসেম্বরে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে করেছিলেন সেঞ্চুরি (১৪৪), বল হাতে নিয়েছিলেন ৮২ রানে ৬ উইকেট।
জিম্বাবুয়েকে লাঞ্চের আগেই অলআউট করে দেওয়ায় সাকিবেরই বড় ভূমিকা। আগের দিন ১৫৪ রান করে অপরাজিত থাকা হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকে বোল্ড করে দিয়েছেন দিনের পঞ্চম ওভারেই। জিম্বাবুয়ে ইনিংসটা খেই হারিয়ে ফেলে এর পরই। কালই প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি করা রেজিস চাকাভাকে অবশ্য এলবিডব্লু করেছেন তিন উইকেট নেওয়া আরেক বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। কৃতিত্ব দিতে হবে টেন্ডাই চাতারা আর নাতশাই মুশাঙ্গুয়েকে একই ওভারে ড্রেসিংরুমে পাঠানো পেসার রুবেল হোসেনকেও। এর মধ্যে নিজের বলে চাতারার ক্যাচটাও নিয়েছেন তিনি দুর্দান্ত।
বোলারদের সাফল্যে একটু আড়ালেই পড়ে যাচ্ছে ফিল্ডিং ব্যর্থতাগুলো। কাল এক ওয়ালারের ক্যাচই পড়েছে দুবার। রানের খাতা খোলার আগেই সাকিবের বলে ক্যাচ দিয়েছিলেন স্কয়ার লেগে। বেঁচে যান শাহাদাতের ‘পিচ্ছিল’ হাতের সৌজন্যে। ১ রানের সময় রুবেলের বলে ওয়ালার ক্যাচ দেন আবারও। এবার গালিতে, ক্যাচ নিতে ব্যর্থ ফিল্ডারের নাম শুভাগত।
ফিল্ডিংয়ের যা অবস্থা, দিন শেষের সংবাদ সম্মেলনে কালও সাকিব আসলে হয়তো খুলনা টেস্ট জয়ের জন্য নতুন একটা শর্তই জুড়ে দিতেন,‘জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিংয়ের সময় আমাদের ফিল্ডিংটাও হতে হবে খুব ভালো।’ প্রথম ইনিংসের অভিজ্ঞতাও সেটাই বলে। যাদের সেঞ্চুরির সৌজন্যে বাংলাদেশের লিডটা মাত্র ৬৫ রানে নামিয়ে আনল জিম্বাবুয়ে, সেই মাসাকাদজা আর চাকাভাকে যে বারবারই নতুন জীবন দিয়েছেন ফিল্ডাররা!
চতুর্থ দিন শেষে
বাংলাদেশ: ৪৩৩ ও ২০১/৫
জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ৩৬৮
জিম্বাবুয়ের সামনে দ্রুত বড় লক্ষ্য দাঁড় করাতে গিয়েই কিনা বাংলাদেশ উইকেটও হারাতে লাগল দ্রুত। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের হয়ে টেস্টে মন্থরতম সেঞ্চুরি করা তামিম শুরুতেই চড়াও হতে চেয়েছিলেন জিম্বাবুয়ে ব্যাটসম্যানদের ওপর। ২৫ বলে ২০ রানের ইনিংসেই চারটি চার। কিন্তু দলের ২৮ রানের সময় তিনাশে পানিয়াঙ্গারার স্লোয়ারে বিভ্রান্ত হয়ে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন তাঁরই হাতে। তামিমের বিদায়ের পর ১১৭ রানের মধ্যে নেই আরও চার উইকেট এবং চারটাই জিম্বাবুয়ের অনিয়মিত অফ স্পিনার ম্যালকম ওয়ালারের দখলে। একবার তো সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন হ্যাটট্রিকেরও। ওপেনার শামসুর রহমান ছাড়াও এই চার উইকেটের মধ্যে আছে আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান সাকিব আল হাসান (৬), অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম (০) এবং কালই বাংলাদেশের পক্ষে টেস্টে দ্রুততম এক হাজার রান করা মুমিনুলের (৫৪) উইকেট। এর মধ্যে সাকিব এলবিডব্লুটা এড়াতে পারেননি রিভিউ চেয়েও। তবে টেলিভিশন রিপ্লে যেমনটা দেখিয়েছে, তাতে মনে হলো আম্পায়ার আউটটা না দিলেও পারতেন।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে সফল না হলেও শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে কালও ছিল ‘সাকিব সাকিব’ রব। থাকবেই তো, এবার যে বল হাতেও নায়ক তিনি! প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরির পর কাল ৮০ রানে নিয়েছেন ৫ উইকেট। একই টেস্টে সেঞ্চুরি ও ৫ উইকেট এই নিয়ে দ্বিতীয়বার পেলেন সাকিব। এর আগে ২০১১-এর ডিসেম্বরে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে করেছিলেন সেঞ্চুরি (১৪৪), বল হাতে নিয়েছিলেন ৮২ রানে ৬ উইকেট।
জিম্বাবুয়েকে লাঞ্চের আগেই অলআউট করে দেওয়ায় সাকিবেরই বড় ভূমিকা। আগের দিন ১৫৪ রান করে অপরাজিত থাকা হ্যামিল্টন মাসাকাদজাকে বোল্ড করে দিয়েছেন দিনের পঞ্চম ওভারেই। জিম্বাবুয়ে ইনিংসটা খেই হারিয়ে ফেলে এর পরই। কালই প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি করা রেজিস চাকাভাকে অবশ্য এলবিডব্লু করেছেন তিন উইকেট নেওয়া আরেক বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। কৃতিত্ব দিতে হবে টেন্ডাই চাতারা আর নাতশাই মুশাঙ্গুয়েকে একই ওভারে ড্রেসিংরুমে পাঠানো পেসার রুবেল হোসেনকেও। এর মধ্যে নিজের বলে চাতারার ক্যাচটাও নিয়েছেন তিনি দুর্দান্ত।
বোলারদের সাফল্যে একটু আড়ালেই পড়ে যাচ্ছে ফিল্ডিং ব্যর্থতাগুলো। কাল এক ওয়ালারের ক্যাচই পড়েছে দুবার। রানের খাতা খোলার আগেই সাকিবের বলে ক্যাচ দিয়েছিলেন স্কয়ার লেগে। বেঁচে যান শাহাদাতের ‘পিচ্ছিল’ হাতের সৌজন্যে। ১ রানের সময় রুবেলের বলে ওয়ালার ক্যাচ দেন আবারও। এবার গালিতে, ক্যাচ নিতে ব্যর্থ ফিল্ডারের নাম শুভাগত।
ফিল্ডিংয়ের যা অবস্থা, দিন শেষের সংবাদ সম্মেলনে কালও সাকিব আসলে হয়তো খুলনা টেস্ট জয়ের জন্য নতুন একটা শর্তই জুড়ে দিতেন,‘জিম্বাবুয়ের দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাটিংয়ের সময় আমাদের ফিল্ডিংটাও হতে হবে খুব ভালো।’ প্রথম ইনিংসের অভিজ্ঞতাও সেটাই বলে। যাদের সেঞ্চুরির সৌজন্যে বাংলাদেশের লিডটা মাত্র ৬৫ রানে নামিয়ে আনল জিম্বাবুয়ে, সেই মাসাকাদজা আর চাকাভাকে যে বারবারই নতুন জীবন দিয়েছেন ফিল্ডাররা!
চতুর্থ দিন শেষে
বাংলাদেশ: ৪৩৩ ও ২০১/৫
জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ৩৬৮
No comments